ভিডিও: মাদক বৈধকরণ এবং জীবনের উপর প্রাক-প্রতিবন্ধকতা তৈরি

mjthসংসারে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যারা উচ্চকণ্ঠে মাদককে বৈধ করার দাবি জানাচ্ছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার মানে কি? হান্গেরি থেকে কলম্বিয়া, তরুণ থেকে শিক্ষক, পুলিশ থেকে যাজক, ব্যক্তি থেকে দল, এর সবাই সম্ভাব্য এই বিতর্কিত বিষয়টির পক্ষে যুক্তি প্রদান করতে সিটিজেন মিডিয়া বা নাগরিক প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করছে।

হান্গেরিতে হান্গেরিয়ান সিভিল লির্বাটি ইউনিয়ন বা হান্গেরির নাগরিক স্বাধীনতা সংগঠন বিভিন্ন বিষয়ের উপর থেকে তারা প্রতিবন্ধকতা উঠাতে চায়। মাদককে বৈধ করার প্রচেষ্টা, এ রকম একটি বিষয়। এই বিষয়ের উপর গত বছরে তারা প্রায় ৭০টির বেশি সংক্ষিপ্ত চলচ্চিত্র তৈরি করেছে এবং তাদের ভাষায়:

২০০৯ সালটি ছিল ভিডিওর মাধ্যমে কন্ঠস্বর তুলে ধরার এক ব্যস্ত বছর। আমাদের নির্মিত চলচ্চিত্রের বেশিরভাগই ছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ নীতি নিয়ে। তবে আমরা ইউরোপীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগ নীতির (ইউরোপীয়ান ড্রাগ পলিসি ইনিসিয়েটিভ বা ইডিপিআই) অধীনে এ সব চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি। ভিয়েনাতে আমরা এক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি। বিশ্বে মাদক নিয়ে যে যুদ্ধ চলছে তার বিরুদ্ধে, সেখানকার জাতিসংঘ ভবনের সামনে এইচসিএলইউ-এর করা প্রতিবাদের উপর চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়েছিল। এছাড়া হল্যান্ডের সীমান্তবর্তী শহরে মাদক পর্যটনের উপর তদন্ত করে এক চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়েছে। ডেনমার্কে হিরোইন নামক মাদকের উপর সামনে যে কর্মসূচি হবে তার পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুইডেনে মাদক নিয়ন্ত্রণের উপর যে কঠোর আইন ছিল তার ইতিহাস এবং ব্যর্থতা এবং স্টকহোমে নিডিল এক্সচেঞ্জ বা সূচ বিনিময় কর্মসূচি নামক অনুষ্ঠানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। আমরা সফলভাবে রুশ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সাহায্য করেছি, যারা নিডিল এক্সচেঞ্জ নামক কর্মসূচিতে রুশ সরকারের সাহায্য প্রদান না করার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিতে অস্বীকার করেছে। কিরগিজস্তানে সফল ভাবে এইচআইভির বিস্তার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ক্ষতি কমিয়ে আনা বা রিস্ক রিডাকশন অনুষ্ঠানসূচি নামক প্রচারণার সফল বাস্তবায়ন হয়েছে।

নিচের ভিডিওতে এইচসিএলইউ, মাদক নীতি সংস্কার চান এমন নেতাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে । এটি নেওয়া হয়েছে ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাদক নীতি সংস্কার সম্মেলনে। সেখানে মাদক নিয়ন্ত্রণের ভবিষ্যৎ এবং নিয়ন্ত্রণ আইন অপসারণ করার ক্ষেত্রে কি কি করা যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে:

গত বছরের মে মাসে কলম্বিয়ার সব শহরে মারিজুয়ানা বৈধ করার দাবিতে এক প্রতিবাদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। একই সাথে সারা দেশে ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা বৈধ করার দাবিতে এক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জুয়ান ডেভিড এসকোবার ব্লগে প্রচুর ভিডিও জমা দেন। তিনি উভয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মেডিলিনে অনুষ্ঠিত “ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিষয় থাকা উচিত”(পারসোনাল ডাজ অফ পারসোনালিটি”) নামক অনুষ্ঠান ও একই সাথে মারিজুয়ানা মাদক বৈধ কর দাবি নিয়ে যে প্রতিবাদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় তিনি তার ছবি আমাদের তুলে ধরেছেন।

তিনি লিখেছেন:

কলম্বিয়ায় বিশ্বের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাদক উৎপাদনকারী রাষ্ট্র এবং প্রায় চার দশক ধরে দেশটি মাদক নিয়ে যুদ্ধ, মাদকের কারণে হানাহানি, মাদকের ব্যবহার, মারিজুযানা, কোকেইন, হিরোইন পাচারের এক প্রতীকী রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত বছরের ২৬ শে মার্চ, দেশের প্রধান শহর ও উন্মুক্ত স্থানে দক্ষিণ আমেরিকার মাদকসেবীরা জড়ো হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল এক সাথে ছবি তোলা। সেখানে সবাই প্রদর্শন করে এবং দেখায় ব্যক্তি কি করতে পারে। যেমনটা একটা দেশে একক এক ব্যক্তি নিজস্ব স্বাধীনতা প্রকাশ করে থাকে, যা সামান্য স্বাধীনতা প্রদান করে।

মেক্সিকোতে মোরেলস এলাকার হাই স্কুলের ছাত্রদের সুযোগ হয়েছে মাদককে বৈধ করা নিয়ে বিতর্ক করার। তারা এক শ্রেণীকক্ষে বসে ছয়টি ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিতর্কে অংশ নেয় (১ম খণ্ড, ২য় খণ্ড, ৩ খণ্ড, ৪র্থ খণ্ড, ৫ খণ্ড, ৬ষ্ঠ খণ্ড)। এর উদ্যোক্তা ছিল এনিভেডেলিয়ান নামক প্রতিষ্ঠান। লেখার পরবর্তী অংশটি এর উপসংহার, “এখানে সমন্বায়ক” বিতর্ক শেষ করেন এই বলে যে, যদি মাদককে বৈধ করে আইন করা হয়, তা হলে তার দায়দায়িত্ব ব্যক্তির উপর বর্তাবে। তখন তাকে নির্ধারণ করতে হবে সে কি মাদক ব্যবহার করবে কি করবে না। এবং তাকে নিশ্চিত হতে হবে যে মাদক ব্যবহার তার স্বাস্থ্যের জন্য “প্রয়োজনীয়”।

মাদক নিষিদ্ধ না করার বিরুদ্ধে যে আইনি সংস্থাটি কাজ করছে তার নাম “মাদক ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে এক আইনী সংস্থা” বা লিপ (ল ইনফোর্সমেন্ট এগেইনস্ট প্রোহেবিশন)। তারা তাদের ওয়েবসাইটে বিবৃতি দিয়েছে যে, তারা এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে, কারণ এটি কাজ করে না; জেলে ঢোকানো ছাড়াও, মাদক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠিন আইন তৈরি করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রচুর টাকা খরচ করা হচ্ছে। বর্তমানে মাদক অনেক সস্তা, এবং তা পাওয়া অনেক সহজ এবং মাদকের ক্ষমতা অনেক বেশি। নিচের ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে পুলিশেরা যাজকদের সাথে মিলে ভিন্ন ধরনের এক জুটি বেঁধেছে। এই জুটি মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করছে। তারা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাজক বা প্রশান্তি প্রদানকারীর ভূমিকা নিয়ে কথা বলছে। তারা বলছে মাদকসেবীদের কাউন্সিলিং বা তাদের সাথে বসে আলাপ করা এবং আশা তৈরি মধ্য দিয়ে তাদের সাহায্য করা সম্ভব। তাদের কাছ থেকে মাদকদ্রব্য ছিনিয়ে নিয়ে জেলে পোরার চেয়ে তাদের এইভাবে সাহায্য বেশি প্রয়োজন।

আপনার দেশের আইন কি মাদক ব্যবহার শাস্তিযোগ্য নয় বা অবৈধ নয় বলে বিবেচনা করে? এ ব্যাপারে নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি কি এবং এই ব্যাপারে আপনার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি কি? মাদক ব্যবহারকারীকে শাস্তি দিলে কি মাদক পাচার এবং এর ব্যবহার কমে যাবে, অথবা মাদকের হাত থেকে বের হয়ে আসার অন্য কোন উপায় রয়েছে কি?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .