গত ২৯শে জুন গ্রেপ্তারকৃত রাশিয়ার গুপ্তচর নেটওয়ার্ক এর ১১ জন কথিত সদস্যরা (যাদের এফবিআই এর রিপোর্টে ‘আইনের পরিপন্থী’ বলা হয়েছে) রাশিয়ার ইন্টারনেট জগৎে মূল আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৮ বছর বয়সী তরুণী ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী’ অ্যানা চ্যাপম্যানের ব্যক্তিত্ব সকলের চোখ কেড়েছে। অনলাইনে আলোচনা বেশ কয়েক দিকে গিয়েছে: ‘গুপ্তচর’ আর যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের নিয়ে মজা করা; যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সম্পর্ককে বোঝা; চ্যাপম্যানের অনলাইন ডাটা আর ছবি আলোচনা করা; আর ভবিষ্যৎে নতুন মিডিয়ার কল্যাণে গোপন কাজের সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল ’স্বচ্ছতা’ কি হবে তা।
যদিও এই বিষয় জনপ্রিয় ছিল, এ নিয়ে লাগাতার রিপোর্ট করার সূত্র কম ছিল: কেবলমাত্র ভয়েস অফ আমেরিকা রাশিয়ান সার্ভিস সরাসরি কভারেজ দিয়েছে আদালত কক্ষ থেকে রিপোর্ট দিয়ে। এ ছাড়া ছিল লাইভজার্নাল (এলজি) প্লাটফর্মে গোলোস আমেরিকির ব্লগ আর তার টুইটার অ্যাকাউন্ট।
ব্লগারদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া: শ্লেষ
প্রথম যে ব্লগার এই গ্রেপ্তারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি এলজি ব্যবহারকারী এনএল, যিনি এফবিআই এর একটা অভিযোগের স্ক্যান কপি পাঠিয়েছেন আর তার পোস্টের নাম দিয়েছেন “এমন গুপ্তচর থাকলে কার শত্রু দরকার?” এই ব্লগার এফবিআই এজেন্ট অমিত কাচিয়া –প্যাটেল এর স্বীকারোক্তি নিয়ে মজা করেছেন আর একে নিম্ন মানের চলচিত্র “স্পাইজ লাইক আস’ এর সাথে তুলনা করেছেন আর কথিত গুপ্তচরদের প্রযুক্তিগত বিষয়ে পিছনে থাকার ব্যাপার নিয়েও বলেছেন।
ফাইসিক আরো বলেছেন, পরিবর্তিত চিত্রের মাধ্যমে যে প্রক্রিয়ায় সঙ্কেত বার্তা পাঠানো হয় তার উদ্ধৃতি দিয়ে:
Не исключаю, что специалисты ФБР оказались не менее продвинутыми, чем агенты СВР и в 2005-м году научились извлекать EXIF и прочие высокоценные вещи из джипегов.
Думаю, следующим шагом в технологическом соревновании спецслужб будет разработка по помещению и извлечению текстовых тэгов в mp3-шки.
আমার মনে হয় গুপ্তচরবৃত্তির প্রযুক্তিগত প্রতিযোগীতায় পরবর্তী ধাপ হবে এমপি৩ তে টেক্সট ট্যাগ ঢোকানো আর বের করার ব্যাপারে গবেষণা।
তাদের ‘গুপ্তচর’ প্রক্রিয়ার অদ্ভুত প্রকৃতি আর বিশেষ করে এর বিস্তৃত বিবরণ কিছু ব্লগারকে ২০০৬ সালের এরকম একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, আর একটি ‘গুপ্তচর রিং’ এর ঘটনাও স্মরণ করিয়েছে যা মস্কোতে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল, তথাকথিত ‘স্পাই স্টোন স্টোরি’।
এটি নিয়ে মজা করার আর একটি ধারায় ছিল নাৎসি জার্মানিতে কল্পিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সোভিয়েত গুপ্তচর স্টারলিটজের উল্লেখ করা। এলজে ব্যবহারকারী ডিকি এই জনপ্রিয় গল্পের সাম্প্রতিক এক সংস্করণের ব্যাপারে কথা বলেছেন:
Штирлиц зашел во френдленту и глубоко задумался. Нет, про поездку в Швейцарию писать лытдыбр сегодня, пожалуй, не стоит.
গ্রেপ্তারের রাজনৈতিক দিক নিয়ে আলোচনা
এই গ্রেপ্তারের পরিণতি নিয়ে আলোচনা করা একজন ব্লগার হচ্ছেন ইভান কুরিল্লা যিনি যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে একজন ঐতিহাসিক, (এলজে ব্যবহারকারী আলিরুক):
Вопрос: зачем арестовывать их 1) громко и публично и 2) сразу после визита в США Д.Медведева?
[…]
Вывод один: в США есть влиятельные круги, решившие испортить атмосферу российско-американского сближения. Раньше такие попытки были более заметны с российской стороны. Сегодня мы убедились в существовании американских противников сближения.
Вполне вероятно, что до России этим людям дела нет, – их цель – Барак Обама. Компрометация его достижений на российском направлении есть удар по президенту.
[…]
একটাই মানে হতে পারে: যুক্তরাষ্ট্রে একটি প্রভাবশালী দল আছে যারা যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের আবহাওয়া নষ্ট করতে চাচ্ছে। অতীতে, এমন কাজ রাশিয়ানদের একচেটিয়া ছিল। আজকে আমাদের কাছে প্রমান আছে যে স্থিতাবস্থা নষ্ট করার জন্যে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের এক বিরোধী চক্র রয়েছে।
সম্ভবত এই সব মানুষের রাশিয়ার সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক নেই- তাদের মূল লক্ষ্য হল বারাক ওবামা। রাশিয়ানদের নিয়ে তার প্রচেষ্টাকে ছোট করে দেখা রাষ্ট্রপতিকে আঘাতের সামিল।
অ্যানা চ্যাপম্যানের দিকে দৃষ্টি:
অ্যানা চ্যাপম্যান, যিনি এই পুরো ‘গুপ্তচর’ কেলেঙ্কারিতে একজন তারকা হয়ে গেছেন, ঘৃণা এমনকি আদরের বস্তুতে পরিণত হয়েছেন তার বিভিন্ন ধরনের কথার জন্যে। এমনকি লাইভজার্নাল গোত্রে ’ফ্রি অ্যানা চ্যাপম্যান (অ্যানা চ্যাপম্যানের মুক্তি চাই)’ উদ্যোগ শুরু হয়েছে, যদিও এটা খুব বেশী ভক্ত পায়নি।
এলজে ব্যবহারকারী ফিলিং অফ ভয়েড চ্যাপম্যানের ওয়েবসাইট ডোমডট.রু (domdot.ru) এর জনপ্রিয়তা বিশ্লেষণ করেছেন যা আসলে একটা জমি-বাড়ি খোঁজার পোর্টাল। উন্মুক্ত পরিসংখ্যান অনুসারে, ডোমডট.রু একটি ব্যার্থ সাইট, প্রতিদিন মাত্র ১০০০ ব্যবহারকারী দেখতে আসছেন, যেটা মস্কোতে এই ক্ষেত্রে যেকোন প্রতিযোগী সাইটের সাথে তুলনার যোগ্য নয়। এই ব্লগার বলেছেন যে চ্যাপম্যানের সকল অনলাইন প্রকল্প বানানো বা ভুয়া।
‘গুপ্তচর’ ২.০
অ্যানা চ্যাপম্যান আর তার ‘সহকর্মী’ মিখাইল সেমেঙ্কোর ব্যাপারটি নতুন ধরনের ‘গুপ্তচরের’ লক্ষণ – ‘গুপ্তচর ২.০’। এই দুইজনই সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেছে (লিঙ্কড ইনে চ্যাপম্যানের প্রোফাইল ও সেমেঙ্কোর প্রোফাইল, ফেসবুক আর ওডনোক্লাসনিস্কিতেও তাদের প্রোফাইল রয়েছে) এবং দুইজনই খোলামেলা ভার্চুয়াল জীবনযাপন করেছে আর নিজেদের বেশ খোলামেলা ছবিও দেখিয়েছে। চ্যাপম্যানের ইউটিউবে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের মন্তব্য স্থানে স্লিংশট জিজ্ঞাসা করেছেন:
‘Spies’ 2.0
Зачем профессиональному шпиону светиться во всех соцсетях, где только можно?
এই প্রশ্ন একটি পরিবর্তন তুলে ধরে সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করে গোপন কাজের পরিবেশ সম্পর্কে। যেমন দার্শনিক আলেকজান্ডার মরোজভ (এলজে ব্যবহারকারী আমরো ১৯৫৯) জানিয়েছেন, উপরে উল্লেখিত স্টিরলিটজ সম্পর্কে (সোভিয়েট/রাশিয়ান গুপ্তচরের প্রতীক):
человек, не имеющий присутствия в сетях, – ЯВНО ПОДОЗРИТЕЛЕН.
Наверное, “шпион”.
Иначе говоря, имейся во времена третьего рейха ЖЖ – Штирлиц, несомненно, вел бы дневник. О птицах. Как энтомолог-любитель. Допустим. А уж как любитель раритетных автомашин – это просто наверняка.
অন্য কথায়, থার্ড রাইখের (হিটলারের শাসন) সময়ে যদি লাইভজার্নাল থাকতো, স্টারলিটজের অবশ্যই একটা ব্লগ থাকতো। হয়ত পাখি নিয়ে – শখের পাখিবিদ হিসাবে। বা হয়ত কোন পুরানো গাড়ির ভক্ত হিসাবে- এটা নিশ্চিত।