ইরানে যাদের পাথর ছুঁড়ে মারার শাস্তি দেয়া হয়েছে তাদের আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম এখন তুলে ধরা হচ্ছে। ৪৩ বছরের সাকিনেহ আস্তিয়ানিয়েহ মোহাম্মাদি, যিনি দুই সন্তানের মা, তাকে সম্প্রতি ব্যভিচারের জন্যে পাথর ছুঁড়ে মৃত্যুর আদেশ দেয়া হয়েছে।
তার স্বামীর হত্যাকারী দুই পুরুষের সাথে তার যৌন সংসর্গ থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।
তার উকিল মোহাম্মদ মোস্তাফাই বলছেন যে তাকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ হয়ত যথেষ্ট হবে। মোস্তাফাই সম্প্রতি ইরান থেকে পালিয়েছেন এবং বর্তমানে নরওয়েতে আছেন, যেখানে তিনি তার মামলাটি অনলাইন এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কাছে তুলে ধরছেন।
তবে সাকিনেহর কেসটি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। ফরাসি সংবাদপত্র লে ফিগারো অনুযায়ী বর্তমানে ইরানের বিভিন্ন জেলে তিনজন নর ও নারী পাথর ছোড়ার মাধ্যমে মৃত্যুর শাস্তি ভোগ করার অপেক্ষায় রয়েছে।
পাথর ছুঁড়ে মারার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কমিটি একটি দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করেছে যাতে গত ত্রিশ বছরে ইরানে পাথর ছুঁড়ে মারা লোকের নাম রয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ: অস্ট্রেলিয়া থেকে জর্জিয়া পর্যন্ত
আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ইরানে পাথর ছুঁড়ে মারার শাস্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে সেখানকার নাগরিকেরা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সারা বিশ্বে সাকিনেহর মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল হয়েছে।
জর্জিয়াতে মহিলারা বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ সভা করেন তাদের ক্ষোভ এবং ঘৃণা প্রদর্শন করে এবং সাকিনেহর প্রতি সমর্থন জানিয়ে।
সারা বিশ্ব জুড়ে পাথর ছুঁড়ে মারার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছবিতে
ইরানী ব্লগার তালেলসিয়াসাত লিখেছেন [ফার্সী ভাষায়]:
যখন ইরানের বাইরে আমরা ইসলাম ধর্মকে শান্তি এবং সহমর্মিতার ধর্ম বলি, বিদেশীরা সাথে সাথেই আমাকে জানায় পাথর ছুঁড়ে মারা ও বেত্রাঘাতের শাস্তির কথা এবং এটি আমাকে লজ্জায় ফেলে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যে আমরা ইসলামের এবং মানবতার কথা বলে সাথে সাথে পাথর ছুড়ে মারা সমর্থন করতে পারি না.. এটি আমাদের সরকারের দ্বৈত নীতির একটি উদাহরণ যার মাধ্যমে এরা জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড দেয় আর তাদের মহানুভবতার কথা প্রচার করে।
উপরের ছবিটি প্রকাশ করেছেন সাহারগাহান এবং তার পোস্টের নাম দিয়েছেন “পাথর ছোড়া না কি পবিত্র অপরাধ”। এই ব্লগার, যিনি যে কোন রকমের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে, জানিয়েছেন যে পাথর ছুঁড়ে মারা হচ্ছে এর মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য।
মানব জীবনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত পাথর ছুঁড়ে মারা হচ্ছে সবচেয়ে লজ্জাজনক অপরাধ।