- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ইরানের ধর্মীয় নেতার দাবীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে “বুবকোয়েক”

বিষয়বস্তু: উত্তর আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, প্রতিবাদ, মানবাধিকার, লিঙ্গ ও নারী, সরকার

boobquakeমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জেনিফার ম্যাকরেইট সোমবার (২৬শে এপ্রিল) সারা বিশ্বের নারীদের বুকের কিয়দংশ (ক্লিভেজ বা স্তনের উপরের অংশ) বা পায়ের সামান্য উন্মুক্ত অংশ প্রদর্শন করার জন্য আহ্বান জানান [1]। ইরানের এক ধর্মীয় নেতা এই তত্ত্ব প্রদান করেছেন যে, (মেয়েদের) অশ্লীল পোশাক পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে। এই তত্ত্ব সঠিক কিনা তা প্রমাণের এক কৌতুককর পরীক্ষার জন্য জেনিফার এই আহ্বান জানান।

এই ঘটনার শুরু তখন, যখন তেহরানে জুম্মার নামাজ পড়ানোর জন্য ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমাম হোজ্জাতুলইসলাম কাজেম সেদিঘি বলেন [2]: “অনেক মেয়ে শরীর ঠিকমত ঢেকে কাপড় পড়ে না… তারা তরুণদের বিপদগামী করে, তাদের কৌমার্যকে নষ্ট করে, এবং সমাজে ব্যাভিচার ছড়িয়ে দেয়, এর ফলে (এই সমস্ত পাপের কারণে) পৃথিবীতে ভূমিকম্পের সংখ্যা বাড়ছে”।

জেন ম্যাকরেইট নিজেকে উদার, কাজ পাগল, প্রযুক্তিতে আস্থাবান বোকা, বিজ্ঞানমনস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের আটকা পড়া বিপদগামী নারীবাদী নাস্তিক হিসেবে বিবেচনা করেন। তিনি তার ব্লগে লিখেছেন [3]:

আমার একটা বিনয়ী প্রস্তাবনা রয়েছে। সেদিঘি দাবী করেছেন যে সংযত পোশাক না পরার কারণে (মেয়েদের) পৃথিবীতে ভূমিকম্প হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে এর সত্যতা পরীক্ষা করে দেখতে পারি। আপনারা সকলেই হোমিওপ্যাথি ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণের বিষয় অবগত আছেন? এখন সময় বুবকোয়েকের (ইরানের ধর্মীয় নেতার বাণীর প্রতিবাদে ম্যাকরেইট বুবকোয়েক শব্দটির প্রচলন করেন, তিনি যার দ্বারা বোঝাতে চাইছেন উন্মুক্ত হবার মাধ্যমে কোন কিছুকে কাঁপানো)। ২৬ এপ্রিল, সোমবার, আমি আমার সেই জামাটি পড়বো, যে জামার মধ্য দিয়ে আমার বুকের মাঝখানের অংশ পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হয়। হ্যাঁ, সেই জামাটি, যা শহরের একটি বিশেষ দিনে পড়ার জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছে। আমি অন্য সব সংশয়বাদী নারীদের, আমার সাথে যোগদান করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি এবং তাদের বক্ষের অতিপ্রাকৃত শক্তিকে ব্যবহার করার অনুরোধ করছি, অথবা আমাদের শরীরের নীচের অংশে পড়ার জন্য তৈরি করা সংক্ষিপ্ত পোশাক (শর্টস বা হাফ প্যান্ট) পড়তে বলছি, যা আপনারা আপনাদের অসংযত মানসিকতার কারণে পরে থাকেন। নিন্দনীয় শারীরিক সম্পদের যৌথ এক প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়ে আমরা নিশ্চিতভাবে পৃথিবীতে ভূমিকম্প তৈরির ক্ষমতা রাখি। যদি তা না হয়, তাহলে আমি নিশ্চিত যে, সেদিঘি হয়তো একটি যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হবে, কেন এদিন পৃথিবী নড়ে উঠলো না। এবং যদি আমরা তার তত্ত্বকে সঠিক প্রমাণ করতে পারি, তাহলে হয়তো এটা প্লেট টেকটনিক -এর একটি অন্যতম কারণ।

বুবকোয়েক নামক অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা ফেসবুকের পাতায় ইতোমধ্যে ১২৩,৬৮০ জন এর পক্ষে সমর্থন [4] প্রকাশ করেছে, যাদের অনেকে পুরুষ। উপরের ছবিটি ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া।

এখানে বুবকোয়েকের একটি ভিডিও বার্তা রয়েছে।

অতীতে ইরানের বাসিন্দারা নিজেরাও সেন্সরশিপ বা নিষেধাজ্ঞা ও নিপীড়নেরও বিরুদ্ধে সৃষ্টিশীল প্রচারণা চালিয়েছে। জেলে থাকা অন্যতম এক ছাত্র ও একটিভিস্ট মাজিদ তাভাকোলির সমর্থনে অতি সম্প্রতি ম্যান ইন হিজাব নামক প্রচারণা [5] (হিজাব পরিহিত পুরুষ) চালানো হয়েছিল। মনে হচ্ছে ইরানের ঘটনা এখন সারা বিশ্বে উত্তেজনার সৃষ্টি করা শুরু করেছে।