ক্যাম্বোডিয়া: বৌদ্ধভিক্ষুদের নৈতিকতার অধ:পতন?

ক্যাম্বোডিয়ার প্রায় অধিকাংশ লোকই বৌদ্ধধর্মাবলম্বী এবং বুদ্ধ ধর্ম সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত একটি রাষ্ট্রীয় ধর্ম। তাই বৌদ্ধভিক্ষুদের নৈতিকতার অধ:পতন সংক্রান্ত সাম্প্রতিক খবর দেশে উদ্বেগের কারণ ঘটিয়েছে।

বেশ কয়েকটি ঘটনায় বৌদ্ধভিক্ষুদের দেখা গেছে সহিংস আচরণ বা অনৈতিক ব্যবহার করতে যেমন যৌনাচারে লিপ্ত হওয়া বা যৌনতায় ভরা ভিডিও দেখা। সাম্প্রতিক এক ঘটনায় এক প্রাদেশিক প্রধান ভিক্ষুকে মাতাল অবস্থায় আরেক ভিক্ষুকে প্রহার করতে দেখা গেছে যে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনে নি কারণ এই প্রধান ভিক্ষুকে প্রদেশে রাজার মত সম্মান করা হয়। আরেক ঘটনায় একজন ভিক্ষুকে সেই সব নগ্ন নারীদের ভিডিও করতে দেখা গেছে, যারা বৌদ্ধমন্দিরে এক ধর্মীয় আচারের জন্যে গিয়েছিল। এই আচার অনুযায়ী ভিক্ষুদের দেয়া পানি সবার জীবন থেকে অশুভকে তাড়ায় এবং সৌভাগ্য বয়ে আনে। এ নিয়ে তদন্তের পর একটি গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটে তবে বাজে ব্যাপার হচ্ছে মোবাইল ফোন থেকে ফোনে ব্লুটুথের মাধ্যমে এই ভিডিওগুলো ছড়িয়েছে। এই ব্যাপারটি প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে ক্যাম্বোডিয়ার প্রযুক্তির উন্নয়নকে যেখানে যৌন ভিডিও সহজে এভাবে ছড়াতে পারে। তবে চ্যান নিম এর মত অনুযায়ী এই ব্যাপারটিকে মানুষের বিবেকের উপরেই ছেড়ে দেয়া উচিৎ যারা প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করবে।

অন্যদিকে, দেশে অনেক ভাল ব্যবহারকারী ভিক্ষু রয়েছে যারা প্রযুক্তির সহায়তায় ধর্মীয় শিক্ষা প্রচারের ব্যাপারটিকে মূল্য দেন। বর্তমানে যেমন যুবাশ্রেণীর অনেক ব্লগ দেখা যায় যারা যারা সামাজিক, প্রযুক্তিগত এবং ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে ব্লগে লিখছেন। পাশাপাশি অনেক বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে ব্লগও দেখা যায় যেমন বোধিকরম, স্যালোইউর্ম, খেমার বুদ্ধিজম ইত্যাদি। বৌদ্ধ ধর্মের দার্শনিক দিকগুলো নিয়ে বিস্তারিত শিক্ষাধর্মী বিষয়বস্তু ইংরেজী ও খেমার ভাষায় অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে অভিধান, পডকাস্ট, পাঠ্যবই ও ছোট মন্তব্য আকারে। এছাড়াও অনেক বৌদ্ধভিক্ষু ইন্টারনেটের সর্বোচ্চ ব্যবহার করছেন অনেক লোকের কাছে ধর্মীয় বার্তা পৌঁছানোর জন্যে। শ্রদ্ধেয় স্যালোইউর্ম সাবাথ যে রকম ফেসবুকের মাধ্যমে ধর্মীয় বার্তা ছড়াচ্ছেন। এভাবে তিনি তার অনুসারীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারছেন এবং তারা সরাসরি তাকে বৌদ্ধধর্মের নীতি বা কোন বিশেষ অংশের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে পারছে।

ক্যাম্বোডিয়ার সাংস্কৃতিক আর শিক্ষামূলক ঐতিহ্যের মধ্যে বৌদ্ধ প্যাগোডার বিশেষ স্থান রয়েছে। সমাজে এদের অনেক অবদান। সবাই আশা করে যে বৌদ্ধভিক্ষুদের নৈতিকতা সুরক্ষিত রাখার মাধ্যমে জনগণ বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি তাদের আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপন করতে পারবে। দেশের সামগ্রিক ঐক্যতা – বিশেষ করে খেমার রুজ সরকারের নিপীড়নের শিকারদের মানসিক শান্তির জন্যে বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা দরকার যাতে তারা তাদের প্রতিশোধের চিন্তা এবং ক্ষোভকে বশীভূত রাখতে পারে।

ছবি এডাম জোন্স, পিএইচডির ফ্লিকার পাতার সৌজন্যে

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .