এ বছর বেশ কিছু শীতকালীন ঝড় তীব্র বাতাস, বৃষ্টি এবং বরফপাত ইজরায়েলের বুকে আঘাত হানে, যা দেশটির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি করে। উত্তরে হেরম্যান পাহাড়ে এত বেশী বরফে ঢেকে যায়, যা দেশটির ২০ বছরের ইতিহাসে দেখা যায়নি। কারমেল নামক এলাকা এক ভয়াবহ দাবানলে ধ্বংস হয়ে যাবার পরের দিনই এই বরফ ঝড়ের আগমন ঘটে। এই দাবানলে ৪৩ জন ব্যক্তি মারা যায় এবং তা প্রায় ১০০ থেকে ১২০ মিলিয়ন সেকেল (ইজরায়েলের মুদ্রার নাম) আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অনেকের মতে এই সব ঝড় দেশটিতে যে খরা চলছে স্বস্তিদায়ক অবসান ঘটিয়েছে। ইজরায়েলের প্রধান সুপেয় পানির উৎস, সি অফ গ্যালিলি নামক হ্রদের পানি এই সব ঝড়ের পর পাঁচ সেন্টিমিটার বেড়ে যায়।
এই আবেগ ইজরায়েলের অনেক টুইটারস্ফেয়ারে প্রতিধ্বনিত হয়।@টেকহেলেট বলছেন:
আমি আনন্দিত যে ইজরায়েলে এখন ঝড়/বৃষ্টি হচ্ছে এবং বরফ পড়ছে। বারুচ হাশেম। পিতা তোমাকে ধন্যবাদ!
এই সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি এবং বাঁধা এবং বিঘ্ন সত্ত্বেও অনেকেই এই বৃষ্টির প্রতি কৃতজ্ঞ। @মোয়াজইজরায়েল এর সাথে যোগ করেছেন:
#ইজরায়েলে বরফ আর বৃষ্টি পড়ছে! স্রষ্টা আমাদের প্রার্থনার উত্তর প্রদান করেছেন!
কিন্তু এই ঝড় সকলের প্রার্থনার উত্তর নয়। যদিও প্রচণ্ডভাবে বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল, কিন্তু এ সব ঝড় একই সাথে সারাদেশে অনেক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঝড়ের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মোয়াজ ইজরায়েল ব্লগ তার কিছু ছবি প্রকাশ করেছে:
এলোন ইন এ হলি ল্যান্ড এক রোমানিয়ার নাগরিকের ব্লগ যে কিনা আশদদ নামক এলাকা বাস করে। ভদ্রমহিলা তার পরিবারকে নিয়ে এইলাট যাবার পথে ঝড়ের কবলে পরার ফলে কি অবস্থার সৃষ্টি হয় তা বর্ণনা করেছেন:
এটা ছিল যেন এক নারকীয় কাণ্ড! প্রথমে শুরু হল বাতাস বওয়া, খুব জোরালো ভাবে তা বইতে শুরু করল, তারপর শুরু হল ধুলোঝড়.. যখন আমরা মিটপে রোমান নামক এলাকা পৌঁছলাম, তখন আবহাওয়া শীতল হয়ে গেল এবং ঠান্ডা বায়ু বইতে শুরু করল.. আমি শঙ্কিত হয়ে উঠলাম। জোরালো বাতাস গাড়ির একদিকের জানালায় এসে ঝাপটা মারছিল, তারপরে অন্যদিকে বাড়ী দিচ্ছিল। সে সময় আমি আতঙ্কিত হয়ে উঠছিলাম। এমন কি কোন কথা উচ্চারণ করতে পারছিলাম না। আমার পাকস্থলী একটা মটর দানার সমান হয়ে উঠেছিল এবং আমার কণ্ঠ শুকিয়ে আসছিল, আবিশ্বাস্য..যখন আমি গভীর নিঃশ্বাসের সাথে বিড়বিড় করে প্রার্থনা করছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল আমি যেন অন্য কোথাও রয়েছি। আমার যাত্রার শেষে, যা কিনা এইলাটের থেকে ৩০ কিলোমিটার দুরে সে সময় হঠাৎ করেই ধূলিঝড় থেমে গেল, আকাশ পরিষ্কার হয়ে এলো এবং সেখানে আবার সূর্যের দেখা মিলল।
এবং এরপর তাদের কথা যারা বাতাসের ক্ষেত্রে সতর্ক ছিল এবং ঝড় আবহাওয়ার সুবিধা নিয়েছে। সাহার জুবারে ইজরায়েলের একজন উইন্ড সার্ফার, (বাতাসের সাথে পানিতে সার্ফিং করা বা ভেসে বেড়ানো) তিনি এই আবহাওয়ার মুখোমুখি হন এবং এবং ঢেউয়ের উপর নাচার জন্য বেরিয়ে পড়েন।