বুলগেরিয়া: নব্য-নাৎসিদের সহিংসতার প্রতিবাদ

৬ জুন, ২০১০ বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় এক প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছিল বুলগেরিয়ায় আশ্রয় নেওয়া উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের অধিকারের জন্য। সেভেতলা এনচেভা ও অন্যান্য একটিভিস্টরা এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছিল, যারা অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রতিবাদ “বাসমানতাজি” উদ্বাস্তু শিবিরের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।

এই প্রতিবাদ আরম্ভ হবার সামান্য পরেই এই অনুষ্ঠানের দিকে যাবার পথে একটি ট্রামের ভেতরে বেশ কয়েকজনকে একদল ন্যাড়া মাথা ব্যাক্তি আক্রমণ করে।পুলিশ এখনো এই ঘটনার তদন্ত করছে এবং তারা ২০ জনের মত ব্যক্তিকে সন্দেহ করছে।

এই প্রতিবাদ সম্বন্ধে আমার ফেসবুকের ইনবক্সে আসা বার্তা

১০ জুন দ্বিতীয়বারের মত প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এবার একটিভিস্টরা নব্য নাৎসীবাদের এবং শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের উপর হামলার প্রতিবাদ করে। এই অনুষ্ঠানের শুরু ফেসবুক থেকে, যেখানে ব্যবহারকারীরা প্রতিবাদ সমাবেশের সময় এবং স্থানের ব্যাপারে ব্যাক্তিগত বার্তা বিনিময় করে।

(স্বত্ত্বাধিকারী) জর্জি ইভানভ

সন্ধ্যা ৬ টার সময় সোফিয়ার যান চলাচল বন্ধ করে আওয়াজ তোলা হয় “নাৎসিরা জেলে যাও”, ফ্যাসিবাদ কোন মত নয়, এটা একটা অপরাধ”, “আমরা ক্ষমা করিনি, আমরা ভুলে যাইনি” এবং তাদের সাথে পোস্টার লেখা ছিল “ উদাসীনতাকে হত্যা কর”, যথেষ্ট হয়েছে, বর্ণবাদ আর নয়”

লিডিয়া স্টোয়োকোভা প্রতিবাদ সম্বন্ধে তার ব্লগে নিচের অংশটি লিখেছে[বুলগেরীয় ভাষায়]:

[…] এই প্রতিবাদ সত্ত্বেও, এই দেশে এমন অনেক তরুণ রয়েছে যারা নিজেদের ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে এবং কালো চামড়ার স্বদেশী ও বিদেশী, এবং যে সমস্ত নাগরিকদের সমকামী বলে মনে হয় তাদের আক্রমণ করে। আমি খুব সহজেই এই সমস্ত তরুণদের নাৎসি ও ফ্যাসিস্ট বা প্রতিক্রিয়াশীল বলে সংজ্ঞায়িত করতে পারি[…]

[…] এই সমস্ত ব্যক্তিদের উপস্থিতি বিবেচনা করলে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা বলে মনে হচ্ছে এবং আমাদের দেশে ফ্যাসিজম বা প্রতিক্রিয়াশীলদের পুনরুত্থান নিয়ে কথা বলার জন্য আমি প্রচুর সময় ব্যয় করেছি। যত দুর বলা যায়, এই সমস্যা উদ্বাস্তুদের সাথে যুক্ত, যাদের উদ্দেশ্যকে আমরা সমর্থন করি। আমি মনে করি এখন আমাদের এই সমস্ত উদ্দেশ্যগুলোর উপর মনোযোগ দিতে হবে, কারণ এগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয় নয় এবং এর কারণ আমরা এই বিষয়ে যথেষ্ট কথা বলছি না।[…]

বরিস্লাভ বরিসভ তার ব্লগে এটি লিখেছে [বুলগেরিয় ভাষায়]:

২০ বছর পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি ঘটেছে তা হচ্ছে প্যাট্রিয়ার্ক এভটিমাই স্কোয়ারে নাৎসি, ফ্যাসিস্ট, উগ্র জাতীয়তাবাদী, বর্ণবাদী, বিদেশীদের প্রতি ঘৃণা এবং একই ধরনের দল. দলের গঠন, আন্দোলন, রাস্তায় তৈরি হওয়া সাধারণ গুণ্ডাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তৈরি হওয়া। এটা ভালো যে এমন একদল জনতা রয়েছে যারা এই ক্রান্তিকালের সময় বেড়ে উঠেছে, যে ধারা এক দশক পরে এর পরিসমাপ্তি শেষে চলছে। ব্লগস্ফেয়ারে একটি অদ্ভুত বিশ্বাস রয়েছে যে, এই সমস্ত ফ্যাসিস্ট বা প্রতিক্রিয়াশীল ও নাৎসি বিস্ফোরণ নতুন একটা কিছু।

ব্লগার সেলেনে নামক ভদ্রমহিলা তার এক প্রবন্ধে লিখেছেন [বুলগেরিয় ভাষায়]:

“নাৎসীবাদ কোন মত নয়, এটা এক ধরনের অপরাধ”।

[…]

এটা কারো জন্য কল্পনা করা কঠিন যে ২১ শতকের বুলগেরিয়ায় এমন এক সহিংসতা দেখা যেতে পারে, যা ২০ শতকের এক চিন্তার দ্বারা অনুপ্রাণিত। এমন এক চিন্তা, যা এক বিশ্বযুদ্ধ, গণহত্যা, কনসেনট্রেশন ক্যাম্প বা যুদ্ধে আটক ব্যক্তিদের জন্য বন্দিশালা, নিষ্ঠুরতা এবং বিপুল সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা ঘটিয়েছিল।

সেভেতলা এনচেভার ব্লগে এক হুমকি প্রদান করা হয়েছে [বুলগেরিয় ভাষায়]:

তোমাদের যে প্রহার করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয়!

এটা পরিষ্কার নয় যে কে এই মন্তব্যটি লিখেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .