- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

কোস্টা রিকা: সম-লিঙ্গীয় দম্পতির জন্য অধিকারের নিশ্চয়তা

বিষয়বস্তু: ল্যাটিন আমেরিকা, কোস্টা রিকা, আইন, মানবাধিকার, সমকামী অধিকার

গত কয়েক বছর ধরে কোস্টা রিকায় সম-লিঙ্গের সম্পর্কের বিষয়টি সক্রিয় এক আলোচনার বিষয় দাঁড়িয়েছে, কিন্তু এই বিষয়ে রাষ্ট্রীয় নীতি তৈরির ক্ষেত্রে খুব সামান্য অগ্রগতি হয়েছে। কোস্টারিকা এমন এক দেশ যেখানে রোমান ক্যাথলিক সাংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রীয় ধর্ম [1] (পোপকে ধর্মগুরু মানে এমন খ্রিস্টান)এবং দেশটির জনসংখ্যার বিশাল অংশই রক্ষণশীল, যার ফলে এটি একটি বিতর্কিত বিষয়, এর পক্ষে এবং বিপক্ষে অনেকেই রয়েছেন।

আইনসভায় এই বিষয়টিকে উত্থাপন করার বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টার পর সম্প্রতি যে প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে, তাকে বলা হচ্ছে সহাবস্থানের এক সমাজ, তা সম-লিঙ্গের বিবাহকে বৈধ করতে ইচ্ছুক নয়, তার বদলে তারা এই সমস্ত দম্পতির জন্য বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করার সুযোগ প্রদান করতে চাচ্ছে। এই বিষয়টি সম্বন্ধে পাঠ করা যাবে স্প্যানিশ ভাষায়, এখানে [2]। যাবে, এই লেখাটি মূলত সুবিধা প্রদান করা চারটি মূল নীতির উপর তৈরি হয়েছে [স্প্যানিশ ভাষায়] [3], যার মধ্য রয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসার অধিকার, অর্জিত সম্পদকে ভাগ করা বা তার উপর অধিকার, উত্তরাধিকারের অধিকার, এবং বীমার সুযোগ।

লিবারেশন পার্টির (পিএলএ)-প্রার্থী ছিলেন লরা চিনচিলা, যিনি এই নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি নির্বাচনের সময় সম-লিঙ্গীয় বিবাহকে একটি বিকল্প বিবাহ হিসেবে স্বীকৃতি দেবার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছিলেন, যেমনটা নিচের ভিডিওটি [4] প্রদর্শন করছে [স্প্যানিশ ভাষায়]। তবে নির্বাচনে জেতার পর এবং সংসদের সহমনা খ্রীস্টান-দলগুলোর সদস্য ও সু-সমাচার এর অনুসারী খ্রীস্টান নেতাদের (ইভানজেলিকাল খ্রীস্টান) সাথে সাক্ষাৎ-এর অল্প কিছুদিন পরেই, তিনি সম-লিঙ্গীয় মিলনের ব্যাপারে তার অবস্থান কঠোর করে ফেলেন [স্প্যানিশ ভাষায়]। [5]

রাষ্ট্রপতি চিনচিলার নিজের অবস্থান বদলে ফেলার সাথে সাথে ব্লগে খুব দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কনেজস সুইসিডাস [স্প্যানিশ ভাষায়] লিখেছেন [6]:

Si le fue tan fácil cambiar de opinión en este tema, ¿qué tan firme y honesta resultará al tener que cumplir compromisos con fracciones y grupos de poder más fuertes?

যদি মতামত যদি খুব সহজেই বদলে যায়, তা হলে সমাজের শক্তিশালী অংশ এবং দলগুলো ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কিভাবে দৃঢ়তার এবং সততার সাথে তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করবে?

এল চামুকো নামে পরিচিত ব্লগার রাষ্ট্রপতির এই অবস্থান পরিবর্তনের একজন শক্তিশালী সমালোচক, যিনি তার ব্লগ ইনফিয়েরনো এন কোস্টা রিকা ব্লগে লিখেছেন [7] [স্প্যানিশ ভাষায়]:

Habló muy lindo Laurias, de que no hay que discriminar a los homosexuales y que hay que apoyar iniciativas diferentes al matrimonio para proteger los derechos de esta minoría. El proyecto de ley de uniones civiles entre homosexuales es una iniciativa DIFERENTE AL MATRIMONIO, pero ahora la marioneta cambia el discurso que se traía en campaña, solo por quedar bien con un par de fanáticos religiosos que no permiten pecadores en sus partidos, pero bien que apoyan a ex-convictos por pedofilia.

লরিয়াস* (লরা চিনচিলা) সুন্দর করে বলেন যে, সমকামীদের প্রতি আমাদের বৈষম্যমূলক আচরণ করা উচিত নয় এবং এই সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষার জন্য ভিন্ন ধরনের বিবাহের উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানান উচিত। পুরুষ সমকামী বিবাহের আইনগত প্রস্তাবনা ছিল ভিন্ন ধরনের বিবাহের এক উদ্যোগ, কিন্তু এখন “পুতুলটি” তার বক্তব্য বদলে ফেলেছে, যা সে তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রদান করেছিল, যা কেবল তার ধর্মীয় উন্মাদ জুটিদের কাছে ভালো লেগেছে, যারা তাদের দলে কোন পাপ করাকে অনুমতি প্রদান করে না, কিন্তু যে সমস্ত ব্যক্তি স্বীকার করে, তারা কিশোরদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল তাদের সমর্থন করে।

*টীকা: “লরিয়াস” রাষ্ট্রপতি লরা চিনচিলার ব্যাঙ্গাত্মক নাম, যা কিছু ব্লগার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় তাকে প্রদান করে। এটি তার নামের প্রথম অংশ লরার সাথে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি অস্কার এরিয়াসের নামের শেষ অংশ মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই নাম প্রদানের কারণ, নির্বাচনের সময় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি লরাকে সমর্থন দিয়েছিল। লরাকে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এরিয়াসের হাতের ‘পুতুল’ বলে ডাকা হয়, কারণ নতুন রাষ্ট্রপতি পুরোন নীতিতেই সরকার চালাচ্ছে।

এমন অনেক নাগরিক দল রয়েছে, যারা সহ-অবস্থানের এক সমাজের জন্য আইন তৈরি করা হবে কি হবে না, তার জন্য গণভোটের প্রস্তাব করছে। গণভোটের এই প্রস্তাবে অনেক ব্লগার এবং দেশটির সমাজের কিছু অংশ ক্ষিপ্ত, এমনকি সংসদের অনেক সদস্য যেমন, আনা হেলেন চাকোন (পিইউএসসি), জোসে মেরিনো (এফএ) এবং কার্লোস গুতিয়ারেজ (এমএল), যারা এই আইনের জন্য আইন সভার বিশেষ অধিবেশনের আহ্বান জানায়। অনেক ভাবছেন মানবাধিকার বিষয়ে গণভোটের প্রয়োজন নেই, যা আইনটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে অনেকে অনুধাবন করেন।

ব্লগ টেরোরিস্টা টারসারমুন্ডিস্টা [ তৃতীয় বিশ্বের সন্ত্রাসবাদী, স্প্যানিশ ভাষায়] লিখেছে [8]:

Dejar que la mayoría tome la decisión de si aceptar o no derechos básicos de una minoría en pleno año 2010, es insultar y escupir todas aquellas luchas que han librado los grupos siempre discriminados históricamente, y no solo me refiero a los homosexuales.

সংখ্যাগরিষ্ঠ জনমতকে এই সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার প্রদান করা যে, ২০১০ সালে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকারকে তারা স্বীকার করবে কি না, তা ঐতিহাসিকভাবে বৈষম্যমূলক বাস্তবতার বিরুদ্ধে যে সমস্ত দল এতদিন ধরে লড়াই করছে, তাদের অপমান করা ও থুতু ছিটানোর মত এবং এই ক্ষেত্রে আমি কেবল সমকামীদের কথা উল্লেখ করছি না।

ব্লগ ক্লাব সোডামায় [স্প্যানিশ ভাষায়], সমকামী অধিকার কর্মী উইলোপ লিখেছে: [9]

¿Por qué debemos evitar el referéndum? Los derechos humanos fueron concebidos para respetarse y otorgársele a tod@s l@s ciudadan@s. Nuestro país consultaría si se da o no un derecho humano, eso debería ser inconcebible. Los derechos humanos no se consultan, se dan.

কেন আমরা গণভোট এড়িয়ে যাব? মানবাধিকার মানে সকল নাগরিকদের শ্রদ্ধা ও তাদের চিন্তাকে মেনে নেওয়া। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে মানবাধিকার নিশ্চিত করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে, বিষয়টি অবশ্যই এ ধরনের চিন্তার বাইরে, মানবাধিকার কোন আলোচনার বিষয় নয়, এগুলো সুনির্দিষ্ট।

একজন এই বিষয়টিকে সবচেয়ে ভালোভাবে সমাধানের জন্য পরামর্শ প্রদান করেছে যা ক্রিস্টিয়ান কামব্রোনেরো তার ব্লগ ফুসিল ডে চিসপাসে প্রস্তাব করেছে [স্প্যানিশ ভাষায়]: যিনি প্রস্তাব করেন [10]:

¿Cuál es la alternativa al referendo? Simple: que el proyecto sea discutido en la Asamblea Legislativa, como corresponde, donde tras múltiples modificaciones ya cuenta con un apoyo expreso significativo.

গণভোটের বিকল্প সমাধান কি? খুব সহজ: সেটি হচ্ছে এই প্রস্তাবনাটি আইনসভায় আলোচনা হবে, যেমনটা বলা যায়, এই বিষয় নিয়ে বিভিন্ন মতামত আদান প্রদান করা হয়েছে, যেখানে অনেক পরিবর্তনের পর এই বিষয়টি বিশেষভাবে সমর্থন লাভ করেছে।