পাকাইয়া নামক আগ্নেয়গিরিটি যখন গত সপ্তাহে তার সক্রিয়তার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় [1], ঠিক তখনই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আগাথা মধ্য আমেরিকার কাছে গঠিত হতে থাকে [2] এবং এটি গুয়াতেমালায় তীব্রভাবে আঘাত হানে। উচ্চভূমিতে এটি তার তাণ্ডবের চিহ্ন রেখে গেছে। এখনও প্রচুর মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। এই ঝড়ে অন্তত ৯৩ জন মৃত্যুবরণ করেছে, সব রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে, এই ঘটনায় গ্রামীণ এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত ৩০শে মে ঝড়টি আঘাত হানে, কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় স্কুলের ক্লাস ৪ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে এবং সমগ্র দেশে সতর্কতা সঙ্কেত জারি রয়েছে। ডিজিটাল সাংবাদিকের নেটওয়ার্ক [দি নেট ওয়ার্ক অফ ডিজিটাল জার্নালিস্ট, স্প্যানিশ ভাষায়] [3] জনগণকে অতীব প্রযোজনীয় কোন কারণ ছাড়া বাইরে যেতে মানা করেছে, তারা সবাইকে বাড়িতে অবস্থান করতে পরামর্শ দিয়েছে।
জেরালদিনে ম্যাক জানাচ্ছে [5] ভূমিধ্বসের করুণ কাহিনী :
মধ্য আমেরিকার ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস প্রবাহিত হওয়ার সময়, গুয়াতেমালাতে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়েছিল। ‘আগাথা’ ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধ্বস ঘটিয়েছে, যেটি বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে, রাস্তাগুলো বন্ধ হযে গেছে এবং এলাকা জুড়ে ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছিল এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত-এর মত একটি ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছিল। গুয়াতেমালা থেকে মাত্র ১২০ মাইল দূরে আলমোলঙ্গা শহর। এই শহরের একটি বাড়ি ভূমিধ্বসে ধ্বংস হয়ে যায়। বাবা মা ও ২ শিশুর এই পরিবারের কেউই বেঁচে নেই, সকলে মৃত্যু বরণ করেছে। এবং পৃথক ঘটনায় ঝোড়ো বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ার দরুন অল্প অল্প করে ভূমিধ্বস শুরু হয় যার ফলে চারজন প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক ও শিশু মৃত্যু বরণ করে এবং ১১ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এই ভূমিধ্বস যান চলাচলে সমস্যা ঘটাচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
ব্লগার চিওতিওরে লিখেছে [6] বেশ কয়েকটি ঠিকানার এক তালিকা, যেখানে কেউ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কি ধরনের অনুদান দেওয়া যেতে পারে সে ব্যাপারে পরামর্শ পেতে পারে। এই ঝড়ে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। ঝড়ের তীব্রতা কমে গিয়ে তা এখন একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় লঘুচাপে পরিণত হয়েছে, এটি এমন এক ঘটনা যাকে গুড নিউজ ইন গুয়াতেমালা ব্লগ “একটি অলৌকিক ঘটনা ” বলে আখ্যায়িত করেছে [7]। এখন এই বিপদ দেশটির সবচেয়ে নাজুক এলাকায় দিকে ধাবিত হচ্ছে যেখানকার ভূখণ্ড বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেখানে বিপদের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছে। নদীতে পানির পরিমাণ বেড়ে বন্যার সৃষ্টি করেছে, অনেক রাস্তা ধুয়ে গেছে এবং বড় বড় পাথর পড়ে থাকার কারণে রাস্তায় চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সরকারের নিজস্ব টুইটার পাতা @টুগুয়াতেমালা [স্প্যানিশ ভাষায়] [9] অনুসারে, সরকারি হিসেব মতে, এই ঘটনায় ১৩ জন মৃত, ৩০ জন নিরুদ্দেশ, ১৭১০১ জন অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে আশ্রয় নিয়েছে এবং ২৯১২ টি বাড়ি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা সম্ভবত ১০০-তে এসে দাঁড়িযেছে । এই জরুরী অবস্থা সমস্ত গুয়াতেমালাবাসীর কাছ থেকে সমন্বয় এবং সমর্থন দাবি করছে এবং ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সাহায্যের আশা করছে। ৩০শে মে পর্যন্ত তৈরি হওয়া ঘটনার প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করা একটি মানচিত্র [10](পিডিএফ আকার) আপনি দেখতে পারেন।
এন্টিগুয়াডেইলিফোটো.কম এর ব্লগার রুডি জিরান লিখেছেন: গুয়াতেমালার এখন এই ধরনের বিপর্যয় থেকে খানিকটা বিরত পাওয়া দরকার [12]।
অবশ্যই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আগাথা সবগুলোর চেয়ে ভয়ঙ্কর কারণ এর ভারী বর্ষন লা অ্যান্টিগুয়া গুয়াতেমালা সহ অনেক স্থানে বন্যা ও ভূমিধ্বস ঘটিয়েছে। অনেকে তাদের বাসস্থান হারিয়েছে এবং অনেকে নিজেদের আবাসস্থল খালি করে অস্থায়ী বাসস্থানে আশ্রয় গ্রহন করছে।কতগুলি হ্যাশট্যাগ যেমন #পাকাইয়া [13] , #আগাথাজিটি [14], #সিনিজাসজিটি [15], #আপাগঙ্গজিটি [16] ইত্যাদির মাধ্যমে টুইটার এবং ফেসবুকে প্রতি মুহূর্তের অগ্রগতি প্রকাশিত হচ্ছিল। এইচটিটিপি://ইজ.জিডি/সিভিবাম [17] এবং এইচটিটিপি://ইজ.জিডি/সিভিবাক [18] ওয়েব সাইট গুলোতে সাধারণ মানুষের উঠিয়ে করা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আগাথার ছবিগুলো দেখতে পারবেন। আমাদের চরম এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে একটি বিরতির প্রয়োজন, এই বিষয়ে আপনিও কি আমার সাথে একমত নয় ?
গুয়াতেমালায় অনেক নাগরিক একমত এবং আশাবাদী যে দেশটি প্রয়োজনে মানুষকে সাহায্য করতে প্রস্তুত।