দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল তার এক বিখ্যাত ব্যক্তিগত দলিল হচ্ছে আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরী বা দিনপঞ্জি। যুদ্ধের সময় পালিয়ে থাকা পরিবারটির লুকানোর স্থান কেউ একজন বিশ্বাসঘাতকতা করে জানিয়ে দেয় এবং পরিবারটিকে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প বা নির্যাতন শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গিজ হচ্ছেন সেই মহিলা, যিনি আনার এই দিনপঞ্জিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেন।
বিবিসি মিয়েপ গিজের ওয়েবসাইটের উদ্ধৃতি দিয়ে এই সংবাদ জানায়:
মিয়েপ গিজ মারা গেছেন। ১১ জানুয়ারি, সোমবার সন্ধ্যায়, স্বল্প সময় রোগে ভোগার পর মিয়েপ গিজ মারা গেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
ডাচ প্রচার মাধ্যমও এই সংবাদটি জানিয়েছে, তবে তারা খানিকটা দেরিতে সংবাদটি জানায়। প্রচার মাধ্যম এনওএস [ডাচ ভাষায়] এক ঘণ্টা পরে বিবিসির সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এক ঘণ্টা পরে ঘটনাটি জানায়।
টুইটারে লোকজন বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। জেট্টকে৬৯ [ডাচ ভাষায়] পোস্ট করেছে :
Op Wikipedia wordt gezegd dat Miep Gies is overleden. Heeft iemand daar al een bron voor? #miepgies
হুড১৪০৯ [ডাচ ভাষায়] বলছে:
waarom weten ze het in t buitenland eerder dan hier #miepgies
মনে হচ্ছে নেদারল্যান্ডের সকলে জানে না মিয়েপ গিজ কে ছিল।
রিকসরোমেলহক [ডাচ ভাষায়] লিখেছে:
..Miep Gies….nooooit van gehoord… #gemistefeiten
টুইট ১: মিয়েপ গিজের জন্য উপযুক্ত শব্দ আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি। আমি জানি না, আমি তা খুঁজে পাব কি না।
টুইট ২: আমি কল্পনা করতে পারি না, দখল করা ইউরোপের অবস্থা কেমন ছিল। এমনকি আমি ধারণা করতে পারি না, সব সময় ধরা পড়ার ভয়ের মধ্যে বাস করার অনুভূতি কেমন হতে পারে।
টুইট ৩: মিয়েপ গিজের কোন কিছু করতে হয়নি। তিনি অটো ফ্রাঙ্কের মশলা কোম্পানীতে এক কেরানির চাকুরি করতেন, কিন্তু সাধারণভাবে সামনে এগিয়ে যাবার জন্য একাই সামনে এগিয়ে যেত হয়।
ট্ইট ৪: লুকিয়ে থাকা ইহুদিদের সাহায্য করার শাস্তি ছিল ছয় মাস শ্রম শিবিরে কাটানো থেকে সেই জায়গায় গুলি খাওয়া পর্যন্ত। “শাস্তি না পেয়ে” কেউ পার পায়নি।
টুইট ৫: নাৎসী মহিলা সংঘ যোগ না দেবার ফলে সে সময় গিজকে যথারীতি নাৎসীরা বন্দি শিবিরে পাঠিয়ে দেবার হুমকি দিয়েছিল।
টুইট ৬: ফ্রাঙ্ক এবং অন্য সব উদ্বাস্তু পরিবারের জন্য খাবার নিয়ে যাবার মত ঝুঁকি নেওয়া ছাড়াও মিয়েপ গিজ আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরীটিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচান।
টুইট ৭: যখন তাঁর এই বীরত্বপূর্ণ কাজের ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তখন তিনি উত্তর করেন, তিনি সেই সব ডাচ নাগরিকদের লম্বা তালিকার মধ্যে একজন, তারা যা করত তিনি তাই করেছেন… অথবা তারচেয়ে বেশি।
টুইট ৮: কি ভাবে আপনি মিয়েপ গিজকে ধন্যবাদ জানাবেন?
টুইট ৯: মনে হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়।
টুইট ১০: আমি মনে করি, একমাত্র যে ভাবে আমরা মিয়েপ গিজকে ধন্যবাদ জানাতে পারি তা হল, তিনি যে তালিকার কথা বলেছিলেন, সেখানে নিজেদের নাম উঠিয়ে; আমরা নিজেরা প্রত্যেকে যা করতে পারি, তা করে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারি।
সম্পাদনায় যুক্ত সংবাদ: আমস্টার্ডামের আনা ফ্রাঙ্ক জাদুঘর মৃত্যুর পর মিয়েপ গিজের উপর এক বিশেষ স্মারক প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে এক শোক বই রয়েছে।
ছবি এবং থাম্বনেইল ছবি মিয়েপ গিজের ওয়েব সাইট থেকে নেওয়া হয়েছে