- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

হাইতি: আঞ্চলিক দখলদারিত্বের প্রশ্নে ব্লগারদের প্রতিক্রিয়া

বিষয়বস্তু: উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান, ল্যাটিন আমেরিকা, ইকুয়েডর, এন্টিগুয়া-বার্বুদা, কিউবা, জামাইকা, ডোমিনিকান রিপাবলিক, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, নিকারাগুয়া, বলিভিয়া, বার্বাডোজ, ভেনেজুয়েলা, যুক্তরাষ্ট্র, সেন্ট ভিনসেন্ট, হন্ডুরাস, হাইতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, দুর্যোগ, দেশান্তর ও অভিবাসন, মানবতামূলক কার্যক্রম, রাজনীতি, শরণার্থী, সরকার

ভূমিকম্পের [1] পর দুই সপ্তাহ সময় ধরে হাইতির ব্লগাররা হাইতি সরকারের [2] কাজকর্ম নিয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন করছে। এখন তারা প্রতিবেশী দেশ এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপসমূহের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছে। এখানে ফরাসী ভাষী যে সমস্ত পোস্ট এই সমস্ত প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করছে সে সবের পর্যালোচনা তুলে ধরা হল।

রেডিও কিসকেয়া কিউবার প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়ক ফিদেল কাস্ত্রোর [3] বিবৃতির উপর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে [4]। কাস্ত্রো হাইতিতে “আমেরিকার দখলদারিত্বের” নিন্দা জানান। তিনি “হাইতির শিক্ষা [5]” বিষয়ক এক ভাষণ দেন, যেখানে তিনি স্বাস্থ্য এবং সহযোগিতার বিষয় উল্লেখ করেন, কিউবার প্রাক্তন এই নেতা এখন হাইতিতে আমেরিকার সামরিক উপস্থিতির নিন্দা জানান এবং সর্বোপরি জাতি সংঘ এই বিষয়ে নীরব থাকায়, তাদের প্রতি নিন্দা জানান [ফরাসী ভাষায়]:

“Au milieu de la tragédie haïtienne, sans que personne ne sache comment ni pourquoi, des milliers de soldats des unités des Marines des Etats-Unis, des troupes aéroportées de la 82e Division et d’autres forces militaires ont occupé le territoire d’Haïti”, affirme le “lìder maximo” dans un billet publié sur le site officiel Cubadebate.cu.

“যখন হাইতিতে এক বেদনাদায়ক ঘটনার সৃষ্টি হল, তখন কেউ বুঝে উঠতে পারছে না কেন এবং কি কারণে এই ঘটনা ঘটল। যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার নৌসেনা, ৮২তম ডিভিশনের বিমানবাহী সেনা এবং অন্য সামরিক শক্তি হাইতি দখল করে রেখেছে”। লিডার মাক্সিমো নামে পরিচিত ফিদেল সরকারি ওয়েসসাইট কিউবাডিবেট.সিইউ এ পোস্ট করা এক লেখায় এই বিবৃতি দিয়েছেন।

“Pire encore, ni l’Organisation des Nations Unies, ni le gouvernement des Etats-Unis n’ont fourni aucune explication à l’opinion publique mondiale sur ces mouvements de forces”, a poursuivi Fidel Castro…

এমনকি তারচেয়েও খারাপ যা, তা হল জাতি সংঘ বা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কেউ বিশ্ব জনমতকে এই বাহিনীর স্থানান্তরের বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দেয়নি। কাস্ত্রো যোগ করেন…

রেডিও কিসকেয়া এই বিষয়টি পুনরায় উপস্থাপন করেন। এখানে উল্লেখ করা হয়, ল্যাটিন আমেরিকার অন্য সব দেশের রাষ্ট্রপতিদের মাঝেও যুক্তরাষ্ট্রের অভিপ্রায় সম্বন্ধে অনুরূপ শঙ্কা বিরাজ করছে [ফরাসী ভাষায়]:

Avant Fidel Castro, les Présidents nicaraguéen Daniel Ortega, bolivien Evo Morales et vénézuélien Hugo Chàvez avaient dénoncé avec véhémence le déploiement sur et autour du territoire national d’un imposant contingent militaire américain qui devait s’élever dimanche à près de 20.000 hommes.

ফিদেল কাস্ত্রোর পূর্বে ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপতি যেমন নিকারাগুয়ার ড্যানিয়েল অর্টেগা, বলিভিয়ার ইভো মোরালেস এবং ভেনিজুয়েলার হুগো শ্যাভেজ হাইতির ভূসীমার মধ্যে আমেরিকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সেনার উপস্থিতির তীব্র নিন্দা করেছে। ধারণা করা হয়ে থাকে, হাইতিতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর প্রায় ২০,০০০ সেনা মোতায়েন রয়েছে।

পোটোপ্রিন্সিপেও ক্যারিবিয় রাষ্ট্রসমূহের আগ্রহের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেছে। তার পোস্টের শিরোনাম “শ্যাভেজ হাইতির ঋণ মওকুফ করেছে [6]”, [ফরাসী ভাষায়]:

“Nous allons annuler (la dette). Elaborez les documents nécessaires et la dette est annulée”, a déclaré Chavez à l'issue d'une réunion des ministres des Affaires étrangères de l'Alliance bolivarienne des Amériques (Alba) sur Haïti à Caracas, sans préciser le montant de cette dette.”

শ্যাভেজ বলেন, “আমরা হাইতির ঋণ বাতিল করতে যাচ্ছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লেখা হচ্ছে এবং ঋণ বাতিল করা হচ্ছে”। হাইতিকে নিয়ে, আমেরিকার জন্য বলিভারিয়ান বা ল্যাটিন আমেরিকার জোট (ল্যাটিন আমেরিকার রাষ্ট্রসমূহের মুক্তিদাতা হিসেবে পরিচিত সাইমন বলিভার এর নামানুসারে এই জোট বলিভারিয়ান এলায়েন্স ফর দি আমেরিকা বা এলবা নামে পরিচিত)-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে এক বৈঠকের পরই শ্যাভেজ এই ঘোষণা দেন। এই বৈঠকটি ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে অনুষ্ঠিত হয়। তবে তিনি ঋণের সঠিক পরিমাণের কথা উল্লেখ করেননি।

যেমনটা পোটোপ্রিন্সিপে তার লেখা পোস্টের উপসংহার টানেন এই বলে যে [ফরাসী ভাষায়], ক্যারিবিয় অঞ্চল এলবার [7] মাধ্যমে এক সহযোগিতা মূলক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে:

Le plan inclut l'assouplissement des conditions d'accueil des Haïtiens dans les pays de l'Alba: Cuba, Venezuela, Nicaragua, Bolivie, Equateur, Honduras, la Dominique, Antigua-et-Barbuda, Saint-Vincent et les Grenadines.

এই পরিকল্পনার অধীনে হাইতির নাগরিকদের এলবা শিথিল শর্তে তাদের এলাকায় প্রবেশ করতে দেবে। এইসব রাষ্ট্রের মধ্যে রয়েছে কিউবা, ভেনিজুয়েলা, নিকারাগুয়া, বলিভিয়া, ইকুয়েডোর, হন্ডুরাস, ডোমিনিকা, এন্টিগুয়া এন্ড বারবুডা, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রানাডা।

এই বিষয়ে অন্য ব্লগাররাও হয় উদ্বিগ্ন নয়তো শঙ্কিত। তারা হাইতিতে প্রতিবেশী দেশের দখলদারিত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই প্রতিবেশী দেশটির নাম ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র [8]

ব্লগার রেসুয়ে সিটাডেল ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র থেকে হাইতিতে সৈন্য সমাবেশ করার বিষয়ে প্রত্যাখান পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করেন [ফরাসী ভাষায়]:

Rien n'est plus révoltant que de lire sur Radio Kiskeya un article faisant état d'une autorisation du gouvernement haïtien accordée aux Nations Unies pour le déploiement de 150 soldats dominicains en Haïti.

রেডিও কিসকেয়ার এক প্রবন্ধ পড়ার পর আর কোন কিছু আমার কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়নি। এই প্রবন্ধে বলা হয়েছে হাইতি সরকার জাতি সংঘ বাহিনীকে অনুমতি প্রদান করেছে যে তারা হাইতির মাটিতে ১৫০ জন ডমিনিকান সৈন্যকে রাখতে পারবে।

একই পোস্টে রাসুয়ে সিটাডেল স্বনির্ভরতার কথা উপস্থাপন করেন যাতে হাইতির লোকেরা তাদের নিজেদের সাহায্য করতে সক্ষম হয় [ফরাসী ভাষায়]:

Nous voulons démontrer aux étrangers qu'il y a encore en Haïti des hommes et des femmes capables d'assurer la continuité nationale. La destruction de Port-au-Prince, n'est pas celle d'Haïti.

আমরা বাকি বিশ্বকে দেখাতে চাই যে হাইতি এখনো পুরুষ এবং নারীতে পরিপূর্ণ, যারা জাতীয় পর্যায়ের কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে। পোর্ট-অ-প্রিন্সের ধ্বংস হয়ে যাওয়া মানে হাইতির ধ্বংস হয়ে যাওয়া নয়।

এই পোস্টের ধারাবাহিকতায় রাসুয়ে সিটাডেল আরেকটি পোস্টে করেন [9], যেখানে তিনি ডমিনিকান দখলদারিত্বের কারণে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে তার কথা উল্লেখ করেন [ফরাসী ভাষায়]:

Le déploiement de soldats de la République Dominicaine sur le sol d'Haïti est un coup dur pour le moral des haïtiens. Dans la ville du Cap-Haitien, les observateurs n'y croient pas…

ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের সৈন্য হাইতির মাটিতে অবস্থান নেওয়া হাইতিবাসীদের জন্য এক মনস্তাত্ত্বিক আঘাত। কেপ হাইতিয়ান নামক শহরের জনগণ তাদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেনি…..

ডোমিনিকান একতা [10]” [ দি ডোমিনিকান সোলিডারিটি, ফরাসী ভাষায়] নামের এক পোস্টে, অল্টারপ্রেস প্রজাতন্ত্রের সকল জনতা ও সরকার ১২ জানুয়ারি থেকে হাইতিকে সাহায্য করার জন্য যে সমস্ত উদ্যোগ নিয়েছে তার এক তালিকা তৈরি করেছে। তবে পোস্টটি কিছু হাইতিবাসীর অবিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেছে। রেসুয়া সিটাডেলের কথার যারা প্রতিধ্বনি করেছে তিনি তাদের প্রত্যাখান করেছন।

Des migrants haïtiens, qui ont été contactés par AlterPresse à Santo Domingo, se sont montrés prudents, voire sceptiques quant à l’intention réelle du gouvernement dominicain d’aider Haiti.

হাইতির কিছু অভিবাসী ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী সান্টো ডমিঙ্গোয় এসে পৌঁছায়। আল্টারপ্রেস একে ডোমিনিকান সরকারের সত্যিকার অর্থে সাহায্য করার অভিপ্রায় বলে বিবেচনা করে। যা বেশ সতর্ক এবং সংশয়ের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ব্লগার রেসুয়া সিটাডেল একই সাথে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, মিনুসথা [11] এবং রাষ্ট্রপতি প্রিভেলের নিন্দা এবং ক্যারিবিয় সম্পদ্রায়ের [12] শরণ নেবার সুযোগ না নেবার ব্যাপারে প্রশ্ন করেছে [ফরাসী ভাষায়]:

Toutefois, pourquoi il ne fait pas appel aux soldats de la CARICOM ? Ils avaient intervenu en Haïti en 1994 au coté des troupes américaines.

কেন কারিওকমের সৈন্যদের ডাকা হল না? ১৯৯৪ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের সাথে এখানে এসেছিল।

ব্লগার বাজান গ্লোবাল রিপোর্ট [13]-এর সংবাদ অনুসারে, কারিকম হাইতির পুন:গঠনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করার কথা বিবেচনা করছে। রেসুয়ে সিটাডেল এবং রেডিও কিসকেয়া যে যুক্তি প্রদান করছে একই যুক্তি দিয়ে জ্যামাইকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিজে প্যাটারসন [14] একটি অগ্রগণ্য বিষয় নির্ধারণ করেন-হাইতিবাসী যারা দেশে এবং বিদেশে বাস করে তারা তাদের নিজেরাই নিজেদের দেশকে সাহায্য সরবরাহ করবে যাতে তাদের দেশ স্থায়ীভাবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে:

“এই ঘটনায় যারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের যদি মালিকানা না থাকে তা হলে সবচেয়ে সেরা পরিকল্পনা কোন কাজে আসবে না। এর বাইরে বলা যায়, হাইতির সরকারকে শুরু থেকে এখানে যুক্ত থাকতে হবে। নাগরিক সমাজ এবং হাইতির জনগণের অংশগ্রহণ এখানে গুরুত্ব বহন করে,” তিনি যোগ করেন।
[…]
জ্যামাইকার এই প্রাক্তন নেতা একই সাথে পরামর্শ দেন প্রবাসী হাইতিবাসীদের এর সাথে যুক্ত করার। একই সাথে তিনি দেশটির জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে বাড়তি শক্তি যোগানোর কথা বলেন। এইসব কাজের মধ্যে রয়েছে প্রশাসন বিভাগ। এই কাজটি এই জন্য করা প্রয়োজন যাতে জন সম্পদ এবং মূল সেবাসমূহকে স্থায়ীভাবে উন্নতি লাভ করতে থাকে।