- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

জর্ডান: প্রযুক্তি কি আমাদের রোমান্টিকতাকে হত্যা করছে?

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., জর্ডান, উন্নয়ন, নতুন চিন্তা, নাগরিক মাধ্যম, প্রযুক্তি

[1]

বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া চিঠি, ছবি ডি সারন প্রুইট-এর

কম্পিউটার ও প্রযুক্তি আমাদের প্রতিদিনের জীবনে এক গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে। জর্ডানের এক ব্লগার ডাকের মাধ্যমে চিঠি পাওয়ার সেই রোমান্টিক বা প্রেমময় মুহূর্তটি স্মরণ করছে এবং ভদ্রমহিলা তার ব্লগে ঘোষণা দিয়েছে:” আমি যন্ত্রকে ঘৃণা করি”।

যন্ত্রকে ঘৃণা করার তার কারণগুলোকে উম্ম ওমর সারসংক্ষেপ [2]করেছে (আরবী ভাষায়), যা নিচে দেওয়া হল:

من جهـه لإنها قتلت فينا مشاعر وأحاسيس مارح يعرفها الجيل الجاي ,, مارح يعرف الشوق واللهفه والإنتظار اللي كنا نستمتع فيه أيام ما كانت الرسائل على الورق,, تقعد أسبوع بحاله تفكر ايش بدك تكتب بمكتوبك,,و تغير اللي كتبته الف مره
وتتردد وإنت رايح ع مكتب البوسطه,, وبعد ما تحطه,, ترسم في خيالك الري أكشن ع الوش اللي رح يستلمه…
একদিকে বলা যায়, এটা আমাদের আবেগকে ধ্বংস করে ফেলেছে, পরবর্তী প্রজন্মের অনুভূতিকে আর কখনোই জানা যাবে না। তারা কখনোই উপলব্ধি করতে পারবে না কাগজের টুকরোয় লেখা চিঠির জন্য লম্বা সময় ও ধৈর্য্যের সাথে অপেক্ষা করার যে মজা সে বিষয়টি। একটা কাগজে কি লেখা হবে সেই চিন্তায় একজন পুরো একটা সপ্তাহ ব্যয় করত এবং কাগজে যা লেখা হত, তা হাজার বার কাটাকুটি করা হত। আপনি চিঠি লিখতে বসে সময় নষ্ট করতেন, কারণ ভাবতেন চিঠিটা জমা দেওয়ার জন্য পোস্ট অফিসের পথে এবং ডাকবাক্সে ফেলার পর চিঠির সাথে আপনি উড়ে চলে যাচ্ছেন, এবং মনের কল্পনার পাগলা ঘোড়া ছুটিয়ে দিতেন, যিনি চিঠিটা পাচ্ছে তার মুখে কি ভাব ফুটবে সেই কথা ভেবে।

ভদ্রমহিলা বলেই চলেছে:

يا ترى رح يضحكه هالشي اللي بعتتله إياه,, يا ترى أوفيته حقه من كلام وإلا لأء,,, يا ترى رح يزعل مني وما يرد ع المكتوب,,يا ترى ,, يا ترى
আপনি হয়ত ভাববেন: আমি যা লিখেছি তা পড়ে সে কি হাসবে? আমি কি আমার শব্দের প্রতি ন্যায়বিচার করেছি, নাকি সঠিক শব্দ ব্যবহার করিনি… যদি সে চিঠি পড়ে রেগে উঠে এবং চিঠির উত্তর না দেয়…আমার প্রিয়তম কি উত্তর দেবে..
يضل هالشي يلاخم فيك أيام وأيام,, وتروح ع مكتب البوسطه أكثر من مره ,, وأحيانن مرتين وثلاث بنفس اليوم
ت تستلم مجرد ورقه,, عليها كل شي بتتأمله بحياتك,, عليها ضحكتك السريه,, عليها قصه صغيره مابعرفها غيرك,, إنكتبت بس ل إلك,,
بس عشانك,,
بتضمها ,.,
بتشمها,, ,,
بتخليك بعالم غير هالعالم,, مع إنها دوبك ورقه فولسكاب
আপনি দিনের পর দিন উদ্বিগ্ন হতে এবং চিন্তা করতে থাকবেন এবং বারবার পোস্ট অফিসে ছুটে যাবেন, কোন কোন সময়ে দিনে দুই বা তিনবার পোস্ট অফিসে যাবেন, যতক্ষণ না একটা কাগজের টুকরা হাতে আসে, এই টুকরা সেই চিঠি,যে চিঠিটা আপনি পাবার আশা করছিলেন। চিঠি পাবার পর নিজের দিকে তাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি দেবেন, যখন আপনি একটা ছোট্ট গল্পের সাথে চিঠিটা পাবেন এবং যে চিঠির কথা কেউ জানে না, এবং যে চিঠি কেবল আপনার জন্য লেখা হয়েছে….
কেবল আপনারই জন্য লেখা…
চিঠিটিকে আপনি বুকে জড়িয়ে রাখবেন….
চিঠির গন্ধটা শুঁকবেন…
এটা আপনাকে অন্য এক জগৎ-এ নিয়ে যাবে..যদিও তা কেবলই কাগজের এক টুকরা।
أيام ,,, وأيام وإنت فرحان فيها وحاسس حالك بدك توقف الناس اللي بالشارع ت تحكيلهم عن فرحتك,, وترجع فيك الدوامه من جديد,, وتبلش بدك تكتب مكتوب
ثاني,,,,,……
চিঠি পাওয়ার ফলে তা দিনের পর দিন এক সুখ আবেশ আপনাকে জড়িয়ে ধরবে এবং আপনার মনে হবে রাস্তার লোকদের দাঁড় করিয়ে তাদেরকে এই ভালোলাগার কথা জানাই। এই ঘটনাটি আপনি আবার ঘটাতে চাইবেন এবং আরেকটা চিঠি লিখতে শুরু করবেন……

হাইথাম আল শিশানি প্রতিউত্তর করেছে:

متفق معك أن التكنولوجيا اختزلت الكثير الكثير من المشاعر الجميلة الصادقة.
طبعا ً هي زادت من سعة الانتشار و سهلته أيضا ً.

إيجابيات و سلبيات كل مسألة كغيرها 🙂

আমি আপনার সাথে একমত যে প্রযুক্তি আমাদের এই সব সুন্দর এবং সত্যিকারের অনুভূতিগুলোকে অনেকখানি কমিয়ে দিয়েছে। অবশ্য বলা যায়, প্রযুক্তি সবার মাঝে সবকিছু ছড়িয়ে দেবার বিষয়টিকে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সবকিছুকে অনেক সহজ করে ফেলেছে।

এ রকম খুঁটিনাটি অনেক বিষয় রয়েছে, আরো অনেক বিষয়ের মতই 🙂

পাঠক আশরাফ মহিউদ্দেন এর সাথে যুক্ত করেছেন:

التكنولوجيا وعلى رأسها النت أصبحت أساس التواصل في العلاقات الاجتماعية في هذه الأيام .

أما المشاعر والأحاسيس الجميلة التي أصبح من الممكن إيصالها للطرف الآخر بدون عناء ومن خلال كبسة زر إن جاز التعبير فهي دلالة هذا العصر المتسارع في كل شيء مما جعلها كمطاعم الوجبات السريعه 🙂

প্রযুক্তি, যার অন্যতম এক নেতৃত্বে রয়েছে ইন্টারনেট, যা এখন সামাজিক যোগাযোগের প্রধান এক মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুন্দর অনুভূতি এবং আবেগের ক্ষেত্রে বলা যায়, এগুলোকে এখন বড় কোন সমস্যা ছাড়া এবং কেবল একটি চাবি টিপে পাঠানো সম্ভব। যে গতিশীল জীবন আমরা যাপন করছি এটা তার এক অন্যতম প্রমাণ, এই বিষয়গুলো এ সমস্ত আবেগকে ফাস্ট ফুড বা দ্রুত খেয়ে শেষ করা খাবারের মত করে ফেলেছে 🙂

শেষ, কিন্তু সর্বশেষ নয়, হোয়াইট ফ্রিডম জানাচ্ছে:

التكنولوجيا ضيعت علينا معنى التواصل حتى في الاعياد بدل ماتتصلي وتباركي صرنا نرسل رسالة من الجوال وخلاص
وحتى الرد عن طريق الجوال هههههههههههه عن جد صرنا في عالم ثاني
وما اومك بس التكنولوجيا تنفع في اشياء ثانية لكن سوء الاستخدام هو الذي جعلها ( مكروهه وفاقدة للمعنى

একজনের সাথে অন্যজনের সত্যিকারের যোগাযোগের যে অর্থ প্রযুক্তি তা পাল্টে ফেলেছে, এমনকি উৎসবের বেলাতেও তা ঘটছে। একজনকে বাসায় ডাকা এবং তাকে অভিনন্দন জানানোর বদলে আমরা এখন মোবাইলের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত বার্তা বা টেক্সট মেসেজ পাঠাই এবং এই একটাই কাজ করি। এছাড়াও আমরা অন্য কোন সংক্ষিপ্ত বার্তা বা টেক্সটে মেসেজের উত্তরে আরেকটা একই রকম বার্তা পাঠাই। পৃথিবী সত্যি পাল্টে গেছে। আমি আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। অন্য অনেক ক্ষেত্রে প্রযুক্তি প্রয়োজনীয় উপাদান এবং এর অপব্যবহারের কারণে এর প্রতি ঘৃণা তৈরি হচ্ছে এবং এর সত্যিকারের মানে হারিয়ে যাচ্ছে।

সত্যি কি প্রযুক্তি আমাদের প্রেমময় অনুভূতি ছিনিয়ে নিচ্ছে? মন্তব্য বিভাগে মন্তব্য করে এই বিতর্কে যোগ দিন।

ছবির কৃতিত্ব:
ডি সারন প্রুইট [3]-এর