দক্ষিণ এশিয়া: ২০০৯ সালের ঘটনাবলি ফিরে দেখা (দ্বিতীয় খণ্ড)

২০০৯ সালে দক্ষিণ এশিয়া ঘটে যাওয়া বেশ কিছু প্রধান ঘটনার উপর আমরা দৃষ্টি প্রদান করেছি। এটি এই সব বিষয়ের উপর লেখা দ্বিতীয় কিস্তি, যা এই এলাকার নাগরিক সাংবাদিকদের চোখে ধরা পড়েছে। যদি আপনি প্রথম অংশটি কোন কারণে না পড়ে থাকেন, তা হলে এখানে প্রথম খণ্ডটি রয়েছে

মালদ্বীপ:

মালদ্বীপের রাজধানী মালে, ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী মোড-এর এবং এটি ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

মালদ্বীপের রাজধানী মালে, ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী মোড-এর এবং এটি ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

মালদ্বীপে ২০০৯ সালের প্রথম চারমাসে বেশ কিছু ভিন্নমতাবলম্বী ও অভিযুক্ত ইসলাম বিরোধী ওয়েবসাইটকে নিষিদ্ধ করা হয় এবং বিষয়টি ব্লগ জগৎে এক বিতর্কের সৃষ্টি করে। এই বিতর্ক ছিল নিষেধাজ্ঞার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে। ব্লগাররা মন্তব্য করেছে যে, ওয়েবসাইট বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ বাক স্বাধীনতাকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে এবং তারা “ইন্টারনেটকে ইন্ট্রানেট বা সীমাবদ্ধ নেটওয়ার্কে পরিণত করে ফেলছে”।

মালদ্বীপের সংবাদিকদের জন্য এ বছরটি বেশ কঠিন ছিল। বেশ কিছু ব্লগ জানায় প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদের কারণে সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় অথবা তাদের হুমকি প্রদান করা হয়।

এ বছর মালদ্বীপে প্রথম উন্মুক্ত সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মে মাসে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে সংসদের ৭৭টি আসনের জন্য ৪০০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে সমস্ত রাষ্ট্র ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে, মালদ্বীপ তাদের মধ্যে সামনের সারিতে রয়েছে। কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে মালদ্বীপের বেশ কয়েকটি সংগঠন এর গতি বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিয়েছিল

নেপাল:

নেপালে মাওবাদী প্রতিবাদ। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী আইজাহর্স্কির, ছবি ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

নেপালে মাওবাদী প্রতিবাদ। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী আইজাহর্স্কির, ছবি ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

হিমালয়ের কোলে বাস করা নেপালী জাতির জন্য এ বছরটি বেশ সমস্যাপূর্ণ ছিল। নেপালে ২০০৯ সালকে প্রতিবাদের বছর হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে: রাজনৈতিক দল বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যারাই হন না কেন, তারা দাবি আদায় বা প্রতিবাদ করার জন্য রাস্তা দখল করে রেখেছিল এবং দেশটির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালত বন্ধ করে রেখেছিল।

এপ্রিল মাসে দেশটিতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন জেনারেল এক “সাধারণ রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থান ঘটাতে” যাচ্ছে। তারা এটি করতে যাচ্ছে দেশটির মাওবাদী নেতা ও প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ডের বিরুদ্ধে। সে সময় প্রচন্ড দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান রুকমানগাদ কোতোয়ালকে বরখাস্ত করেছিলেন। ব্লগাররা বছরের মাঝামাঝি চার মাস সময় ধরে চলা উভয়ের মধ্য সৃষ্ট এই ফাটল নিয়ে লিখেছে। এরপর এই দ্বন্দ্ব গুরুতর আকার ধারণ করে। যখন দেশটির রাষ্ট্রপতি রাম বরন যাদব বরখাস্ত হওয়া সামরিক বাহিনীর প্রধান রুকমানগাদ কোতোয়ালকে পুনরায় বহাল করে, তখন প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ড পদত্যাগ করে। এই ঘটনাটি নেপালে এক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করে। প্রচন্ডের পদত্যাগের পরে ভবিষ্যৎ-এ দেশটির নেতৃত্ব প্রদান কে করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ঘটনার পরপরই মাওবাদীরা দেশটির রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে নতুন করে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়।

প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপাল, ছবি উটুডানুকির, উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে।

প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপাল, ছবি উটুডানুকির, উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে।

নতুন প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপালকে নিয়ে নেপাল নতুন ভাবে যাত্রা শুরু করে। তিনি অন্যতম কমিউনিষ্ট নেতা এবং নেপাল কমিউনিষ্ট পার্টির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক (ইউনাইটেড মার্ক্সসিস্ট ও লেলিনিস্ট)। তবে মাওবাদীদের সাথে কাজ করা, নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য পাহাড়ে চড়ার মত এক কঠিন কাজ হতে যাচ্ছে।

বছর শেষে নেপালের রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দেশবাসীদের জন্য কোন শুভ সংবাদ ছিল না। এর কারণ মাওবাদী ও সরকারের মধ্য শান্তি আলোচনা অনিশ্চয়তায় ঝুলে রয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল নামক (টিআই) আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী প্রতিষ্ঠানের সূচকে নেপালের অবস্থানের অবনমন ঘটেছে এবং দেশটির দুর্নীতি সরকার ও রাজনীতিবীদদের ছাপিয়ে নেপালের সামাজিক জীবনে ছড়িয়ে পড়েছে যার ফলে উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তবে নেপালের কিছু উজ্জ্বল দিক রয়েছে। এ বছর দেশটির বেশ কিছু অর্জনও রয়েছে, যেমন তারা বায়ো গ্যাস বা জ্বৈব জ্বালানী ব্যবহারে এক বিপ্লব সাধন করেছে

পাকিস্তান:

২০০৯ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তানের আইনজীবী এবং রাজনীতিবীদরা অপসারিত বিচারকদের পুনরায় নিয়োগ করার দাবিতে একটি বিশাল লং মার্চ (প্রতিবাদ মিছিল) বের করে। সে দেশের নাগরিক সাংবাদিকরা পুরো ঘটনার সংবাদ সরাসরি উপস্থাপন করে। দেশটিতে এ বছর গণতন্ত্রের জয় হয়। যখন সরকার জনতার চাপের কাছে নতি স্বীকার করে এবং পাকিস্তানের পদচ্যুত প্রধান বিচারপতি ইফতেখার মোহাম্মদ চৌধুরীকে পুনরায় পূর্বকার পদে বহাল করে, তখনই এই বিজয় অর্জিত হয়। জনতার এই বিজয় এক প্রশ্ন তৈরি করে, এরপর পাকিস্তানে কি ঘটবে

তালেবানদের সাথে সরকারের শান্তি চুক্তি পাকিস্তানে বড় আকারে এক বিতর্কের জন্ম দেয়। অনেক ব্লগার মনে করেন অনেক মূল্য প্রদান করার বিনিময়ে এই শান্তি চুক্তি অর্জিত হল এবং এর ফলে সোয়াত উপত্যকার লোকদের পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হল। এই চুক্তির মাধ্যমে তালেবান যোদ্ধাদের হাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং ব্লগাররা ধারণা দেয় যে, এতে সোয়াত অঞ্চলে চলা সংঘর্ষের কোন অবসান ঘটছে না।

তারা ঠিক ছিল, কারণ তালেবানদের আক্রমণ প্রচণ্ড আকারে বেড়ে যায়। শ্রীলংকার ক্রিকেট দলের উপর হামলার পর, আবার লাহোর আলোচনায় চলে আসে। এবার লাহোর উপশহরে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপর ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীরা হামলা করে। এই প্রচণ্ড হামলায় অনেক লোক মারা যায়।

সোয়াত এলাকার উদ্বাস্তুরা, ছবি ডা আওয়াব আলভির সৌজন্যে (টিথ.কম.পাক/ব্লগ)।

সোয়াত এলাকার উদ্বাস্তুরা, ছবি ডা আওয়াব আলভির সৌজন্যে (টিথ.কম.পাক/ব্লগ)।

পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করা শুরু করে এবং পাকিস্তান গৃহযুদ্ধের মত এক পরিস্থিতিতে পড়ে যায়। একই সাথে দেশটি বেশ কিছু মানবিক সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে যখন এই তালেবান বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে যুদ্ধ শুরু হবার ফলে বেশ কিছু আভ্যন্তরীণ জনগোষ্ঠী বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে। কয়েক মাস পড়ে পাকিস্তানী সরকার তাদের পুনরায় আবাসনের ব্যবস্থা করে, কিন্তু এই পরিস্থিতি যে ভাবে মোকাবেলা করা হয় তা বেশ বিতর্কের সৃষ্টি করে।

যে ভাবে তারা বাস্তুচ্যুত হয় এবং পরে তাদের ফিরে আসার প্রক্রিয়া ছিল পাকিস্তানের ইতিহাসে এক ভয়াবহ বেদনাদায়ক অধ্যায়। তবে এই শোকগাঁথা এখনো শেষ হয় নি। দক্ষিণ ওয়াজিরস্তানে তালেবানদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অভিযানের ফলে নিরাপত্তার খাতিরে গণহারে লোক এই এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।

এদিকে তালেবানদের দ্বারা সৃষ্টি বিশৃঙ্খলা চলতেই থাকে। তারা অসংখ্য আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। এসব হামলা সংঘটিত হয় পেশোয়ার, রাওয়ালপিন্ডি, করাচির মত শহরে এবং দেশের অন্যান্য স্থানে। ব্লগাররা এইসব ঘটনার ফলে ক্ষুব্ধ পাকিস্তানীদের প্রতিবাদের কথা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরে। তাদের প্রতিবাদ ছিল তালেবানদের এইসব ভয়াবহ আক্রমণের বিরুদ্ধে

এর মাঝে এইসব আক্রমণে কিছুটা বিরতি ঘটে যখন তালেবান নেতা বায়তুল্লাহ মাসুদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে তা তালেবানদের এইসব উদ্দেশ্যবিহীন হত্যাকাণ্ড থামায় নি। এ বছর পাকিস্তানের গোজরা এবং করচিতে ধর্মীয় দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। এইসব বিষয়ও পাকিস্তানকে বিপদে ফেলে দেয়।

টুইটারের মাধ্যমে গো গ্রীন প্রচারনা।

টুইটারের মাধ্যমে গো গ্রীন প্রচারনা।

পাকিস্তানের নাগরিক সাংবাদিকরা ২০০৯ সালে সক্রিয় ভাবে চেষ্টা করেছে দেশটির সন্ত্রাসবাদ ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে। এর জন্য তারা অনলাইনে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রচারণা চালায়, যার মধ্যে “গো গ্রীণ প্রচারণা” ও “টেক ব্যাক দা টেক প্রচারণা” ছিল উল্লেখযোগ্য।

পাকিস্তান এ বছর সঠিক পথে এক ধাপ এগিয়ে যায়, যখন দেশটির জাতীয় সংসদ গৃহে সংঘটিত নির্যাতন প্রতিরোধ আইন পাস করে।

শ্রীলংকা:

শ্রীলংকার জনগণের জন্য ২০০৯ সালটি চিহ্নিত হয়ে থাকবে তামিল বিদ্রোহীদের (এলটিটিইর) সাথে রক্তাক্ত এবং তিক্ত যুদ্ধের অবসানের বছর হিসেবে। যদিও এই বিজয় অর্জনের প্রক্রিয়া ছিল বিতর্কিত, তবুও এটি জাতির জন্য এক আশা বয়ে এনেছে। এই যুদ্ধ জাতিকে অনেক লম্বা সময় ধরে ভুগিয়েছে।

লাসান্থা উইক্রামাতুঙ্গার অন্ত্যষ্টিক্রিয়া যাত্রা, ছবি ইনডি.কা-এর সৌজন্যে পাওয়া, ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

লাসান্থা উইক্রামাতুঙ্গার অন্ত্যষ্টিক্রিয়া যাত্রা, ছবি ইনডি.কা-এর সৌজন্যে পাওয়া, ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

এলটিটিইপন্থী কণ্ঠস্বরকে এ বছরও দমন করার চেষ্টা চলছে। এটা প্রমাণ হয় যখন শ্রীলংকার অন্যতম টিভি অনুষ্ঠান সম্প্রচার কেন্দ্র সিরাসা টেলিভশনের স্টুডিও আক্রমণের শিকার হয় এবং সরকারের বিরুদ্ধে উন্মুক্ত সমালোচনাকারী লাসান্থা বিক্রমাতুঙ্গাকে (সানডে লিডার পত্রিকার সম্পাদক) খুন করা হয়

জানুয়ারি মাসে শ্রীলংকার রাষ্ট্রপতি মাহিন্দ্রা রাজাপাক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা দেন যে, সরকারি বাহিনী এলটিটিই বিদ্রোহীদের প্রধান ঘাঁটি বলে পরিচিত কিলিনোচ্চি দখল করেছে নিয়েছে। এক সম্মুখ যুদ্ধে প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতির পর তারা এটি দখল করতে সমর্থ হয়। তবে ধারাভাষ্যকাররা বলেন, “প্রকৃত বিজয় তখনই অর্জিত হবে, যখন এলটিটিই তামিল নাগরিক এবং শ্রীলংকার প্রবাসী তামিলদের সমর্থন হারিয়ে ফেলবে”।

শ্রীলংকার উত্তরের কিছু অংশ লিবারেশন টাইগার তামিল ইলম (এলটিটিই)-এর দখলে তখনও ছিল। কিন্তু অনেক নিরপরাধ লোক এই যুদ্ধ ঘোষিত এলাকায় এখনো আটকে পড়ে আছে। “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়” এবং “আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম” উভয় পক্ষের প্রচারণা ও একে অপরের উপর করা অভিযোগের কারণে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে তারা যুদ্ধ এলাকায় আটকা পড়া মানুষের জন্য তেমন কিছু করতে পারেনি।

কার্যত এই যুদ্ধ তখনই শেষ হয় যখন এলটিটিই-র নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরন যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হয়। প্রভাকরনের মৃত্যু নিয়ে অনেক গুজব ও তত্ত্ব তৈরি হয়, যা তার মৃত্যুকে বিতর্কিত করে তুলে। এমনকি অনেকে ফটোশপ নামক সফটওয়ার ব্যবহার করে সে যে বেঁচে আছে তা প্রমাণ করা চেষ্টা করে।

শ্রীলংকার আইডিপি বা আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত উদ্বাস্তু শিবির, ছবি বৈদেশীক ও কমনওয়েলথ দপ্তরের সৌজন্যে পাওয়া, ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে তা ব্যবহার করা হয়েছে।

শ্রীলংকার আইডিপি বা আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত উদ্বাস্তু শিবির, ছবি বৈদেশীক ও কমনওয়েলথ দপ্তরের সৌজন্যে পাওয়া, ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে তা ব্যবহার করা হয়েছে।

যুদ্ধের পরিসমাপ্তি শ্রীলংকায় শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছে এবং দেশটি উপচে পড়া তীব্র আবেগ থেকে মুক্তি পেয়েছে। এখন দেশটি শান্তির আশা করতে পারে। তবে অবিশ্বাস এবং শংকা শ্রীলংকার অনেক তামিলের মনে এখনো রয়ে গেছে, বিশেষ করে যে সমস্ত তামিল শ্রীলংকা থেকে বের হয়ে অন্য দেশে অবস্থান করেছে। তাদের মনে এই অবিশ্বাস রয়ে গেছে কারণ, সংবাদ রয়েছে যে, ৩০০,০০০ জনের বেশি তামিল আভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। শ্রীলংকার উদ্বাস্তু শিবিরের প্রায় ১৩,০০০ জনের বেশি তামিল নিখোঁজ রয়েছে। এই ধরনের সংবাদের সমালোচনা কিছু ব্লগার করেছে। অন্য দিকে সংবাদ বলছে, আইডিপি বা আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত শিবিরগুলোর ক্ষেত্রে ব্লগ পোস্ট থেকে পাওয়া তথ্য, একমাত্র সংবাদ উৎস।

নভেম্বরে শ্রীলংকার ব্লগাররা উজ্জীবিত হয়ে উঠে এক বিশেষ সংবাদে। জানা যায় যে, প্রাক্তন সামরিক বাহিনীর প্রধান যিনি কিনা লিবারেশন টাইগার তামিল ইলম (এলটিটিই) বাহিনীকে পরাজিত করেছেন, তিনি তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছে এবং নতুন ভাবে গঠিত সম্মিলিত বিরোধী জোট তাকে শ্রীলংকার পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে।

আমি আশা করি, আপনারা সকলে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদ উপভোগ করেছেন এবং আমরা আশা করছি ২০১০ সালে নাগরিক সাংবাদিকরা এই অঞ্চলের জনগণ এবং তাদের উপর প্রভাব তৈরি করে এমন বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন তথ্য আপনাদেরকে সরবরাহ করতে পারবে গ্লোবাল ভয়েসেস এর মাধ্যমে। যদি আপনি একজন ব্লগার হিসেবে নিজ দেশের সংবাদ সেতুবন্ধনে অবদান রাখতে আগ্রহী হন, তা হলে দয়া করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .