ইন্দোনেশিয়া: দুর্নীতির বিরুদ্ধে যারা লড়ছে তাদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার দুর্নীতি নির্মূল কমিটি (কেপিকে) এর দুইজন কমিশনার চান্দ্রা এম. হামজা আর বিবিত সামাদ রিয়ান্তোকে ক্ষমতার অপব্যবহার আর ঘুষ গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়।

কেপিকে কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের পরে, প্রেসিডেন্ট ইয়োধোইয়োনো বলেছেন যে এই গ্রেপ্তার উল্লেখযোগ্য কিছু না আর তিনি জাতীয় পুলিশ (পলরি) এর কাজে কোন হস্তক্ষেপ করবেন না।

পলিটিকানাতে ইয়োস্রো একটি প্রতিবেদন লিখেছেন যেখানে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় পুলিশের ক্রিমিনাল ডিভিশনের উপপ্রধান ইন্সপেক্টর জেনারেল দিকদিক মুলিয়ানা আরিফ মন্সুর কর্তৃক উত্থাপিত একটা অদ্ভুত তর্ক তুলে ধরা হয়েছে:

Alasan penahanan antara lain karena ancaman hukuman atas pelanggaran hukum kedua petinggi KPK nonaktif itu di atas 5 tahun selain itu, ya, klasik. Polri khawatir, Bibit dan Chandra akan melarikan diri, menghilangkan barang bukti, dan mengulangi tindak pidana yang sama, sebagaimana tercantum dalam KUHAP.

Tapi yang lebih mengejutkan, adalah alasan lainnya yaitu: Bibit dan Chandra bisa jumpa pers. “Setidak-tidaknya faktanya sekarang kami kesulitan karena sudah dihakimi dengan cerita-cerita dan tuduhan kriminalisasi. Tersangka bisa jumpa pers, itu indikasi dia bisa mempengaruhi opini,” ujar Dikdik.

তাদের গ্রেপ্তারের অন্যতম কারণ হচ্ছে যে এই দুইজন বরখাস্তকৃত কেপিকে কমিশনার ৫ বছরের বেশী জেলের মেয়াদ পেতে পারেন, আর বাকি সব অদ্ভুত – জাতীয় পুলিশ চিন্তিত ছিল যে বিবিত আর চান্দ্রা পালিয়ে যাবেন, প্রমাণ সরিয়ে ফেলবেন, আর একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করবেন।

তবে আরো বিস্ময়কর বাহানা ছিল: (তারা যদি মুক্ত হন) বিবিত আর চান্দ্রা সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন। “আমারা আসলে (জনগণের) গুজব আর দোষারোপে শিকার। এই সন্দেহভাজনরা সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন, যার মানে তারা জনগণের মতের উপরে আরও প্রভাব ফেলতে পারেন,” বলেছেন দিকদিক।

বিবিত-চান্দ্রার গ্রেপ্তারের ক্রমানুযায়ী ঘটনাবলী পেসাতনিউজ.কমে তুলে ধরা হয়েছে। এটি ধারণা দেয় যে এই দুই অকার্যকর কমিশনারকে ফাঁসানো হয়েছিল কারণ তারা একটা তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন যেখানে পলরির বড় কেউ জড়িত থাকতে পারেন।

23 JuniI 2009
KPK menyatakan Direktur PT Masaro Radiokom Anggoro Widjojo ditetapkan sebagai tersangka korupsi pengadaan alat komunikasi terpadu Departemen Kehutanan pada 2007.

30 Juni 2009
Kepala Badan Reserse Kriminal Kepolisian RI Susno Duadji, yang sedang menangani kasus Bank Century, menyatakan teleponnya disadap. Belakangan, KPK mengatakan memang sedang menyelidiki dugaan suap kepada petinggi kepolisian berinisial SD dalam kaitan dengan kasus Bank Century.

10 Juli 2009
Susno menemui Anggoro, yang jadi buron KPK, di Singapura.

২৩ জুন ২০০৯

কেপিকে ঘোষণা করেন মাসারো রেডিওকম লিমিটেড এর পরিচালক আঙ্গরো উদজোজোকে সন্দেহভাজন হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে কারণ ২০০৭ সালে বন মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সময়ে দুর্নীতিতে তার হাত ছিল।

৩০ জুন ২০০৯

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় পুলিশের ক্রিমিনাল ডিভিশনের প্রধান রুসনো দুয়াদজি, যিনি সেই সময়ে সেঞ্চুরি ব্যাঙ্কের তদন্ত করছিলেন, দাবি করেন যে তার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। পরে কেপিকে স্বীকার করেন যে তারা জাতীয় পুলিশের এক উচ্চপদস্থ (যার আধ্যাক্ষর এসডি) কর্মকর্তার ঘুষের তদন্ত করছেন, যিনি সেঞ্চুরির কেসের সাথে যুক্ত।

১০ জুলাই ২০০৯

রুসনো আঙ্গরোর সাথে সিঙ্গাপুরে দেখা করেন, যিনি ইতিমধ্যে কেপিকের সন্দেহ ভাজন।

অনেক ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তার কাছে কেপিকে শক্তিশালী একটা সংস্থা যেটা সনাতন পদ্ধতির ধারা পাল্টাতে পারে। উচ্চ আশা আছে যে কেপিকে প্রধান সমাধান হতে পারে নিয়মতান্ত্রিক দুর্নীতি নির্মূলের।

রব বায়তোন, যিনি র‌্যাব এক্সপিরিয়েন্সে ব্লগ করেন, বলেছেন যে ঘটনা যত উন্মুক্ত হচ্ছে তত প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্তটি বেশ অদ্ভুত দেখাচ্ছে:

এই তথ্য যে সুশিলো বামব্যাং ইয়োধোইয়োনো বা এসবিওয়াই, একটা সংবাদ সম্মেলন করেছেন জানাতে যে তিনি এই প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবেন না। অদ্ভুত কারণ ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়ায় তিনি নিজেকে চাপিয়ে দিয়েছেন যখন তিনি অন্তর্বর্তী কালীন আইন পাশ করেন কেপিকেতে তিনজন নতুন (যদিও সাময়িক) কমিশন নিয়োগের জন্য। তাই তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না শুনতে অদ্ভুত লাগে।

গ্রেপ্তারের কয়েক দিন আগে দুর্নীতির সন্দেহভাজনরা আর অন্যান্য অজ্ঞাত লোকের মধ্যে আড়িপাতা একটা ফোনের কথোপকথনের লিখিত ভাষ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট আর দুইজন প্রথম স্তরের কর্মকর্তার নাম আসে। ফোনের কথাবার্তায় মনে হচ্ছিল যে গ্রেপ্তারটা সাজানো হয়েছে আর কেপিকেকে বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে দুর্নীতি দমন সংস্থা হিসাবে।

বাইতোন ব্যাখ্যা করেছেন:

প্রেসিডেন্টও কষ্টে আছেন একটা ভাষ্যের জন্য যেটা তথাকথিত আড়িপাতা ফোনের কথাবার্তা যেখানে তুলে ধরা হয়েছে যে পুলিশ আর অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস ষড়যন্ত্র করেছেন চান্দ্রা আর বিবিতকে ফাঁসানোর। কেন তিনি কষ্ট পাচ্ছেন? হয়তো এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে তিনি জানেন বলে তার নাম এসেছে তাই।

যদিও প্রেসিডেন্ট বলেছেন এই প্রক্রিয়াতে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না, তিনি তারপরেও পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন এই ট্যাপ যে করেছেন তাকে খুঁজে বিচারের মুখোমুখি করার। মনে হচ্ছে যেন ঘোড়া পালিয়ে যাওয়ার পরে আস্তাবলের দরজা বন্ধ করার মতো ঘটনা। কিন্তু জনাব প্রেসিডেন্ট, এই ঘটনা পরিষ্কার করার সময় হয়েছে, তাই নয় কি?

সমাপ্তিতে বাইতোন তুলে ধরেছেন যে ইয়োধোইয়োনোর ভবিষ্যৎ কি হতে পারে:

পরিশেষে, এই দৃর্বৃত্তরা এসবিওয়াই এর সুনাম খোয়াবেন। তাকে মনে রাখা হবে সেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে যিনি দুর্নীতি বিরোধী ভালো একটা খেলা নিয়ে কথা বলেছিলেন কিন্তু কখনো ফল প্রদান করতে পারেন নি। আসলে তাকে মনে রাখা হবে ইন্দোনেশিয়াতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের খুব কম কয়েকটা সফলতার ঘটনার শেষ করাতে নেতৃত্ব দানের জন্য।

তার পরের রবিবার, কেপিকের পরিস্থিতি আর বিকল্প নিয়ে আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়োধোইয়োনো চারজন বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ করেছিলেন, একজন ইন্দোনেশিয়ার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল থেকে আর বাকীরা বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর।

জাকার্তায় থাকা একজন ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট বিশেষজ্ঞ ব্রেট ম্যাকগুয়ের ভাবছেন যে প্রেসিডেন্ট কেন এই চারজন বিশেষজ্ঞের সাথে আলাপ করলেন সাংবিধানিক আদালত বা প্রশাসনিক আদালতে পরামর্শ না করে, আর তিনি স্প্রুইকড এ ব্লগ করেছেন:

এই কথা যে প্রেসিডেন্ট তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আলাপ করেছেন এটাই অনেক কিছু বলে দেয়। এটাই দেখিয়ে দেয় এই পরিস্থিতিকে তিনি কতটা জটিল মনে করছেন।

একটা আইনগত- সাংবিধানিক কারণ থাকতে পারে যে প্রেসিডেন্ট কেন বিচার বিভাগের সাথে কথা বলেন নি (ধরে নিয়ে যে তিনি বলেন নি)।

সাংবিধানিক আদালত প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করতে সময়ের অপব্যয় করেনি তার খারাপ- পরামর্শের কাজের জন্য, বিশেষ করে অদ্ভুত পিইআরপিইউর জন্য। প্রেসিডেন্টের সংবেদনশীলতার কথা চিন্তা করে (মনে আছে তিনি বলেছিলেন যে তিনি ‘ভীষণ আহত’ হয়েছিলেন), এমন হতে পারে যে প্রেসিডেন্ট তার ব্যক্তিগত ব্যপারের বাইরে দেখতে পারেন না।

ম্যাকগুয়ের বলেছেন যে কেপিকে সেই প্রতিষ্ঠান যারা ইয়োধোইয়োনোকে দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি পদে জিততে সাহায্য করেছে। এটা তার দায়িত্ব দেখার যে এটা যেন ভেঙ্গে না পরে:

এটা থেকে আমরা কি শিখতে পারি? প্রেসিডেন্ট আর বসে থেকে ঘটনা ঘটতে দিতে পারেন না- যখন এগুলো জাতীয় গুরুত্বের, আর অবশ্যই না যখন এটা তার বিশ্বাসযোগ্যতার উপরে সরাসরি প্রভাব ফেলে। তিনি কেপিকের জন্য নির্বাচনে জিতেছেন। তিনি লজ্জাহীনভাবে তাদের সফলতার লেজ ধরে এগিয়েছেন। তাদেরকে নিরাপদে তাকে রাখতেই হবে।

তিনি যে মানুষরা তাকে নির্বাচিত করেছেন তাদের প্রতি দায়বদ্ধ।

উদ্বিগ্ন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকরা অনলাইন আর অফলাইনে কেপিকের সদস্যদের সমর্থন জানাচ্ছেন।

৪০০,৩৮০ এর বেশী ফেসবুক ব্যবহারকারী একটা দলে যোগদান করেছেন যার নাম চান্দ্রা হামজাহ আর বিবিত সামাদ রিয়ান্তোর সমর্থনে ১০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী।

টুইটার ব্যবহারকারীরা হ্যাশট্যাগ #dukungkpk (#ডুকুংকেপিকে) বা ‘সাপোর্ট কেপিকে’ ব্যবহার করছেন তাদের সমর্থন দেখানো আর মতামত জানাতে।

অফলাইনে একদল লোক কালো শার্ট প্রচারণা শুরু করেছেন। গত সোমবার, ইন্দোনেশীয়াবাসীকে উদ্বুদ্ধ করা হয় কালো ফিতা পরার জন্য যা সত্য আর বিচারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশের প্রতীকী প্রকাশ – আর যে দুইজন মানুষ জাতির দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রতিভূ তাদের মুক্তির প্রতি সমর্থন।

ইন্দোনেশিয়াতে, দুর্নীতিকে ভয়ঙ্কর একটা চক্র হিসেবে দেখা হয় যা অর্থনীতির ক্ষতি করছে আর বিচার ব্যবস্থা যেমন পুলিশ আর আদালতে মানুষের বিশ্বাসে ঘুণ ধরিয়ে দিচ্ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইন্দোনেশিয়ার ২০০৯ সালের একটা জরীপ রিপোর্ট অনুসারে, জরীপে সাড়া দেয়া বেশীরভাগ ব্যবসায়ী পলরিকে দেশের সব থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান বলেছেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .