চীন: আকমলের মৃত্যুদণ্ড, অপমানকর স্মৃতির কারণে দৃঢ়তার সাথে না বলা

আকমল শেখ, একজন বৃটিশ নাগরিক। চীনে হিরোইন পাচারের দায়ে সে অভিযুক্ত হয়েছিল। মঙ্গলবার তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। তবে আকমলের পরিবার এবং বৃটিশ সরকার তার এই অপরাধ মওকুফ করার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানায়। উভয়ে দাবি করেছিলেন যে, আকমল মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিল।

তবে চীনের সর্বোচ্চ আদালত আকমলের মানসিক অবস্থার বিষয়টি পুনরায় মূল্যায়ন করার অনুরোধ বাতিল করে দেয়, কারণ বৃটিশ সরকার তার মানসিক অবস্থা সম্বন্ধে যে সমস্ত তথ্য প্রদান করেছিল তাতে প্রমাণ হয়নি যে আকমল শেখ মানসিক ভাবে অসুস্থ।

আকমলকে বিষাক্ত ইঞ্জেকশন দিয়ে মারা হয়। এই ঘটনায় বৃটিশ সরকার ও বেশ কিছু অধিকার আদায়কারী সংগঠন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এই ভাবে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের নিন্দা জানিয়েছেন এবং তিনি বলছেন, “ বিশেষত এই ঘটনায় মানসিক অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়নি”।

সমালোচনার মুখে চীন এ ব্যাপারে তার তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং তিনি সতর্ক করে দেন এই ধরনের হস্তক্ষেপ দু'টি দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

চীনে মাদক পাচারকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেখানে ৫০ গ্রামের উপর হিরোইন বহন করা বা বিক্রি করার অপরাধে ধরা পড়লেই আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আকমল ৪০০০ গ্রাম হিরোইনসহ ধরা পড়েছিল।

চীনের অনেক নেটিজেনের কাছে এই ঘটনা ১৯ শতকে অনুষ্ঠিত দু'টি আফিম যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এই দু'টি যুদ্ধের মাধ্যমে বৃটিশ বাহিনী চীন দখল করে নেয়। যুদ্ধের কারণ, সে সময় চীনা কর্মকর্তারা বৃটিশ ব্যবসায়ীদের অফিম পুড়িয়ে দিয়েছিল। চীন সেই দু'টি যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং এর ফলে তারা এরপর “১০০ বছর ধরে এক অপমান সহ্য করে”।

১৬৩.কম চীনের এক অন্যতম পোর্টাল বা ওয়েব সাইট। সেখানে এই সংবাদের উপরে যে মন্তব্য করা হয়েছে সেটিকে প্রায় ৩০০০ জন চীনা নাগরিক সমর্থন করেছে। মন্তব্যে লেখা হয়েছিল:

老外就了不起了…..贩毒就该杀

পশ্চিমের একজন নাগরিক কি আলাদা কোন বৈশিষ্ট্য ধারণ করে? একজন মাদক পাচারকারীর অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।

আকিংফাং, সবচেয়ে বড় কথা, এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে চীন এগিয়ে যাচ্ছে।

同 样是没收“鸦片”、惩办英国毒贩,170年的1839年林则徐的“禁烟”引发清王朝的世纪第一战,英国人靠鸦片和大炮打开了中国的大门…. 1856年清政府在“亚罗号”上逮捕了几名海盗,这一本属于中国内政的事件被英军当做发兵的借口而发动了第二次鸦片战争,150年前的1859年第二次鸦 片战争中英法联军在天津大沽口战胜清军,进而向北京城发兵,此年火烧圆明园,烧杀抢掠,虏走中国无数的文物、财宝,使得中华民族遭受历史上最沉重的灾难和 损失之一。

আফিম বাজেয়াপ্তকরণ এবং মাদক বহনকারী বৃটিশ নাগরিককে শাস্তি প্রদান করার মধ্যে দিয়ে ১৭০ বছর আগে চীন সেই শতকে প্রথম কোন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। সেই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বৃটিশ বাহিনী জোর করে চীনে আফিম এবং কামান নিয়ে প্রবেশ করে। ১৮৫৬ সালে বৃটিশরা দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ আরম্ভ করে, এর অজুহাত হিসেবে তারা কুইং বা মাঞ্চু রাজাদের এলাকা থেকে কিছু চীনা জলদস্যুদের ধরে নিয়ে যায়। বৃটিশ-ফরাসী সম্মিলিত বাহিনী চীনা বাহিনীকে পরাজিত করে এবং তারা বেইজিং অভিমুখে যাত্রা করে। তারা রাজাদের পুরোনো প্রাসাদ যা ওল্ড সামার প্যালেস নামে পরিচিত সেটিকে পুড়িয়ে দেয় এবং প্রচুর সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনা চীনের ইতিহাসে অন্যতম এক বিপর্যয়।

而今当英国贩毒分子在我们的国土上做出法律所不容的事情,我们可以正大光明的用我们自己法律的手段惩治毒贩,绝不留情,不用看别人的脸色,这也从侧面显示:中国可以不高兴,后果很严重!

আজ যখন বৃটিশ মাদকপাচারকারীরা আমাদের দেশে এসে আমাদের আইন ভঙ্গ করে, আমাদের অধিকার রয়েছে তাকে প্রকাশ্যে এবং কোন ধরনের ক্ষমা প্রদর্শন না করে শাস্তি প্রদান করা। আমাদের আর অন্য কারো আদেশ অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই। এটা প্রমাণ করে যে, এতে চীন খুশি হবে না, এবং চীনকে উত্তেজিত করার ফলাফল খুবই ভয়াবহ হবে।

ঝা৮১১-এর মন্তব্য একই ধরনের মানসিকতা প্রদর্শন করে।

比如把大英博物馆的一些中国收藏拿来我们也许会认真考虑的!!

যদি আপনারা চীন থেকে চুরি করে নেওয়া সম্পদ আবার চীনে ফেরত দেন, তা হলে আমরা আপনাদের প্রস্তাব গুরুত্বের সাথে নিতে পারি। এই সব সম্পদ ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রাখা আছে।

জাহুন২৮৭৫ বলেছেন,

这是我们的内政,关英国人什么事?

এটা আমাদের ঘরোয়া বিষয়। এর মধ্যে বৃটিশদের নাক গলানোর কি কারণ?

চীনে লম্বা সময় ধরে এক অভিযোগ রয়েছে যে বিদেশী, বিশেষ করে পশ্চিমাদের প্রতি এমন ব্যবহার করা হয়, যেন তারা উচ্চশ্রেণীর মানুষ। ২০০৮ সালে একটি রেলগাড়ি নির্ধারিত জায়গার বাইরে থামে, যাতে বেশ কিছু জাপানী যাত্রী নির্দিষ্ট সময়ে বিমান বন্দরে পৌঁছাতে পারে। এমনকি সে সময় তাদের পুলিশ পাহারায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে অন্য এক ঘটনায় মানসিকভাবে অসুস্থ এক চীনা নাগরিককে ট্রেনের দ্বাররক্ষক সিটে বেঁধে রাখে এবং তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। কেউ এই ঘটনার দিকে নজর দেয়নি। এবার আদালতের আদেশ ছিল যে কোন সমর্থন লাভের ক্ষেত্রে লোকজনকে সমান দৃষ্টিতে দেখা।

গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদক ওয়াং ওয়েন বিশ্বাস করেন:

根结底,外国人在华犯罪,由谁来判,怎么判,必须严格按中国的法律程序来办。洋人犯法,能否与国人同罪,是一个司法公正的问题。

সর্বোপরি, প্রশ্ন হচ্ছে কে এবং কি ভাবে চীন সে দেশে অবস্থান করা এক সন্দেহজনক বিদেশীর বিচার করবে এবং যা করা হবে চীনের আইনানুসারে। এটা একটি দেশের আদালতের ন্যায়বিচারের বিষয়্।

কেউ কেউ মতামত প্রদান করেছে, এটা বৃটিশ সরকারে কূটনৈতিক ব্যর্থতা, কারণ এটা জানার কোন প্রয়োজন ছিল না এই বিষয়ে চীনা জনগণ কি ভাবে। মন্তব্যের ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি প্রতিধ্বনিত হয়েছে:

我很同情阿克毛和他的亲人们,死刑是一个残酷的刑罚,我个人一直觉得,这是一个非常不人道的做法。但,就司法本身的刚性原则显示,只要中国还没有废除死刑,只要别的死刑犯还在遭受这样的待遇,阿克毛就没有任何可以例外的理由。否则,人为制造的区别,将带来更多的悲剧。

আকমল এবং তার পরিবারের প্রতি আমার সহানুভূতি রইল। মৃত্যুদণ্ড অনেক কঠোর শাস্তি, এবং তা অমানবিক, আমি সব সময় এমনটা ভাবি। কিন্তু যতদিন পর্যন্ত চীন মৃত্যুদণ্ড নামক শাস্তি রদ করছে না, এবং যতদিন পর্যন্ত অন্য অপরাধীদেরও একই ভাবে শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে আকমলকেও আলাদা দৃষ্টিতে দেখার কোন কারণ নেই। বিষয়টিকে আলাদা করে দেখলে তা এদেশের জন্য আরো বেদনা বয়ে আনবে।

在以往中国因种种罪犯的引渡问题与别 国的交涉时,中国总是无一例外的被拒绝。哪怕需要引渡的是恐怖分子,西方也都会用本国法律中的相应条款直接拒绝。最直接的借口是,欧美国家的三权分立和绝 对的司法独立,是一道谁也越不过去的门槛。但这次英国举国上下几乎都忘记了司法独立的最高原则,而是寄希望于中国高层对司法的直接干预,试图让阿克毛逃脱 一死。

অতীতে যখন চীন বন্দি বিনিময় করতে চেয়েছে, এমনকি সন্ত্রাসী বিনিময় করার ক্ষেত্রেও পশ্চিমার তা অগ্রাহ্য করেছে, এটি তারা করেছে প্রায়শ: নিজেদের আইনের ধারা উল্লেখ করে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সরাসরি অজুহাত ছিল এটি বিচার বিভাগের নিজস্ব ক্ষমতার বিষয় ও তারা স্বাধীন। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে ব্রিটেন এই নীতি নিজেই ভুলে গেছে এবং তারা আশা করেছিল যে প্রশাসকরা এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে।

当西方试图群起将一个罪犯的生命与更多的东西挂钩,逼中国高层就范时,阿克毛,其实就已经不得的不死了。原因太简单,13亿中国人都在用天枰称着自己和那个叫阿克毛的鬼佬在国家里的重量。鬼佬的生命是命,我们自己就天生是草?

যখন ব্রিটেন এই বিচারকে তার অবস্থানের চেয়ে বড় করে দেখার চেষ্টা করে, তার মধ্য দিয়ে তারা চীনের প্রশাসনকে আকমলের নির্ধারিত মৃত্যুদণ্ড বাতিল করতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। এর ফলে এটা খুব সহজেই বের করা যায় যে ১৩০ কোটি লোক আকমলের জীবনকে তাদের জীবনের সাথে তুলনা করছে। যদি পশ্চিমা কোন নাগরিকের জীবন মূল্যবান্‌ হয়ে থাকে, তা হলে আমাদের জীবন কি মূল্যহীন?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .