- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

থাইল্যান্ড: সেনা অভ্যুত্থানের তিন বছর পর

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, থাইল্যান্ড, ইতিহাস, রাজনীতি, সরকার

থাইল্যান্ডের সাম্প্রতিক সেনা অভ্যুত্থান ঘটে ২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, এই ঘটনায় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনওয়াত্রাকে তার পদ থেকে অপসারিত করা হয় এবং তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়। ঘটনার তিন বছর পরও দেশটি অস্থির অবস্থায় রয়েছে।

সুরনন্দ ভেজ্জাজিবা, যিনি থাকসিনের মন্ত্রীসভার একজন সদস্য ছিলেন, এখন রাজনীতিবিদ থেকে প্রচার মাধ্যম বিশ্লেষকে পরিণত হয়েছেন। তিনি ব্যাংকক পোস্টে এক কৌতূহল জনক প্রবন্ধ লিখেছেন যার নাম: “তিন বছর ধরে রাস্তায় থাকা থাইল্যান্ড, মোড় পরিবর্তন করছে [1]”।

থাকসিনের পরিকল্পনার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি অন্য যে সমস্ত নেতা সামরিক অভ্যুত্থানকারীর দ্বারা অপসারিত হয়েছে তাদের তুলনায় ভিন্ন:

তিন বছর পরেও ক্ষমতা থেকে অপসারিত ও পলাতক থাকসিন ক্ষমতাসীনদের জন্য এক হুমকি স্বরূপ। তার যুদ্ধাংদেহি মনোভাবের একটি কারণ, থাকসিনের ক্ষমতার ভিত্তি অন্যদের মতো নয়।

তার প্রভাব কোন ক্ষমতাশালী সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে আসে নি অথবা এর সাথে সংঘর্ষের মাধ্যমে অর্জিত হয় নি, যদিও সে মোবাইল ফোন কোম্পানী ও সরকারের স্যাটেলাইট যোগাযোগ থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছে।

তার ব্যবসা আধুনিক, ব্যবসা পরিচালনা পদ্ধতি নতুন। স্টক র্মাকেটের মাধ্যমে সে যে কোন ব্যবসায়ীর চেয়ে অনেক বিশাল পরিমাণে এবং দ্রুত গতিতে প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করেছিল।

এবং থাকসিনের ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, যার মাধ্যমে সে ব্যবসা ও রাজনীতি উভয় ক্ষেত্রে এক সংগঠন গড়ে তুলে, যা তার একান্ত নিজের।

সম্পদ এবং ক্ষমতার সমন্বয়ে সে সরকারের আমলাতন্ত্রের মধ্যে এক প্রভাব বিস্তার করে বসে, এদের অনেকেই এখনো তাকে সমর্থন করে, যদিও অভ্যুত্থানের নেতারা এবং বর্তমান সরকার তার এই ব্যাপক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেবার চেষ্টা করে আসছে।

সুরনন্দ আরো দু'টি বিষয়ের কথা উদ্ধৃত করেন যেগুলো থাকসিনকে সমর্থন করার পেছনে কাজ করছে: দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় সমাজতন্ত্রের পতন এবং থাই আমলাতন্ত্র জনগণের চাহিদা বুঝতে অক্ষম ছিল।

সুরনন্দ সংক্ষেপে বলছেন, এটা থাকসিন এবং থাকসিন বিরোধী শক্তি (সামরিক বাহিনী, আমলাতন্ত্র এবং বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার) উভয়ের ক্ষেত্রে নিজেদের সমস্যা দুর করার কঠিন। যে এই সমস্য দুর করতে পারবে সে আগামী দশকে থাইল্যান্ডকে পরিচালিত করতে পারবে।

অবশ্যই থাকসিনের ত্রুটি রয়েছে, এবং এখন সে ক্ষমতা অপব্যবহারের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে যে অপব্যবহার সে করেছে। রাজনৈতিক পণ্ডিতের একমত যে যদিও সে আক্রমণাত্বক ভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে, কিন্তু তারপরেও ক্ষমতায় ফিরে আসা তার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে- তার ঘরে ফিরে আসাও- এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখতে হবে যে অসংখ্য শত্রু সে সৃষ্টি করেছে তাদের কথা।

একই সময় যে শাসকেরা তার বদলে ক্ষমতায় এসেছে, অন্তর্বতীকালীন নির্বাচন ছাড়াই আসা জেনারেল সুরায়ুদ ও বর্তমান গণতন্ত্র মনা যৌথ সরকার, উভয়ে সাধারণ নির্বাচনে থাকসিনকে হারাতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে তাদের গণতান্ত্রিক বৈধতা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে দাঁড়ায়, তারা বর্তমান অর্থনৈতিক সমস্যাকে মোকাবিলা করতে পারে নি ও তাদের সরকার চালানোও প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে দাঁড়ায়- যা বর্তমানের এক প্রতিচ্ছবি এবং এখনো নতুন পুলিশ প্রধানকে বেছে নেবার বিষয়টি ঝুলে রয়েছে।

এ বিষয়ে আরো পড়তে চাইলে, টুইটারে [2] সুরনন্দকে দেখতে পারেন।

অনেক ব্লগ রয়েছে যারা ১৯ সেপ্টেম্বরে ঘটা অভ্যুত্থান বার্ষিকীর কথা উল্লেখ করেছে। এর কিছু উদাহরণ:

নাডোও [3] একজন সিটিজেন সাংবাদিক, তিনি জেনারেল সুনথি বুনইরাটগ্লিন এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তিনি ২০০৬ সালে সংঘটিত অভ্যুত্থানের নেতা। সুনথি বলেন, ২০০৬ সালে তার পরিকল্পনা ছিল ক্ষমতা থেকে কেবল একজন মানুষকে অপসারণ করা, তার নাম থাকসিন। সে সমস্যার সৃষ্টি করছিল এবং বিশ্বাস করা হত যে তার পর দেশটি এক হয়ে থাকবে। সে সময় তার করা এই কাজটি সঠিক ছিল বলে তিনি মনে করেন এবং পরবর্তী ব্যর্থতার জন্য তিনি দেশটির আমলাতান্ত্রিক সরকারের (যাকে তিনি নিজে নিয়োগ দিয়েছিলেন) আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী বলে মনে করেন।

থাকসিন বিরোধী এক পোস্ট এসেছে: নিউজেনারেশন [4] থাকসিনের শাসনামলে যে সমস্ত সমস্যা দেখা দিয়েছিল সেগুলো তুলে ধরেছে।