ব্রাজিল: ১০০ বছরের দাদি তার প্যারাসুট ঝাঁপের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিলেন

স্বপ্নকে বাস্তবে রুপান্তরিত করার ক্ষেত্রে বয়স কোন বাঁধা নয়, এমনকি যদি সেটা শতবর্ষে পা দেবার পর প্রথমবার প্যারসুট নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার মত ঘটনা হয়। ১৯ ডিসেম্বরে আইডা জেমাক মেন্ডেজ, যিনি ভো আইআআইআ (দাদি আইআআইআ) নামে পরিচিত, তিনি সফলতার সাথে ৮,০০০ ফুট উচ্চতা থেকে সেই শহরের উপর লাফিয়ে পড়েন, যে শহরে তিনি ১৯৫৯ সাল থেকে বাস করছেন। এই শহরের নাম মাকাপা। এটি ব্রাজিলের অম্পাপা প্রদেশের রাজধানী।

আমি আকাশে উড়তে চাই। যাতে আমি অনুভব করতে পারি যে, আমি ঈশ্বরের কাছাকাছি আছি। ছবি আলসিনেয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

আমি আকাশে উড়তে চাই। যাতে আমি অনুভব করতে পারি যে, আমি ঈশ্বরের কাছাকাছি আছি। ছবি আলসিনেয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

লাফ দেবার জন্য চার ঘন্টা অপেক্ষা করার পর ভো আইআআইআ হাস্য কৌতুক বলা শুরু করেন। সে সময় তিনি জীবনের অনেক ঘটনা স্মরণ করেন এবং তার আত্মীয় ও বন্ধুদের কথা, যারা তার এই কাজকে সমর্থন করেছে। তাদের নিশ্চিন্ত করেন যে, তিনি খুব খুশি এবং আদৌ ভীত নন। এই ঘটনার উপর নজর রাখছিলেন ব্লগার আলসিনেয়া কাভালকানটে [পর্তুগীজ ভাষায়]। তিনি তার প্রস্তুতির সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করছিলেন এবং লাফ দেবার পরের সকল ঘটনার তিনি ছবি তুলেছিলেন। এরপর তিনি এই বীর দাদির সাক্ষাৎকার নিয়েছেন:

Aos 100 anos, completados em novembro passado, ela dança, caminha, joga vôlei, basquete e futebol. “O que eu gosto mais é de dançar. Ihhhhh adoooro dançar”, diz com os olhos brilhando e dando uns requebros.
Falta alguma coisa? Faltava. Faltava saltar de paraquedas. Peraltice que ela realizou ontem em Macapá. “Quero passear no céu, me sentir mais pertinho de Deus”, disse.

[…]

Quando desceu, Vó Iaiá era o retrato da maior felicidade do mundo. Ergueu os braços para o céu e agradeceu a Deus. Deu entrevista coletiva contando que “foi bom demais”, que “é muito legal”, que não sentiu nenhum tantinho de medo, só uma “coisa estranha no ouvido por causa do vento forte” e que quer saltar de novo.

নভেম্বরে তিনি ১০০-তে পা দিয়েছেন। এই বয়সেও তিনি নাচেন, হাঁটেন, ভলিবল, বাস্কেটবল এবং ফুটবল খেলেন।“ তিনি ফোকলা দাতে ফিক ফিক করে হাসি দিয়ে বলেন,” নাচতে আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। হাহাহাহাহা, আমি নাচ পছন্দওওওওও করি। সে সময় তার চোখ জ্বলজ্বল করছিল। এর মধ্যে কোন কিছু কি বাদ পড়ে গেছে? হ্যাঁ সে এর আগে কখনো প্যারসুট নিয়ে উপর থেকে লাফ দেয়নি, মাকাপাতে গতকাল সে যা করে দেখায়। তিনি বলেন,” আমি আকাশে উড়তে চাই, যাতে আমি অনুভব করি যে, আমি ঈশ্বরের কাছাকাছি আছি”।

[…]

মাটিতে পা ফেলার পর দাদি আইআআইআর মুখে পৃথিবীর সবেচেয়ে সুখী মানুষের চেহারা ফুটে উঠেছিল। তিনি তার হাত আকাশের দিকে তুলে ধরেন এবং সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এক সংবাদ সম্মেলন করেন এবং সেখানে তিনি বলেন, “এটা ছিল খুবই ভাল এক লাফ” এটা “সত্যিই ছিল এক অসাধারণ ব্যাপার”, সবচেয়ে বড় বিষয়, এতে তিনি একটুও ভয় পাননি, “তার কানে কেবল এক অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল, যেটা ছিল শক্তিশালী বাতাসের অনুভূতি”। তিনি আবার আকাশ থেকে এ ধরনের লাফ দিতে চান।

ঝাঁপ দেবার জন্য প্রস্তুত। ছবি আলসিনেয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

ঝাঁপ দেবার জন্য প্রস্তুত। ছবি আলসিনেয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

এমানুয়েল কোস্টা [পর্তুগীজ ভাষায়] দাদির শতবর্ষের জীবনের উপর এক আলোক ফেলেছেন এবং তিনি জানাচ্ছেন কি ভাবে এই দাদির স্বপ্ন সত্য হল। এটা তার নাতি জোসিভাল্ডো ডস স্যান্টোসের তরফ থেকে বড়দিনের এক উপহার:

O sonho de Aida Mendes, também conhecida como “vovó Iaiá”, que nasceu em 20 de novembro de 1909 em uma fazenda no interior do município de Chaves (PA), sempre foi salta de paraquedas, mas tudo começou quando Josivaldo dos Santos, o Vavá, neto de “vovó Iaiá”, que também é paraquedista, perguntou se ela teria coragem de saltar de paraquedas.

Depois de aceitar o desafio “vovó Iaiá” passou por uma série de exames médicos antes de realizar o salto. E na presença de vários amigos e familiares, além de vários jornalistas a dona Aida Gemaque Mendes realizou a proeza. A queda livre durou 13 segundos e a navegação foi de 15 minutos.

Agora “vovó Iaiá” pode entrar para o Guinness Book (o livro dos recordes) como a mulher mais velha do mundo a saltar de paraquedas. O feito vai se avaliado para entrar nos registros do Guinness Book. Título de mulher mais velha do mundo a salta de paraquedas pertence à dona Encarnação Olivas, quando aos 82 anos fez um salto histórico no aeroporto de Marília (SP), em 1992.

আইডা মেন্ডেজ যিনি দাদি আইআআইআ নামে পরিচিত, এটা তার স্বপ্ন। এই দাদির জন্ম ২০ নভেম্বর, ১৯০৯-এ, চাভাস [পারা প্রদেশের এক এলাকা] নামক এক শহরের এক খামারে। তিনি সব সময় প্যারাসুট নিয়ে লাফ দেবার স্বপ্ন দেখেছেন, কিন্ত হঠাৎ করে তার স্বপ্ন পুরনের সম্ভবনা দেখা দেয়। এ বছর তার নাতি জোসিভাল্ডা ডস স্যান্টোস ওরফে ভাভা তাকে জিজ্ঞেস করে আকাশ থেকে লাভ দেবার তার সাহস রয়েছে কিনা। ভাভা নিজে একজন স্কাইড্রাইভার বা পেশাদার আকাশ থেকে লাভ দেওয়া ব্যক্তি।

এই প্রস্তাব গ্রহণ করার পর দাদি আইআআইআকে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এটি তাকে করতে হয় তার অনেক বন্ধু, আত্মীয় এবং সাংবাদিকদের সামনে। মিজ ( জনাবের ইংরেজী স্ত্রী লিঙ্গ) আইডা জেমাক মেন্ডেজ কৃতিত্বের সঙ্গে সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। লাফ দিয়ে উন্মুক্ত অবস্থা থাকা পর্যন্ত তার সময় লেগেছিল ১৩ সেকেন্ড এবং উপরে তিনি ভেসে বেড়িয়েছেন ১৫ মিনিট।

এখন দাদি আইআআইআর নাম গিনেস বুক অফ রেকর্ডে উঠে যাবে। তিনি হতে যাচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্কা নারী যিনি প্যারাসুট লাফ দিয়েছেন। তার এই অর্জন তাকে গিনেস বুক অফ রেকর্ডের নাম উঠানোর যোগ্য বানিয়ে দিয়েছে। এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্কা যে নারীটি প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিয়েছিল তার নাম এনকারনাকাও অলিভাস। যখন তিনি প্যারাসুট নিয়ে লাফ দেন তখন তার বয়স ছিল ৮২ বছর। তিনি ১৯৯২ সালে এয়ারপোর্ট অফ মারিলিয়া (সাও পাওলোর বিমান বন্দর) থেকে তার এই ঐতিহাসিক প্যারাসুট লাফ দেন।

তবে এই রেকর্ড দুই বছর পর ভেঙ্গে যায়। গাভিন [পতুর্গীজ ভাষায়] নোটিসিয়াস ডাকুই ব্লগের একজন পাঠক। তিনি এই ব্লগের মন্তব্য বিভাগে এক বেদনাদায়ক সংবাদ জানিয়েছেন। বাস্তবতা হচ্ছে যে ভোও আইআআইআ বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্কা টেনডেম প্যারসুট জাম্প বা প্যারাসুট লাফ দেওয়া (নারী) হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজের নাম অর্ন্তভূক্ত করতে পারছেন না, এখনো নয়। ( টেনডেম প্যারাসুট জাম্প একজনের পেছনে আরেকজন প্যারাসুট নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া)।

Por muito pouco, a Dona Iaiá não entrou no Guiness Book. O record para salto de paraquedas feminino “tandem” (junto com instrutor) é de Estrid Geertsen da Dinamarca com 100 anos e 60 dias, no dia 30 de setembro de 2004. Sendo que Dona Iaiá fez 100 anos no dia 20 de outubro, ela deixou de quebrar o recorde por poucos dias. Mas ainda assim, um feito impressionante e inspirador. Parabéns para ela!

খুব সামান্যের জন্য মিজ আইআআইআ গিনেস বুকে নিজের নাম উঠানোর যোগ্যতা হারিয়েছেন। টানডেম প্যারাসুট জাম্প বা একের পর এক প্যারাসুট লাফ দেবার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বয়স্ক যে নারীর নাম জানা যাচ্ছে তার নাম এসট্রিড গ্রিটসেন ( তিনি এক নির্দেশককে সাথে নিয়ে লাফ দেন)। এই দাদির বাড়ি ডেনমার্ক। যখন তিনি সফলতার সাথে প্যারাসুট লাফ দিয়ে মাটিতে নামেন তখন তার বয়স ছিল ১০০ বছর ৬০ দিন। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৪ সালে এই ঘটনা ঘটে। যেহেতু ২০ অক্টোবর ২০০৯ এ মিজ আইআআইআ শতবর্ষে পা রাখেন [সম্পাদকের ভাষ্য: মিজ আইআআইআর জন্মদিন আসলে নভেম্বরে], এ কারণে তিনি সামান্য কয়েকদিনের ব্যবধানে এই রেকর্ডে নিজের নাম লেখাতে পারলেন না। কিন্তু তারপরেও তিনি এক উন্নত এবং উৎসাহজনক কাজ করে দেখালেন। তাকে অভিনন্দন!
আইআ ভাভাকে আলিঙ্গন করছে। ভাভা, তার নাতি যে কিনা এই তাকে এই লাভ দেবার ব্যবস্থা করে দেয়। লাফের পরেই তিনি তার নাতিকে আলিঙ্গন করেন। ছবি আলসিনেয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

আইআ ভাভাকে আলিঙ্গন করছে। ভাভা, তার নাতি যে কিনা এই তাকে এই লাভ দেবার ব্যবস্থা করে দেয়। লাফের পরেই তিনি তার নাতিকে আলিঙ্গন করেন। ছবি আলসিনেয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

ভো আইআআইআর দেওয়া লাফ অনেক ব্লগারকে এক ধারণা দিয়েছে যে তারা বড়দিনে তাদের দাদিদের কি উপহার দেবে। যেমন এমারসন বাতিস্তা [পর্তুগীজ ভাষায়] এই ধরনের লাফ বড়দিনে তার দাদিকে উপহার হিসেবে দিতে চান। তিনি খানিকটা মজা করে ব্লগ করেছেন:

Estava pensando que presente deveria comprar para minha avó neste natal. Agora estou na dúvida entre os saltos de paraquedas ou de bang-jump. Vou pensar um pouco mais… Após o salto a vovó Iaiá agradeceu: “Obrigada meu Deus. É bom demais.” Imagino que o agradecimento não seja apenas pelo salto realizado. Vovó Iaiá tem muito a agradecer…

আমি চিন্তা করছিলাম বড়দিনে দাদির জন্য আমি কি কিনতে পারি। এখন আমি প্যারাসুট ও বাঙ্গি ( কোন খাঁড়া স্থান থেকে পায়ে রশি বেঁধে লাফ দেওয়া) লাফের মধ্যে ঝুলে আছি। আমি এই বিষয়টি নিয়ে আরেকটু ভাবতে চাই।…… লাফ দেবার পরে দাদি আইআআইআ বলেন, “ সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, এটা খুব ভালো ছিল”। আমি কল্পনা করি তার ধন্যবাদ কেবল লাফের প্রতি ছিল না, দাদি আইআআইআ প্রচুর ধন্যবাদ প্রদান করেছে…….

আইআআইআ এখন অন্য সব স্বপ্ন পুরণ করার পরিকল্পনা করছে। তিনি এখন শিখছেন কি ভাবে সাইকেল চালাতে হয় এবং এমনকি তিনি এখন মোটরসাইকেল চালানো শিখছেন। তিনি এই বয়সেও এসব কাজ করার মত শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যবান- এই বয়সে তিনি চশমা ছাড়াই সব দেখতে পান। তিনি এখনো প্রাণপ্রাচুর্য ও জীবনীশক্তিতে ভরপুর। এই লাফ দেবার আগে ফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার লম্বা জীবনে ও এই সব সাহসী কর্মের কারণ ব্যখ্যা করেন। তিনি আলটিনো মাচোদাকে বলেন [পর্তুগীজ ভাষায়]:

Trabalho. Trabalhei muito na minha mocidade. Agora, na velhice, estou jovem para tudo.

কাজ, যখন আমি তরুণী ছিলাম, সে সময় আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। এখন এই বৃদ্ধ বয়সে আমি যে কোন কাজ করার মত তরুণী অবস্থাতেই রয়ে গেছি।
১০০ বছরেও এক তরুণী। ছবি আলসিনেওয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

১০০ বছরেও এক তরুণী। ছবি আলসিনেওয়া কাভালকানটের তোলা, তার অনুমতিক্রমে প্রকাশ করা হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .