- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

দক্ষিণ কোরিয়া: টুইটার, শুধুই শোরগোল না সাহসী স্বীকারোক্তি?

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নাগরিক মাধ্যম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, প্রযুক্তি, ব্যবসা ও অর্থনীতি, শিল্প ও সংস্কৃতি

দক্ষিণ কোরিয়াতে এখন বেশ কিছু তারকা আর ব্যবসায়ীরা তাদের টুইটার বার্তার কারণে বিপদের মুখোমুখি হচ্ছে। কেবল টুইটারের সাথে এই অম্লমধুর সম্পর্কে জড়িত এইসব মানুষের ক্ষেত্রেই এটি হচ্ছে না যাদের টুইটার ক্ষতি করলেও তারা এখনো এটাকে পছন্দ করে। কিন্তু বেশ কিছু সাধারণ মানুষও অনেক অচিন্তনীয় ধাক্কা পেয়েছে শক্তিশালী টুইটার থেকে এবং তার পরবর্তী ফল ভোগ করেছেন।

ক্লায়েন্টোপিডিয়া নামক একটা সামাজিক মিডিয়া বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান এর জুনের রিপোর্ট অনুযায়ী টুইটারে কোরিয় ভাষা সব থেকে বেশী ব্যবহৃত হয় শতকরা ২.০৫ হারে বিশ্বব্যাপী তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। টুইটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় খুব অল্প হওয়াতে (বিশ্বে ০.৫ %) এটা বোঝা যাচ্ছে যে কোরিয়ানরা কিভাবে টুইটারকে অনুসরণ করে আর দেশে এর কি চাহিদা।

[1]

টুইটার কোরিয়া ওয়েবসাইটের [2] একটি চিত্র।

সর্বশেষ যে বিতর্কিত ঘটনায় টুইটার জড়িয়ে পড়েছে, তা মাত্র কয়েক দিন আগে ঘটেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার হিপহপ সঙ্গীত তারকা লি হা-নেউল কোরিয়ার মূল টিভি নেটওয়ার্ক এর সাথে বড় ধরণের সংঘাতের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সঙ্গীত অঙ্গনের ১৭ বছরের পুরোনো শিল্পী এই ৩৮ বছর র‍্যাপার যার হিপহপ দল ডিজে ডকের গান কোরিয়াতে অসংখ্যবার হিট হয়েছে, এসবিএসের সাথে তার টুইটার অ্যাকাউন্টের [3] মাধ্যমে একটা লড়াই শুরু করেছে। এসবিএস কোরিয়ার তিনটি প্রধান টেরেস্ট্রিয়াল স্টেশনের মধ্যে একটি। লি লিখেছেন যে এসবিএস এর সঙ্গীত অনুষ্ঠান ‘জনপ্রিয় সঙ্গীত’ এ তার দল এর অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কারন এই দল এসবিএসের টকশো ‘স্ট্রং হার্টে’ যোগ দেয় নি এসবিএস যেমন চেয়েছিল সেই ভাবে। এই ব্যাপারটি প্রায় নিশ্চিত করেছে বহুল বিশ্বাস করা টিভি স্টেশনের কর্মপদ্ধতি যে তারা সঙ্গীত শিল্পীদের একটা সুযোগ দেয় তাদের সঙ্গীত পরিবেশন করার এই শর্তে যে তারা নেটওয়ার্কের টক শোতে এসে দর্শকদের বিনোদন দেবেন। কেউ কেউ বিদ্রুপ করে এই ব্যবস্থাকে ‘১+১’ ধারা বলেছেন [4] যেমন ‘একটা কিনলে একটা বিনামূল্যে পাওয়া যায়’। এসবিএস লি এর অভিযোগ অস্বীকার করেছে আর বলেছে যে অনুষ্ঠান থেকে হঠাৎ করে ডিজে ডক এর চলে যাওয়া তাদের বিস্মিত করেছে, যেহেতু তারা শিডিউল বিভ্রাট ঠিক করার মধ্যে ছিলেন আর বলেছেন যে টক শো এর সাথে এই ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই।

লি এই বার্তাটি টুইট করেছেন:

누구를 위한 무대인가??강심장을 안 하면 자기네 방송에 출연 안 시켜주신다며 스케줄을 빼주셔서 고맙게도 널널한 주말 보내게 해주셨다. 가뜩이나 노래를 부를 수 있는 무대가 없어지고 있는 추세에 우리말고도 한번에 무대가 아쉬운 다른 선후배가수들이 이런 공갈압박을 받으며 활동하고 있다고 생각하니 기분 참 씁쓸하다… 음악방송pd를 향한 기획사들에 일방적인 짝사랑도 문제지만 지금은 잔뜩 어깨에 힘주고 가수들을 자기방송에 소모품 정도로 생각하는 pd들에 권위의식!! 토 나온다. 그런 방송 인기가요 우리 Doc는 안 하기로 했다.

কার জন্য এই মঞ্চ?? তারা (এসবিএস) আমাকে বাজে একটা সপ্তাহান্ত উপহার দিয়েছে ওই সঙ্গীত অনুষ্ঠানে গান গাওয়া থেকে আমাকে বিরত রেখে যেহেতু আমি স্ট্রং হার্ট অনুষ্ঠানে যাইনি। সঙ্গীতশিল্পীদের জন্য মঞ্চের পরিমাণ কমে যাচ্ছে আর প্রবীন/নবীন শিল্পীরা এতো জোরে চেষ্টা চালাচ্ছেন কেবলমাত্র একটি মঞ্চে আসতে, তাদের উপরে যে সব চাপ আর ঘৃণা বর্ষানো হয় সেটা সত্ত্বেও। এটা কঠোর বাস্তবতা…এটা খারাপ লাগে দেখতে সঙ্গীত অনুষ্ঠানের প্রযোজকের সাথে বিনোদন জগতের আঁতাত, কিন্তু আমার বমি পায় সঙ্গীত অনুষ্ঠানের প্রযোজকদের ধৃষ্টতা দেখলে, যারা মাথা উঁচু করে সঙ্গীত শিল্পীদের ফেলে দেয়া পণ্য হিসাবে ব্যবহার করেন। তাই আমরা (ডিজে) ডক ওই অনুষ্ঠান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেই।

বেশীরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারি যারা সঙ্গীত জগৎের এইসব ব্যবসার নোংরা ব্যাপার স্যাপার বিশ্বাস করেন, সাহসী মন্তব্যের জন্য লির প্রশংসা করেছেন, আর কেউ কেউ শো ব্যবসাতে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত বলে জানিয়েছেন [5]। একজন ব্লগার মন্তব্য করেছেন [4] যে শক্তিশালী সঙ্গীতশিল্পী ডিজে ডক টিভি নেটওয়ার্ক নিয়ে কঠোর মন্তব্য করতে পারেন, সম্প্রতি পরিচিত সঙ্গীতশিল্পী যাদের চেহারা মানুষের কাছে এখনও পরিচিত না কখনোই অভিযোগ করতে পারবে না আর তারা নিশ্চয়ই লি এর কাজকে প্রশংসা করবে।

কোরিয়ার কমেডির জীবন্ত কিংবদন্তী কিম মি হোয়া শো ব্যবসাতে ২৭ বছর ধরে আছেন এবং প্রায়শই তাকে মুখর ‘রাজনৈতিক বিনোদনকারী’ বলা হয় (রাজনীতি নিয়ে বিনোদনকারী)। তাকে রগরগে বিতর্কের মধ্যে টেনে নেয় বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে যখন তিনি (আর একটা বড় টেরিস্টেরিয়াল টিভি) কেবিএস এর কথিত কালো তালিকা নিয়ে টুইট করেন যেটা বিশ্বাস করা হয় কেবিএস থেকে সরকারের সমালোচকদের বাদ রাখার জন্যে করা। এখন কেবিসির পক্ষ থেকে করা মামলার মুখোমুখি উনি।

বেশীরভাগ কোরিয়ান যারা টুইটার ব্যবহার করেন না তারাও প্রকাশের ধরনের এই বিশাল নতুন ধারার মর্ম তারা অনুভব করেছেন, অনেকে কিছুটা অসুবিধা অনুভব করছেন অশোধিত এইসব বার্তার কারনে যা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে সরাসরি আসছে, আর উল্লেখ করার অপেক্ষায় রাখে না সংরক্ষণবাদী মিডিয়ার প্রতি টুইটারের কঠোর আক্রমণের ব্যাপারটি। রক্ষণশীল আর সমতাবাদিরা আরো বেশী গোপনীয়তা দাবি করছেন টুইটারকারিদের কাছ থেকে আর জোর দিচ্ছেন সামাজিক ঐক্যের প্রতি, যা কোরিয়ার মূল্যবোধের খুব মূল্যবান জিনিষ এবং তাকে নিরাপদ রাখা প্রয়োজন বলে তারা মনে করেছেন। ব্লগম্যানিয়া [6] ব্লগের ব্লগার মন্তব্য করেছেন যে এই ধরনের খোলামেলা প্রকাশ খারাপ আর অপ্রাসঙ্গিক, এটাকে ‘শোরগোল’ বলেছেন তিনি। এই ব্লগার মানুষকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে নতুন পাওয়া ‘পিটিশনারের এই ঢোল’ মাত্র কয়েকজনকে ক্ষমতাবান করতে পারে।

김미화의 블랙리스트 발언에 이어서 오늘은 DJ DOC 의 이하늘의 SBS 인기가요와 관련하여 트위터에 원색적인 비난을 하는 글을 올리면서 소통의 장이 되어야 할 트위터가 연예인들의 신문고가 되는 것이 아닌가 합니다…이 두건의 일들로만 보자면 힘없는 연예인들이 여론이라는 힘을 등에 없고 거대 기업(권력)에 도전하는 것처럼 보여져 또 다른 권력의 재 창출로도 해석 되어질 수 있기 때문입니다…앞으로도 자신이 부당한 일을 당하게 될 때마다 이런 일을 공론화하는 기능을 트위터가 맡을 것 같아서 그 결과가 어떻게 되든지 간에 그러한 일이 벌어질 때 마다 발생하게 되는 노이즈를 저와 같은 일반인들이 받는 것은 피치 못한 같아서입니다.

কিম মি ওয়া তার টুইটারে কালো তালিকার কথা বলার পরে, লি হা-নেউল এসবিএসের ‘জনপ্রিয় সঙ্গীত’ প্রোগ্রাম নিয়ে অশোধিত সমালোচনা টুইট করেছেন। টুইটারের কথা ছিল যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করার এখন তা বিনোদনের সিনমুনগো (কোরিয়ার ঐতিহাসিক পিটিশনারের ঢোলে) পরিণত হচ্ছে… এই দুই ক্ষেত্রে (কথিত) ক্ষমতাহীন বিনোদনকারীরা এই নতুন মিডিয়া দ্বারা ক্ষমতাবান হয়ে বড় কর্পোরেটদের (বা ক্ষমতাকে) প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন। আর এটা পরিষ্কারভাবে আর একটা ক্ষমতার পুনর্নির্মাণ… তারকারা যদি জনগনের সামনে অভিযোগ করতে চান টুইটারের মাধ্যমে যে কোন ধরনের অবিচারের জন্য, তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ এর ফলে সৃষ্ট ‘শোরগোল’ সহ্য করবে।

তবে, যারা টুইটার করেন না তাদের কাছে টুইটারের গুরুত্ব আছে। টুইটার থেকে সরাসরি আসা অশোধিত তথ্য অনেক ‘অপ্রাসঙ্গিক’ মানুষকে লজ্জায় ফেলে, বিশেষ করে শিংসেগি গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান চুং ইয়ং জিন এর ক্ষেত্রে। চুং প্রচুর টুইটার ব্যবহার করেন আর শিংসেগির মালিকানাধীন ই-মার্টের গ্রাহকরা ছোট ছোট সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করেছেন [7], যেমন কর্মীদের খারাপ ব্যবহার বা ফলের অবস্থা (কেউ কেউ দাবি করছেন তরমুজ খুব বেশী মিষ্টি না), মাঝের কারো সাথে কথা না বলে সরাসরি ভাইস চেয়ারম্যানকে। যদিও গ্রাহকরা দ্রুত প্রতিকার ভোগ করছেন, ব্যবস্থাপনার লোকদের কিছুটা দোষ দেয়া যায় যে এইসব জিনিষের ব্যাপারে তারা জানেন ও না। প্লাসব্লগ [8] ব্লগ মন্তব্য করেছেন যে টুইটারের সৌন্দর্য হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত বাণীর দ্রুত প্রচার আর অনভিপ্রেত ফল।

이런 가운데 트위터가 소통의 장으로 너무 트여있다라는 목소리가 일각에서 나오고 있는데요. 일단 트위터라는 서비스는 정보의 전파속도가 기존의 미디어보다 훨씬 빠르고 제제할 수 있는 수단이 없기 때문에 문제가 많이 제기되고 있습니다…검증되지 않는 내용의 정보들이 필터링 없이 빠른 속도로 대중들에게 퍼져나간다는 게 위험 할 수도 있는 것이 사실입니다. 하지만 검증이라는 함정에 빠지지 않고, 언론 조작이라는 더 위험한 현상들을 방지 할 수 있다는 점이 트위터의 장점이라고 할 수 있습니다.

অনেকেই তাদের চিন্তা জানিয়েছেন যে টুইটার খুব বেশী ‘উন্মুক্ত’ স্থান যোগাযোগের জন্য। টুইটারে, তথ্যের প্রচার সাধারণ মিডিয়ার থেকে খুব দ্রুত হয় আর কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ পন্থা দ্বারা এটা বাধাগ্রস্থ হয়না, তাই এটা বেশ বির্তক সৃষ্টি করে। কিন্তু এই বাস্তবতা যে অযাচিত তথ্য জনগনের মধ্যে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এটার মানে, অন্য দিক থেকে, যে টুইটার তথ্য জানাচ্ছে ‘যাচাই’ এর মরন ফাঁদে পা না দিয়ে। টুইটার মানুষকে মিডিয়ার হস্তক্ষেপের কারনে বিভ্রান্ত হওয়া থেকেও বাঁচায়। এগুলো টুইটারের শক্তি।

কোরিয়ার সংবাদ প্রতিবেদন বেশীরভাগ অকার্যকর টুইটারের ব্যাপারটা তুলে ধরছে আর কিভাবে এটা খারাপভাবে জনপ্রিয় মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এর জন্যে দায়ী স্থানীয় সাংবাদিকরা যারা মূলত ব্যক্তিগত টুইটারের পাতাকে জনগণের কাছে উন্মুক্তভাবে তুলে ধরেন যখন তারা টুইট এর পাতায় প্রতি ঘন্টায় খোঁজেন কোন বড় সংবাদের জন্য এবং তা রিটুইট করেন।