জার্মান সংবাদপত্র ডি ভেল্ট নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একটি সাক্ষাৎকার (জার্মান ভাষায়) ছেপেছে নোবেল পুরস্কার পাওয়া হাঙ্গেরীর লেখক ইমরে কের্তেজের, যিনি এখন বার্লিনে বাস করছেন। কের্তেজ তার ৮০তম জন্মদিন পালন করলেন একই দিনে যেদিন জার্মানী বার্লিন দেয়াল পড়ার ২০তম বার্ষিকী পালন করল। সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন বুদাপেস্ট আর বার্লিন সম্পর্কে তার মনোভাব জানাতে। বুদাপেস্টের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ হাঙ্গেরীর এই লেখক উত্তর দিয়েছেন:
আমি শহুরে মানুষ, ছিলাম আর সব সময়ে থাকব। শহুরে মানুষরা বুদাপেস্টে থাকে না কারণ এই শহর পুরোপুরি বল্কানাইজ (বিচ্ছিন্ন) করা হয়েছে। শহুরে মানুষ বার্লিনে থাকে!
তার কথা বেশ কিছু হাঙ্গেরীয় ব্লগারকে বিচলিত করেছে, আর এই সাক্ষাৎকারের হাঙ্গেরীয় ভাষান্তর প্রকাশিত হওয়ার পরে বেশ জমাট আলোচনা শুরু হয়। কন্জার্ভেটিভ কল্টক বারাতি কোর ব্লগের মি. ফালাফেল তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন:
ডি ভেল্টে তিনি যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সেখানে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে প্রতিটি সম্মানিত হাঙ্গেরীবাসী তা ব্যাপারে কি ভাবেন, যে তিনি দেশ বিহীন একটা বদমাশ যার হাঙ্গেরীবাসীর সাথে কিছুই সম্পর্ক নেই। সাক্ষাৎকারের বিষয়ে, বেশ কয়েকটা সংবাদ সূত্রের অনুবাদ ভিন্ন দেখা গেছে কিছু বিষয়ে যেমন, কের্তেজের কথা অনুসারে, আরব- বিরোধীরা ১০ বছর ধরে শাসন করছেন, বা তারা কেবলমাত্র মতামতের নেতা হয়েছেন। আমি জার্মান বলি না, তাই আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না যে কোন অনুবাদকে বিশ্বাস করা উচিত। আসলে সব একই – দুটি ভাষ্যেই মূঢ়তা রয়েছে। তিনি হাঙ্গেরীতে বাস করেন না, আর তিনি আগ্রহীও না দেখার জন্য যে এখানে কি হচ্ছে।
এই প্রতিবেদন পড়ার পরে লর্ডার্ট ও হতাশ হয়েছেন। তিনি তার পোস্টে লিখেছেন:
এখন পর্যন্ত আমি কিছুটা গর্বিত ছিলাম যে হাঙ্গেরীয় বংশদ্ভূত একজন নোবেল বিজয়ী আছেন, যার কাজের মূল্য- বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এর পরে আমি এখনো জনাব কের্তেজের কাজের যে মূল্য সেটা স্বীকার করবো, কিন্তু আমি তার মনোভাবের সম্মান করবো, যেটা অনুসারে তার ব্যক্তিত্ব হাঙ্গেরী, বুদাপেস্টের সাথে সংযুক্ত করা যাবে না।
কিছু ব্লগার হাঙ্গেরীর মিডিয়া প্রকাশিত অনুবাদের তিরস্কার করেছেন কারণ কিছু বিষয় মনে হচ্ছিল বাড়িয়ে বলা হয়েছে। হারগোরিনিদিয়োক ব্লগের ভারসেগেনি এসজাকাই দুভাদ পুরো সাক্ষাৎকারটি পুনরায় অনুবাদ করেছেন আর প্রেসের বিতর্কিত ভাষান্তর সম্পর্কে তার মন্তব্য দিয়েছেন:
একেবারে সহজ আর পরিপূর্ণভাবে পুরো হাঙ্গেরীর প্রেস একটা অনুবাদ পুনরায় না দেখবার মতো অলস ছিল, প্রত্যেকটি সংবাদ রিপোর্টেই শব্দ ভিত্তিক অনুবাদ হয়েছে (এই দেশে হয়তো কেউ সঠিক জার্মান বলে না)।
শুনতে অবশ্য খুব ভাল লাগছে: ”আমাকে হাঙ্গেরীর সাথে সংযুক্ত করবেন না।“ অবশ্য এতে কেউ বিস্মিত হতে পারেন, কিন্তু সমস্যা হল, যেটা সব সময় বলতে ভুলে যাওয়া হয়, যে এটা গোঁড়ার কথা না, বরং সাহিত্যিক শিকড় নিয়ে।
না হলে, এটাকে বোঝা যায় না যে কের্তেজ বুদাপেস্ট বা বার্লিন নিয়ে কি ভাবছেন, কারণ এটা তেমন হবে যে আমি একজনকে বেছে নিলাম সে শিমের সাথে গুলাশ পছন্দ করে না বলে, এটা কেমন করে হয়, যদি আমার জন্য এটা প্রিয় খাবার হয়।
মনে হচ্ছে কের্তেজ যা কিছু করেছেন, তার প্রায়শ্চিত্ত তিনি করতে পারেন নি, কারণ তার সাক্ষাৎকারের সার সংক্ষেপের ধরন দেখে মনে হচ্ছে খারাপ অনুবাদের পরিবর্তে এটা ইচ্ছাকৃত তির্যক পরিবেশনা হয়েছে।