কিউবা: টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হওয়া, এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিউবা নীতি

কিউবার ব্লগাররা বেশ ভাল অবদান রেখেছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত বাধার বিষয়টি উপস্থাপনে যা বেশিরভাগ কিউবানকে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে। কিন্তু গুটিকয়েক ব্লগার রাজনৈতিক জটের বিষয়ে লিখেছে যা এই দ্বীপের দুর্বল টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মূল কারণ।

যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রিক এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত টেলিযোগযোগ কোম্পানী সমূহ, বলা যেতে পারে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রায় সব কোম্পানিই, যুক্তরাষ্ট্র- কিউবা প্রতিবন্ধকতা আইনে নানান নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়, এবং এই বিষয়টি কিউবার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার পর থেকেই বিগত দশ বছরে একটি মৌলিক সমস্যা হয়ে উঠেছে।

হাভানার একটি দালানের অস্থায়ী নির্মাণ কাঠামো। সার্জিও ফাল্লাতির তোলা আলোকচিত্র।

রাষ্ট্রপতি ওবামা ২০০৯ সালে ঐ সকল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন, কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির সামান্যই অগ্রগতি ঘটেছে। জুলাই/আগষ্ট ২০১০এর  ফরেন পলিসির সম্পাদকীয়তে ক্রিস্টোফার সাবাতানি প্রচলিত আইনকানুন এর সারসংক্ষেপ বিবৃত করেন যাতে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত টেলিযোগযোগ কোম্পানীগুলোর ঐ দ্বীপে বাণিজ্য করার জন্য বেশ অনেক নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ রয়েছে, তা হার্ডওয়্যার কিংবা সফটওয়্যার ক্রয় বিক্রয় সংক্রান্তাই হোক অথবা নতুন কাঠামো গড়ে তোলাই হোক না কেনো। প্রচলিত পন্থা সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করে বলেছেন:

…কোন প্রকৃত যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বাণিজ্য কার্যক্রমে সামান্যই সুযোগ রয়েছে যা এই দ্বীপকে ইন্টারনেট এর দ্বারা সংযুক্ত করতে পারে এবং অধিবাসীদেরকে টেলিযোগযোগ সামগ্রী পৌঁছে দিতে পারে। বরং, যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তাতে কেবল ঐ সকল বিষয়ে আর্থিক সহযোগিতাই প্রদান সম্ভব যাতে জটিল বৈদেশিক নীতিকে চিত্রায়ন করা যায় সহযোগিতা হিসেবে।

একমাত্র যে পুনর্গঠন ঘটেছে তা হলো কিউবার বাইরে বসবাসকারী ব্যক্তি এই দ্বীপে বসবাসরত তার কিউবান পরিবারবর্গ এবং বন্ধুদের জন্য সেল ফোন হ্যান্ডসেট এবং রোমিং সার্ভিস এর অর্থ প্রদান করবে। যদিও এটা হাজারো কিউবার অধিবাসীর জীবনে পরিবর্তন ঘটিয়েছে, তথাপি এই দ্বীপটি ডিজিটাল যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবার মহা সুযোগ পেতে পারে যদি রাষ্ট্রপতি ওবামা আরও নিরপেক্ষ হন কিংবা টেলিযোগযোগ কোম্পানীর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন। তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সেটা করতে পারেন।

কিউবার সরকার যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অথবা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত টেলিযোগযোগ কোম্পানীকে এই দ্বীপে ব্যবসা করতে অনুমতি প্রদান করবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, যদি সেটা করার জন্য তারা স্বাধীনতাও পায় তবুও। কিন্তু এই বাধা উঠিয়ে দিয়ে ওবামা প্রশাসন এমন অবস্থানে দাঁড়াতে পারে যা কিউবার ডিজিটাল এবং টেলিযোগযোগ এ যুক্ত হবার ব্যবস্থা বৃদ্ধি ঘটাবে, এবং কিউবার খেলার মাঠে রাজনৈতিক বল ছুঁড়ে দিতে পারে।

হাভানার একটি ভাস্কর্য। সার্জিও ফেল্লাটির আলোকচিত্র।

যখন যুক্তরাষ্ট্র পুনর্গঠন বন্ধ করে দিতে শুরু করে তখন ভেনিজুয়েলার টেলিকমিউনিকেশনস গ্রান ক্যারিবিও ভেনিজুয়েলা এবং ক্যারিবিয়ান তীর, কিউবা এবং জ্যামাইকা এর মাঝে একটা সাবমেরিন কেবল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এটা কিভাবে কিউবায় ইন্টারনেট ব্যবহারে পরিবর্তন আনবে তা অস্পষ্ট থেকে যায় কিন্তু এটা সুনিশ্চিত যে এই স্থাপন কিউবা এবং ভেনিজুয়েলার মধ্যে কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের পুন:জাগরণ ঘটাবে আর ভেনিজুয়েলা এখন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের খুবই কাছের। এটা ওবামা প্রশাসনকে পুনরায় নিরপেক্ষ করে তুলবে কিন্তু সেটা এখনও সম্ভব হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা পন্থা সমাজের অনেকে বিশ্বাস করে যে রাষ্ট্রপতি ওবামা সময়ের বাইরে দিয়ে চলছেন এবং রাজনৈতিক সম্পদ প্রয়োজন প্রতিবন্ধকতার সংস্কারের জন্য। বৃহস্পতিবারে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পরে ব্লগ জগত ফ্লোরিডার আসন্ন সিনেটর মার্কো রুবিও এর নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য করতে শুরু করে যে কিনা একজন জিওপি এবং চা পার্টি ম্যাগনেট এবং কিউবার প্রতিবন্ধকতার পূর্বতন এমিগ্রেস এর ছেলে। রুবিও কিউবার প্রতি “একই পন্থা মেনে চলা” নীতির উপর দৃঢ়চেতা।

আনইয়া লানডু ফ্রেঞ্চ দ্যা হাভানা নোট এ রুবিও সম্পর্কে লিখেছে:

পূর্বতন প্রতিবন্ধকতা, এন্টি এনগেইজমেন্ট বক্তব্য করন, নিচের দিকের সহকর্মীদের হাত মোচড়ানো, দ্বৈত পার্টি স্বাক্ষরে পত্র লিখন এবং হাত গুটানোর মাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা সম্পর্কের উপর কিউবান-আমেরিকান মতামতের মাঝে তরঙ্গায়িত পরিবর্তন আনলে তা কি কোন পরিবর্তন ঘটাবে আদৌ? ইএল ইয়ুমা ধারনা করছে যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা পন্থা (এবং যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক রাজনীতি) এর উপর রুবিওর প্রভাব আশংকাজনক, পাঠকরা বলছে:

তাকে খাটো করে দেখোনা এবং খাটো করে দেখোনা কিউবান-আমেরিকান সমাজের বাইরে ও ফ্লোরিডা রাজ্যের বাইরের আমেরিকানদের প্রতি তার আবেদনের আকুলতাকে।

রুবিওর বিজয় নির্বাহী আদেশ সংক্রান্ত সংস্কারে রাষ্ট্রপতি ওবামার সিদ্ধান্তের উপর কোন প্রভাব ফেলবে কি ফেলবে না জানিনা, কিউবার প্রতি রাজনৈতিক আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়তো শীতল হয়ে যাবে। দ্যা কিউবান ট্রায়াঙ্গেলের ফিল পিটার প্রতিবন্ধকতার উপর যত্সামান্য সংস্কারের সুযোগের প্রতি দিক নির্দেশ করেছে।

যদি রাষ্ট্রপতি ওবামা তার নিজ দেশের ক্রম পরিবর্তনের সাথে কিউবার ক্রম পরিবর্তন এর প্রতি সাড়া না দেয়, কোন এক সময় তার প্রস্তাব একটা মৃত পত্র হয়েই রবে, এবং কিউবার গঠনমূলক ধারনা দেয়া …শূণ্য হয়ে যাবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .