কাতার: বিদেশিরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করছেন

প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বিদেশী কর্মী আছেন গাল্ফ সহযোগিতা কাউন্সিলের দেশগুলোতে যার মধ্যে বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব, কাতার, ওমান আর সংযুক্ত আরব আমিরাত আছে, এবং এরা মোট জনসংখ্যার ৪০%। কাতারের প্রায় ১৭ লাখ লোকের মধ্যে মাত্র ২ লাখ মনে হয় স্থানীয়।

প্রায় সকল বিদেশী কর্মী তাদের দেশে ফিরে যান কাজের মেয়াদ শেষ হলে। কাতার লিভিং এ বিদেশিরা অবশ্যম্ভাবী সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে সচেষ্ট হয়েছেন: “বাড়িতে ফিরে তারা কি করবেন?”

ফিলিপাইন্সের ওবেদ কাস্ত্রো জুনিয়র এই আলোচনা শুরু করেছেন এই ভাবে:

আমি একজন ফিলিপিনো যে কাতারে নয় বছর ধরে আছে আর খুশি হয়ে বলছি যে এখানে আমার অবস্থান ফলপ্রদ হয়েছে। আমার নিজের বাড়ি আছে আর কিছু সঞ্চয় আছে, এখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার। কিন্তু ফিরে গিয়ে আমি কি করবো…অন্য সকল জাতির কাছেও একই প্রশ্ন ‘কাতারের জীবনের পরে আপনি কি করবেন”।

ডারমানা জলদি উত্তর দিয়েছেন:

থাকার জায়গা পাল্টাবে কিন্তু কাতারের মতই জীবন স্বাভাবিকভাবে চলবে…

আফ্রিন নাবিস যোগ করেছেন:

এখনো এটা নিয়ে ভাবিনি। এখন পর্যন্ত বাড়ি কেবল ছুটিতে যাবার স্থান…

আর ফ্রেক্সি পাঠকদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন:

অবশ্যই আপনি ব্যস্ত জীবনের অভাব বোধ করবেন। আপনি জানেন সকল জিনিষ অনিশ্চিত…কিন্তু কোন কিছুর জন্য প্রস্তুতি নেয়া খারাপ না…তাই আমার মনে হয় পরিকল্পনা করা উচিত যদি বাড়ি ফিরতে চান তো।

ওচিহা বলেন যে কাতারে সাড়ে পাঁচ বছর কাটিয়ে নিজের দেশে না থাকার অভাব তিনি বোধ করেন না:

মানুষ বলে নিজের দেশে ফিরে আরাম করার মজাই আলাদা। কিন্তু সত্যি বলতে, আমার এমন কিছু মনে হয় না। অবশ্যই আমি আমার পরিবারের অভাব বোধ করি, কিন্তু দেশে থাকার অভাব বোধ করি না।

এটা কি অদ্ভুত নাকি অনেকেই এমন মনে করেন। আমি এখানে ৫.৫ বছর ধরে আছি।

এক্স.এক্স.এক্সপ্যাট জবাব দিয়েছেন:

আপনি অভাব বোধ করেন বা না করেন। যদি আপনার জীবনধারনের মান আর কাজের সুযোগ এখানে ভালো হয়, তাহলে আপনার দেশের পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত আপনি কেন অপেক্ষা করবেন না?

আর ফুলিশ ব্যবসাতে ঢোকার পরামর্শ দিয়েছেন:

ছোট কোন ব্যবসা কেন শুরু করছেন না; জীবনে একবার তো মালিক হন। আমি এখন ডিম উৎপাদনের দিকে নজর দিয়েছি আর এটা ভালো করছে। পরিকল্পনা করছি সামনের বছর দেশে যাওয়ার, যদি ব্যবসা ভালো হয় তো।

আরিমোচিয়ানা এই ধারণা সমর্থন করেছেন আর বলেছেন:

মাঝে মাঝে ফিরে যাওয়াকে আমরা সব থেকে বেশী ভয় পাই যেহেতু দেশের অনেক কিছুই আমরা হারিয়েছি। আমরা ভাবি যে সেখানে এরই মধ্যে এতো কিছু পাল্টিয়ে গেছে আর আমরা সহজে মানিয়ে নিতে পারবো না, যখন সত্যি হচ্ছে যে আমরা অন্য একটা সংস্কৃতিতে আছি যেটার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।

প্রথমে শান্তি মত বসে, কষ্টার্জিত অর্থ ভোগ করুন। কিন্তু এটা নিশ্চিত করবেন যে পরিবার আর নিজের জীবন ধারণের ব্যবস্থা যেন করেন। আপনি জানেন ফিলিপাইন্সে পরিস্থিতি কেমন – অর্থ পানির মতো বয়ে যায়। আর আপনি বিদেশী শ্রমিক হওয়াতে সবাই ভাববে আপনি বস্তা ভর্তি টাকা এনেছেন।

সত্যি বলতে এখানে এইভাবে বেশ বাস্তবসম্মত, আমরা আমাদের দেশে ব্যবসা শুরু করি তারপরে যদি সেটা ঠিকমত চলে তখন ওইটা সময় দেশে ফেরার। এটি অবশ্য আমার নিজস্ব মত।

কিন্তু জনাব বালুত যারা দেশে ফিরতে চান তাদেরকে সাবধান করে দিয়েছেন:

১) দেশের অর্থনীতির খোঁজ করুন!

২) দেশের অপরাধের হার সম্পর্কে জানুন!

৩) দেশের আবহাওয়া সম্পর্কে খোঁজ নিন!

৪) বাকী জীবন বাঁচার মতো যথেষ্ট অর্থ আছে কিনা হিসেব করুন!

৫) খোঁজ করেন যে একবার অর্থ সংকট হলে, আপনার বয়স আছে কিনা আর একটা চাকরি পাওয়ার!

*** এইসব যদি আপনার অনুকূলে না থাকে তাহলে ফিরতি ফ্লাইট বাতিল করা ভালো! কাজে ফেরত যান!

যদি আপনি কোন জিসিসি দেশের দীর্ঘদিনকার বাসিন্দা হন, তাহলে আপনার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা কি? বাড়ি ফিরে আপনি কি করবেন?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .