থ্রেটেন্ড ভয়েসেস ওয়েবসাইট প্রকাশিত হয়েছে


বর্তমান সময়ের বাস্তবতা এই যে ইতিপূর্বে কখনো এত লোক ইন্টারনেটে তাদের লেখালেখির জন্যে বিপদগ্রস্ত হন নি বা জেলে যান নি।

যেহেতু বিভিন্ন কর্মী আর সাধারণ নাগরিক ইন্টারনেটকে লাগাতার ব্যবহার করেছেন তাদের মতামত প্রকাশ আর অন্যের সাথে সংযুক্ত হওয়ার, অনেক দেশের সরকার তাদের উপর নজরদারি, ফিল্টারিং, আইনগত ব্যবস্থা আর অপদস্থ করাকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। ব্লগার আর অনলাইন লেখকদের কারো কারো জন্য সব থেকে কঠোর পরিণতি হচ্ছে তাদের অনলাইন আর/বা অফলাইন কাজের জন্য রাজনৈতিকভাবে প্রণোদিত হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া। কিছু করুন ক্ষেত্রে এদের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এখন বিশ্বব্যাপী জেলে থাকা মিডিয়া কর্মীর ৪৫% অনলাইন সাংবাদিক আর ব্লগার

গ্লোবাল ভয়েসেস এডভোকেসী প্রকল্প নতুন একটা ওয়েবসাইট শুরু করছে থ্রেটেন্ড ভয়েসেস (আক্রান্ত কণ্ঠ) নামে যেখানে অনলাইনে মুক্ত ভাষ্যকে থামানোর প্রচেষ্টাগুলোকে খুঁজে বের করে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। এতে রয়েছে একটা বিশ্ব মানচিত্র আর পরস্পর কার্যকরী একটি টাইমলাইন যার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ব্লগারদের বিরুদ্ধে হুমকির ঘটনা আর তাদের গ্রেপ্তারের চিত্র বোঝা যায়। এই কেন্দ্রীয় প্লাটফর্মে বিভিন্ন নিবেদিত সংস্থা আর কর্মীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এই সব সংস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্লগার রক্ষা কমিটি, মানবাধিকার সংক্রান্ত তথ্যের আরব নেটওয়ার্ক, সীমান্ত হীন সংবাদদাতা, হিউমান রাইটস ওয়াচ, সাইবার ল ব্লগ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সাংবাদিকদের রক্ষা কমিটি এবং গ্লোবাল ভয়েসেস এডভোকেসী

কোন ব্লগার, কোথায়?

গ্রেপ্তারকৃত বা হুমকি প্রাপ্ত ব্লগার আর অনলাইন লেখকদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন বেশ কয়েকটা কারনে।

প্রথমত:, অনলাইন সেন্সরশীপ আর দমন নিয়ে যে গোপনীয়তা চলে তার ফলে সঠিক সংবাদ পাওয়া বেশী কঠিন হয়ে যায়। মিশর বা ইরানের মতো দেশে প্রতি সপ্তাহেই অনলাইন সাংবাদিক বা কর্মীর গ্রেপ্তার বা তাদের হুমকি প্রদানের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু এর পেছনে কারণ বা সত্যি ঘটনা প্রায় আবছা হয়ে থাকে।

দ্বিতীয়ত:, এখনো ‘ব্লগার’ এর সংজ্ঞা নিয়ে কিছু মতান্তর আছে। পেশাদারী সাংবাদিকরা লাগাতার অনলাইন মিডিয়া আর ব্লগের দিকে ঝুঁকছেন বেশী স্বাধীনতার খোঁজে, পুরানো সংজ্ঞার ধারণা ঝাপসা করে দিয়ে। আর চীন, তিউনিশিয়া, ভিয়েতনাম বা ইরাকের অনেক তথাকথিত সাইবার-ভিন্নমতাবলম্বীর নিজস্ব ব্লগ নেই, তারা কোন প্লাটফর্মে লেখেন। অনেক সময়ে ব্লগারদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের অফলাইন কাজের জন্য, তারা অনলাইনে কি প্রকাশ করলেন সেটা বাদ দিয়ে।

এই বিভ্রান্তি মাঝে মাঝে অনলাইনে মুক্ত কথার প্রবক্তাদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তারা দ্বিধান্বিত হয় ব্লগার আর অনলাইন কর্মীদের রক্ষার জন্য উপযুক্ত পন্থা আর কার সাথে কাজ করবে সেটা নিয়ে, কাজেই এই চেষ্টাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

আসুন এক সাথে কাজ করি:

গ্লোবাল ভয়েসেস একদল লেখক, সম্পাদক আর ভাষান্তর কারীর মিলন ক্ষেত্র, যারা আমাদেরকে সাহায্য করেন মুক্ত কথা আর মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কে তথ্য প্রকাশে। থ্রেটেন্ড ভয়েসেস ওয়েবসাইট দিয়ে আমরা চেষ্টা করছি রিপোর্টিং এর এই প্রক্রিয়াকে আরো উন্মুক্ত করার যাতে যে কোন ব্যক্তি, যার কাছে তথ্য আছে সেই এখানে সেই তথ্য প্রকাশ করতে পারবে।

আমরা আহ্বান করছি যাদের বন্ধু, আত্মীয় বা সঙ্গী অনলাইনে লেখার কারণে বিপদের মুখে পড়েছেন তারা যেন এই সাইটে তাদের প্রোফাইল তৈরি ও সাম্প্রতিক তথ্য জানায় যাতে যাদের হদিস নাই বা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের সম্পর্কে আমরা আরো সূত্র খুঁজতে পারি, যাচাই করতে পারি, আর বিভিন্ন অনলাইন প্রচারণার সাথে আপনাদের যুক্ত করতে পারি তাদেরকে মুক্ত করার জন্য।

এই প্রক্রিয়াতে, আমরা আশা করছি আরো জানতে যে কোথায়, কিভাবে আর কি পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে ব্লগারদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয় যাতে এই তথ্য আমরা সাংবাদিক, গবেষক, আর কর্মীদের সাথে ভাগ করতে পারি। আর আমাদের লক্ষ্য এমন একটা ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা যেখানে প্রত্যেকে স্বাধীন ভাবে কথা বলার অধিকার পেতে সচেষ্ট, আর যেখানে জেলে থাকা ব্লগারদের ভুলে যাওয়া হয় না।

এই তথ্য ছড়াতে সাহায্য করুন। থ্রেটেন্ড ভয়েসেস এর সংবাদটি আপনার টুইটার, ব্লগ আর ফেসবুকে ছড়িয়ে দিন!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .