কিরগিজস্তান: গণ আন্দোলনের পরের অবস্থা

গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে কিরগিজস্তানি ব্লগারদের দৃষ্টি মধ্য এশিয়ার এই ছোট ও পাহাড়ি দেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলিতে আটকিয়ে ছিল। সারা দেশব্যাপী স্মরণসভা করা হয়েছে ৭ ও ৮ই এপ্রিল সংঘটিত সরকার আর বিরোধী দলের মধ্যকার সংঘর্ষে নিহতদের জন্য।

সের্গেই ভিসটস্কি যিনি ক্লান্তিহীনভাবে ইসিক কুল অঞ্চলে কি হচ্ছে তা জানিয়ে যাচ্ছেন, সম্প্রতি কারাকোলের ৬ নং চেকোভ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের জন্যে প্রতিষ্ঠিত ফান্ড সম্পর্কে লিখেছেন। এই ফান্ডের লক্ষ্য হচ্ছে সংঘর্ষে নিহত ছয় জন বাসিন্দার পরিবারকে সাহায্য করা:

“ আমাদের কষ্ট আন্তরিক, আমরা বেদনাবিধুর পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানাই,” স্কুলের পরিচালক রাইসা কারিমোভা ব্লগার আর সাংবাদিক ভিসটস্কিকে জানিয়েছেন। “আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে এক দিনের বেতন পিতাবিহীন সন্তানদের ফান্ডে দেয়ার জন্য,” তিনি বললেন। “আমাদের সামান্য অর্থ হয়ত সমুদ্রে একটা বিন্দুর মতো, কিন্তু এমন সব বিন্দু ছাড়া সমুদ্র গঠিত হবে না।“

এই ফান্ডে এরই মধ্যে ৭ হাজার সোম (১৬০ মার্কিন ডলার) উঠেছে।

আর একজন ব্যবহারকারী , অপ্টিমিস্ট, একটি বিপ্লবের সাথে যে ভাবাবেগের মিশ্রণ ঘটে তার সংক্ষিপ্ত ও রঙ্গীন সারসংক্ষেপ দিয়েছেন:

“আমার দেশের ‘সাম্প্রতিক’ ঘটনা নিয়ে আমি কতো কিছু লিখতে চাই। কিন্তু কথাগুলো বাক্য হিসাবে আসছে না:

গন্ডগোল, বিক্ষোভ, লুট,হত্যা, উস্কানি, সংবাদ সম্মেলন, মিথ্যা বলা, দেশভক্তি, রক্ত, মারামারি, অশ্রু, মাতলামি, চুরি, গার্ড, ভিড়ের চিৎকার, চিৎকার, ওই এলাকা, ভয়, গুলি, অর্থ, ভাংচুর, সৈন্য, পতাকা, ধোঁয়া, বৃষ্টি, টুইটার, সীমান্ত, রাত্রি, অনিশ্চয়তা, আশা…”

আশা অবশ্যই একটা চলমান বিষয় যখন ব্লগাররা দেশে নতুন প্রতিষ্ঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনের জীবনে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছে।

কিন্তু অন্যান্য ব্লগাররা কিরগিজস্তানের রাজনীতির ধরনে আরো বেশী সমালোচনামুখর। দ্যা সি বিস্কিট অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে হামলা আর লুটের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার ব্যাপারে, যার ফলে কিরগিজস্তানের শাসন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে:

“মানুষকে সম্ভবত এইসব কাজের জন্য দোষী করা ঠিক না,” দ্যা সি বিস্কিট বিচার করেছেন।“ যে কোন ক্ষেত্রে, বিদ্রোহের চালিকাশক্তি সব সময়ে ধনী শ্রেনী। ধনীরা না পাল্টানো পর্যন্ত – রূপে আর আকারে, কোথাও কোন কিছু পাল্টাবে না।“

‘আমার আত্মা আমার নিজের কিরগিজস্তানের জন্য ব্যথিত'; নামক পোস্টে এডিলেটস বেকিয়েভের শাসনের পতনের ধারা তুলে ধরেছেন যা ২০০৯ সালের দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হয় আর এটা তাদের এই সময়ের পরে ‘বাড়তে থাকা আস্থার’ কারনে। এডিলেটস মোবাইল সংযোগের ৬০ তিইন (০.০১ মার্কিন ডলার ) বাদ দেয়াও উদযাপন করেন, ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট শাসনকালের অজনপ্রিয় একটা জিনিষ।

ইংরেজী ভাষার ব্লগ দ্যা স্পেক্টেটর লিখেছে যে বেকিয়েভ আর ইংরেজী ফুটবল ক্লাব ব্ল্যাকপুল এফ.সির মধ্যকার অদ্ভুত সম্পর্কের কথা, আর এইডিয়া দু:খজনক পরিস্থিতি থেকেও কিছু মজার জিনিষ খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছেন, পুরানো সোভিয়েট একটা প্রবচন গ্রহন করে আর বিপ্লবকে দেশে প্রবেশের পন্থা হিসাবে দেখিয়ে:

লেখক বলেছেন, “প্রত্যেক কিরগিজকে, তার জীবদ্দশায়, একটা বাড়ি নির্মান করতে হবে, একটা গাছ লাগাতে হবে , একটা ছেলেকে পালন করতে হবে আর হোয়াইট হাউজে জোর করে ঢুকতে হবে।“

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .