মিশর: নাগা হাম্মাদিতে সংঘটিত গণহত্যা

ধর্মকে শ্রদ্ধা করুন, ছবি সরাহ কারের সৌজন্যে।

ধর্মকে শ্রদ্ধা করুন, ছবি সরাহ কারের সৌজন্যে।

মিশরের কপ্ট খ্রীষ্টানরা জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখে যীশুর জন্ম বা বড়দিন উদযাপন করে। উৎসবের সময় মিশরের কপ্ট খ্রীষ্টানরা তাদের নিজস্ব গীর্জায় যায় এবং এই পবিত্র দিনটি উদযাপন করে। কিন্তু এ বছর আপার ইজিপ্ট নামে পরিচিত নাগা হাম্মাদি শহরে এক অনভিপ্রেত দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই শহরের এক নাম না জানা অপরাধী বাছবিচারহীন ভাবে একদল কপ্ট ধর্মালম্বীদের উপর গুলি চালায়। এই সমস্ত কপ্ট খ্রীষ্টান কেবল তাদের প্রার্থনা শেষ করে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছিল।

জেইনোবিয়া তার ব্লগে এই গণহত্যা সম্বন্ধে এক নতুন পোস্ট লিখেছেন। এই্ ভদ্রমহিলা বলছেন:

গতকাল নাজ হাম্মাদিতে যা ঘটেছে সে ঘটনায় আমি সত্যি খুব দু:খিত এবং রাগান্বিত। এটা আমাকে মিশরীয় খ্রিষ্টানদের চেয়ে আহত করেছে, কারণ যা ঘটেছে তা সকল মিশরীয়র বিরুদ্ধে যায়।

এই ঘৃণিত হামলায় যারা নিহত বা আহত হয়েছেন তাদের এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।

অন্য আরেক ব্লগ কপ্টিক ফাইল, এই দুর্ঘটনা সম্বন্ধে লিখেছে।

تم إطلاق النار بشكل عشوائى من رَشاش آلى موَجه من داخل سيار (فيات – خضراء اللون)، مما أسفر عن استشهاد ثمانية أقباط وإصابة آخرين، وجميعهم ممن حَضروا قُداس عيد الميلاد بالكنيسة
এক গাড়ির (সবুজ রঙের এক ফিয়াট গাড়ি ছিল ওটা) ভেতর থেকে ক্রমাগত গুলি ছোড়া যায় এমন বন্দুক দিয়ে গুলি করা হয়। একটানা ছোড়া গুলিতে আটজন ব্যক্তি নিহত হয় এবং অনেকে আহত হয়। এই সকল ব্যক্তির সকলেই বড়দিনের সন্ধ্যায় প্রার্থনার জন্য গীর্জায় হাজির হয়েছিল।

মিসর ডিজিটাল-এ ওয়েল আব্বাসও তার ব্লগে নাগা হাম্মাদি-এলাকায় ঘটা গোলাগুলির ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করেছে।

মিশরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে এই ঘটনা পুরোনো এক ঘটনার সাথে সম্পর্ক যুক্ত হতে পারে। পুরোনো সেই ঘটনায় একই শহরে ১২ বছরের এক মুসলিম মেয়েকে এক খ্রীষ্টান ব্যক্তি ধর্ষণ করে। তবে জেইনোবিয়া এই গোলাগুলির ঘটনার অজুহাত হিসেবে সেই ঘটনাকে মেনে নিতে রাজি নন। পুরো ঘটনার জন্য তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি অভিযোগ করেছেন:

এবং আমি আমার সকল শ্রদ্ধার সাথে বলছি এটা বিপজ্জনক, অনেক অপরাধ দিয়ে এক অপরাধের বিরুদ্ধে লড়া। এই সকল কিছুর জন্য আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অভিযুক্ত করছি। যদি আইনের প্রতি সবার সত্যিকারে শ্রদ্ধা এবং ভয় থাকত, তা হলে কোন কিছুই ঘটত না।

নাওয়ারাও একই আবেগের প্রতিধ্বনি করেছে। এই ঘটনার উপর প্রকাশিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে তিনি বলছেন:

للداخلية قريته في حياتي، عمري ما شفت بيان للداخلية بيلقي اللوم على الضحية وبيحرض على العقاب الجماعي
আমি আমার সারা জীবনে এমন অদ্ভুত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পড়িনি। আমি এমন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি কখনো পড়িনি, যেখানে ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে এবং তাদের গণহারে শাস্তি প্রদানে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।

একই সাথে নাওয়ারা মিশরীয় প্রচার মাধ্যমকেও অভিযুক্ত করছে:

الاعلام المصري الراكد مش جايب سيرة الموضوع كأن اللي اتقتلوا امبارح دولم خرفان
নিষ্ক্রিয় মিশরীয় প্রচার মাধ্যম এই ঘটনাটিকে উপেক্ষা করে। বিষয়টি যেন এমন, গতকাল যাদের খুন করা হয়েছে তারা আসলে একদল ভেড়া।

ক্যাট অফ দি ডেজার্ট এ সবের জন্য সমাজ ও উগ্রবাদীদের অভিযুক্ত করেছে।

موت 7 مسيحيين كلهم شباب فى عمر الزهور واطفال غير الجرحى
سرقوا فرحتهم بالعيد وقتلوهم برصاص الإرهاب والغدر .. وقاعدين لحد يولولوا على شهيدة المرجيحة اللى اطلقوا عليها شهيدة الحجاب
مستنيين ايه ؟؟ بعد الانحطاط وقلة الادب على المختلف عقائديا مستنين سمعتكو تبقى ايه فى الخارج ؟؟
الله ينتقم من كل من افتى بتكفير الآخرين وعلى رأسهم القرضاوى والحيوانى وحسان
সাতজন খ্রীষ্টান নিহত হয়েছে, যারা ছিল শিশু। একই ঘটনায় অনেকেই আহত হয়েছে। তারা তাদের বড়দিনের উৎসব চুরি করেছে এবং তাদের সুখ ছিনিয়ে নিয়েছে এবং তারা সকলেই ‘মারটেয়ার অফ দি সি শ‘ নামক ঘটনার জন্য শোক করছে এবং তাকে বোরখাধারী শহীদ উপাধি দিয়েছে।
এই উপেক্ষা এবং দেরি করিয়ে দেবার পর আর কিসের জন্য অপেক্ষা করছেন আপনারা? এই ঘটনার পর আমাদের প্রতি অন্যদের ভাবনা কি হতে পারে বলে আপনারা আশা করেন?
তারা গোল্লায় যাক, যারা অন্যের আক্রমণাত্বক ভাবনাকে বিবেচনা করে এবং আল কারাদাউই, এল হুওয়াইনি এবং হাসসানকে সবার উপরে বিবেচনা করে।

এরপর তিনি এক ভিডিও পোস্ট করেন। এই ভিডিওতে আবু ইজ-হাক এল হুওয়াইনি লোকদের খ্রিষ্টান ব্যক্তি এবং তারা যে মিশরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে সে সর্ম্পকে সতর্ক করে দিচ্ছেন!

অন্যদিকে মিশরীয় ব্লগার টে৩মা বিশ্বাস করেন যে এ ধরনের ঘটনার পিছনে কিছু বিদেশীর হাত রয়েছে:

وأنا على يقين تام بأن الفتنة خارجية وليست داخلية
আমি নিশ্চিত যে, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা বাইরের দেশের লোক, তারা এ দেশের কেউ নয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .