প্যালেস্টাইন: বাধ্যতামূলক সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে বলার সম্ভাবনা?

হামাস সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, ফাতি হাম্মেদ এই সপ্তাহের শুরুতে ঘোষণা করেন যে তিনি গাজার সামরিক শক্তি বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছেন। প্রাথমিক ভাবে স্বেচ্ছাসেবী কর্মী এবং এরপর বাধ্যতামূলক ভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে সামরিক শক্তি তৈরির মাধ্যমে তিনি এর শক্তি বৃদ্ধি করবেন। গাজায় বর্তমান নিরাপত্তা বাহিনীতে বেতনভুক্ত সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০,০০০। গাজার ব্লগাররা বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেবার এই ধারণাটি ব্যাপারে বিস্ময়ের সাথে প্রতিক্রিয়া প্রদান করেছেন।

Palestinian youths

ফিলিস্তিনী তারুণ্য ছবি রাস্টি স্টুয়ার্টের, ব্যবহার করা হয়েছে ক্রিয়েটিভ কমন্স এট্রিবিউশন-নন কর্মাশিয়াল-নো ডেরাইভেটিভস লাইসেন্সএর অধীনে

সীরান নোফাল লিখেছে:

الخبر الذي شاعَ صيته في الشارع الغزّي والذي يتضمن فرض قانون التجنيد الإختياري ومن ثمَّ الإجباري على المواطنين الغزّيين ،هذا القرار الذي صدر من وزير الداخلية في الحكومة المقالة “فتحي حمّاد” ، إذ أنّ هذا الوزير قد صرّح بأن هذا “التجميد” ، أقصد التجنيد ما هو إلا وسيلة لزيادة الدفاع عن فلسطين ولزيادة قوة “الجيش الفلسطيني” في التصدي للإحتلال.
عندما قرأت الخبر على الوكالات الإخبارية المحلية راودني شعور بالإستغراب من جهة وشعورُ برغبة جامحة بالضحك من جهة أخرى ، فقرار مثل هذا الذي يتحدث عنه وزير الداخلية ليس بالقرار المنطقي ، بنظري هو قرار “رومنطيقي” نابع عن سيطرة الأحلام والمشاعر على متخذ القرار ، فهو يظن أنه دولة مستقلة خالية من المشاكل والحروب ،ولديه إستقلال تام ولديه سلطته الباهرة التي تخوله لفرض قانون لا يصلح لا لزمان ولا لمكان ولا تتوفر فيه الظروف التي تؤدي إلى تطبيقه.
এই সংবাদ দ্রুত গাজার রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে গাজার নাগরিকদের জন্য যেটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাড়ায় তা হচ্ছে বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার চেয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি। এই আদেশ জারির ঘোষণা করা [এ রকম এক সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ] হয়, কার্যত এই মূহূর্তে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণকারী সরকারের (মূলত হামাস ও ফাতাহর দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে এখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস নামক দলটি, যারা সেখানকার কার্যকরি বা ডি ফ্যাক্টো সরকার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দপ্তর থেকে। মন্ত্রী ফাতি হামিদ ঘোষণা দিয়েছেন যে এটি রাষ্ট্রকে “সুদৃঢ়করণ” করবে, “আমি বোঝাতে চাইছে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারটি, যা খুব সহজে প্যালেস্টাইনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং তা প্যালেস্টাইনের সেনাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করবে, যা এই উপসাগরীয় এলাকার দখলিস্বত্ব বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়”।

যখন স্থানীয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমি এই সংবাদ পাঠ করি, আমার ভেতরে একদিকে বিস্ময়কর অনুভূতির জন্ম নেয় এবং অন্যদিকে প্রচন্ড হাসির গমক তৈরি হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মত একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে এ রকম এক আদেশ আসা মোটেও যৌক্তিক নয়; আমার মতে এটা একটা “আবেগময়” সিদ্ধান্ত, যা আইন প্রণেতাদের নিয়ন্ত্রণের এক মাধ্যম যা তাদের স্বপ্ন এবং আবেগের মধ্যে রয়েছে; তিনি মনে করেন এটি একটা স্বাধীন রাষ্ট্র, যার ভেতর কোন সমস্যা এবং যুদ্ধ নেই, তিনি মনে করেন এই রাষ্ট্রটি পুরোপুরি স্বাধীন এবং এর গৌরবোজ্জ্বল কর্তৃপক্ষ তাকে যে আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা দিয়েছে, তা সময় বা স্থানের বাস্তবতায় যথাযথ নয় এবং ঘটনাবলি তাদের জন্য আদেশ বাজায় রাখার কোন শর্তই পুরণ করে না।

ভদ্রমহিলা উপসংহার টানেন এভাবে:

أنا لستُ أتهجم على متخذ القرار ،إنما أحاول أن أكون “منطقية” يسيطر عليّ عقلي وأحاول أن أرمي “رومنطقيتي” أدراج الرياح ، فالتجنيد الإجباري الذي من المتحمل أن يتم تطبيقه سَيُولد تداعيات كثيرة أهمها ترسيخ الإنقسام ، بالإضافة إلى أن الشعب الغزاوي على ما أعتقد لم ولن يتقبل هذا الأمر بصدر رحب إذ يكفيه ما هو فيه من شقاء وغصة عيش.
هذا القرار ذكُرني بالدولة العثمانية حينَ كانت في أوج قوتها وحين كانت لها سيادتها في إتخاذ القرار وحين كانت لها سطلة كاملة على كافة الدول تقريبا فكانت تفرض التجنيد الإجباري ، أونحن أصبحنا “دولة عُثمانية” كي يتم إصدار مثل هذا القرار؟ أونحن نتمتع بقوة وسيادة كافية؟ ألسنا نخضع لمتحلٍ قادرٍ على أن يسحق المجندين كما فعلت في الحرب الماضية؟
এছাড়াও, আমি বিশ্বাস করি যে গাজার লোকজন এর আগে এবং ভবিষ্যৎ-এ, মুক্ত অস্ত্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে না। তারা ইতোমধ্যে যথেষ্ট ভুগেছে এবং যন্ত্রণা পেয়েছে। এই আদেশ আমাকে অটোমান (তুর্কী ওসমানিয়া) সাম্রাজ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, যখন সে তার ক্ষমতার শিখরে ছিল, যখন সে সাম্রাজ্যে আদেশ জারী করার মত স্বাধীন ক্ষমতা ছিল। যখন তার প্রায় সবগুলো দেশগুলোর উপর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব ছিল, এবং যখন তার বাধ্যতামূলকভাবে লোকেদের সামরিক বাহিনীতে যোগদান করার আদেশ দেবার মত ক্ষমতা ছিল। আমরা কি অটোমান সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছি, যার ফলে আমরা এ ধরনের একটি আদেশ জারি করেছি? আমরা কি সর্বোচ্চ ক্ষমতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব উপভোগ করছি? আমরা কি এক শক্তিশালী দখলদারিত্বের শিকার হইনি, যারা আমাদের সেনাদের সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করে, যা গত যুদ্ধে ঘটেছে?

ব্লগার কালাম লিখেছে::

أكبر شرف للإنسان أن يثبت في ساحات الوغى وأن يكون ذو دور فاعل وبناء في الدفاع عن وطنه على أن يكون ذلك بوعي وتلائم مع الواقع.
أخيرا صار النا جيش يا جماعة وعنا تجنيد اجباري، وعلشان ما نتفاجأ راح نبدأ بالتجنيد الاختياري، كلام جميل وحلو وتطرب له الآذان ولكن دعونا نفكر في الدواعي والأسباب لذلك:
একটি মানুষের জন্য সর্বোচ্চ সম্মানের বিষয় হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেকে প্রমাণিত কর, যার মধ্য দিয়ে সে কিনা তার স্বদেশ রক্ষায় সক্রিয় এবং গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে, যা সচেতনভাবে এবং এটি বাস্তবতার সাথে মিলে যায়।

অবশেষে বন্ধুরা, আমরা একটি সামরিক বাহিনী পাচ্ছি এবং তার সাথে বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে ভর্তি হবার আদেশ। এতে আমরা বিস্মিত নই। আমরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া শুরু করব, সুন্দর, মিষ্টি বাক্য যা কানকে আনন্দিত করে। কিন্তু চলুন আমরা এর কার্য এবং কারণ নিয়ে চিন্তা করি [বাধ্যতামূলক সামরিক বাহিনীতে যোগদানের বিষয়টি নিয়ে];

এরপরে কালাম সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যর বিষয়ে একটি প্রশ্নের তালিকা প্রদান করেছে:

1. هل نحن بحاجة فعلا لأن ندرب كل أفراد الشعب على الأسلحة والقتال؟
2. هل الاجتياحات الاسرائيلية مقطعة بعض هالأيام؟ وهل هناك صواريخ تطلق من الضفة أو غزة؟
3. إن كنا سنوافق على دولة في حدود 67 فلماذا اذن نستعد للحرب ولمن؟
4. ان كنا مأمورين بالإعداد “وأعدوا لهم ما استطعتم من قوة ومن رباط الخيل ترهبون به عدو الله وعدوكم” صدق الله العظيم، فهل هذا المقصود بذلك؟
5. هل ما يقال هو عبارة عن جعجعة اعلامية فقط ونشاط استعراضي؟
6. ما هي الخطة الوطنية التي سيتم على أساسها التدريب؟
7. ألا يكفي الشباب المنخرط في أجهزة السلطة – القديمة والجديدة- أو في التنظيمات الفلسطينية -الكثيرة جدا جدا جدا- لمواجهة العدو وبالتالي نحتاج لتجييش الشعب كله؟
8. هل أصبحنا دولة مستقلة فعلا وأصبح لدينا جيش نظامي؟
9. هل ستقبل اسرائيل بمثل هذه الخطوة؟
১. সত্যি কি আমাদের সমাজের সকল সদস্যদের অস্ত্র চালনা এবং খুন করার প্রশিক্ষণ দেবার প্রয়োজন রয়েছে
২. ইজরায়েলী অগ্রাসন কি এখন ঘন ঘন ঘটছে? গাজা বা পশ্চিম তীর থেকে কি রকেট তাদের দিকে নিক্ষেপ করা হচ্ছে?
৩. ১৯৬৭ সালে নির্ধারিত সীমানার দ্বারা নির্ধারিত এই রাষ্ট্রের ব্যাপারে যদি আমরা একমত হই তাহলে কেন যুদ্ধের প্রস্তুতি এবং কার সাথে?
৪. যদি আমাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে, এবং “তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নেওয়া, যাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে তোমার ক্ষমতা থাক বা না থাক, এবং যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত হওয়া, যার মধ্যে দিয়ে তোমরা হয়ত আল্লাহের শত্রুদের মনে ভয়ের সৃষ্টি করতে পার” [সুরা আল-আনফাল], এর উদ্দেশ্য কি এই?
৫. যা বলা হচ্ছে তা কেবল প্রচার মাধ্যমের প্রবেশের জন্য এক ধরনের সাহসিকতা, এটি কেবল প্রদর্শনের জন্য?
৬. এ ক্ষেত্রে জাতীয় কৌশলের ভিত্তি কি হবে যার উপর ভিত্তি করে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে ?
৭ সকল তরুণেরা কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত (নতুন বা পুরাতন) অথবা (খুব, খুব, খুব বেশি) প্যালেস্টাইনি প্রতিদ্বন্দ্বি দলগুলো শত্রুর মুখোমুখি হচ্ছে, এই কি যথেষ্ট নয়? এর ফলে কি আমাদের পুরো জনতাকে সামরিকী করণ করতে হবে?
৮ আমরা কি একটা স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি, এবং আমরা কি নিয়মিত একটি সামরিক বাহিনী রাখার মত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি?
৯. ইজরায়েল কি এ ধরনের একটি পদক্ষেপ মেনে নেবে

সে বলেই চলেছে:

10. ماذا سيحدث لو قصفت اسرئايل عدة مواقع للتدريب هل سنتراجع عن المشروع؟
11. من اين سنوفر المعدات والرصاص اللازم للتدريب ونحن في حصار خانق؟
12. من اين سندفع مكافآت المجندين والحكومة تعاني من ازمة مالية خانقة؟
13. هل سيذهب الشباب للتطوع في “الجيش” حبا في الوطن ودفاعا عنه أم بحثا عن فرصة عمل مرتقبة؟
14. هل تكفي مدة 3-9 شهور لتخرج لنا مجندا قادرا على التعامل مع الأسلحة؟
في المقابل أعتقد أن هذه الخطوة من شأنها أن تساهم في حل مشكلة البطالة فبدلا من “أن يسند الشباب الحيطان” سيجدون مكانا يفرغون فيه مسدساتهم وطاقاتهم.
১০. যদি ইজরায়েল বেশ কিছু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বোমা বর্ষণ করতে শুরু করে তাহলে কি হবে; তাহলে কি প্রকল্প বাতিল হয়ে যাবে?
১১. কি ভাবে আমরা প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং বুলেট সরবরাহ করব, যেখানে আমরা এক শ্বাসরুদ্ধকর অবরোধের মধ্যে রয়েছি?
১২. কি ভাবে আমরা এই সমস্ত নিয়োগ প্রাপ্তদের বেতন দেব, যেখানে সরকার বেশ অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছে?
১৩. তরুণরা কি “সামরিক” বাহিনীতে ভালোবাসা ছাড়াই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করবে এবং দেশের প্রতিরক্ষা করবে নাকি তারা ভবিষ্যৎ পেশা হিসেবে একে গ্রহণ করবে?
১৪ সৈনিক হবার জন্য আমাদের পক্ষে তিন থেকে নয় মাস কি যথেষ্ট যারা অস্ত্র হাতে নেবার জন্য কি যথেষ্ট?

অন্যদিকে আমি মনে করি, এই পদক্ষেপ বেকারত্ব দুর করার ক্ষেত্রে কাজে লাগবে, তরুণরা ‘দেওয়াল ধরে রাখার’ বদলে তারা এমন এক স্থান যাবে যেখানে তারা তাদের শক্তি প্রকাশ করতে পারবে এবং তাদের বন্দুক।

একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে কালাম উপসংহার টানেন:

نحن تحت احتلال …………….. تحت احتلال ……………………… تحت احتلال
আমরা এক দখলদারিত্বের মধ্যে বাসবাস করছি….. এক দখলদারিত্বের মধ্যে….. এক দখলদারিত্বের মধ্যে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .