দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০১০ বিশ্ব কাপ এগিয়ে আসছে আর বাড়ছে টিকিটের ঝামেলা

বিশ্বের সব থেকে বড় ক্রীড়া অনুষ্ঠান ফিফা বিশ্ব কাপ ২০১০ এবার আসছে ‘কেপ অফ গুড হোপে’। এর সময় যখন ঘনিয়ে আসছে, ফিফা তার চূড়ান্ত টিকেট বিক্রি প্রচারণা শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লক্ষ্য করে আর অবশ্যই বিশ্বের ফুটবল প্রেমিকদের জন্য। এবার স্বাগতিক দেশে বিভিন্ন টিকেট বিক্রির স্থল আর অন্যান্য সহজগম্য স্থান থেকে প্রাথমিক বিক্রির লক্ষ্য ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ টিকেট ।

হোয়াইট কটেজ ব্লগ জানিয়েছে প্রথম দিনে বেশ বিশৃঙ্খলা ছিল আর একজন ভক্ত মারাও যান টিকিট কেনার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে:

শেষ পর্যায়ের বিশ্ব কাপের টিকিট বিক্রির প্রথম দিন বিশৃঙ্খলাতে শেষ হয়েছে, বিক্রি স্থলে লাইন, লাইনে একজন ফুটবল প্রেমীর হার্ট এটাকে মারা যাওয়া আর এফেনবি ব্যবস্থা অফলাইন হওয়া।

এই ব্লগ আরো জানিয়েছে যে:

… লোভী আর সুযোগসন্ধানী ‘ব্যক্তিরা’ প্রথমে টিকিট কিনেছেন, সেটা পুনর্বিক্রয়ের লক্ষ্যে – অবশ্যই লাভ রেখে। তবে তারা এখন জানতে পেরেছেন যে যদিও কেনার সময়ে পরিষ্কার বোঝা গিয়েছিল, যে কেউ সেটা আবার বিক্রি করতে পারবে না – কারণ টিকিটে ক্রয়কারী ব্যক্তির আইডি নম্বর ছাপা আছে। তার মানে টিকিটের বিক্রেতারা সেটা বিনা মূল্যেও কাউকে দিতে পারবেন না!

দ্যা সকার ফাইল ব্লগ আরো ব্যক্তিগত বিবরণ দিয়েছেন:

সকল খেলার জন্য টিকিট আছে এ্‌ই কথা ফিফা জানানোর পরে যারা সকাল ৭টা থেকে লাইনে ছিলেন দুপুর দুটোর দিকে কাউন্টারের কাছে পৌঁছে জানতে পরেন যে ক্যাটেগরি ১ এর কিছু খেলার টিকিট মাত্র পাওয়া যাবে।

ফিফথ অফিশিয়াল টিকিট বিক্রি নিয়ে এটা বলতে চেয়েছেন:

৩১০ জন গ্রাহকের কাছে মোট ১৬১০ টিকিট বিক্রি করা হয় টিকিট কেন্দ্রে আজকে সকালে ৯টায় খোলার প্রথম ঘন্টার মধ্যে, আর এফএনবি শাখার মাধ্যমে ৪৭০ জন ভক্তদের কাছে ২১৬৬ টিকিট বিক্রি করা হয়। দেশব্যাপী প্রচুর চাহিদার ধকল সম্মিলিত টিকিট বিক্রি ব্যবস্থার (যারা সকল বিক্রয় কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করে) উপর পরে; যার ফলে প্রাথমিকভাবে টিকিটের অর্ডার প্রক্রিয়া করতে কিছু সময় লাগে।

ওয়ার্ল্ডবিবিনিউজ.কম প্রধান পরিচালক ড্যানি জর্ডানকে পান যিনি এই বিশৃঙ্খলার ব্যাপারটি পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন:

বিশ্ব কাপ আয়োজক কমিটির প্রধান ড্যানি জর্ডান এইসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন: “এটা হবে যখন আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন। যে মুহূর্তে আপনি কোন ভুল চান না, তখনি ভুল হবে। আমরা আজ সকালে টিকিট ছাপিয়েছি, আর এটা একেবারে ঠিক কাজ করছিল। তারপরে আপনারা যখন আসলেন আর ক্যামেরা ছিল, তখন কোন কারনে মেশিন লজ্জা পেল আর এমন হল না। কিন্তু আমি খুশি যে এখন আবার তা অনলাইন হয়ে গেছে।“

ড্যানি জর্ডান একজন ব্রিটিশ নাগরিককে এটা বলেছেন:

আমার মনে হয়না আপনি বিশৃঙ্খলা বোঝেন। আমার মনে হয় ফুটবল প্রেমিকদের টিকিট কাটার সময়ে আপনি কখনো থাকেননি। আজকের অভিজ্ঞতা ঠিক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বা আর্সেনালের টিকিট কেনার মতো…

প্রিটোরিয়া থেকে এন আমেরিকান ইন প্রিটোরিয়া এটা বলেছেন:

আমি আজকে প্রিটোরিয়া দিয়ে গাড়ি করে গেলাম। একটা রোবট বাইরে ছিল আর ট্রাফিক ভয়ঙ্কর ছিল। আমি শেষ পর্যন্ত আমার গন্তব্যে যখন পৌঁছালাম দেখলাম মানুষ প্রচন্ড ভিড় যেটা দুটি শপিং মলের ভিতর দিয়ে গিয়েছে- এঁকেবেঁকে, ঘুরে, যে কোন খালি স্থান ভরে দুই ব্লকের ব্যাসে…বিশ্ব কাপের টিকিট জনগণের জন্য বিক্রি হচ্ছিল। ভিড় এতো বেশী ছিল যে আমি কোথাও যেতে পারছিলাম না, তাই একটা ক্যাফেতে আমি তিন ঘন্টা বসে ছিলাম।

বিশ্ব সকার ব্লগ বলেছে যে দক্ষিণন আফ্রিকানদের টিকিট কেনাতে উৎসাহী মনে হয় নি:

দক্ষিণ আফ্রিকাতে প্রায় ৫০০,০০০ টিকিট বিক্রির জন্য ছাড়া হয়েছে শেষ কিস্তিতে। আয়োজকদের বিশাল কাজ এইসব টিকিট পরবর্তী দুই মাসে বিক্রি করা নাহলে স্বল্প দর্শকের খেলা দেখার ভয় থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রে টিকিট ভালো বিক্রি হয়েছে, ইউরোপে মোটামুটি আর জাপান ও এশিয়াতে হতাশাব্যঞ্জক।

কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে দক্ষিণ আফ্রিকানরা নিজেরাই দলে দলে টিকিট কাটতে আসছেন না। বিপদ হচ্ছে কম জনপ্রিয় দেশ যেমন নিউজিল্যান্ড, স্লোভেনিয়া, আলজেরিয়া আর গ্রিসের খেলার ক্ষেত্রে। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ঢোকার মুখে ভিসার জন্য ফি বিনামূল্য করছেন যাতে বেশী বিশ্বকাপ প্রেমী আকৃষ্ট হন। তারা ভিসা দ্রুত করার চ্যানেলও প্রচলিত করছেন।

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .