মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাহরাইন ঘোষণা করেছে যে তারা সাময়িকভাবে আল জাজিরা স্যাটেলাইট (সংবাদ) চ্যানেলের অফিস বন্ধ করেছেন ‘পেশাগত নীতিমালা ভঙ্গের’ জন্য। এই পোস্টে ব্লগার আর টুইটার ব্যবহারকারিরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন- বিশেষ করে এমন গুজব শোনার পরে যে কাতারের এই টিভি স্টেশনের ব্যুরোকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাহরাইনের দারিদ্র্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেখানোর পরে। এদিকে আল জাজিরা বলেছে যে তাদের বাহরাইনে কোন অফিসই নেই। তাহলে আসলে কি ঘটেছিল?
তিউনিশিয়ার সাংবাদিক হাবিব তৌমি, যিনি বাহরাইনে কাজ করেন, তার ব্লগে এই ঘটনা জানিয়েছেন:
“সংস্কৃতি আর তথ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে আল জাজিরা স্যাটেলাইট চ্যানেলের বাহরাইন অফিসের কাজ বন্ধ রাখার। এর কারন এই চ্যানেল পেশাগত নীতিমালা ভঙ্গ করেছে এবং দেশের প্রেস, ছাপানো আর প্রকাশনার আইন ও নীতিমালা মেনে চলেনি,” – মন্ত্রণালয়ের সংক্ষিপ্ত একটা ঘোষণা অনুযায়ী এই তথ্য পাওয়া গেছে যা প্রকাশ করেছে বাহরাইনের সংবাদ সংস্থা (বিএনএ)। এই বার্তায় বলা আছে: “সাময়িক এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে মন্ত্রণালয় আর চ্যানেলের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করলে যেখানে তাদের মধ্যে এই ঐক্যমত থাকবে যে পারষ্পরিক বিনিময়ের নীতি অনুসারে দুই দেশে মিডিয়ার কার্যক্রম চালানো হবে এমন ভাবে যে রিপোর্টগুলো দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করবে”। ইতোপূর্বে ২০০২ সালের মে মাসে দোহা নির্ভর এই চ্যানেলটিকে বাহরাইন থেকে রিপোর্ট করা থেকে নিষিদ্ধ করেছিল বাহরাইনি কর্তৃপক্ষ।
তথ্য মন্ত্রী জানিয়েছেন যে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে কারন এই টেলিভিশন স্টেশন ইচ্ছাকৃতভাবে বাহরাইনের ক্ষতি করতে চাইছে এবং এরা বাহরাইনের বিরুদ্ধে আর ইজরায়েলের পক্ষে আছে। প্যান আরব আল জাজিরা স্টেশন আর যেসব আরব দেশ নিষিদ্ধ করেছে তার মধ্যে আছে কুয়েত, জর্ডান, ইরাক, মরোক্কো আর প্যালেস্টাইন।
পরবর্তী এক পোস্টে, তৌমি এই সংবাদের প্রতি আল জাজিরার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়েছেন:
“আমরা অবাক আর বিভ্রান্ত হয়েছি যে বাহরাইনের সংস্কৃতি আর তথ্য মন্ত্রণালয় সাময়িকভাবে বাহরাইনে আমাদের অফিস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে,” প্যান আরব নেটওয়ার্ক জানিয়েছে।“ যদিও আমরা গভীরভাবে এই সিদ্ধান্তে হতাশা ব্যক্ত করছি যা আমাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই যে নির্দিষ্ট এলাকায় বিভেদ না করে আমাদের সম্পাদনা আর পেশাগত নীতি সংবাদ আর ঘটনা জানানোর নীতি অপরিবর্তিত আছে। শুরুর পর থেকে আমাদের যে লক্ষ্য তার প্রতি আমরা নিবেদিত আছি, আল জাজিরা তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন।
এই অফিস বন্ধ করা নিয়ে সংস্কৃতি আর তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আরো বেশী বিভ্রান্তিকর, যেহেতু বাহরাইনে আল জাজিরার কোন অফিস নেই।
আল জাজিরাতে কাজ করা আম্মার মোহামেদের টুইটার বার্তা অনুসারে:
টুইটারে, বিভিন্ন নেট নাগরিকরা মাথা চুলকাচ্ছিলেন এই পদক্ষেপের পিছনে কোন যথাযথ কারন খুঁজে না পাওয়ার কারণে – এই স্পষ্টব্যক্ত চ্যানেলের বিরুদ্ধে এমন হয়েছে গত আট বছরে দুই বার।
সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সুলতান আল কাসেমি টুইট করেছেন:
বাহরাইন আল জাজিরা চ্যানেলের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এটা কাতারি কোস্টাল গার্ড দ্বারা বাহরাইনি নাবিকদের উপরে গুলি চালানোর ঘটনার কারনে হয়ে থাকতে পারে।
চ্যানেলের অস্তিত্বহীন অফিস কেন বন্ধ হল আমার এই প্রশ্নের উত্তরে বাহরাইন থেকে সুয়াদএকে জানিয়েছেন:
পরের একটা টুইটে সুয়াদএকে লিখেছেন:
জনপ্রিয় মাহমুদ'স ডেন ব্লগের মাহমুদ আল ইউসুফ তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন:
এটা বলা ভালো যে বাহরাইনি সরকারের কৌশল এই সমস্যার সাথে মোকাবেলার হচ্ছে শক্তভাবে বালুতে মাথা লুকিয়ে রাখা? মিডিয়ার উপরে আরোপিত বিভিন্ন আর লাগাতার নিষেধাজ্ঞার ফলে এটা অবশ্যই এই ‘কৌশলগত’ ধারণাই দেয়।
আল জাজিরাকে অনুমতি প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে যতবার তারা বাহরাইন সম্পর্কে কিছু প্রচার করতে চাইবে – এই তথ্য সুয়াদএকে টুইট করার পরে আমি ভাবছি আর কি হতে পারে:
@SuadAK আর এটা কোথায় থামবে? তারা কি গার্ডিয়ান, নিউ ইয়র্ক টাইমস আর ওয়াশিংটন পোস্টকেও বলবে অনুমতি নেয়ার ব্যাপারে?
ইতোমধ্যে বাহরাইনের মানবাধিকার সংস্থা বাহরাইনরাইটস আলোচ্য রিপোর্টের ভিডিওটির লিঙ্ক রিপোর্ট করছে যেটার কারণে নাকি বাহরাইনে আল জাজিরার প্রচারণা বন্ধ হয়েছে – এমন লোকে বলছে। এই কেন্দ্র, যাকেও বাহরাইনি কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে, টুইট করেছে:
দারিদ্র্যের উপরে আল জাজিরা টিভি রিপোর্টের প্রথম ভাগ [ভিডিও আরবি] http://ow.ly/1qxVwC
#বাহরাইনে দারিদ্র্যের উপরে আল জাজিরা টিভি রিপোর্টের প্রথম ভাগ [ভিডিও আরবি] http://ow.ly/1qxVwC যার ফলে বাহরাইনে তাদের অফিস বন্ধ হয়েছে।
আর ভিডিওর দ্বিতীয় ভাগ পাওয়া যাবে এখানে:
বাহরাইনের দারিদ্রতা নিয়ে আল জাজিরা টিভি রিপোর্ট এর দ্বিতীয় ভাগ [ভিডিও আরবি] http://ow.ly/1qxVx0 যার ফলে বাহরাইনে তাদের অফিস বন্ধ হয়ে গেছে।