ব্লগ কার্যকরণ দিবস একটি বাৎসরিক আয়োজন যা প্রতিবছর ১৫ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি একই বিষয়ে পোষ্ট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে বিশ্ব ব্লগারদের একত্রিত করে। এই বছরের উপজীব্য বিষয় ছিল “পানি”। দক্ষিণ এশিয়ার বেশ অনেক ব্লগারও এই বিষয়ে অংশগ্রহণ করেছে। তাদের মধ্যে অনেকের আলোচনা এখন আমরা দেখব।
![color of india [640x480]](https://globalvoicesonline.org/wp-content/uploads/2010/10/color-of-india-640x480.jpg)
পানি সঞ্চায়ক সংযুক্ত হয়েছে ভারতের মাল্লাপুরাম কে পানি দেয়ার জন্য । ছবি ফ্লিকারের এমসিকায়াস্যাভেজ এর সৌজন্যে। সিসি বাই লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশিত।
ভারত:
ওয়ান্ডারিং মিস্ট এর ইশরাত লিখেছে:
ভারতের পানি একটি সামঞ্জস্যহীন বিষয়। এটা সর্বদা দেশের সর্বদিকে আশীর্বাদ এবং অভিশাপ হয়ে থেকেছে। দক্ষিণ ভারত সদাই বহমান নদীকে ঠেকাতে লড়ে চলেছে। উত্তরপশ্চিম ভারত পানির -হাহাকারময় এক মরুভূমি। এবং পূর্ব ভারতে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত ঘটে যা কাউকে কোন সহায়তাই করেনা।
এবং তারও পরে আছে ভারতের পানি নিয়ে দুঃখের কথা যার মধ্যে যুক্ত বিষাক্ততা, অপর্যাপ্ততা, বাতিলকরণ, দূর্নীতি, প্রবাহিত করণ সমস্যা, অনুপ্রবেশ, মৃত্যু এবং বৃদ্ধি; রোগশোক, দূষণ, পানির উপর নির্ভরশীল অসচেতনতামূলক কারখানা বৃদ্ধি, এবং সর্বোপরি আরও অনেক কিছু। [..]
আমরা আমাদের প্রকৃত প্রাচীন জীবন পদ্ধতি ভুলে গেছি যেখানে প্রত্যেক প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন পানি, ব্যবহার করা হতো কিন্তু অপচয় করা হতো না। সকল প্রকার ধৌত কর্মের জন্য পানির অব্যহত প্রবাহের নিশ্চয়তার নিমিত্তে অসীম কোন ঝর্ণা, গরম পাত্র, বৃষ্টির উপাদান অথবা বড়সড় পানির সঞ্চায়ক ছিলনা। পানি ব্যবহার অনুযায়ী পানি বন্টন করা হতো। ২৪/৭ পানি সরবরাহের কোন ধারণাই তখন ছিলনা, সেখানে প্রত্যেক গৃহস্থালীকেই তার বাড়ীর ছোট সীমানাতেই কূয়া খনন করে রাখতে হতো। আমাদের জ্ঞান, পর্যবেক্ষণ এবং দায়িত্ববোধ সহকারে আমরা ক্রমাগত পৃথিবীকে জীবন্ত দোজখে রূপান্তর করছি।
দিল্লী গ্রীন এর আস্থা কুকরাতি পানি রক্ষার ২৫টি উপায় বাতলে দিয়েছে। আভা মিধা জানিয়েছে:
পয়ঃনিষ্কাশন এলাকাগুলোতে সুলভ অভিযান একটা সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। ডঃ বিন্দেশ্বর পাঠক এর দ্বারা সূচিত এই সুলভ পায়খানা জনগনের জন্য অনেক কম দাম ও প্রকৃতি বান্ধব।

নেপালের পাটানে পানি বন্টন অংশ। ফ্লিকার ব্যবহারকারী ওয়ান ভোটার সৌজন্যে। সিসি বাই এনসি লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশিত।
নেপাল:
ভূমিকা ঘিমিরে নেপালের পানি সম্পর্কিত বিষয়ের উপর আলোকপাত করে বলেন:
পানির অভাব নেপালের ক্ষয়িষ্ণু প্রকৃতির সাথে সরাসরি সম্পর্ক যুক্ত। রাজধানী কাঠমান্ডুতে, অনেক এলাকাই সপ্তাহে ছয়দিন পানি পায়না, এবং তারা হয়তো ব্যবসায়ীদের নিকট হতে পানি কিনতে বাধ্য হয় না হয় নির্ভর করতে হয় স্থানীয় কূপ কিংবা নদীর পানি যে পানি গুণগতমান আবার পরীক্ষিত নয়।
উজ্জ্বল আচার্য্য একটি ছবি পোষ্ট করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে কিভাবে পানি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত।
পাকিস্তান:
বিগত শতকে যদিও পাকিস্তান ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে তথাপি এর কিছু কিছু এলাকা শুকনো এবং মরুভূমিতে পরিণত হবার উপক্রম। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের এক উপজাতি কন্যা,খালিদা বোরহি লিখেছে যে উপজাতি লোকজনই প্রথমে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের প্রথম আঘাতের শিকার হয়।
বেলুচিস্তান এর প্রচলিত জীবনধারণ পদ্ধতি এবং কৃষিজমির ব্যবহার ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে। খুসাবা এবং সাইলাবা নামক দুটি কৃষিব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে, বন্যার পনি সংরক্ষণ করে জমিতে ব্যবহার করার চিরাচরিত পন্থা আর কাজ করছে না কারন বন্যা তার রূপ বদলেছে এমনকি বর্তমানে প্রাচীন জ্ঞানও কোথায় বন্যা আঘাত হানবে তা অনুমান করতে পারছে না, যা একসময় বালুচিস্তানের এই মালভূমির মানুষের জন্য এক সময় ছিল আশীর্বাদ, বর্তমানে এটি তাদের নিকট ধ্বংসের এক বিভীষিকা।
![dried well [640x480]](https://globalvoicesonline.org/wp-content/uploads/2010/10/dried-well-640x480.jpg)
সিন্ধুর থরপার্কার মরুভূমির মালির গ্রামের মারাভি কূপ। ফ্লিকার ব্যবহারকারী কাসিফ এর সৌজন্যে। সিসি বাই লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশিত।
ফায়ার উইদিং এর জালাল এইচবি সিন্ধূ প্রদেশের থর মরুভূমিতে খাবার পানির অভাবের কথা লিখেছে :
যখন সেখানে বৃষ্টি হয় তখন বৃষ্টির পানি “তোবাস” নামক ছোট্ট গামলা আকৃতির পুকুরে সংগ্রহ করে রাখা হয়। কূয়া খনন সম্ভব নয় বিধায় সেখানে আর কোন বিকল্প নেই। যদিও বা কোন সাফল্য আসে তবে পানি এতই নোনা ও লবনাক্ত থাকে যে তা পানের যোগ্য থাকে না।