পেরু: সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন মারিও ভার্গাস য়োসা

৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পেরুর লোকেরা এমন এক সংবাদে জেগে উঠল যাকে বলা হচ্ছে “বছরের সেরা” সংবাদ: সুইডেনের নোবেল একাডেমি মারিও ভার্গাস য়োসাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান করেছে।

জোসে মারিও পেদ্রো ভার্গাস য়োসা ১৯৩৬ সালে আরেকুইপাতে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই তার পিতামাতার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর সে তার নানার পরিবারের সাথে বলিভিয়ার কোচাবাম্বাতে চলে যায়। পরে আবার পুরো পরিবার পেরুতে ফিরে আসে, কারণ সে সময় তার নানা উত্তর পেরুর পিউরা শহরের এক কূটনৈতিক পদে যোগ দেয়। দশ বছর বয়সে তিনি লিমায় চলে যান। সেখানে তিনি প্রথমবারের মত তার বাবার দেখা পান। এর আগে তিনি জানতেন যে তার পিতা মারা গেছে।

তিনি লিমার লিওনচিও প্রাডো সামরিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন, তবে শীঘ্রই সেখান থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন এবং পিউরায় তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শেষ করেন। এর পর তিনি আইন এবং সাহিত্য নিয়ে পড়ার জন্য ন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অফ সান মার্কোস-এ ভর্তি হন। ১৯ বছর বয়সে তিনি জুলিয়া উরকিদাকে বিয়ে করেন। উরকিদা ছিলেন তার মামীর বোন এবং তার চেয়ে ১৩ বছরের বড়। তরুণ বয়সেই তিনি পেরুর সংবাদপত্রে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা শুরু করেন।

যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন, সে সময় তিনি স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের কমপ্লুটেনসে ইউনির্ভাসিটি নামক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি লাভ করেন। যখন তার এই বৃত্তির মেয়াদ শেষ হয় তখন তিনি এবং তার স্ত্রী প্যারিসে গমন করেন। ১৯৬৪ সালে তার প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এর একবছর পর তিনি তার চাচাতো বোন প্যাট্রিসিয়াকে বিয়ে করেন। তাদের তিনটি সন্তান। আলভারো, গনজালো এবং মরগানা।

১৯৯০ সালে তিনি পেরুর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দিতা করেন। কিন্তু আলবার্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন।

একাডেমি ভার্গাস য়োসাকে নোবেল পুরস্কার প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার তার ক্ষমতা কাঠামোর বর্ণনা এবং ব্যক্তির প্রবল প্রতিরোধ, বিদ্রোহ এবং পরাজয়ের ছবি আঁকার জন্য।

নোবেল পুরস্কার কমিটি য়োসাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদানের ঘোষনার সময় ৭, অক্টোবর ২০১০-এ সারভেন্তাস ইনিস্টিটিউট অফ নিউ ইয়র্ক-এ মারিও ভার্গাস য়োসা। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী গ্লোবোভিশন। এট্রিবিউশন-ননকর্মাশিয়াল ২.০ জেনেরিক ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ব্যবহার করা। .

যেমনটা আশা করা হয়েছিল, পেরুর ব্লগস্ফেয়ার এই সংবাদে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

জুয়ান সেপুট এর ব্লগ মাটে পাস্টর [স্প্যানিশ ভাষায়] এই সংবাদের পর স্থানীয় রেডিও-তে ভার্গাস য়োসা যে কথাগুলো বলেন, সেটি জানাচ্ছে:

Indicó que él ya se encontraba trabajando en su despacho, a las 5:30 de la mañana, preparando sus clases pues dicta cátedra en la universidad de Princeton, cuando lo llamaron de la Academia Sueca indicándole que en 14 minutos darían el anuncio.
Mario Vargas Llosa indicó que él pensó que era una broma, como años antes, cruelmente, le hicieron a un escritor italiano, Alberto Moravia.

[মারিও ভার্গাস য়োসা] জানাচ্ছেন, যখন সুইডেনের নোবেল পুরস্কার একাডেমি তাকে এটা জানানোর জন্য ফোন করে যে, সাহিত্যে তার নোবেল পুরস্কার লাভের ঘোষণাটি ১৪ মিনিটের মধ্যে প্রদান করা হবে, সে সময় তিনি ভোর ৫.৩০ পর্যন্ত তার অফিসে কাজ করেছিলেন, পাঠদানের বিষয় প্রস্তুত করছিলেন। কারণ তিনি প্রিন্সটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক।
সে সময় মারিও ভার্গাস য়োসা ভেবেছিলেন যে এটা বোধ হয় এক রসিকতা। অনেক বছর আগে ইতালির লেখক আলবার্তো মোরাভিয়ায় সঙ্গে কেউ একজন এ রকম রসিকতা করেছিল।

সোফিমানিয়ার [স্প্যানিশ ভাষায়] ব্লগাররা একটি পোস্ট লিখেছে যার শিরোনাম “ অবশেষে! মারিও ভার্গাস য়োসা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করলেন”:

En una primera declaración, desde los EEUU, Vargas Llosa dijo sentirse “muy conmovido y entusiasmado” por el premio. El escritor peruano, quien también tiene la nacionalidad española, reside por ahora en nueva York ya que dicta clases en la Universidad de Princeton.

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভার্গাস য়োসা তার প্রথম বিবৃতিতে বলেন, এই পুরস্কার লাভে , তিনি প্রচণ্ড আনন্দিত এবং উচ্ছসিত”। পেরুর এই লেখক একই সাথে স্পেনেরও নাগরিক, তিনি এখন নিউ ইয়র্ক শহরে বাস করছেন। তিনি সেখানকার প্রিন্সটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

গুস্তাভো আলাইয়াজা তার ব্লগ মারকামাসিতে [স্প্যানিশ ভাষায়] একটি বিষয় প্রকাশ করেছেন যা নিশ্চিত ভাবে একবারের বেশি পেরুবাসীর চিন্তায় এসেছিল:

Fue el eterno candidato. No eran muchos los medios que resaltaban este año podía hacer la diferencia, sí indicaban era una posibilidad. Fue una agradable sorpresa. Jorge Mario Pedro Vargas Llosa fue elegido Premio Nobel de Literatura 2010.

দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই পুরস্কারের দাবিদার। এবার খুব বেশি প্রচার মাধ্যম উল্লেখ করেনি যে এ বছর ভিন্ন কিছু ঘটবে। যদিও তারা লিখেছিল, এবারও তার এই পুরস্কার পাবার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। এটা এক দারুণ বিস্ময় উপহার দেওয়া। জর্জে মারিও পেদ্রো ভার্গাস য়োসাকে ২০১০ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল।

নস সিগুয়েন পেগানডো আবাজোর [স্প্যানিশ ভাষায়] ব্লগার সি.ভালকারসেল আমাদের জানাচ্ছেন, কি ভাবে তিনি ভার্গাস য়োসার সাহিত্যের সাথে পরিচিত হলেন:

Tendría yo menos de diez años y había encontrado en la biblioteca de mi casa una antología de cuentos peruanos. Había empezado, precavidamente, por los cuentos más cortos, dejando los más extensos para otros momentos. Sin embargo, el último cuento que me faltaba por leer, y que también era el último de la antología, no era el más extenso. Lo había intentado leer anteriormente, pero me parecía algo extraño. Para mí era casi una ficción, alumnos rebelándose contra el director del colegio (¿militar?). El cuento se llamaba Los Jefes y era de Vargas Llosa.

সম্ভবত তখন আমার বয়স দশ বছরের কম। এবং আমি আমার পারিবরিক গ্রন্থাগারে পেরুর গল্পের এক সঙ্কলন পেলাম। খুব সাবধানে আমি সেখানকার সবচেয়ে ছোট গল্পটা পড়তে শুরু করলাম এবং সবচেয়ে বড় গল্পটি অন্য এক সময় পড়ার জন্য রেখে দিলাম। তবে সব শেষে যে গল্পটি পড়লাম সেটি এই গল্পগ্রন্থের শেষ গল্প ছিল। সেটি বইয়ের সবচেয়ে দীর্ঘ গল্পটি ছিল না। এর আগেও আমি গল্পটি পড়ার চেষ্টা করেছি, তবে তা আমার কাছে একটু অদ্ভুত ধরনের গল্প মনে হচ্ছিল। আমরা কাছে তা একটা কল্পকাহিনী বলে মনে হয়েছিল,গল্পে স্কুলের ছেলেরা তাদের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে (সামরিক বিদ্যালয়?) এই গল্পের নাম ছিল লস জেফাস (নেতারা)। ভার্গাস য়োসা এই গল্পটি লিখেছিলেন।

টুইটারে #ভার্গাসয়োসা হাসটাগ সবসময় তাজা সাংবাদ গ্রহণ করছে এবং প্রায় ১২ ঘন্টার জন্য সারা বিশ্বের টুইটারে মারিও ভার্গাস য়োসা একটি ধারায় পরিণত হয়েছিল। লুইস আলেজো রোজাস (@কোয়েস্ট ০৪৮) পোস্ট করেছে:

Y pensar q los peruanos votamos x Fujimori en lugar de Mario Vargas Llosa; 20 años despues uno esta en la carcel y el otro gana el Nobel.
En verdad Vargas Llosa es un trome, hasta para ponerle el nombre a su hija es un capo ( Morgana ) , yo le hubiera puesto juanita nomas.

চিন্তা করুন আমরা পেরুবাসীরা মারিও ভার্গাস য়োসার বদলে ফুজিমরিকে ভোট প্রদান করেছি। ২০ বছর পর একজন নোবেল পুরস্কার পেয়েছে আর অন্যজন কারাগারে বন্দি।
” বাস্তবিক পক্ষে ভার্গাস য়োসা একজন ঝড় তোলা ব্যক্তি [ট্রোমে], এমনকি তার মেয়ের নাম রাখার ক্ষেত্রে সে অসাধারণ [কাপো] (তার মেয়ের নাম মরগানা)। আমি তার মেয়ের নাম রেখেছিলাম জুয়ানিতা:

ওয়াল্টার মেলেন্ডেজ (@আমিগোপেরু) বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন:

Soy del Perú…de la Tierra de #VargasLlosa……..

আমি পেরুর বাসিন্দা……#ভাগার্সয়োসার দেশের লোক……

ব্যাঙ্গ করে রিকার্ডো ফেরাগ্রিনো (@আইরিকিফেরাগ্রিনো) বলেছে:

Y ahora resulta que TODOS han leído a #VargasLlosa y que su felicidad es genuina.

এখন এটা জানা গেল যে সকলেই #ভার্গায়য়োসার লেখা পড়েছে এবং তারা লেখা পড়ে আসলেই খুশি।

৩ নভেম্বর মারিও ভার্গাস য়োসা তারা নতুন উপন্যাস প্রকাশ করবে। এর নাম এল সুয়েনো ডেল সেল্টা। এটি রজার কাজেমন্টের জীবনী নিয়ে লেখা। তবে হয়ত এটি দি ড্রিম অফ সেল্টিক নামে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .