মরোক্কো: ‘ভালোবাসা দিবস’ পালন করা বা না করা!

অনেক দেশের মত মরোক্কোতেও ভালোবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইন ডে) পালন করা হয়। আধুনিক সময়ে ভালোবাসা প্রকাশের জন্য এই বিশেষ দিনটিকে এখানে বেছে নেওয়া হয়। এই দিনে মরোক্কোর প্রধান প্রধান শহরের দোকানের সামনে হৃদয়ের মত চেহারার চকলেট এবং টেডি বিয়ার নামের খেলনা পুতুল স্তূপ করে রাখা হয়। তবে ব্লগার রবিন দ্যু ব্লগ যেমনটা নির্দেশ করছেন, মরোক্কোর প্রচার মাধ্যম সব সময় এই উৎসব উদযাপনে উৎসাহ প্রদান করে না। “লা সেইন্ট-ভ্যালেন্টিন হালাল” নামের এক শিরোনামে ব্লগার লিখেছেন:

[Au Maroc] un simple bécot peut toujours les mener droit au panier à salade mais, marketing oblige, des jours durant, à l'approche du 14, sur les vitrines, des cœurs rouges virevoltent et flamboient à l'unisson. Alors, parce que cette date s'est inscrite dans le calendrier et que l'on est à l'affût des événements sur lesquels faire réagir les auditeurs, la Saint-Valentin a pris également sa place dans les programmes radiophoniques. Au petit déjeuner du 14, donc, dans le cadre d'une de ces émissions interactives lors desquelles les auditeurs sont invités à téléphoner pour faire connaître leur point de vue sur l'un ou l'autre des sujets traités, l'animatrice d'une des radios locales les plus écoutées lance celui du jour : l'amour, on l'aura compris. Mais alors, tout en rappelant qu'on est à la Saint-Valentin et que la Saint-Valentin est la fête des amoureux, ne voilà-t-il pas qu'elle nous livre en préambule une superbe tirade où elle nous dit ceci : 1/ la source de l'amour ne serait autre que l'amour porté à Dieu ; 2/ il n'est pas de plus bel exemple en matière d'amour profane que celui de l'engagement affectif du Prophète à l'égard de Khadija, sa première femme ; 3/ c'est de ce modèle que les amoureux – amoureux légaux dûment unis par la charia, at-elle bien pris soin de préciser – devraient avoir la bonne idée de s'inspirer.

এখানে [মরোক্কোতে] একটি সামান্য ধাক্কা একটা ধানের গাড়িকে ঠেলে নিয়ে যেতে পারে, কিন্তু বর্তমানে জোরালো এক বিপণন ব্যবস্থা ১৪ তারিখে তার মনোভাব নিয়ে জানালার পাশে এসে দাঁড়ায়। সেদিন হৃদয় এবং এক সাথে জট লেগে যাওয়া জ্বলন্ত সব ঐক্যতান একসাথে সামনে এসে দাঁড়ায়। যেহেতু এই দিনটি আমাদের দিন-পঞ্জিকায় অন্তর্ভুক্ত এবং এই আমরা জানি যে এ দিনের অনুষ্ঠানের কথা, এই দিনটিতে শ্রোতারা অনুষ্ঠান শুনে থাকে। ভালোবাসা দিবসে উপলক্ষ্যে রেডিওতে নানা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। ১৪ তারিখের সকালের নাস্তার সময় থেকে এই মিথস্ক্রিয়া-মূলক অনুষ্ঠান শুরু হয়, যেখানে শ্রোতাদের বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি প্রদানের অনুরোধ জানান হয়। স্থানীয় রেডিওর একজন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা দিনের শুরুর অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করেন: ভালোবাসা, বিষয়টিকে আমরা সবাই উপলব্ধি করতে পারি। কিন্তু তারপরে আমরা স্মরণ করি যে, দিনটি ভালোবাসা দিবস এবং ভালোবাসা দিবস আসলে প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য। যা সবাইকে বিস্মিত করে, উপস্থাপিকা আমাদের সামনে কোন প্রস্তাবনা রাখে না, তার বদলে একটা অসাধারণ দীর্ঘ বক্তৃতা উপস্থাপন করে। এই উপস্থাপনায় সে যা বলে তা হল: ১) ভালোবাসার উৎস আর কোথাও নয়, স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন ভালোবাসার উৎস; ২) ভালোবাসার ক্ষেত্রে আমাদের নবী তার প্রথমা স্ত্রী বিবি খাদিজাকে যে আবেগপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার চেয়ে আর সেরা কোন উদাহরণ নেই, ৩) প্রেমিক-প্রেমিকার যে আদর্শ মেনে চলবে- তারা শরিয়া আইন মেনে এক হবে, সে বেশ সতর্কতার এই বিষয়টি সম্বন্ধে বিবৃতি প্রদান করে- সুন্দর ভাবে একে অনুসরণ করা উচিত।

ব্লগার ক্রমাগতভাবে রেডিও অনুষ্ঠান এবং মরোক্কোতে আমদানি করা ভ্যালেন্টাইন ডে সমন্ধে ব্যাখ্যা করে যাচ্ছেন। এর সাথে তিনি যুক্ত করেন: (“ভালোবাসা হচ্ছে ভালোবাসা, বিশেষ সময়ে তার প্রকাশ। আসুন আমরা একদিনের জন্য হলেও সবকিছু ত্যাগ করি, সকল বাঁধাকে অতিক্রম করার চিন্তা করি”)

শান্তি রক্ষী বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবক কর্মী ওসলিইন ইন মরোক্কো। গ্রামের মানুষেরা এই দিনটিকে ছুটির দিন হিসেবে চিহ্নিত করায়, ভদ্রমহিলা তার পোস্টে বিস্ময় প্রকাশ করেন:

আজ আমি সকালবেলায় সমবায়-কেন্দ্রে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। সামান্য পরে সেখানে গেলাম, যদিও সেখানে আমার তেমন কোন কাজ ছিল না। তবে জাহরাকে বললাম যে, আমি এসেছি। আমি সেখানে গিয়ে খুশি হলাম। সে আমাকে স্বাগত জানাল, আজকে বন্ধের দিন কিনা এই প্রশ্নের মাধ্যমে। হাহ? তুমি জান, আজ আমেরিকায় ছুটির দিন। হাহ? ওহ, গতকাল স্কাইপিতে ডাব্লিউ/জো-তে আমি আবিষ্কার করেছিলাম, আমেরিকায় সেদিন ছিল রাষ্ট্রপতি দিবস। হ্যাঁ! কি বোকা, লিইন। সে তোমাকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে! ধন্যবাদ! স্মরণ রাখা প্রয়োজন, এটা এমন একটা সমবায় কেন্দ্র যা অবিবাহিত রমণীতে পরিপূর্ণ। আমি বন্ধের দিনের আর অন্য কোন বর্ণনা দিলাম না। তার বদলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে বন্ধের এই চিন্তাটি হৃদয় থেকে আসা এক ছুটির দিন।

মরোক্কোর অনেক ব্লগার এই ছুটির দিনটিকে দারুণ ভাবে উদযাপন করে। ল'কাসেট্টা একটি সঙ্গীতের ব্লগ। ভালোবাসা দিবসে ব্লগটি সমস্ত দিন একটানা সারা বিশ্বের প্রেমময় সঙ্গীত শুনিয়ে থাকে, ব্লগটি বলছে:

Que vaut l’amour sans la musique ? Que vaut le fait d'aimer si pendant cette sensation on ne prend pas gout dans l'accompagnement vers la jouissance musicale ? Que vaut le fait de dire que la musique est bonne quand on n'a pas un jour vécu la souffrance qui émane des mots, des paroles ; des notes ? On a toujours dans la tête une de ses chansons slow, cette superbe chanson qui mélange bonne mélodie et paroles bien ciselés. Aimer donc n'est qu'entre autres le fait d'accompagner le bonheur a coté de la souffrance.

সঙ্গীত ছাড়া ভালোবাসা কোথায়? ভালোবাসার প্রকাশ কোথায় যদি ভালোবাসার মানুষটি সেই প্রকাশে কোন আনন্দ গ্রহণ করতে না পারে, যা সঙ্গীতকে উপভোগের দিকে নিয়ে যায়? সঙ্গীত ভাল, এই বিষয়টি মনে করার পেছনে যুক্তি কি, যখন কেউ একজন কখনোই সেই ব্যথাকে অনুভব করতে পারে না, যা শব্দ এবং সঙ্গীতের স্বরলিপি মুছে দেয়? আমরা এই সমস্ত প্রেমসঙ্গীতগুলোকে সব সময় স্মরণ করব।

শেষ কিন্তু সর্বশেষ নয়, ২০১০ সালের ভালোবাসা দিবস উদযাপন করার জন্য একটা জায়গা প্রয়োজন? এর উত্তর হয়তো কাসাওয়েভের কাছে রয়েছে। প্রায়শ মজা করার জন্য ক্যাসাব্লাংকা নামক চলচ্চিত্রের সাথে মরোক্কোর একই নামের সর্ববৃহৎ শহরকে তুলনা করে তাকে খোঁচানো হয় (বাস্তবতা হচ্ছে,এই দুটির মধ্যে খুব সামান্য মিল রয়েছে)। ব্লগার লিখেছে:

Pour la Saint-Valentin, « pourquoi ne pas déclarer votre flamme en 2010 à Casablanca au Maroc. En effet pour un voyage en amoureux à la Saint-Valentin 2010, cette ville offre un incroyable dépaysement ».

Au début, en lisant cette offre publiée sur un site d’actualité internet j’ai cru à une farce, voire à un poisson d’avril légèrement précoce. Mais non, il s’agit bien de fêter la Saint-Valentin dans notre métropole.

ভালোবাসা দিবসে জন্য, ২০১০ সালে আপনার ভালোবাসা প্রকাশের জন্য মরোক্কোর ক্যাসাব্লাংকা শহরের নাম ঘোষণা করুন না কেন? ২০১০ সালের এক ভালোবাসায় ভরপুর ভ্রমণের জন্য এই শহর নিজেকে এক অবিশ্বাস্য সাজে সাজিয়েছে ।

প্রথমে, এই সুযোগ সম্বন্ধে পড়ুন, যা ইন্টারেনট নিজউ সাইটে পোস্ট করা হয়েছে। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটা বুঝি একটা রসিকতা, এমনকি ভেবেছিলাম বছরের শুরুতেই বুঝি কেউ এপ্রিল ফুল নামক রসিকতা করছে। কিন্তু এটি তা ছিল না, আমাদের এই শহরে ভালোবাসা দিবস উদযাপন করা ভালো

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .