ঘানা কি ই-ভোটিং এর জন্য প্রস্তুত?

গতকাল ঘানায় (ফ্রেব্রুয়ারি) দুইদিনের এক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে যার আয়োজক ডানকোয়া ইনিস্টিটিউ (ডিআই)। এই প্রতিষ্ঠান নীতি নির্ধারণ, গবেষণা এবং বিশ্লেষণ বিষয় নিয়ে চিন্তা করে। তাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় এক অবস্থান তৈরি করা, যেখানে তারা বায়োমেট্রিক ভোটার নিবন্ধন (প্রযু্ক্তির মাধ্যমে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাকে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করা) পদ্ধতি গ্রহণের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে এবং পরবর্তী সময়ে এই বিষয়টি দেশটিকে ই-ভোটিং পদ্ধতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

ডানকোয়া ইনস্টিটিউ বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট প্রদান সফল ভাবে শেষ হবার প্রেক্ষাপটে তার প্রশংসা করেছে এবং ঘানার নির্বাচন কমিশনকে ইলকেট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট প্রদানের অসংখ্য সুবিধার কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে, যা সাম্প্রতিক জনমতে প্রদর্শিত হয়েছে।

সম্মানিত যোগাযোগ মন্ত্রী হারুনা ইদ্রিসুর সূত্রানুসারে:

“বায়োমেট্রিক ভোটার নিবন্ধন বিষয়টির প্রয়োগের দায়িত্ব জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের এবং এই বিষয়টি সহ ই-ভোটিং দুটিই লম্বা সময় ধরে চলা এক অনুশীলনের বিষয়, তাই এ দুটি বিষয় শীঘ্রই ঘানায় প্রয়োগ করা সম্ভব নয়”।

এর সাথে তিনি যোগ করেন:

“সকল রাজনৈতিক দল বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের বিষয়টির অনুমোদন প্রদান করেছে, যা ই-ভোটিং-এর পূর্বশর্ত এবং আমরা এখন যা করছি, তা হচ্ছে ভবিষ্যৎ-এর নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে একটি আকার প্রদান করা। কিন্তু স্বল্প সময়ের মধ্যে এই প্রকল্পটিকে চালু করার জন্য যে কাঠামোর প্রয়োজন তা আমাদের নেই”।

সরকার অবশ্যই ২০১৬ সালে এই বিষয়টি প্রয়োগের ব্যপারে বিস্তারিত গবেষণা করবে, এটি কোনভাবে ২০১২ সালে চালু করা সম্ভব নয়।

গ্রাফিক ঘানার মুসাহ ইয়াহায়া জাফরু এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি বলেছেন;

নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যানে (ইসি); কাওদোও আফ্রি জ্ঞান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে; “যদি সরকার জনগণকে এই বিষয়ে শিক্ষিত না করে তা হলে কোন লাভ হবে না। সেক্ষেত্রে কমিশনের চেয়ারম্যানের বয়স্ক মাতাকেও এই শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যিনি গ্রামে বাস করেন। ই-ভোটিং এর সুবিধা কি এবং কি ভাবে তাকে ব্যবহার করতে হয়, এ সব বিষয় তাকে বোঝাতে হবে, তা না হলে তিনি এই কাজটি করতে যাবেন না”।

তিনি এর সাথে যুক্ত করেন;

যতক্ষণ লোকজন কম্পিউটার ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ই-ভোটিং চালু করতে পারব না।

ড: আফ্রি-জ্ঞান বলেন, এমনকি উন্নত দেশ, যেমন ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া, এখন পর্যন্ত ই-ভোটিং ব্যবস্থা চালু করেনি এবং তারা বিস্মিত, কেন নাইজেরিয়া এবং কেনিয়া ই-ভোটিং পদ্ধতি চালু করতে চাচ্ছে।

তিনি উদ্ধৃত করেন, সরকারি দপ্তরে প্রবেশের জন্য রাজনীতিবীদরা ক্রমাগত ভাবে টাকা ঢালার পরিমাণ বাড়াচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর গুরত্বকে অতিরঞ্জিত করে দেখা হচ্ছে, নির্বাচনে তরুণদের অংশ নেওয়ার বিষয়টি সংঘাতময় চেহারা নিচ্ছে, অদ্ভুত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হচ্ছে এবং প্রচার মাধ্যমের কাজ হচ্ছে দেশটির উদ্বেগজনক নির্বাচনী পরিস্থিতির মধ্যে তৈরি হওয়া সহিংসতায় আগুন ঢালা। তিনি বলেন, এখন বেশিরভাগ লোক ভাবছে সরকারি দপ্তরে কাজ করতে যাওয়া মানে জনতার সেবা নয়, বরঞ্চ দ্রুত খ্যাতি, প্রতিপত্তি এবং সম্পদ অর্জন করা।

ডানকোয়া ইনিস্টিটিউ সংবাদপত্রে এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তার শিরোনাম; ঘানার গণতন্ত্র এখনো তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছায়নি, ই-ভোটিং আমাদের সেখানে নিয়ে যাবে

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে হেইফোর্ড মন্তব্য করেছে:

“ ঘানাইয়ান হিসেবে নিজেকে নিয়ে আমি গর্ব অনুভব করি যে, ঘানার লোকেরা যে কোন কিছু সবচেয়ে সুন্দর ভাবে উপলব্ধি করতে পারে। উপরের মন্তব্যের সাথে আমি পুরোপুরি একমত। যদি আমাদের নির্বাচন কমিশন ঘানায় আরো গ্রহণযোগ্য এবং সুন্দর পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করতে চায়, তা হলে কমিশনকে তার প্রধান যে চিন্তা করছে, সেটিকে সব জায়গায় ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করতে হবে। আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করছি যেন তারা ই-ভোটিং পদ্ধতিকে বাতিল না করে দেয়, তার বদলে এটিকে কার্যকর করার সকল পদ্ধতি গ্রহণ করে। আমাদের মেয়ে, শিশু এবং গরিবদের মধ্যে থেকে ভয়কে বিতাড়িত করতে হবে। যদি উদ্বিগ্নতা এবং নিষ্ঠুরতা বর্তমান পদ্ধতির সাথে মিশে যায় তা হলে এই পদ্ধতি কেনিয়ার মত পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে”।

জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি গণ নিবন্ধনের মাধ্যমে ঘানার সকল নাগরিকের তথ্য সম্বলিত এক তথ্যকেন্দ্র করতে যাচ্ছে। সেখানে কাজ করতে গিয়ে যা দেখেছি সে ব্যাপারে আমার খোলামেলা মন্তব্য ও অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে যে মন্তব্য করেছে, তাকে আমি সমর্থন করি।

আমার প্রশ্ন; ঘানা কি সত্যিই ই-ভোটিং এর জন্য তৈরি?

এই বিষয় সম্পর্কিত জেমনাটার প্রবন্ধ

সময়ক্ষেপন নাইজেরিয়ার আঞ্চলিক নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে (নিউজ.বিবিসি.কো.ইউকে)

নামিবিয়ার নির্বাচনে পূর্বের দলটির আবার ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনা
(সিয়াটলটাইমস.নিউজসোর্স.কম)

নির্বাচনী সংস্কারের জন্য গণতান্ত্রিক দলগুলোর জোট (কোডের)-নাইজেরিয়া
(আফ্রিকাউনচেইনড.ব্লগস্পট.কম)

ইরাকে নির্বাচনী প্রচারণা দেরি করে শুরু হওয়া (অনলাইন.ডাব্লিউএসজে.কম)

Reblog this post [with Zemanta]

1 টি মন্তব্য

এই জবাবটি দিতে চাই না

আলোচনায় যোগ দিন -> rine

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .