সিরিয়া: যে কোন সময়ের সবচেয়ে ভালো অথবা বাজে প্রবন্ধ?

সিরিয়ার অজস্র বিলবোর্ডের মধ্যে এটি একটি যেখানে রাষ্ট্রপতি বাশার-আল-আসাদের ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। (ছবি জিলিয়ান সি ইয়র্কের সৌজন্যে)

সিরিয়ার অজস্র বিলবোর্ডের মধ্যে এটি একটি যেখানে রাষ্ট্রপতি বাশার-আল-আসাদের ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। (ছবি জিলিয়ানসিইর্য়কের সৌজন্যে)

সিরিয়ার ব্লগাররা প্রায়শই দেশটির ভ্রমণ বিষয়ক লেখার নিন্দা করে- কারণ প্রায়শই তা খুব বেশি একই রকম হয়ে দাঁড়ায়, অনেক সময় সেগুলো ডাহা মিথ্যা তথ্যে ভরে থাকে। সিরিয়া এমন একটা দেশ যা অন্য অনেক দেশের সাথে লম্বা সময় ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে, অন্তত বলা যায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে, তখন এটা বেশ হতাশা জনক যে এ ধরনের লেখা সঠিক তথ্য তুলে ধরে না। সিরিয়ার জনপ্রিয় ব্লগার সাসা সিরিয়া নিউজ ওয়াইয়ারে ব্লগ লেখেন। সম্প্রতি যখন তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধকে চিহ্নিত করেন ‘সিরিয়ার উপর লেখা এই দশকের সবচেয়ে সেরা প্রবন্ধ হিসেবে’, তখন তিনি এই বিষয়ে তার কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করেন

এই প্রবন্ধটি সত্যিকারের সিরিয়াকে তুলে ধরেছে। এটা সিরিয়ার উল্লেখযোগ্য কিছু স্থানের তালিকা প্রকাশ করেছে যা সিরিয়ার লোকেরা জানে, কিন্তু সে সমস্ত তালিকা বিদেশী সাংবাদিকরা উপেক্ষা করে যায়। তারা তাদের একঘেয়ে গল্পটিকে নিশ্চিত করার জন্য তালিকার এই সব স্থান উপেক্ষা করে যায়।

সিরিয়া এমন একটি দেশ যেখানে অনেকের ভাবনা ভিন্ন। সেখানে এটি বিস্ময়কর নয় যে, সবাই এই প্রবন্ধ সম্বন্ধে শাশার সাথে একমত হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে সিরিয়ার রাষ্ট্রদুত ইমাদ মুস্তাফা তেমন একজন (তিনি নিজেও একজন ব্লগার)। তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফির সম্পাদক বরাবর একটি চিঠি লেখেন যা সিরিয়া কমেন্ট ব্লগে পুনরায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এই প্রবন্ধটির উল্লেখ করেছেন এভাবে; প্রবন্ধটি ‘যে সিরিয়া আমি বাস করি তার সম্বন্ধে ভুল ধারণা প্রদান’ করে। যদিও সিরিয়া কমেন্টে-এ জশুয়া লিন্ডস নিজে এই প্রবন্ধের উপর কোন মন্তব্য করেনি, কিন্তু তার পোস্টের উপর প্রায় আশিটির মত মন্তব্য এসেছে এবং এই বিষয়ে একটি প্রাণবন্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ক্রিয়েটিভ সিরিয়ার মন্তব্য কারী আলেক্স। তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফির প্রবন্ধটির উপর সমালোচনামূলক মন্তব্য করেছেন:

এই প্রবন্ধে যে সমস্ত কথা লেখা হয়েছে তাতে আমার কোন সমস্যা নেই। তবে এই প্রবন্ধে যে ধারণা দেওয়া হয়েছে তার ৯০ শতাংশ নেতিবাচক মনোভাবের জন্ম দেয়….আমি মনে করি না যে আমেরিকার কোন নাগরিক এটা পাঠ করার পর সিরিয়ায় ছুটি কাটাতে আসার পরিকল্পনা বাতিল করতে দ্বিধান্বিত হবে। কোন সাহসী সিরিয়ার নাগরিক যে কিনা গণতন্ত্রের জন্য লড়ছে, সে যদি বব টোয়ামার পাশে নির্যাতিত হয় তাহলে কে বব টোয়ামায় দুপুরের খাবার খেতে আগ্রহী হবে ?

আরেকজন মন্তব্য কারী ঘাসান এই প্রবন্ধটি পছন্দ করেছেন:

এই প্রবন্ধটির অনেক বিষয় যৌক্তিক এবং সঠিক.. অ্যানজির প্রতি আমার সমর্থন রইল এবং মুক্ত সংবাদ ও বক্তব্যের উপর সমর্থন রইল, এইসব বিষয় সিরিযার এখন আর নেই।

নরমান লিন্ডার পোস্টে মন্তব্য করা হয়েছে, সঙ্গত ভাবে এখানে মন্তব্য করা হয়েছে:

এটা বেশ কৌতূহলজনক বিষয় যারা সিরিয়াকে ভালোবাসে এমন নাগরিকরা কি ভাবে এই প্রবন্ধ সম্বন্ধে একমত পোষণ করে না।

সিরিয়ার বাইরে বাস করা অন্য ব্লগারদেরও ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এই প্রবন্ধ সম্বন্ধে বেশ শক্তিশালী অনুভূতি রয়েছে। ইভান হিল যিনি গ্রুপ ব্লগ দি মজলিশের জন্য লেখেন, তিনি মনে করেন এই প্রবন্ধটি সিরিয়াকে বর্তমান সময়ের চেয়ে অতীতের দিকে নিয়ে গেছে। তিনি বর্ণনা করেছেন:

যে সিরিয়া আমরা ছেড়ে এসেছি, মনে হচ্ছে সিরিয়া সে জায়গায় আটকে রয়েছে, এটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে এমন এক এক জায়গা তৈরি করে যা প্রায় ৪০ দশক পুরোনো। সরকারের এক তুলা প্রক্রিয়াজাত কারখানার ম্যানেজারের সেখানে কাজের পরিবেশ যে খুবই বিপজ্জনক সে সম্বন্ধে কোন ধারণা নেই, যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় সে কি কোন লাভ করতে পেরেছে কিনা, দেখা যাচ্ছে তার লাভের ধারণা অনেক বিভ্রান্তিকর। এখানকার শিক্ষাবিদ ও কর্মীরা এখনো গোয়েন্দা বিভাগকে ভয় পায়, যা বর্তমান রাষ্ট্রনায়ক আসাদের পিতা অনেক বছর আগে সৃষ্টি করেছিল।

এই সমস্ত সমালোচনা পাঠ করার পর, সিরিয়া নিউজ ওয়াইয়ার পাঠকদের মূল প্রবন্ধ এবং ইমাদ মুস্তাফার প্রবন্ধ পাঠ করার জন্য অনুরোধ করছে, যাতে পাঠকেরা কোন ধারণা তৈরির আগে বিষয়টি সম্বন্ধে সঠিকভাবে জানতে পারে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .