চীন: উচ্চ মার্গীয় সংস্কৃতি শিক্ষার কোন স্থান রয়েছে কি?

আজকের আধুনিক সমাজে উদারনৈতিক শিক্ষার কোন স্থান রয়েছে কি, যেখানে চাকুরি জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুবই তীব্র, যেথায় পেশা ক্রমাগত বিশেষায়িত এবং প্রযুক্তিগত হয়ে পড়ছে?

সাউদার্ন মেট্রোপলিটন উইকএন্ড নামক পত্রিকার এপ্রিল মাসের সংখ্যায় তানজিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রের লেখা একটি চিঠি প্রকাশিত হয়। তানজিন উত্তরপূর্ব চীনের একটি অন্যতম প্রধান শহর:

我不知道国粹是什么
我们学校有 许多日本留学生。一次偶然的机会,看到他们的课表,课程有书法、京剧、太极…… 我好羡慕他们,因为我从小到大都没有机会接触这些———小学没有条件,初中没有精力,高中没有心思———到大学什么都有了,但学校把机会都给了留学生。万 一有天跟日本友人谈论京剧,也许他懂得比我还多呢!

চীনা সংস্কৃতির স্বরূপ কি আমার তা জানা নেই।

আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি সেখানে অনেক জাপানী ছাত্র পড়াশুনা করছে। কোন এক আকস্মিক ঘটনায় তাদের পাঠ্যসূচি আমার নজরে এসেছিল। তাতে তাদের এই পাঠ্যসূচিতে রয়েছে ক্যালিওগ্রাফি (সুন্দরভাবে চীনা লিখন পদ্ধতি), পিকিং অপেরা (বেইজিং অপেরা) নাট্যকলা, তাই চি (চীনা মার্শাল আর্ট)….এই পাঠ্যসূচি দেখার পর তাদেরকে আমি ঈর্ষা করতে শুরু করলাম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এগুলো পড়ার যোগ্যতা আমার ছিল না; নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসব বিষয় পড়ার মত শক্তি আমার ছিল না। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসব বিষয় পড়ার মত আবেগ আমার তৈরি হয়নি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ক্ষেত্র তৈরি হয়ে আছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এসব পড়ার সুযোগ কেবল বিদেশী ছাত্রদের প্রদান করছে। কোন একদিন যদি আমি পিকিং অপেরা নিয়ে কোন জাপানী ছাত্রের সাথে কথা বলি তা হলে দেখা যাবে সে হয়ত এই বিষয়ে আমার চেয়ে বেশি জানে!

পিকিং অপেরা

শিয়ং বিংকি তার ব্লগে এই চিঠির উত্তর দিয়েছেন। তিনি এই বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করেছেন, কেন স্থানীয় চীনা ছাত্ররা চীনা সংস্কৃতির উপর পড়াশুনার করা সুযোগ কম পায়:

是大学的责任?也许看完这封短信,大家的第一反应是大学有些崇洋媚外,不给学生开书法、京剧和太极。实际情况并非如此。据我 所知,一些大学早几年就开设了这样的选修课,以及相关的社团,可是选择这些课的学生相当之少——少得不能正常开班;社团活动也苦苦支撑——每次活动的“票 友”极少,连举办者也灰心丧气。

এটা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব? এই সংক্ষিপ্ত চিঠি পড়ার পরার পর কারো মনে প্রথমে যে ধারণা তৈরি হতে পারে তা হল, বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ বিদেশী ছাত্রদের প্রতি দুর্বল, যেন তারা স্থানীয় ছাত্রদের জন্য ক্যালিওগ্রাফি, পিকিং অপেরা এবং তাই চি পাঠের ব্যবস্থা করে না। কিন্তু ব্যাপারটি মোটেও সত্যি নয়। বাস্তবতা হচ্ছে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এই সমস্ত বিষয়ে পাঠ প্রদান শুরু করেছে এবং ছাত্র সংঘকে তার থেকে পাঠ্যসূচি বেছে নিতে বলেছে। তবে খুব সামান্য পরিমাণ স্থানীয় ছাত্র এই সব বিষয় বেছে নিয়েছে। সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড খুব সামান্য পরিমাণ শ্রোতার মনোযোগ আকৃষ্ট করতে পেরেছে, যা সংগঠকদের জন্য হতাশার বিষয়।

在 今天的大学,在就业的压力下,无论是学校还是学生,都更关注技能教育,通识教育已被冷落——从功利、职业角度看,教育确有双重功能,一方面是功利的、职业 化的、技能化的教育,此即技能教育;另一方面则是非功利的、非职业化的、非技能化的教育,此即通识教育。技能教育可以帮助受教育者掌握职业所需知识和技 能,而通识教育却能提高一个人的素质以及发展潜能。一般而言,作为大学,应该重在培养学生的基本能力与素质,作为高职高专,则强调学生的就业技能培。

আজকের পরিবেশে, ছাত্র এবং একই রকমের স্কুলগুলোর মনোযোগ থাকে প্রযুক্তিগত শিক্ষার দিকে, কারণ ছাত্রদের চাকুরি পাইয়ে দেবার চাপ তাদের উপর রয়েছে। উদারনৈতিক শিক্ষা মনে হচ্ছে বাতিলের খাতায় চলে গেছে। শিক্ষা এখন দু'টি লক্ষ্য পূরণ করে। উপযোগিতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এটার ব্যবহারিক, প্রযুক্তিগত এবং পেশাগত উপযোগিতা রয়েছে। উপযোগিতা হীনতার বাইরের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে পুরো বিষয়টি আগেরটার চেয়ে বিপরীত অবস্থানে দাঁড়ায়, এবং এটাকেই আমরা উদারনৈতিক শিক্ষা বলতে পারি। প্রযুক্তিগত শিক্ষা একজন ছাত্রকে একজন দক্ষ প্রযুক্তিবিদ বানিয়ে তুলতে পারে যা তার কাজ পাওয়ার জন্য দরকার, অন্যদিকে উদারনৈতিক শিক্ষা একজন ছাত্রের গুণগত মান এবং সম্ভবনা জাগিয়ে তুলতে পারে। সাধারণ ভাষায় বলা যায়, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের উন্নতির দিকে মনোযোগ দেবে, সম্ভবনা এবং গুণগত মানের উন্নয়নের দিকে। অপরপক্ষে একটি কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য তার পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেবে।

从学校看,在就业率指标的逼迫下,几乎所有大学,[…] 都以就业为导向办学,通识课程被大幅缩减,增加的是技能课程、实践课程和实习环节,而这种调整,还被认为是“教育创新”。[…] 这就不难理解为何在大学中,给留学生的国粹课开得轰轰烈烈,而国内学生却无缘了。对于留学生,大学没有安排其就业的压力,所有安排课程尽可能针对留学生的 需求;而留学生到中国留学,了解中国文化是一个重要目的。

প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর চাপ থাকে, যেন তারা স্নাতকোত্তর ছাত্রদের কাঙ্খিত পেশায় প্রবেশের যোগ্য করে তোলার লক্ষ্য অর্জন করে। এর ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে মনোযোগ তৈরি হয় প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের উপর। উদারনৈতিক শিক্ষা, ব্যবহারিক দক্ষ প্রশিক্ষণের একটি বিকল্প। তবে বেদনাদায়ক বিষয়, এর খাপ খাইয়ে নেবার বিষয়টিকে এক “উদ্ভাবন” হিসেবে চিত্রিত হয়েছে। […] এর ফলে এটা উপলব্ধি করা তেমন কোন কঠিন বিষয় নয় যে, কেন উচ্চমার্গীয় সংস্কৃতি পাঠ কেন কেবল বিদেশী ছাত্রদের মধ্যে সাধারণভাবে দৃশ্যমান, স্থানীয় ছাত্রদের মাঝে নয়। পাঠ শেষে বিদেশী ছাত্রদের চাকুরি প্রদানের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর তেমন কোন চাপ থাকে না। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ তাদের উচ্চমার্গীয় চীনা সংস্কৃতি তুলে ধরতে পারে, যা বিদেশীদের পড়ার লক্ষ্য।

কিন্তু উচ্চমার্গীয় সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিক পতন নতুন কিছু নয় এবং এটা কেবল চীনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ক্রিস্টোফার লাস আমেরিকার সমাজ সমালোচক এবং ইতিহাসবিদ। তিনি আধুনিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় পশ্চিমা সংস্কৃতির পতনের বিষয়টি বর্ণনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাক্ষরতার হারের পতনের উপর মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি ১৯৭৯ সালে দি কালচার অফ নার্সিসিজম-এ লিখেন: =

এমনকি হার্ভার্ড, ইয়েল এবং প্রিন্স টাউনের যে আদর্শ মান তারও পতন ঘটতে শুরু হয়েছে, যাদের সর্বোচ্চ গণ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করা যায়। হার্ভার্ডের একটি বিভাগে এক কমিটি বা দল জানাচ্ছে, ‘হার্ভার্ডের বিভিন্ন বিভাগগুলো শিক্ষা প্রদানের ব্যাপারে তেমন মনোযোগী নয়’। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়ায় সাধারণ শিক্ষার উপর পরিচালিত এক গবেষণা অনুসারে দেখা যাচ্ছে, কি ধরনের উপেক্ষা গ্রহণযোগ্য নয়, শিক্ষকরা সে সম্বন্ধে তাদের সাধারণ ভাবনা হারিয়ে ফেলেছে। এর ফলে, ছাত্ররা সাধারণ অস্থিরতার বর্ণনা করার ক্ষেত্রে রেবেলিয়াস পাঠ করে, ফরাসী বিপ্লবের ঘটনাকে তার সাথে আরোপ করার জন্য। এখানকার ২৫ জনের একটি শ্রেণীকক্ষে কেউ ইদিপাস কমপ্লেক্স-অথবা ইদিপাসের নাম শোনেনি। ১৫ জন পড়ছে এমন শ্রেণীকক্ষে, কেবল একজন এই দশকে অনুষ্ঠিত হওয়া রুশ বিপ্লবের তারিখ উল্লেখ করতে পারে।

যখন আমরা এ সব পড়ি, তখন আমরা আবিষ্কার করি, আঘাত করার মত একই রকম কারণ বর্তমান চীনের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য:

তবে যে কোন ভাবেই হোক, শিক্ষার মানের পতন ধীরে ধীরে তাকে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার ব্যর্থতার কারণের সাথে মেলানো যাবে না। আধুনিক সমাজে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ মূলত ছাত্রদের পেশাগত কাজের ক্ষেত্রে দক্ষ করে গড়ে তোলায় নিয়োজিত, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয়ে চাকুরি সহজলভ্য, এখানে সেই সব বিষয়ের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এমনকি উচ্চ অর্থনৈতিক পরিসরে এখন আর উচ্চস্তরের প্রযুক্তিগত অথবা বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিযোগিতার প্রয়োজন নেই। বলা যায় বেশিরভাগ চাকুরি অনেকটাই বড় আকারে নিয়ম মাফিক ব্যবস্থায় চলে এবং তার জন্য খুব সামান্য পরিমাণ উদ্যোগ ও গুণাবলির দরকার হয়। যদি কেউ যদি সফলভাবে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পাঠ শেষ করে, শীঘ্রই সে আবিষ্কার করে বেশিরভাগ চাকুরির ক্ষেত্রে সে ‘অতিরিক্ত যোগ্য’। শিক্ষাব্যবস্থার পতন এভাবে উদ্যোগ, শিল্প উদ্যোগ এর চাহিদা হ্রাসের প্রতিচ্ছবি তৈরি করে এবং এ সব অর্জনের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।

এর ফলে, ‘অবশ্যই প্রদান করা উৎসাহ, শিল্পোদ্যোগ এবং ‘অর্জনের জন্য বাধ্যবাধকতা’, উচ্চ মার্গীয় সংস্কৃতির এক সচেতন প্রান্ত তৈরি করে। কিন্তু আধুনিক শিল্পায়িত সমাজে এই ধরণের শিক্ষার কোন চাহিদা নেই। এতে সংস্কৃতি, দর্শন, ইতিহাস এবং অন্য উচ্চ মার্গীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে অনন্যা মানবিক বিষয়ের প্রান্তিক অবস্থান চলে যাবার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এ রকম ঘটনা দেখতে পাবার বিষয় আমাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়। যখন আমরা নিম্ন অবস্থান থেকে প্রতিযোগিতা শুরু করেছি, সেক্ষেত্রে এখান থেকে বের হবার কোন উপায় আছে কি? আজকের সমাজে উচ্চ মার্গীয় সংস্কৃতির কোন স্থান রয়েছে কি?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .