- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ভারত: ইমেইল পাঠানো কি অপরাধ?

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, ভারত, আইন, নাগরিক মাধ্যম, প্রযুক্তি, মানবাধিকার

ভারতের সাইবার আইন বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছে তার অপব্যবহারের কারনে। ভারতের কেরালা রাজ্যের এক সরকারী কর্মচারী মৈথু (৪৭) গ্রেপ্তার হয়েছেন [1] শাসক সিএমপির (কমিউনিস্ট পার্টি- মার্ক্সিস্ট) নির্বাচনে পরাজয় নিয়ে একটা মজার বার্তা ইমেইলে কয়েকজন বন্ধুর কাছে পাঠানোর জন্য। কেরালা রাজ্যের সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকা কমিউনিস্ট দল বড় ধরনের পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছেন।

সিমিনাজারেথ জানিয়েছেন [2]:

কেরালাতে সাধারণ একজন নাগরিককে (জনাব মৈথু) গ্রেপ্তার হন কারন তিনি পোস্টার সম্বলিত একটা ইমেইল ফরোয়ার্ড করেছিলেন। পোস্টারে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ (জনাব পিনারায়ি ভিজায়ান) এর ছবি ছিল যার সাথে পুরানো মালায়লাম ছবি ‘সান্ডেশাম’ এর সংলাপ ছিল।

সাইবার অপরাধ এটা ছিল যে মৈথু ইমেইল থেকে ‘এটা কৌতুক’ এই অংশটি বাদি দিয়েছিলেন আর তার অল্প কিছু বন্ধুর কাছে এই মেইল ফরোয়ার্ড করেছিলেন (পাঠিয়েছিলেন)।

ক্ষমতাসীন সিপিএম (কমিউনিস্ট পার্টি- মার্ক্সিস্ট) এর সভাপতি জনাব পিনারায়ি ভিজায়ন [3] এর সরাসরি অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ দ্রুত তৎপরতা চালিয়ে জনাব মৈথুকে গ্রেপ্তার করেছে। তার কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক আটক করা হয়। জামিনে ছাড়া পেলেও মামলা এখন চলবে, যেহেতু অভিযোগ তুলে নেয়ার কোন খবর নেই।

“আমি কি ভুল করেছি? আমি কেবলমাত্র আমার ইমেইলে আসা মজার একটা মেইল ফরোয়ার্ড করেছি,” জানিয়েছেন জনাব মৈথু। দৃশ্যত: ক্ষমতাসীন দল সন্তুষ্ট না। দলের অনেকেই এই মত জানিয়েছেন যে ব্যাপারটাকে হালকাভাবে দেখা উচিত না, আর অপরাধ হিসাবে এটাকে দেখতে হবে।

কেরালার কুট্টিপুরাম মালাপ্পুরাম জেলার বাসিন্দা মৈথুকে মেইলটি পাঠিয়েছিলেন [4] বার্সেলোনা থেকে তার আত্মীয় হামসা, যিনি এটা জাস্ট৪এজোক @জিমেইল.কম থেকে সংগ্রহ করেছেন। মৈথুকে ধারা ৬৬(এ) সংশোধনী আইটি আইন ২০০৮ তে অভিযুক্ত করা হয়েছে যা বলে যে ‘অপমানজনক মেইল’ পাঠানো শাস্তিমূলক (অভিযুক্ত হলে তিন বছর পর্যন্ত জেল আর ভারতীয় রুপিয়া ১০০,০০০ জরিমানা)।

ইগ্নোরান্টিয়া জুরিস নন এক্সকুজাট ব্লগ অবশ্য সাইবার সেলের কাজকে সমর্থন করেছেন [5] এই যুক্তি দিয়ে যে মৈথুর দায়িত্ব ছিল ফরোয়ার্ড করার আগে বিষয়বস্তু যাচাই করা।

কাইপাল্লি মন্তব্য করেছে [6]:

কঠোর সমালোচনা নেতৃত্বের ক্ষমতার অভাব দেখায়। এটা দেখাচ্ছে যে আমাদের জাতির কি হবে যদি ১৯ শতকের কমিউনিস্ট ধারনা দেশের শাসন চলে।

সিমি নাজারেথ যোগ করছে [2]:

এই আইনি পদক্ষেপের ভীতিকর দিক হচ্ছে যে এটি যে কোন নাগরিককে কোন কৌতুক ইন্টারনেটে প্রচার করতে বাধা দেবে। এই সব প্রক্রিয়া মানুষকে রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করতে বাধা দেবে। ভারতীয় সাইবার আইন (২০০৮) এর পরিমার্জনে বলা হয়েছে অন্তর্জালে যে কোন বিষয় অপরের অস্বস্তির বা বিরক্তির কারন হয় তা ফৌজদারী বিধির আওতায় আনা যাবে। এইসব বিধিগুলিই উপরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। একজন অগ্রগণ্য রাজনীতিবিদের এমনভাবে আইনের আশ্রয় নেয়ার ফলাফল সুদুরপ্রসারী হতে পারে। আমরা শুধু আশাই করতে পারি যে অন্যান্য রাজনীতিবিদরা এমন পদক্ষেপের আশ্রয় নেবেন না, এবং এই আইনকে রম্য সমালোচনা এবং প্রতিবাদ থামাতে ব্যবহার করা হবে না।