- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ইরান: কারাগারে অন্তরীণ ব্লগার হোসেন দেরাখশান মৃত্যুদণ্ডের সম্মুখীন হতে পারেন

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., ইরান, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, নাগরিক মাধ্যম, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, রাজনীতি, সরকার

[1]

বিশ্বস্ত একটি সূত্র গ্লোবাল ভয়েসেস কে জানিয়েছে যে তেহরানের সরকারী আইনজীবিরা জেলে থাকা ইরানী ব্লগার হোসেন দেরাখশানের [2] (যে হোদার নামেও পরিচিত) জন্য মৃত্যুদণ্ড চাচ্ছেন। বিচারক সালাভাতি এই মামলার ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত এখনও জানাননি। দেরাখশানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘শত্রু রাষ্ট্রের সাথে ষড়যন্ত্র করা, ইসলামি শাসকদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো, ধর্মীয় মর্যাদা কে অপমান করা, আর বিপ্লব বিরোধী দলের জন্য প্রচারণা চালানো।‘ ২২ মাস আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় [3], আর বিচার শুরু হয় [4] ২০১০ সালের জুন মাসে।

২০০৮ সালে কানাডা থেকে ফেরার পরে হোদারের প্রাথমিক গ্রেপ্তারের কারন [5] এখনো পরিষ্কার না, কিন্তু অনেকে ধারন করেন যে ইজরায়েলে তার দুইবার ভ্রমণ (যা বহুল প্রচারিত) প্রাথমিক কারন হিসাবে কাজ করতে পারে।

দেরাখশানের কানাডার পাসপোর্ট আছে, কিন্তু ইরান দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকার করে না আর ইজরায়েলে যাওয়া সরকার ভাল চোখে দেখে না।

এই কেসে যে ব্যাপারটা বিভ্রান্তিকর, যে হোডার বিশ্বব্যাপী খ্যাতি লাভ করেন প্রথমসারির ইরানী ব্লগার আর মুক্ত ভাষ্য কর্মী হিসাবে (তিনি গ্লোবাল ভয়েসেস এর জন্য ২০০৪ এবং ২০০৫ সালে ব্লগিং ও করেন [6])। পরবর্তীতে তিনি ধারা পাল্টিয়ে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের পক্ষে তার যুক্তরাষ্ট্রের নীতি, পারমাণবিক অস্ত্র, ইজরায়েল এমনকি মানবাধিকার কর্মীর প্রতি মানুষের অসহিষ্ণুতা নিয়ে লেখেন।

২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে ইরানী প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদ, একটা চিঠি প্রকাশ করেন যেখানে তিনি হোসেন দেরাখশানের মামলাটি সময়মতো আর আইনগতভাবে পরিচালিত করার আহ্বান করেন। কানাডার সরকার দেরাখশানের বিচারের ব্যাপারে খুব সোচ্চার না। ২০০৮ সালে তার গ্রেপ্তারের পরেই অনলাইনে মুক্ত ভাষার কর্মিরা হোডারকে মুক্ত করার জন্য একটি ব্লগ তৈরি করেন [7]

টুইটারে সানাম দোলাতসাহি সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ডের কথা টুইট করেন [8], আর কামতারিন নামে ফার্সী ভাষায় একটি সাইট এই খবরটির উল্লেখ করেছে। এই সাইট জানায় যে পূর্বের গুজব সত্ত্বেও যে দেরাখশানকে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য আটক করা হয়েছে ইজরায়েলে এবং এটি অবশ্যই সেই কারন না [9] যার জন্য আইনজীবি তার মৃত্যুদণ্ড চাচ্ছে।

দেরাখশানের পরিবারের তৈরি এদালাত বারাইয়ে হোসেন দেরাখশান ( যার মানে হোসেন দেরাখশানের জন্য ন্যায় বিচার) নামক একটি ব্লগে এই বিষয়ে এখনো কোন সাম্প্রতিক রিপোর্ট নেই। পারিবারিক ব্লগে শেষ রিপোর্ট ছিল ১৫ই আগস্ট যেখানে বলা হয়েছে যে হোসেনের বিচার বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে [10]:

আমরা রায়ের অপেক্ষায় আছি। তাকে বাড়ি আসার জন্য এক সপ্তাহের ছুটি পর্যন্ত দেয়া হয়নি…এটা দ্বিতীয় রমজান মাস যে সে বাড়িতে নেই…আমাদের সে জানিয়েছে যে জেলের খাদ্যের মান গত রমজানের থেকে ভালো হয়েছে…তার মা খুব চিন্তিত…বলা হয় এই মাসে ইশ্বর প্রার্থনার সহজে উত্তর দেন…দয়া করে আমাদের হোসেনকে ভুলবেন না।

ইরানী ব্লগার জেঈতুন প্রায় দুই বছর আগে এই পরিস্থিতি নিয়ে লিখেছিলেন [11]:

“অন্যান্য ইরানিদের ইজরায়েলে যাওয়া নিয়ে আটক করা হয়েছে, কিন্তু কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে ছাড়া পেয়েছেন। কেউ কেউ ভাবছেন যে দেরাখশান, যিনি সাম্প্রতিক বছরে প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের সরকারের সমর্থক হয়েছিলেন, গ্রেপ্তার হন কারন দেশের কিছু ধর্মীয় নেতাকে তিনি অপমান করেন। তিনি নিজেই পশ্চিমের মিডিয়াতে তর্ক করেছেন, জেলে থাকা বহু ব্লগারের স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও, যে ইরানে কেউ তাদের ব্লগের বিষয়ের জন্য জেলে যায়না।“

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র সম্প্রতি ব্লগ জগতের উপরে চড়াও হয়েছে [12], আর বেশ কিছু ব্লগার ইরানে জেলে আছেন যাদের মধ্যে মানবাধিকার কর্মী শিভা নাজার আহারি [13] আছে। ২০০৯ সালের ১৮ই মার্চ [14] ওমিদ রেজা মির সায়াফি প্রথম ব্লগার ছিলেন যিনি সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে ইরানী জেলে মারা যান।