জোসেফ স্ট্যালিনের ১৩০ তম বার্ষিকীর শুরুতে, রাশিয়ার ব্লগ জগৎের বিভিন্ন লেখায় রাশিয়ার ইতিহাসে এই বিতর্কিত ব্যক্তির ভূমিকা সম্পর্কে গরম গরম বিতর্কে পূর্ণ ছিল। এই সব ব্লগ পোস্টে দেয়া বিভিন্ন মতামত আর বিশেষ করে তারা যে বেশ কয়েক হাজার মন্তব্যকে আকর্ষিত করেছেন তা স্ট্যালিন সম্পর্কে ভিন্ন মত ও মানুষের মধ্যকার গভীর বিভেদের ইঙ্গিত দেয়।
বেশীরভাগ ব্লগ পোস্টের আবির্ভাব হয়েছে জনপ্রিয় রাশিয়ান টিভি চ্যানেল এনটিভি তে ‘স্ট্যালিন’স নামি’ (স্ট্যালিন আমাদের সাথে আছেন) নামে টক শো প্রদর্শনের পরে যা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্ট্যালিনের সমর্থক আর তার জনপ্রিয় সমালোচকদের একত্র করেছিল। এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল স্ট্যালিনের ভাবমূর্তি পুন:প্রতিষ্ঠা করে তাকে যারা সমালোচনা করে তাদেরকে থামিয়ে দেয়া।
এই বিষয়ে সব থেকে বেশী পঠিত আর আলোচিত ব্লগ পোস্ট ছিল জিকিউ ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক নিকোলাই উস্কোভের (রাশিয়ান ভাষায় লেখা)। বেশ কঠোর কথা ব্যবহার করে এই টক শো আর সেই দেশ যেখানে মানুষ এখনো স্ট্যালিনকে পছন্দ করে তাদের সম্পর্কে উস্কোভ তার গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন:
Ничего, кроме желания уехать из страны навсегда, это ток-шоу не вызывает. […] Но меня, ей богу, заебал ваш Сталин, выжившие из ума бабки, генералы-козлы и депутаты-пустомели. Все это полный окончательный пиздец. Пиздец России, которая в 2009 году показывает по телевизору уебищных мудаков и видит в обсуждении их мудацкой позиции какой-то актуальный смысл. Пиздец стране, которая вместо удушающего стыда за Сталина испытывает гордость, вместо отвращения – страстную любовь.
এই পোস্টের উপর দুই দিনে ৯০০টিরও বেশী মন্তব্য এসেছে। অনেকে উস্কোভের রাশিয়ান টিভির ব্যাপারে মতামত আর দেশ সম্পর্কেও সাধারণ ভাবে হতাশার সাথে একমত। কিন্তু কয়েকজন ব্লগার স্ট্যালিনকে সমর্থন করেছেন আর তার কঠোর কাজের সমর্থন করেছেন তার অর্জনকে তুলে ধরে। লাইফ জার্নাল ব্যবহারকারী muf_dvr (মুফ ডিভিআর) উদাহরণ স্বরূপ লিখেছেন:
Печально, конечно, что при Сталине пострадали в том числе, скорее всего, и невинные люди. Но были бы мы сейчас свободными, если бы не сталинские жёсткие действия? Существовали бы как нация? Вопрос. Иногда стоит выбор между плохим вариантом и очень плохим, надо это понимать.
আর একজন লাইফ জার্নাল ব্যবহারকারী vasq (ভাস্ক) মনে করেছেন যে তখনকার দিনে মানুষ স্ট্যালিনের জন্য মারা যেতেও প্রস্তুত ছিল:
Что вы сделали для России, если имеете наглость хаять Сталина?
Я жил и работал рядом с людьми которые шли в бой с криком – “За Родину, за Сталина!”
কিছু ব্লগার তাদের মন্তব্যে তুলে ধরেছেন সম্প্রতি রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন স্ট্যালিনের যে সমস্ত গঠনমূলক কাজ তুলে ধরেছেন আর প্রধান ধারার মিডিয়ার এই সংক্রান্ত প্রচারণা। তবে এলজি ব্যবহারকারী স্টাইনক্রাউজ রাশিয়াতে স্ট্যালিনের ভালো চিত্র গঠনের ক্ষেত্রে প্রচারণার প্রভাবের কথা নাকচ করে দিয়েছেন:
Место Сталина на пьедестале обеспечено не пропагандой, а наличием его наследия в реальной жизни. Идёт человек по красивому проспекту — в 9 случаях из 10 этот проспект сталинский. Покупает человек квартиру — дом с нормальной толщиной стен и высотой потолков тоже “сталинка”. Слушает человек оперу — постановки Большого мирового уровня опять таки из того времени. И так далее.
জিকিউ এর সম্পাদকের সাথে আরো বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ব্লগার যোগ দিয়েছেন স্ট্যালিনের কাজকে নীচু হিসেবে দেখানোর মাধ্যমে তিরস্কার করার জন্য। বিখ্যাত রুশ ব্লগার দ্রুগোয় উস্কোভের পোস্টকে স্বাগত জানিয়ে এনটিভিকে সমালোচনা করেছেন:
Вот так не смотришь телевизор месяцами, не смотришь, а потом раз, включишь, и словно в зловонную яму окунешься. […] Интересно, кто додумался вытащить городских сумасшедших, вроде Квачкова, на федеральный телеканал в воскресный прайм-тайм и заставить зрителей слушать эти бредни про конопатого упыря?
পূর্বের উদাহরণের মতো, দ্রুগোয়ের পোস্ট সাথে সাথে যুদ্ধ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে অসংখ্য স্ট্যালিনবাদী আর এই মতবাদের বিপক্ষে যারা শক্তিশালী মতামত রেখেছেন তাদের মধ্যে। লাইফ জার্নাল ব্যবহারকারী ৪ডি_ম্যান দ্রুগোয়কে অভিযুক্ত করেছেন ‘সমগ্র প্রজন্মের আত্মার উপরে থুথু ফেলার জন্য’। তিনি ২০০৭ এ জনগনের মতামত ফাউন্ডেশনের করা একটা জরীপের ফলাফলের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন:
…] по данным опроса общественного мнения 18-19 февраля 2006 г., 47 % жителей России считают роль Сталина в истории положительной, 29 % — отрицательной. Смерть Сталина стала для народа настоящим потрясением. Страна целиком погрузилась в траур. Люди, услышав про данную весть, не могли сдержать слез. Народ действительно горевал из-за смерти своего кумира. 2 миллиона человек пришли проститься с вождём лично.
কিন্তু সকল জনপ্রিয় ব্লগ পোস্ট এই বার্ষিকির সাথে সম্পর্কিত স্ট্যালিনের সমালচোনা করেনি। স্বনামধন্য রাশিয়ার বুদ্ধিজীবি আনাটোলি ভাসেরম্যান স্ট্যালিনকে সমর্থন করে তার সাফল্যের দিকে দৃষ্টি দিতে বলেছেন:
…] по данным опроса общественного мнения 18-19 февраля 2006 г., 47 % жителей России считают роль Сталина в истории положительной, 29 % — отрицательной. Смерть Сталина стала для народа настоящим потрясением. Страна целиком погрузилась в траур. Люди, услышав про данную весть, не могли сдержать слез. Народ действительно горевал из-за смерти своего кумира. 2 миллиона человек пришли проститься с вождём лично.
ভাসেরম্যান স্ট্যালিনের সাফল্যের একটি তালিকা দিয়েছেন আর ১৯৩৭ সালে রাশিয়ার দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ বন্ধে তার ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। আরও রয়েছে নাৎসী জার্মানীর উপরে বিজয় পাওয়া, সমাজতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে বির্তকের সৃষ্টি করে “কমিউনিস্ট ইউটোপিয়ার সাথে বাস্তবতার মিলন তৈরি করার পথ খোঁজা”। ভাসেরম্যানের ব্লগে এক হাজারের বেশী মন্তব্য স্ট্যালিনের ব্যাক্তিত্বের উপরে আরো গবেষনার প্রয়োজনীয়তাকে সমর্থন করেছে আর তার প্রাপ্তি ও বিফলতার সঠিক মূল্যায়নের দাবি করেছে।
আর একটা জনপ্রিয় জায়গা স্ট্যালিন নিয়ে আলোচভনার হলো আব-পোকোজের ব্লগ। ভারতের একজন অধ্যাপকের সাথে কাল্পনিক কথোপকথনের রুপে যা ১৯৪৫ এ হচ্ছে, আব-পোকোজ স্টালিনকে উইন্সটন চার্চিলের সাথে তুলনা করেছেন যার নীতির কারনে বলা হয়ে থাকে যে আফ্রিকা, ভারত আর আইরল্যান্ডের অনেক মানুষ ভুগেছে। আব-পোকোজ তার পোস্ট শেষ করেছেন নীচের মন্তব্য দিয়ে:
И никто не осудит преступления черчиллизма. Все будут думать, что он же победил немцев — разве можно припоминать ему всё остальное?
জোসেফ স্ট্যালিনের ১৩০তম বার্ষিকী রাশিয়ার সমাজের কষ্টকর ব্যাপারে একটা নতুন মোড় দিয়েছে। ব্লগ জগৎ কেবল তুলে ধরেছে স্ট্যালিনের ভূমিকা নিয়ে বির্তকের তীব্রতা যা ক্রেমলিনের সাহায্য ছাড়া গত পাঁচ বছরে আবার সামনে এসেছে। স্ট্যালিনকে নিয়ে বিভাজিত মতামত সেই গভীর বিভেদ তুলে ধরে বয়স্ক মানুষ, যারা সোভিয়েত সাম্রাজ্যের বিগত ক্ষমতার স্বপ্ন দেখেন, আর যুবাবয়সী খোলামেলা নতুন প্রজন্মের মধ্যে যারা অতীতে আটকিয়ে না থেকে সামনের দিকে যেতে চান।