- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

জাপান: মানুষের দীর্ঘ আয়ু, টিভি অনুষ্ঠানেরও তাই

বিষয়বস্তু: উত্তর আমেরিকা, পূর্ব এশিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইতিহাস, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, শিল্প ও সংস্কৃতি

দীর্ঘ আয়ুর মানুষের জন্য জাপান বিখ্যাত, কিন্তু জনগোষ্ঠীর মতই তার টিভি অনুষ্ঠানের এক সমৃদ্ধ এবং লম্বা ইতিহাস রয়েছে। জাপানে এমন কিছু টিভি অনুষ্ঠান রয়েছে যেগুলো প্রায় অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে টিভিতে প্রচারিত হয়ে আসছে। এখানে সবচেয়ে কৌতূহলী বিষয় হল এই অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্যতা। টক শো থেকে শুরু করে সংবাদ ও ক্রীড়া থেকে রান্না, সঙ্গীত, এনাইম (এনিমেশন বা কার্টুন ছবি) সহ সব ধরনের অনুষ্ঠান রয়েছে, এমনকি রাজকীয় পরিবারের উপরেও এক অনুষ্ঠান এদেশে লম্বা সময় ধরে প্রচারিত হয়ে আসছে। এই প্রবন্ধ জাপানের চোজু বাংগুমির (長寿番組) যার আক্ষরিক অর্থ, “লম্বা সময় ধরে চলতে থাকা অনুষ্ঠান”) উপর নজর প্রদান করছে। চোজুর অনুষ্ঠানের সংজ্ঞার মধ্যে যেমন রয়েছে ১০ বছরের তরুণ অনুষ্ঠান, তেমনি ৫০ বছরের পুরনো অনুষ্ঠানও রয়েছে।

ফুজি টেলিভিশন ভবনের দৃশ্য, ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী কামাদোর।

ফুজি টেলিভিশন ভবনের দৃশ্য, ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী কামাদোর।

অরিকন, যারা জরিপের উপর ভিত্তি করে টিভি অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তার তালিকা তৈরি করে, তারা সেই সব চোজু অনুষ্ঠানকে নির্দিষ্ট করেছে, যেগুলো ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রচারিত হচ্ছে। ২০০৯ এর অক্টোবরে প্রকাশিত প্রশ্নমালার ভিত্তিতে সেরা দশ চোজু অনুষ্ঠানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

オリコンでは『好きな長寿番組』 [1]についてアンケート を実施したところ、1位は1982年に放送がスタートした昼のバラエティ番組【森田一義アワー笑っていいとも!】(フジテレビ系)が選ばれた。番組の企画 構成やレギュラー出演者の豪華さはもちろんだが、主な支持の理由として、司会のタモリを称える意見が圧倒的。

অরিকন এর তৈরি করা প্রশ্নমালার ভিত্তিতে সেরা চোজু অনুষ্ঠানের তালিকায় ওয়ারাত্তে ইতোমো [2] রয়েছে, যা ১৯৮২ সাল থেকে প্রচারিত হয়ে আসা ফুজি টিভির একটি বিচিত্রানুষ্ঠান (ভ্যারাইটি প্রোগ্রাম), সেটি প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এর বাইরে এর কাঠামো /অনুষ্ঠান পরিচালনা বা এবং তারকাদের বেছে নেওয়া, উপস্থাপিকা (এমসি, মাস্টার অফ সেরিমনি) তামরিওর ক্ষেত্রে উপচে পড়া প্রতিক্রিয়া তালিকাভুক্ত করা, যার কারণে এই চোজু সবার সেরা চোজু অনুষ্ঠানের তালিকায় উঠে এসেছে।

3位に「数少ない正統派の歌番組」(埼玉県/30代/女性)と 【ミュージックステーション】(テレビ朝日系)がランクイン。「生放送独特の緊張感やハプニングがいい。さらにミュージシャンの素が垣間見えて面白 い」(長野県/30代/女性)と、音楽番組として放送開始時から変わらないスタンスと真摯な番組作り、さらに音楽番組として今では数少ない“生放送”とい う番組形態が高い支持を獲得。
なお、2位には国民的アニメ【サザエさん】(フジテレビ系)、4位に【笑点】(日本テレビ系)と日曜夕方の定番番組が挙がり、いずれも「家族団らんの時間の象徴になっているから」(埼玉県/10代/女性)と家族揃って観ても安心できる番組として親しまれているようだ。

আশাহি টিভির অনুষ্ঠান “মিউজিক স্টেশন [3]” সেরা চোজু অনুষ্ঠানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। সাতিমা জেলার ৩০-এ পা দেওয়া এক মহিলা তার প্রতিক্রিয়ায় এটিকে তার স্কুলের-এর সময়ের পুরনো একটি অনুষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেন। নাগানো জেলার আরেকজন মহিলা যার বয়সও ৩০-ঊর্ধ্ব, তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলছেন, এই অনুষ্ঠানের উত্তেজনা একেবারে আলাদা, যা সরাসরি প্রচার করা হয় এবং এখানে যা ঘটে তা অসাধারণ। এছাড়া, এই অনুষ্ঠান কৌতূহলজনক, কারণ সময়ে সময়ে আমরা সত্যিকারের সঙ্গীত জগতের বাসিন্দাদের দেখতে পাই। যখন থেকে তা একটি সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে, তখন থেকে স্টাইল বা ধারার উপর ভিত্তি করে এই অনুষ্ঠান প্রচুর সমর্থক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা আজো অপরিবর্তিত রয়েছে। এর আন্তরিক নির্মাণ ও অনুষ্ঠান পরিকল্পনা, যা অল্প কয়েকটি সঙ্গীত অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম, তা আজও সরাসরি প্রচার হয়ে আসছে।

ফুজি টিভির “সাজায়েসান [4]” এমন এক অনুষ্ঠান যে একটি আদর্শ কার্টুন শো হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই অনুষ্ঠানটি তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। নিপ্পন টিভির “শোটেন [5]” চার নম্বরে রয়েছে। উভয় অনুষ্ঠান রোববার সন্ধ্যায় নিয়মিত প্রচারিত হয়ে থাকে, যা এমন অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তাকে নির্দেশ করে, যেগুলো পরিবারের সবাই একসাথে বসে নিরাপদে দেখতে পারে। সাতিয়ামা থেকে এক কিশোরীর প্রতিক্রিয়া, এই সব অনুষ্ঠানকে সংক্ষেপে বর্ণনা করছে, “এ সব অনুষ্ঠান পরিবারের সবার একসাথে সময় কাটানোর প্রতীক”।

এই পরিকল্পনার তৈরিকারী শুউজি নাকামুরা [6] বলেন, লম্বা সময় ধরে চলা এই এনাইম সাজায়েসান [7] জাপানের রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির এক প্রতিচ্ছবি:

ア ニメ『サザエさん』の第1回放送は1969年10月5日。今年で41年目を迎える長寿番組である。ゴールデンタイムのドラマの視聴率が20%あれば御の字 という時代になっても、平均視聴率が20%前後という非常に高い数字をはじき出す国民的アニメだ。きっとキャラクターも、認知率は100%に近いだろう。
日 曜18時30分から放送という国民的アニメであるため、その視聴率は景気と連動していると言われている。景気の良いときは、日曜18時30分になっても家 に帰らず、外食やレジャーを楽しむ家族が多いため、視聴率が下がる。しかし、不景気の時は日曜に外へ出かけないで家にこもり、みんなで夕食を食べながら 『サザエさん』を見るというスタイルになるため、視聴率が上がるというわけだ。

এই এনাইম প্রথম প্রচারিত হয় ১৯৬৯ সালের ৫ই অক্টোবর। লম্ব সময় ধরে চলা এই অনুষ্ঠান এ বছর ৪১ বছরে পা দিয়েছে, এমন এক সময়, যখন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে (প্রাইম টাইম- যে সময়টা সবচেয়ে বেশি লোক টিভি অনুষ্ঠান দেখে, সাধারণত সন্ধ্যা ৭- রাত ১২ টা) চলা নাটকেরও ২০ শতাংশ রেটিং বা মান অর্জন করাই দুষ্কর। সাজায়েসানের গড় মান ঠিক ২০ শতাংশ। এটা একটা কার্টুন অনুষ্ঠানের জন্য অনেক বেশি এবং এই মান অনুষ্ঠানকে একটি জাতীয় প্রতীকে পরিণত করেছে। এর চরিত্রগুলোকে সম্ভবত জাপানের শতভাগ লোক চিনতে পারবে।

বলা হয়ে থাকে রেটিং বা মান অর্জনের বিষয়টি জাপানের অর্থনৈতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্কিত, কারণ এই অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় রোববার সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে। বিকাশমান এক অর্থনীতিতে এর মান অর্জনের পরিমাণ কমতে থাকে, কারণ অনেক পরিবার তখন রাতের খাবার খেতে বাইরে যায় অথবা বিনোদনমূলক কাজের জন্য রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় বাইরে থাকে। তবে অর্থনৈতিক মন্দার সময় এর মান বাড়তে থাকে, কারণ তখন বেশিরভাগ পরিবার রোববার ঘরে থাকে এবং সন্ধ্যায় পারিবারিকভাবে একসাথে খেতে বসে “সাজায়েসান” অনুষ্ঠানটি দেখে।

তুলনা করার জন্য আমি যুক্তরাষ্ট্রে লম্বা সময় ধরে চলা টিভি অনুষ্ঠানের দিকে লক্ষ্য করেছি, যেগুলো বিশ্বে সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে চলা অনুষ্ঠানের পথ প্রদর্শক। এক্ষেত্রে এনবিসি টেলিভিশনের “মিট দ্যা প্রেস [8]” তা হতে পারে। এটি রোববার সকালে প্রচারিত হওয়া একটি টক শো, যার যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৭ সালে। এর পরেই রয়েছে, “সিবিএস ইভিনিং নিউজ [9]” ও এনবিসি চ্যানেলের সকালে প্রচারিত খবর ভিত্তিক অনুষ্ঠান “টুডে [10]”। চার নম্বরে রয়েছে সিবিএস এর দিনের বেলায় প্রচারিত নাটক “গাইডিং লাইট [11]”।

জাপানের চোজু অনুষ্ঠানের [12] তালিকার ক্ষেত্রে যা বের হয়ে এসেছে তা হল এ ধরনের অনুষ্ঠান নির্মাণে এনএচইকে [13]-এর (জাপানের রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম) প্রাধান্য রয়েছে বিশেষ করে, যখন আপনি অনুষ্ঠানগুলোর দিকে তাকাবেন, দেখবেন ইতিহাসে সেগুলো অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময় ধরে প্রচারিত হয়ে আসছে। বিস্তৃত অনুষ্ঠানের তালিকা এখানে তাদের প্রতিনিধিত্ব করে, যার মধ্যে গানের প্রতিযোগিতা “নডোজিমান [14]” রয়েছে (=এই অনুষ্ঠানটিকে আমেরিকান আইডলের [15] জাপানী সংস্করণ বলা যায়) এবং কোহাকু উটা গাসেন [16] (= একটি বার্ষিক সঙ্গীত অনুষ্ঠান) এবং বেশ কিছু অল্প সংখ্যক খবরের অনুষ্ঠান, যেমনটা আমেরিকার তালিকায় [17] রয়েছে।

পিবিএস যা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রচার মাধ্যমের মত এক কোম্পানী যা তাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এই শিল্পের অগ্রপথিক, তাদের কোন অনুষ্ঠান খুব কমই সে দেশের সেরা দশে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে।

১.৭৫ মিলিয়ন বা ১৭.৫ লক্ষ লোকের ব্যবহার করা জাপানী বার্তা প্রদান পাতা (মেসেজ বোর্ড) যাকে “ওশিহিতে! গোও [18]” নামে অভিহিত করা হয়, সেখানে সেরা অনুষ্ঠানের তালিকা করার জন্য আহ্বান জানান হয়। এদের অনেকেই একটি চোজু অনুষ্ঠানকে তাদের সেরা অনুষ্ঠানের তালিকায় লিপিবদ্ধ করেছে।

সাজায়ে-সানের [7] একটি পর্ব দেখার পর ব্লগার জাকিয়ামা ইয়ুমেকো [19] অনুষ্ঠানের রূপরেখার ব্যাখ্যা দিচ্ছে ও বিবেচনা করছে:

こういうところが、長寿番組の秘訣でしょうか。ほのぼのした、いい話が多いですよね。
気がつけば、物心ついたころからサザエさんを見ていると思います。

আমি বিস্মিত এ কারণে যে, কেবল “ভালো লাগার” একটি পরিবেশ চোজু অনুষ্ঠানের সফলতার রহস্য? বেশিরভাগ মানুষের জন্য হৃদয় উষ্ণ করা অনেক অনুষ্ঠান রয়েছে। আমি মনে করি, বেশিরভাগ লোকে যদি জীবন শুরুর যতদুর পর্যন্ত স্মরণ করতে পারে, তা হলে তারা দেখবে, তখন থেকে তারা সাজায়ে-সান অনুষ্ঠানটি দেখে আসছে।

আপনি কি ধরনের অনুষ্ঠান পছন্দ করেন? আপনি কি আপনার পিতামাতা বা দাদা ও দাদির সাথে বসে অনুষ্ঠান দেখতে মজা পান, নাকি তারা পুরনো ধাঁচের মানুষ এবং বিরক্তিকর? আপনি কি মনে করেন যে সমস্ত অনুষ্ঠান ইতিহাসে কয়েক দশক ধরে চলছে, এখন থেকে আরো ২০ বছর পরে কি তাদের দেখা যাবে?