মালয়েশিয়া: বিদেশী বিনিয়োগ হ্রাস

২০১০ সালের জাতিসংঘের বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ সংক্রান্ত রিপোর্টে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি সম্পর্কে সে দেশের নাগরিকের বিশদ জানার সুযোগ হয়েছে: ২০০৮ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিদেশী বিনিয়োগ প্রায় ৮১% হ্রাস পেয়েছে (২০০৮ সালে ৭.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০০৯ সালে ১.৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে)।

সংবাদ পোর্টাল মালয়েশিয়াকিনি এই ব্যাপারটিকে সহজভাবে প্রকাশ করেছে:

News portal Malaysiakini explained it in simpler terms:

২০০৯ সালে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত গড় বিনিয়োগের হারের অর্ধেকেরও কম। উল্লেখ্য ওই সময়টা ১৯৯৭ সালের অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উত্তোরণের সময় ছিল।

ডেমোক্রাটিক অ্যাকশন পার্টির নেতা টনি পুয়া তার ব্লগে বুঝিয়েছেন যে এই পরিসংখ্যান এর মানে কি:

১) ইতিহাসে এই প্রথমবার মালয়েশিয়া ফিলিপাইন্স থেকে কম বিনিয়োগ পেয়েছে।

২) ২০০৮ সালের সাথে তুলনা করলে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী বিনিয়োগ হ্রাস হয়েছে মালয়েশিয়ায়।

৩) দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়াই একমাত্র রাষ্ট্র যেখানে মোট ঋণাত্মক বিদেশী বিনিয়োগ দেখা গেছে।

৪) এই প্রথম বহির্গামী বিনিয়োগের সমষ্টির চেয়ে অন্তর্গামী বিনিয়োগের সমষ্টি কম হয়েছে।

৫) ২০০১ সালের কথা বাদ দিয়ে (যখন বিনিয়োগ ছিল মাত্র ০.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), গত বিশ বছরে এই প্রথম আমরা ২ বিলয়ন মার্কিন ডলারের চেয়ে কম বিদেশী বিনিয়োগ পেয়েছে।

মালয়েশিয়াকিনির রেজিনা লি এ বিষয়ে র‍্যাম হোল্ডিং গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়েহ কিম লেঙ্গ এর মন্তব্য তুলে ধরেছেন:

…মালয়েশিয়া থেকে যদি এই বিনিয়োগগুলো তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে চলে গিয়ে থাকে এবং তা আরও প্রযুক্তি সম্বলিত এবং উন্নতমানের বিনিয়োগে লাগান হয়ে থাকে তাহলে আমরা এই অঞ্চলে এগিয়ে থাকার অবস্থান থেকে পিছিয়ে পরব। বিশেষ করে যখন আসিয়ান আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহায়তার উপর জোর দিচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগ হ্রাসের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা আমাদের বিনিয়োগকে সমৃদ্ধ করতে পারব না এবং ছিটকে বেড়িয়ে যেতে হবে প্রতিযোগিতা থেকে। এটি শিল্পোন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। সংক্ষেপে বলতে গেলে মালয়েশিয়া তার দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক হারাবে। মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদে আমাদের উন্নত বিনিয়োগ ও উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হবে আমাদের পড়শিদের সাথে প্রতিযোগিতায় আমাদের এগিয়ে থাকা অবস্থানে ফেরত আনতে। মালয়েশিয়া হয়ত মাঝারি-আয় সম্বলিত দেশে পরিণত হবে।

তবে, মালয়েশিয়ার সংবাদ এজেন্সি বেরনামা রিপোর্ট করেছে যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রণালয় (মিটি) একটি বাণী প্রকাশ করেছে যে “২০১০ সালের প্রথম তিন মাসে বিনিয়োগ ২০০৯ সালের বিনিয়োগের সমান।” মন্ত্রী দাতুক সেরি মুস্তাফা মোহামেদ এই রিপোর্টে বলেছেন:

জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত বিদেশী বিনিয়োগ ৫.০৬ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতে দাঁড়িয়েছে, যেখানে সমগ্র ২০০৯ সালে বিনিয়োগ ৫.৬৬ বিলিয়ন মালয়োশিয়ান রিঙ্গিত ছিল।

তবে, দ্যা স্টার পত্রিকা বলেছে যে সিআইএমবি গ্রুপ হোল্ডিংসের সিইও দাতুক সেরি নাজির রাজাক বলছে:

এর মানে না যে কম বিনিয়োগ ফ্লো…আমাদের দেখা উচিৎ এই বিনিয়োগের গুণাগুণ সম্পর্কে এবং এর যুগোপযোগিতার ব্যাপারটিও খেয়াল রাখতে হবে।

জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর কামাল মালহোত্রা এর উপসংহার টেনেছেন এই ভাবে:

যদিও ক্রমহ্রাসমান বিনিয়োগ এবং অর্থনীতিতে প্রাইভেট সেক্টরের অবদান কমে আসার ব্যাপারটি ১০ মালয়েশিয়ান অর্থনৈতিক নীতিতে বিবেচনায় আনা হয়েছে, মালয়েশিয়ার জন্যে চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে এই নীতিকে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .