রারক্যাম্প ইয়াঙ্গুন ২০১০, মায়ানমারের অনুষ্ঠিত হওয়া প্রথম বারক্যাম্প সম্মেলন। সবদিক দিয়েই সম্মেলনটি সফল হয়েছে। দুইদিনের এই অনুষ্ঠানে প্রায় ২৭০০ জনের বেশি লোক উপস্থিত হয়েছিল।
এই অনুষ্ঠান জানুয়ারির ২৩ ও ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় এবং মায়ানমারের ইনফোটেক নামক এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এটি মায়ানমারের একটি সফ্টওয়্যার পার্ক।
প্লানেট.কম.এমএম এর সূত্রানুসারে,
এই বারক্যাম্পের অনুষ্ঠানে অংশ নেবার জন্য ওয়েবসাইটে প্রায় ৩০০০ ব্যক্তি নিবন্ধন করেছিল। বলা হচ্ছে সারা বিশ্বে যতগুলো বারক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে এই অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক অংশ গ্রহণ করেছিল। একজন অংশগ্রহণকারী মন্তব্য করেছেন, যদিও এ রকম বারক্যাম্প এই প্রথম মায়ানমারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তারপরেও অনেক পেশাদার এবং উৎসাহী ব্যক্তি এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে। তাদের অংশগ্রহণে এই অনুষ্ঠান প্রচণ্ড সফল হয়।
সম্মেলন কেন্দ্রে ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করা হয়। কাজেই অনুষ্ঠানে আসা লোকজন ব্লগ করা, ফেসবুকে নিজের কাজকর্ম সম্বন্ধে তাজা তথ্য জানানো বা স্ট্যাটাস আপডেট করা এবং সম্মেলন কেন্দ্র থেকে সরাসরি টুইট করতে সমর্থ হয়।
যারা বারক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছিল তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন তার অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে লেখে। যেমন জ জ, তিনি এই অনুষ্ঠানের ছবি পোস্ট করেছেন।
মাডিজুন নামের ভদ্রমহিলা দুই দিনের এই অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে লেখেন। বারক্যাম্পে তিনি একজন স্বেচ্ছাসেবক অনুবাদক হিসেবে কাজ করেছেন।
বারক্যাম্প চলাকালীন সময়ে এতে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছয়টি কক্ষ বরাদ্দ ছিল। এইসব রুমের কোন একটা বেছে নিয়ে অংশগ্রহণকারী একটি বিষয়ের উপর এক ঘণ্টা সময় বক্তব্য উপস্থাপন করত বা আলোচনা করতে পারত। প্রথম বেলায় আমি একটা কক্ষে বসে ছিলাম। সেখানে আমি উ ইয়ে মিয়াট থু এর ব্যাখ্যা শুনছিলাম। সে উইন মায়ানমার নামক অক্ষরকে কি ভাবে ইউনিকোডে রূপান্তরিত করতে হবে সে সম্বন্ধে বলছিল। তার পদ্ধতিতে কাজ করলে অক্ষর বিন্যাসে কোন হেরফের হবে না। এর ফলে মূল লেখা মায়ানমার ভাষায় পরিবর্তিত হয়ে যাবে। কিন্তু এই উপস্থাপনার মাঝামাঝি সময় আমাকে ১০১ নম্বর কক্ষে যেতে হল। সেখানে পডকাস্টের উপর বক্তব্য প্রদান করা হচ্ছিল। এর আগে আমি পডকাস্ট সম্বন্ধে শুনেছিলাম। তবে ইতিপূর্বে আমি কখন পডকাস্ট করার চেষ্টা করিনি কারণ আমার ধারণা ছিল পডকাস্টের জন্য উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট দরকার। উপস্থাপক বললেন পডকাস্টের জন্য সবচেয়ে ভালো হচ্ছে আইটিউন সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা। এটা খুব খারাপ যে সাইবার ক্যাফেতে আমি কোন সফ্টওয্যার ইনস্টল বা চালু করতে পারি না। অন্যথায়, আমি তা পরীক্ষা করে দেখতে পারতাম, যদিও বেশিরভাগ সময় সাইবার ক্যাফেতে নেটের গতি যথেষ্ট ভালো থাকে না।
আরমলোয়ে একজন বিদেশী যিনি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি এই বারক্যাম্প অংশ নেবার ও ইয়াঙ্গুনে থাকার অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে লেখেন। তিনি একই সাথে মায়ানমারের তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটি খাত সম্বন্ধে তার ধারণার কথা উল্লেখ করেন।
একটি সময়ে আমি প্রশ্ন করছিলাম, এদেশে কতজন লোক সক্রিয়ভাবে ওয়েব সাইট তৈরি বা তা রক্ষণাবেক্ষণ করছে এবং ওয়েব ভিত্তিক এপ্লিকেশন বা ওয়েবের প্রয়োগ করছে। সেখানে মাত্র তিনজন তাদের হাত তুলেছিল। পরে আমি তাদের প্রশ্ন করেছিলাম তাদের মধ্য কতজন এক্সএমএল সম্বন্ধে জানে। এবার মাত্র একটা হাত উপরে উঠেছিল। আমি উভয় ক্ষেত্রে আবিষ্কার করলাম তাদের মধ্যে বিস্ময়কর ভাবে ইতিবাচক অর্থে সাড়া দেবার হার খুবই কম। আমার ধারণা তৈরি হল যে, বেশ কয়েকটি কারণে বার্মিজদের (মায়ানমারের পূর্ব নাম বার্মা থেকে জনগোষ্ঠীকে বার্মিজ বলা ডাকা হয়) পক্ষে ওয়েব উন্নয়নে কাজ করার সম্ভব নয় (কোন কোম্পানী বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের বদলে ব্যক্তিগত ভাবে), এইসব কারণের মধ্যে রয়েছে বিশ্বস্ত নয় এমন নেট এবং ইন্টারনেট ফিল্টার বা বাছাই করা (নির্ধারিত ওয়েবের বাইরে কোন কিছু ব্যবহার করতে না দেওয়া) এবং ইন্টারনেটের ডোমেইন নাম নিবন্ধনে জটিলতার সৃষ্টি হওয়া।
আমার উপস্থাপনায় বেশ কিছু উদাহরণকে ই-কমার্স বা ইন্টারনেট বাণিজ্যের সাথে যুক্ত করে তাদের সামনে রেখেছি (যদিও এসএএমএল-এর ব্যাপারে কিছুই বলার নেই, যা ই-কমার্সকে নির্দিষ্ট করে উপস্থাপন করতে পারে)। সামান্য পরেই আমি উপলব্ধি করলাম এই সমস্ত উদাহরণগুলো কত না অযৌক্তিক। বার্মায় ই-কমার্সের কোন অস্তিত্ব নেই। সেখানে ক্রেডিট কার্ডেরও কোন অস্তিত্ব নেই।
বারক্যাম্প ইয়াঙ্গুনের আয়োজক ছিল মায়ানমার কম্পিউটার এসোসিয়েশন এবং তথ্যপ্রযুক্তি থেকে আসা বারক্যাম্পের সংগঠকরা।