উরুগুয়ে: সামাজিক প্রচার মাধ্যম লা সেলেস্তেদের সম্বন্ধে তাজা সংবাদ প্রদান করে যাচ্ছে

যখন ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের আসরে উরুগুয়ে তার প্রথম খেলায় ফ্রান্সের মুখোমুখি হবার আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি, তখন উরুগুয়ের ব্লগার, টুইটার ও ফেসবুক ব্যবহারকারীরা জাতীয় ফুটবল দল ‘লা সেলেস্তে’ মনের জোর বাড়ানোর জন্য লেখা শুরু করেছেন। উরুগুয়ে ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের লা সেলেস্তে নামে ডাকা হয়, যা তাদের জার্সি বা পোশাকের রংকে বর্ণনা করে। লা সেলেস্তে মানে হালকা নীল। অনেকই লম্বা সময় ধরে উরুগুয়ের জাতীয় দলকে নিয়ে লিখে চালিয়ে যাচ্ছে, তারপরেও এমনকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখা ও বিশ্লেষণাত্মক ব্লগার আশা এবং উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে এটা দেখার জন্য যে, লা সেলেস্তেরা কেমন খেলা দেখায়। উরুগুয়ের জাতীয় ফুটবল দলের সমর্থকরা একেবারে তাজা সংবাদ প্রদান করা ও নিজ দলের খেলা বিশ্লেষণের জন্য তাদের প্রচুর সোর্স বা উৎস রয়েছে।

উরুগুয়ের দর্শকরা ফুটবল স্টেডিয়াম সেন্টেনারিওর দিকে তাকিয়ে(এখানেই প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে), পানপাত্র তাদের সঙ্গী, এটি উরুগুয়ের ঐতিহ্যবাহী পানীয়। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী ভিনসে আলোনঙ্গি এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে এটি ব্যবহার করা হয়েছে।

১৯৩০ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল উরুগুয়ে। এই বিশ্বকাপও জেতে উরুগুয়ে এবং ১৯৫০ সালে আবার তারা বিশ্বকাপ জয় করে। ফুটবল পারা টোডোস [স্প্যানিশ ভাষায়] (সকলের জন্য ফুটবল) একটি ব্লগ এবং ওয়েবসাইট, যেটি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দলের বিষয়ে লিখছে। তারা উরুগুয়ে দল সম্বন্ধে লিখেছে “ উরুগুয়ে: এন বুসকা ডে লা গ্লোরিয়া ডে এনটানোও” (উরুগুয়ে: গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা) শিরোনামে। এই পোস্ট তারা বলছে:

Nadie puede negar que su marca registrada, la garra, sigue tan vigente como hace 80 años y que, como siempre, cuenta con futbolistas de reconocida calidad internacional, como los temibles Diego Forlán y Luis Suárez, una pareja de atacantes que es capaz de poner de rodillas a cualquier defensa rival.

এর নিবন্ধিত ব্রান্ড ‘লা গাররাকে’ কেউ অস্বীকার করতে পারে না [ লা গাররা নামটি উরুগুয়ের জাতীয় ফুটবল দলের শক্তি এবং লেগে থাকার ক্ষমতাকে বর্ণনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়], তা যেন আজকে সেই শক্তিতে অটুট থাকে, যা এখন থেকে ৮০ বছর আগে ছিল, যা সব সময় থাকবে। যেখানে বর্তমানের ফুটবল খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা রয়েছে, যেমন দুর্দান্ত ডিয়োগো ফোরলান ও লুইস সুয়ারেজ, এ রকম কয়েক জোড়া আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় রয়েছে, যারা প্রতিপক্ষ দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের তাদের হাঁটুর নিচে দাবিয়ে রাখতে সক্ষম।

ইংরেজিভাষী ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্লগে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে পারে, যেগুলো বিশ্বকাপে উরুগুয়ের অংশগ্রহণ নিয়ে এবং উরুগুয়ের জাতীয় দল নিয়ে আলোচনা করছে। এই সমস্ত ব্লগের মধ্যে অন্যতম ব্লগ হচ্ছে লা সেলেস্তে ব্লগ। ব্লগাররা এই সাইটটিকে এ ভাবে বর্ণনা করেন:

উরুগুয়ের জাতীয় দল সমর্থক বিশ্বের একমাত্র ইংরেজিভাষী ব্লগ, যা উরুগুয়ের ফুটবল নিয়ে আলোচনা করতে পারে কোন ধরনের পিছু হটে যায় না আঘাত খেয়েও। […] ওয়েবসাইট হিসেবে আমরা নতুন, যাদের মূল উদ্দেশ্য, সারা বিশ্বের সবাইকে উরুগুয়ের বর্তমান ফুটবলের অবস্থা কেমন তা দেখিয়ে দেওয়া; এ কারণেই এখানে পোস্ট করা বেশিরভাগ প্রবন্ধই ইংরেজী ভাষায় লেখা হয়েছে।

এই ব্লগের পোস্টে অনেক মন্তব্য এসেছে; তাদের সাম্প্রতিক পোস্ট অনেকে ফ্রান্সের খেলা বিশ্লেষণ করছে-ফ্রান্স উরুগুয়ের প্রথম খেলার প্রতিপক্ষ-এই বিশ্লেষণের উপর প্রায় ৫০ টি মন্তব্য এসেছে। এই ব্লগ একই সঙ্গে স্প্যানিশ ও পর্তুগীজ ভাষায় এই প্রবন্ধটির অনুবাদ করেছে।

এন্ড্রু এসপুরুদি ওল্ড ৩ (থ্রি) ম্যাজিক ট্রিক-এর একজন ইংরেজী ভাষী ব্লগার, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সংবাদ পাঠাচ্ছেন, তিনি একটি উত্তম ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হয়েছেন, কেন এ বছর উরুগুয়ে বিশ্বকাপ জিতবে। এছাড়াও তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় লাভ করা অভিজ্ঞতার কথা টুইট করেছেন(@থ্রিকার্ডম্যাজিকট্রিক) ।

সেইনজুফও ইংরেজী ভাষায় লা সেলেস্তেদের সম্বন্ধে টুইট (@সেইনজুফ) ও ব্লগ করেছেন। যখন উরুগুয়ে কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে খেলে জয়লাভ করে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। সে সময় তিনি লিখেছিলেন:

উরুগুয়ে ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং তাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। উরুগুয়ে বিশ্বের ৩২ তম এবং সর্বশেষ দল যারা বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল এবং বর্তমানে তারা বিশ্বের সেরা দলের তালিকায় ১৯ নম্বরে অবস্থান করছে।

যারা বিশ্বাসী নয় এমন সকলের জন্য, শুনতে পাচ্ছেন এবং সেখানেই ঝুলে থাকুন, অভিনন্দন এবং হয়ত উদযাপন চলতেই থাকবে।

সমর্থকরা ডিয়েগো ফোরলানকে তার টুইটারে অনুসরণ করতে পারবে (@ডিয়েগো ফোরলান৭ [স্প্যানিশ ভাষায়])। এখানে আক্রমণভাগের এই খেলোয়াড় সব সময় তার অবস্থার কথা জানাচ্ছে যার সাথে ছবি এবং তার প্রতিদিনের কাজের ধারাবর্ণনা থাকছে, বিশেষ করে যখন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় লা সেলেস্তের হয়ে খেলার জন্য প্রস্তত হচ্ছেন।

লা সেলেস্তের জন্য আরেকটি জনপ্রিয় এলাকা হচ্ছে ফেসবুক, যেখানে তারা তাদের দলের সমর্থনের স্বপক্ষে কথা বলতে পারে, লিঙ্ক ভাগাভাগি করতে বা প্রদর্শন করতে পার, ছবি প্রদর্শন এবং বিশ্লেষণ করতে পারে। এখানে প্রায় ১০০ বেশি পাতা রয়েছে যেগুলো বিশ্বকাপে উরুগুয়েকে উৎসর্গ করে তৈরি করা হয়েছে এবং একই বিষয়ের উপর ৫০০টির মত দল রয়েছে। এই সমস্ত পাতার মধ্যে দু'টি হল উরুগুয়ে আল মুন্ডিয়াল [স্প্যানিশ ভাষায়] (বিশ্বকাপে উরুগুয়ে), যার প্রায় ৫০,০০০ সমর্থক রয়েছে, এবং এ মুয়ের্টে কন উরুগুয়ে এন এল মুন্ডিয়াল ডে সুডাফ্রিক [স্প্যানিশ ভাষায়] (দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপে মৃত্যু পর্যন্ত উরুগুয়ের সাথে)। এই পাতার প্রায় ৩০,০০০ সমর্থক রয়েছে।

সবশেষে, স্কুলের জন্য তৈরি করা ব্লগ এসকুয়েলা ১৩৬ ডে সালিনাস-ক্যানেলোনেস [স্প্যানিশ ভাষায়] সংবাদ প্রদান করছে যে, স্কুলের ছাত্র যারা এক্সও ল্যাপটপ কম্পিউটার জিতেছে, তারা এমন একটি প্রোগ্রাম নামাতে পারবে, যার মাধ্যমে তারা সরাসরি বিশ্বকাপের খেলা দেখতে পারবে, এর সাথে তারা ২৪টি টিভি চ্যানেল দেখতে এবং রেডিও শুনতে সক্ষম হবে। কোন সন্দেহ নেই, এমনকি উরুগুয়ের মধ্যে তরুণতম ব্যক্তিটি খেলা দেখার সময় মনোযোগ দেবে, লা সেলেস্তেরা তৃতীয়বারের মত ঘরে বিশ্ব জয়ের খেতাব নিয়ে আসতে পারে কি না এই বিষয়ের উপর।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .