- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ফিলিপাইনস: রেল পরিবহণের ভাড়া বৃদ্ধির বিরোধিতায়

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, ফিলিপাইনস, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, তাজা খবর, নাগরিক মাধ্যম, পরিবেশ, প্রতিবাদ, ব্যবসা ও অর্থনীতি, রাজনীতি, সরকার

[1]

ছবি ওয়েইন.কম থেকে নেওয়া হয়েছে

মেট্রো রেল ট্রানজিট (এমআরটি) এর মেট্রো ম্যানিলা কমিউটার বা ম্যানিলার মেট্রো রেলের মত পরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর মত [2] ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। ফিলিপাইন সরকার গণ পরিবহনের ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান করার তার যে ক্ষমতা, তা প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করছে। পরিবহন পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত। এই পরিকল্পনা এক বিরুদ্ধ জনমত লাভ করেছে।

মূল্য বৃদ্ধি বেড়ে যাওয়ার মানে এ কমিউটার'স লাইফ এর জন্য ভোর বেলা ওঠা [3]

এখন এক সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে যে এমআরটির ভাড়া বাড়াতে পারে। যারা এমআরটির যাত্রী তাদের জন্য এটা খারাপ সংবাদ। অন্য দিকে যারা বাসের মাধ্যমে পরিবহন সেবা প্রদান করে তাদের জন্য এটা ভালো সংবাদ। তারচেয়ে বড় কথা, এর মানে হচ্ছে সকাল বেলা উঠে এক ঘন্টা আগে বাসা ছাড়া, যাতে ট্রাফিক জ্যামকে বা রাস্তার ভীগকে এড়ানো যায়, এমআরটির যে ভাড়া নির্ধারণ করবে যদি লোকজন তা প্রদান করার মত অবস্থায় না থাকে তাহলে এ ঘটনা ঘটবে।

যারা প্রতিদিনের মুজরি প্রতিদিন গ্রহণ করে, টাইন তাদের উপর এর প্রয়োগের বিষয়টি ভেবে চিন্তে দেখতে বলছেন [4]:

Malaking bagay din kahit gawing 25pesos sya. Parang maliit pero malaki ang epekto nito sa budget nating lahat. Parang dodoble ang bayad sa MRT. At ang isang stored value card ko, apat na sakay na lang? Que horror!

Paano na ang mga minimum wage earner? Eh iyong mga mas mababa pa sa minimum wage ang natatanggap? Pag tinaasan nila, mag-bubus na lang ang mga tao at lalong magkakabuhol-buhol ang traffic. Mas lalong ma-lalate ang mga tao sa trabaho, sa eskwela…

এমনকি যদি ভাড়া বৃদ্ধির পরিমাণ যদি ২৫ পেসো হয়, তাহলে বিষয়টি অনেক বড় ব্যাপার হয়ে দেখা দেবে। পরিমাণটি দেখতে অনেক ছোট, কিন্তু তা সবার ব্যয়ের উপর প্রভাব ফেলবে। বিষয়টি এমন যে এমআরটি তার ভাড়া দ্বিগুণ করে দিয়েছে। এবং একটি কার্ড দিয়ে আপনি মাত্র চারবার মেট্রোতে যেতে আসতে পারবেন? কি ভয়ানক অবস্থা!

যারা নূন্যতম বেতনের চেয়ে কম উপার্জন করে তাদের ক্ষেত্রে কি হবে? যদি এমআরটি ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, তাহলে লোকজন বাসে চড়বে এবং এবং রাস্তায় ভিড় বাড়াবে, এ ফলে সবাই প্রায়শই অফিস, স্কুলে দেরি করে গিয়ে হাজির হবে।

এ হ্যাপি মানচিকিন!!! বিশ্বাস করে যে এই প্রস্তাবনা অযৌক্তিক এবং অন্যায্য [5]:

ছাত্ররা কোথা থেকে এই বাড়তি ব্যয়ের অর্থ জোগাড় করবে? অবশ্যই [তাদের] পিতামাতার কাছ থেকে, যারা মূলত বিদ্যুৎ, ফোন, পানি, খাবার এবং এমনকি তাদের করের ক্ষেত্রে বাড়তি অর্থ প্রদান করে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী এলআরটি (লাইট রেলওয়ে ট্রানজিট) এবং এমআরটিতে (ম্যাস র‌্যাপিড় ট্রানজিট) চড়ে। যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করে কেন আমি প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় যাবার জন্য এলআরটি২ ব্যবহার করি? এর উত্তর খুব সাধারণ কারণ এলআরটির বদলে জীপ ব্যবহার করা আমার জন্য আর গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মারিকিনা থেকে পুরেজা পর্যন্ত যাতায়াত করি এবং সকাল ৭.৩০ মিনিটে আমার একটা ক্লাশ থাকে। এলআরটি ২০ মিনিটের মধ্যে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যায়, যেখানে একটি জিপানিতে (ম্যানিলার অন্যতম জনপ্রিয় যান, অনেকটা আমাদের দেশের টেম্পুর মত) আমাকে লম্বা সময় সিটে এবং দূষণের মধ্যে বসে থাকতে হয় (এখানে ট্রাফিককে যুক্ত করা হয়নি)।

এক ছাত্র নেতা [6] বলেন যে জনতার সেবায় গণ পরিবহনে ভর্তুকি প্রদান করা সরকারের দায়িত্ব:

রিডন বলছে যে যাতায়াত ব্যয় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে পাহাড় পরিমাণ খরচ যুক্ত হয়েছে তার মধ্য অর্ন্তভুক্ত, এই মধ্যে রয়েছে বাৎসরিক সাধারণ ব্যয় বা টিউশন ফি এবং অন্যান্য খরচ, যেগুলো ক্রমেই বাড়ছে, এর সাথে রয়েছে ব্যয়বহুল পাঠ্যবই এবং খাওয়া ও থাকার খরচ।

তিনি এছাড়াও বলেন, এই সরকার এলআরটি এবং এমআরটির ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান করতে বাধ্য, বিশেষ করে এমন এক সময, যখন দেশটি ক্রমাগত অর্থনৈতিক চাপ এবং শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধির মোকাবেলা করছে, যা গত দশকের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

এ র‌্যাডিকালস নাটস দেখাচ্ছেন যে [7] কর প্রদানকারী ব্যক্তিরা কেবল পরিবহন খাতের প্রকৃত ব্যয়ের উপর ভর্তুকি প্রদানের কাজটি করছে না, “একই সাথে তারা জাতীয় আন্তর্জাতিক ব্যাংক (ট্রান্সন্যাশনাল) ও বড় বিদেশী প্রতিষ্ঠানের দেশীয় সহযোগী সংস্থার ঋণ পাবার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান মিলে এমআরটি পরিকল্পনাটি গ্রহণ করেছে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ বা পিপিপি) মাধ্যমে”

আয়কর প্রদানকারী যে সমস্ত বেসরকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এমআরটি বা মেট্রো রেল ট্রানজিট কর্পোরেশন (এমআরটিসি) তৈরি করেছে তাদের গ্রহণ করা ঋণের ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদানে সহায়তা করে। তাদের ঋণ পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান করা বাইরেও, জাতীয় সরকার একই সাথে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে যে প্রতি বছর এমআরটিসিকে তাদের বিনিয়োগের ১৫ শতাংশ ফেরত প্রদান করবে, তাদের ২৫ বছর নির্মাণ-ইজারা- হস্তান্তর (বিল্ড-লীজ-ট্রান্সফার বিএলটি) চুক্তির কারণে, যা ১৯৯৭ সালে ডিওটিসির সাথে করা হয়েছিল।

এই তথা কথিত “ভর্তুকি” জাপানের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অফ জাপান, সুমিটোমো ব্যাংক এবং অন্য জাপানী ও চেক ব্যাংক এবং একই সাথে কিছু স্থানীয় ব্যাংক, যেমন ব্যাংক অফ ফিলিপাইন আইসল্যান্ড (বিপিআই)-এর উপর বর্তায়। যে চুক্তি এই সমস্ত ব্যাংকের ক্ষেত্রে অনেক বেশি বোঝা, যারা ১৯৯৮ সালে ৪৬২.৫ মিলিয়ন ঋণ প্রদান করেছিল সেই সমস্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে যে একই মালিকরা এমআরটি নির্মাণ করেছিল।

[8]

ছবি নেওয়া হয়েছে ফ্রান্সেস এলাইন বেলিকারিও ট্রাজোর ফেসবুক অ্যালবাম থেকে

এদিকে এক যুব সংগঠনের মুখপাত্র বলছে [8], সরকার দাম বাড়ানোর জন্য যে যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে তা যথেষ্ট নয়:

“গণ পরিবহন প্রাচীন এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সুবিধা প্রদান করছে যা ডিওটিসি উদ্ধৃত করেছে। কেবল তা ফিলিপিনো নাগরিকদের যাতায়াতের মূল্য কমিয়ে দেয়নি, এটি একই সাথে অনেক ধরনের যান ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এই বিষয়টি প্রধান সব সড়কে ট্রাফিক জ্যাম ও বায়ু দূষণের পরিমান কমিয়ে দেয় এবং মোট জ্বালানি তেলের ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে আনে”।

যুব নেতা যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ব্রুকিং ইনিষ্টিটিউটের একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করে বলেন জনতা যে সমস্ত যান ব্যবহার করে তার অর্ধেক জ্বালানী লাগে তা সাধারণ গাড়ি, বড় ধরনের গাড়ি ( স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেইকেলস বা সাভস) ও হালকা ট্রাকের জন্য। একই গবেষনা জানাচ্ছে, প্রতি মাইল যাত্রায় ব্যাক্তিগত যান, রেল বা কমিউটার ট্রেনের চেয়ে ৯৫ শতাংশ কার্বন মনোঅক্সাইড ও ৫০ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে।

অন্য এক গবেষনা যা জাপানে করা হয়েছে, সেখানে হিসেব করে দেখা হয়েছে, রেল যেখানে প্রতি ১০০ কিলোমিটারে প্রতি ঘন্টায় ৬ কিলো ওয়াট (কেডাব্লিউএইচ) বা তার সম পরিমাণ শক্তি গ্রহণ করে, সেখানে বাস প্রতি ১০০ কিলোমিটারে ১৯ কিলোওয়াট এবং গাড়ি প্রতি ১০০ কিলোমিটারে ৬৮ কিলোওয়াট শক্তি গ্রহণ করে।