অক্টোবর পরিণত হয়েছে ক্রেওল ভাষা উদযাপনের মাসে আর ক্রেওল ব্লগের জগৎ এদিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
ক্রেওল আসলে কি? এটা হয়তো বিশ্বব্যাপী ভাষাবিদদের মধ্যে সব থেকে বিতর্কিত বিষয়- এটি একটি খুবই জটিল আর বিস্তৃত ভাষা। অভিবাসন আর স্থানীয় জনগণের মিশ্রণের ফসল হিসেবে দাসত্বের সময় থেকে ক্রেওল হচ্ছে একটি মৌখিক ভাষা, যা হয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে বা নীচু করে দেখা হয়েছে। কিন্তু ১৯৮০র দশকে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে থাকে, যা ব্যাখ্যা করেছে ক্রেওল সম্পর্কিত রিউনিয়ন দেশের ব্লগ, রেনিওয়ান:
১৯৮১ এ যেসব বিজ্ঞানীর ভাষা ক্রেওল ছিল তারা নিজেদের প্রশ্ন করা শুরু করেন যে কোন পদ্ধতিতে ক্রেওল ভাষাকে তুলে ধরা যায়। এটা শুরু হয়েছিল ক্রেওল স্টাডিজের আন্তর্জাতিক কমিটি আয়োজিত একটি বৈজ্ঞানিক সিম্পোজিয়াম থেকে, ক্রেওল/ক্রেওলস ভাষা, চলমানতা আর ক্রেওল জগতে সৃষ্টিশীলতার বিষয় নিয়ে যা আলোকপাত করেছিল।
রেনিওয়ান আরো বর্ণনা দিয়েছেন একটা উৎসবের কথা যা বেশীরভাগ ক্রেওলসভাষী দেশে ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে:
১৯৮২ তে সিশেলেস এর সরকার ক্রেওলস সপ্তাহের আয়োজন করেন।
প্রথম আন্তর্জাতিক বাঞ্জিল ক্রেওল দিবস অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ এর ২৮শে অক্টোবরে। তারপর থেকে বিশ্বব্যাপী ২৮শে অক্টোবর সব ক্রেওল ভাষার দেশে এই উৎসব পালিত হচ্ছে।
তারপর থেকে এই কথ্য ভাষার (মাঝেমাঝে যাকে উপভাষা বলা হয়) সংরক্ষণ অনেক লোকের চিন্তার কারণ হয়েছে। ক্রেওল মানুষের আন্তর্জাতিক সংস্থা এইসব তথ্য প্রকাশ করছে। ফেসবুকের একটা দল ‘আন্নু পালে পাতোয়া’ ( ‘আসুন পাতোএস/ক্রেওল বলি’) তাদের জন্য ক্রেওল এক চিন্তার ব্যাপার – তাই জানিয়েছেন, যেখানে একজন ত্রিনিদাদিয়ান নেটিজেন এই বছরের ক্রেওল মাস উদযাপন নিয়ে চিন্তা করেছেন:
বিশ্বব্যাপী অক্টোবর ক্রেওল মাস, এটাকে ত্রিনিদাদে উদযাপন করতে আমরা কি করতে পারি?
জাতীয় ভাবে করতে গেলে সব থেকে ভালো কি হয়?
স্থানীয় ভাবে মাঠ পর্যায়ে আর একই ভাবে সরকারি ভাবেও প্রচার, সংরক্ষণ বা উদযাপন করার ব্যবস্থা নেয়া যায়। ডোমিনিকান ব্লগার লিভিং ডোমিনিকার একটা পোস্ট প্রকাশিত হয়েছে দুই বছর আগে যেখানে আমরা দেখতে পারি যে আরো কিছু দেশে এই উদযাপন কেবলমাত্র একটা অনুষ্ঠান না:
ডোমিনিকাতে এই মাস ক্রেওলের সময়, যেটা আমার খুব প্রিয় অনুষ্ঠান। এই সময় একটা উৎসব যা সকল ডোমিনিকানকে সম্মানিত করে। সবাই ফুর্তির সাথে পালন করেন স্বাধীনতা দিবস (নভেম্বর ৩) আর বিশ্ব ক্রেওল সঙ্গীত উৎসব ( অক্টোবর ২৬-২৮)।
উপরে উল্লিখিত বিশ্ব ক্রেওল সঙ্গীত উৎসব ১৩ বছর আগে জন্ম নেয় আন্তর্জাতিক ক্রেওল মাসকে নভেম্বর ৩, ১৯৭৮ সালে পাওয়া দ্বীপের স্বাধীনতা উদযাপনের সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য ডোমিনিকান সরকারের ইচ্ছার কারনে।
এইসব থেকে, এটা প্রায় স্পষ্ট যে ক্রেওল মাস আর ক্রেওল দিবস, অক্টোবর ২৮, একই ভাবে বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয় না। এখানে ২০০৯ এর ক্রেওল দিবস নিয়ে কিছু পোস্ট আছে:
লন্ডন থেকে এমবি এমবি ‘মিনম বিতেন, মিনিম বাগায়’ দল (গুয়াদেলোপিয়ান আর মারটিনিকান ক্রেওল কথা যার মানে ‘সবই এক’) একটা পোস্ট লিখেছেন মানুষকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করার জন্য যা সেপ্টেম্বর ২৭, ২০০৯ এ অনুষ্ঠিত হয়েছে আর তাদের আগের ‘এমবিএমবি ক্রেওল দিবস’ স্মরণ করার জন্য।
কানাডাতে, ক্রেওল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কেপকা মানুষকে আমন্ত্রণ করেছে মন্ট্রিয়ালে ক্রেওল মাস উদযাপনের জন্য। তারা হাইতির ক্রেওল ভাষায় একটা পোস্টে এই আহ্বান করে যার নাম ‘হাইতিয়ান ক্রেওল -ক্রেওল সংস্কৃতি এক সাথে উদযাপন করি’। মিস ক্রেওল কানাডা সুন্দরী প্রতিযোগীতা নামে আরেকটি কানাডার অনুষ্ঠান ঘোষিত হয়েছিল আর ফেসবুকে প্রচারিত হয়েছিল। ক্রেওল মাস উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো এবার ১৭ই অক্টোবর ক্রেওল সম্প্রদায়ের একজন সুন্দরীকে বাছাই করা হলো।
প্যারিসে, ব্লগার আনবা পায় মাঙ্গো লা একটা সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ঘোষণা করেছেন “তান ক্রেওল’ নামে (ক্রেওল ভাষায় ‘ক্রেওল শোনেন’) যেখানে ক্রেওলের মৌখিক ভাষাকে সম্মানের আসন দেয়া হয়েছে:
Senn-la wouvè ba tout moun : poèt, chantè, slamè, makè, kontè, mizisyen… .
গুয়াদেলুপে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মাসব্যাপী অনুষ্ঠান ঠিক করেছে যা বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হবে, (ক্রেওল অক্টোবর, ক্রেওল মোশন) উদযাপনের জন্য। গুয়েদালুপ.কোকোনিউজ অনুষ্ঠানের প্রধান দুটি জিনিষ উল্লেখ করেছেন:
1. Prèmyé dékatman ba tout moun
2. Dézyèm dékatman èvè zanfan-lékòl
২। দ্বিতীয় অংশ ছাত্রদের জন্য নির্দিষ্ট
পরিশেষে মার্টিনিক থেকে, মন্ট্রেক্রেওল একটা পোস্ট ছাপিয়েছেন যেটা সেখানে ক্রেওল মাস উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আর বিশেষ করে ক্রেওলকে এক সপ্তাহ ধরে অনুষ্ঠান করে উদযাপনের যৌক্তিকতা নিয়ে:
Es ou ka kwè ki an sel simenn pou défann kréyol adan tout lanné-a sifizan ?
CLAUDE MARLIN : Dapré mwen non, sa ja an pal pou kréyol-la menm manniè ki tout travay-la ki za fet asou lang-lan. Men fok pandan tout lanné-a, ni travay ki pou fet, fok véyatif toulong, pas menm si kréyol ka rantré latélévizion, laradio, nan piblisité kontel, bien délè sa ka an kréyol toubònman, tjòlòlò ek sa pé désèvi lang-la.
ক্লোদ মার্লিন: আমার মনে হয় না কিন্তু ক্রেওলের জন্য এটা একটা বড় ব্যাপার – এই ভাষা নিয়ে আর যা করা হয়েছে সে সবের মতই। কিন্তু সারা বৎসরব্যাপী কিছু না কিছু হওয়া উচিত আর আমাদের সব সময়ে সাবধান থাকা উচিত, কারণ টিভিতে, রেডিও বা বিজ্ঞাপনেও যখন ক্রেওল বলা হয় উদাহরণ স্বরূপ, বেশীরভাগ সময় এটা কাঁচা বা ভাঙ্গা ভাঙ্গা, যা এই ভাষার একত্রীকরণের জন্য ক্ষতিকারক।