উগান্ডার প্রস্তাবিত সমকামীতা প্রতিরোধ খসড়া আইন ২০০৯ এখনো দেশটির সংসদে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু দেশটির ডেইলি মনিটর নামক সংবাদপত্র বৃহস্পতিবারের এক সংবাদে জানায়, রাষ্ট্রপতি ইয়োরি মুসেভেনি “যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করেছেন, তিনি এই বিল বা খসড়া আইনটিকে আটকে দেবেন”:
রাষ্ট্রপতি মুসেভেনি আমেরিকার সরকারকে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি পশ্চিম এন্ডোরওয়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডেভিড বাহাতির এই প্রস্তাবিত পুরুষ সমকামীতা প্রতিরোধ বিল বা খসড়া আইনটিকে তিনি আইনে পরিণত করতে বাঁধা দিবেন। তার এই বক্তব্য, তার সাম্প্রতিক অবস্থান এবং সরকারের দেওয়া বিবৃতির বিপরীত ধারণা প্রদান করে।
ব্লগার গে উগান্ডা দেশটির সরকারের বিতর্কিত অবস্থান গ্রহণের দিক সম্বন্ধে নির্দেশ করছে। সরকার পশ্চিমের কাছে এক আর উগান্ডাবাসীদের কাছে আরেক রকম বার্তা প্রদান করছে:
যে কেউ স্মরণ করতে পারে এমন এক প্রবন্ধের কথা যেখানে উগান্ডার রাষ্ট্রপতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে নিশ্চয়তা প্রদান করেছিল যে, এই বিলটি আইনে পরিণত হবে না।
হ্যাঁ, সে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে কাছে এ রকম কথা বলেছে। আর উগান্ডা সরকার উগান্ডাবাসীদের কাছে আরেক রকম বক্তব্য প্রদান করেছে।
মন্ত্রীরা বলছেন, সরকারের পুরুষ সমকামীতার বিপক্ষে অবস্থান বজায় রয়েছে, বৃহস্পতিবারে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সাম কুটেসা জানান, সরকার সমকামীতার প্রচারণা পছন্দ করে না, “ যেমন আমরা পতিতাবৃত্তি বিষয়ে কোন প্রচারণা পছন্দ করি না”।
আফ্রোগে ধারণা করছে যে, উগান্ডা সরকার বিশ্বাস করে, তারা এই বিল বা খসড়া আইন নিয়ে পার হয়ে যেতে পারবে, কারণ বিশ্বের নেতাদের মাথায় এর বাইরে আরো অনেক বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে:
১৯৯৯ সালে মুসেভেনি নিজেই পুরুষ সমকামীদের গ্রেফতার করা এবং তাদের জেলে পাঠানোর আদেশ প্রদান করেন। এই আইন পরিষ্কার ভাবে এক অসৎ উদ্দেশ্য তৈরি করা হয়েছিল [সেবার দাতাগোষ্ঠী এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, এবং মুসেভেনি দ্রুত এই গ্রেফতারের বিষয় থেকে সরে আসে]। এমইউ৭ ভেবেছিল যে বাহাতির তৈরি করা এই বিল বা খসড়া আইন এই সময়ের একটি ভিন্ন বিষয়। এখন ওবামা তালেবানদের পেছনে লেগে রয়েছেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এক খোঁড়া হাঁস এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যে চীনের মত কোন দেশ ছাড়া এমন কেউ নেই যে আফ্রিকার ঘটনাবলীকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করবে। কিন্তু সত্য ঘটনা হচ্ছে ওবামা এবং ইউরোপ উগান্ডার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেবে, কারণ অন্যদের তুলনায় উগান্ডা এক সহজ শিকার। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায় চীনের কথা। হিলারি ক্লিনটন বলেছেন যে অন্য এক দিন চীনকে ধরা হবে, কারণ তিনি চীনকে সে ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, যে ভাবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে তিনি নিয়ন্ত্রণ করে। এই ভাবেই তার মত করে সে পরোক্ষভাবে নির্দেশ করছে কর্তৃত্ব দেখানোর বেলায় উগান্ডাকে তিনি কোথায় রাখছেন।
আরেকটি পোস্টে পর্দার পেছনে কি ঘটতে পারে সেই বিষয় নিয়ে আফ্রোগে আলোচনা করছে:
কাজেই, এমনকি যদিও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই বিষয়ে এক অস্পষ্ট অবস্থান তৈরি করেছে, তারপরেও এই খসড়া আইন বা বিল নিয়ে সরকারের এক নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এটি হল এই যে এই খসড়া আইন আন্তর্জাতিক অবস্থান ও দান হিসেবে অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিপদ বয়ে আনবে। আলোড়ন এখনো শেষ হয় নি। বাহাতি যে মনোযোগ লাভ করেছেন তার ফলে সে বেশ সাহসী হয়ে উঠেছে। এবং তিনি পরিষ্কার ভাবে উন্মোচন করছেন তার এই ১৫ মিনিটের খ্যাতির বিষয়টি। কাজেই সে খুব সহজে বিষয়টি ছেড়ে দেবে না। কিন্তু তার হাতে হাত রেখে সরকার এগিয়ে যাবে। বাহাতির সংসদীয় এলাকায় একটা নতুন ক্লিনিক বা চিকিৎসালয় খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এন্ডোরওয়ার জনগণকে এটা সেটা দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে। এমনকি পুনরায় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বাহাতিকে সরাসরি অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে। মুসেভেনি উগান্ডায় যা চান, তিনি তা পান এবং আমি ধারণা করি এই খসড়া আইনকে যখন সংসদে উপস্থাপন করা হবে, তখন সেটি তার আগের ঘটনার মতই ছায়া হয়ে রইবে- যদি, আদৌ তা উপস্থাপন করা হয়।