- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

রাশিয়া: ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে যৌন উত্তেজক বনাম রাজনৈতিক লড়াই

বিষয়বস্তু: পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ, রাশিয়া, ছবি তোলা, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, শিল্প ও সংস্কৃতি, রুনেট ইকো

[1]বলা হয় যে সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ট আর পক্ষপাতহীন হওয়া প্রয়োজন আর রাজনীতিবিদদের সাথে কখনো গভীর সম্পর্ক রাখা উচিত না। কতিপয় তরুণী সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী যখন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে স্বল্পবসনে তার প্রতি সমর্থন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন তখন ‘বস্তুনিষ্ঠতা’ আর ‘পক্ষপাতহীনতা’ যৌনতা আর কামনা উদ্রেককারী পোশাকের নীচে চাপা পড়ে যায়।

যদিও বেশ কয়েকজন রাশিয়ান তরুণী ক্যালেন্ডারের জন্য অর্ধ নগ্ন অবস্থায় ছবি তুলেছেন এটি নতুন কোন খবর না, অনেকেই কিন্তু ক্ষিপ্ত হয়েছেন যে এমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের নাম এই ছবির সাথে যুক্ত হয়েছে। দ্যা মস্কো ডায়রিজ এই ঘটনার পূর্ণ বিবরণ এখানে দিয়েছে [2] যেখানে পোস্টারের ছবিসহ ইংরেজী ভাষান্তর আছে। এই কেলেঙ্কারি ছাত্র সমাজ ছাড়িয়ে গেছে আর অবশ্য ব্লগ জগতে সব থেকে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

ব্লগার তোভারিশক একদল ব্লগারের মতামত সংক্ষেপে জানিয়েছেন [3] যারা প্রায় অর্ধ নগ্ন অবস্থায় সাংবাদিকতার ছাত্রীদের এই চিত্র গ্রহণকে অযথার্থ আর অপমানকর মনে করেছেন:

На самом деле, надо быть конченным подонком и извращенцем, чтобы в стране, где огромное количество проблем, вызванных некомпетентностью власти, дарить этой власти в подарок эротический календарь.

সত্যি কাউকে একেবারে যাচ্ছেতাই আর বিকৃত মানসিকতার হতে হবে সরকারকে যৌন উদ্রেককারী ক্যালেন্ডার উপহার দেয়ার চিন্তার জন্য সেই দেশে যেখানে এই সরকারের অযোগ্যতার জন্য অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

তিমুর_নেচাভ৭৭ এর সাথে একমত হয়েছেন [4]:

К сожалению, холуйство и проституция типичное явление среди представителей студенческого быдла, и кто холоп в душе, тот так холопом и останется, независимо от наличия диплома о высшем образовании.

দুর্ভাগ্যক্রমে, বেশ্যাবৃত্তি আর ক্ষমতায় থাকা মানুষকে খুশি করা কট্টরবাদী শিক্ষার্থীদের স্বভাব আর তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা পেলেও কেবলমাত্র এই ধরনের ঘটনা সবার মুখে মুখে থাকবে।

আর একজন ব্লগার ওবোরমতো, নিজের মতামত যিনি প্রকাশ করেছেন [5]:

Очень показательно. Студенток журфака МГУ с юных лет учат, в чем их главный талант, для чего они нужны стране. А главное учат, как правильно общаться с властью – быть похожей на придорожную блядь (см. “прокатите на калине”).

খুবই খোলামেলা। তারা তরুণ সাংবাদিকতার ছাত্র-ছাত্রীদের শেখায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ গুণ কোথায় আছে আর দেশের সেটার প্রয়োজন কেন। আর সব থেকে জরুরি হলো, তারা সরকারের সাথে কেমন ব্যবহার করা দরকার সেটা শেখায়- পথের ধারের বেশ্যার মতো হওয়া নয় (দেখুন ‘কালিনাতে আমাকে ভ্রমণ করান’)।

একদিন পরে, ক্যালেন্ডারের আর এক সংস্করণ বেরিয়েছে একই সাংবাদিকতা ডিপার্টমেন্ট থেকে। এতে বিভিন্ন ছাত্রী পূর্ণ পোশাক পরা ছিল আর তারা অস্বস্তি জনক রাজনৈতিক প্রশ্ন করছিল (এখানে [6] সেই ‘অন্য‘ ক্যালেন্ডার সম্পর্কে দ্যা মস্কো ডাইরির প্রতিবেদন দেখুন ইংরেজী ভাষান্তর সহ)।

সুপারমার্কেটে বিক্রি হওয়া যৌন উদ্রেককারী ক্যালেন্ডারের থেকে আলাদা এই রাজনৈতিক ক্যালেন্ডারটি অনলাইন নির্ভর আর (এখন পর্যন্ত) এর কোন শারীরিক প্রকাশ নেই। তবে ব্লগাররা সবাইকে উৎসাহিত করেছেন এই পাতাগুলো প্রিন্ট করে তাদের বাসা আর কাজের স্থানের দেয়ালে লাগানোর জন্য।

কিছু সময় পরে এই ‘ক্যালেন্ডার কেলেঙ্কারি’ একটি জিনিষের রুপ নিতে শুরু করেছে কিছুটা রাজনৈতিক আমেজ আছে যাতে। উদাহরন স্বরুপ, ব্লগার জালায়া_ উচিল্কা [7] অর্ধনগ্ন পুরুষ মডেলের ছবিসহ ক্যালেন্ডারের আর একটি সংস্করণ প্রকাশ করেছেন যাতে আছে ক্যালেন্ডারের প্রথম সংস্করণে পুতিনকে লক্ষ্য করে করা বিভিন্ন যৌন উত্তেজক ভঙ্গির প্রকাশ।

এডগার-হুভার আরো এগিয়ে গিয়ে আরেকটি ক্যালেন্ডার তৈরি করেছেন অবসরে যাওয়া নারীদের অর্ধ উলঙ্গ ছবি দিয়ে [8] যারা সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত [9] মস্কোর মেয়র ইউরি লুজকভের জন্য ভালোবাসা জানিয়েছেন (লুজকভ মস্কোর অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় ছিলেন যারা মেয়রের প্রচেষ্টার কল্যানে রাশিয়াতে সর্বোচ্চ পেনশন পেয়ে থাকেন)। আর ইবিগদান ক্যালেন্ডারের আরেকটি সংস্করণ পোস্ট করেছেন [10] রাশিয়ার আর আর্ন্তজাতিক উচ্চ স্তরের রাজনীতিবিদদের ছবিসহ (যেমন বারাক ওবামা) ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করা অবস্থায়। ক্রমে এই ঘটনা ইন্টারনেট মিমে পরিণত হয়েছে।

‘ক্যালেন্ডারের যুদ্ধ’ একই সাথে বিভিন্ন প্লাটফর্মে বের হয়েছে। রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী মিডিয়াও এই কেলেঙ্কারি নিয়ে লিখেছে বাস্তবের থেকে বেশী ফুলিয়ে ফাপিয়ে। কিন্তু এটা অবাক কিছু না যে ব্লগ জগৎ আর সামাজিক নেটওয়ার্ক (উদাহরনস্বরুপ ভিকন্টাক্ট.রু) এই ঘটনা আরো গভীর থেকে দেখেছে সাংবাদিকতার ছাত্রীদের সম্পৃক্ততা আর জনগণের সাথে সম্পর্কের কারনে।