যখন ঈদ উল ফিতর আসে (রমাজনের শেষ হয়) সে সময় মিশরের নারীরা আরো বেশি যৌন হয়রানির ভয়ে শংকিত হয়ে ওঠে, যা ইতোমধ্যে মিশরে এক বিরক্তিকর উপাদানে পরিণত হয়েছে।
ব্লগার এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এই সব ঘটনার সাথে লড়াই করার জন্য একত্রে যোগ দিয়েছেন, তারা আহ্বান জানিয়েছেন মজার এক ঈদ পালন করার জন্য এবং এই উৎসবে কোন হয়রানি না করার জন্য।
এ রকম হয়রানির এক ঘটনা ঘটে ২০০৬ সালের ২৫ অক্টোবরে, সে সময় মিশর প্রথম গণ যৌন হয়রানির ঘটনা প্রত্যক্ষ করে, এই ঘটনা ঘটে ঈদ উল আজহার দিনে (কোরবানির ঈদে)।
এই বিশেষ ঘটনার কথা স্যান্ডমাঙ্কি উল্লেখ করেছেন:
এই ঘটনাটি তাদের জন্য আবার তুলে দেওযা হল, যারা এই ঘটনার কথা শোনেননি: সেদিন ছিল ঈদের প্রথম দিন, এবং উপশহরের এক সিনেমা হলে এক নতুন চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল। সিনেমা হলে ঢোকার আশায় একদল উন্মত্ত পুরুষ সেখানে জড়ো হয়, কিন্তু হলের সব টিকেট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল, ওইসব উন্মাদরা ঠিক করে যে তার এই হলটির উপর হামলা চালাবে। এই সিদ্ধান্ত নেবার পর তারা যা ঘটালো তাকে নিছকই যৌন উন্মাদনা বলা উচিত। হলে প্রবেশ করার সময় সামনে যে মেয়ে পড়েছে এই সব বদমাইশরা তাদের জোর করে জড়িয়ে ধরে, তা নেকাবধারী বা হেজবাধারী হোক কিংবা এ ধরনের পোশকধারী না হোক, সবাইকে তারা হয়রানি শিকার বানানোর চেষ্টা করে। এই ঘটনায় তারা মিশরীয় কিংবা বিদেশী কাউকে বাদ দেয়নি, এমনকি গর্ভবতী নারীদেরও তারা হয়রানি করতে ছাড়ে নি। তারা মেয়েদের জড়িয়ে ধরে, পিষতে থাকে এবং তাদের কাপড় খোলার উদ্যোগ নেয় এবং ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এ সকল কাণ্ড ঘটে পুলিশের ঠিক সামনেই। কোন কিছু করার বদলে তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিল। উপশহরের কিছু ভালো মানুষ সেদিন মেয়েদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। দোকান মালিকরা সেদিন তাদের দোকান খুলে মেয়েদের দোকানে প্রবেশ করতে সাহায্য করে এবং তারপর দোকানে তালা মেরে দেয়, কারণ ওইসব উন্মত্ত জনতা দোকানে প্রবেশের চেষ্টা করে। ট্যাক্সি ড্রাইভার তাদের গাড়িতে মেয়েদের নিয়ে নেয়, সে সময় এই সমস্ত লোকেরা ট্যাক্সির জানালার কাচ ভেঙ্গে মেয়েদের টেনে বের করার চেষ্টা করে। মেয়েদের যৌন অপমান করার জন্য সুনির্দিষ্ট ভাবে বিপজ্জনক এক বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করা হয় । এই ঘটনা চলেছিল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে, সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট থেকে প্রায় রাত ১২.৩০ মিনিট পর্যন্ত। এ ঘটনার কথা স্মরণ করলে এখনও আমার পেট মোচড় দিয়ে ওঠে।
এরপর থেকে মিশরে যৌন হয়রানি যেন ঈদ উল ফিতর এবং ঈদ-উল আজহার একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্লগার মোহাম্মদ হামদি ফেসবুক গ্রুপ বা দল তৈরি করেছেন এবং অনলাইনে এক প্রচারণা শুরু করেছেন যার নাম তিনি দিয়েছেন, “মজায় পরিপূর্ণ ও হয়রানি মুক্ত উৎসব চাই”:
شباب مصر اللى بجد عارف إن رب رمضان هو رب باقى الشهور , بالتالى عيب جدا شبابنا يكون بيصلى التراويح ويقيم الليل لحد أخر يوم فى رمضان , ومن أول يوم فى العيد نلاقى الشباب بيتحرشوا بالبنات والسيدات فى الشوارع . الجروب ده معمول علشان نقول إننا هنعيد وهنفرفش .. بس مش هنتحرش
وأتمنى كلنا نشارك فى إثراء الحوار هناك , ونعمل دعوه لكل أصحابنا على الفيس بوك عشان الفكره توصل لاكبر عدد من الناس .. يمكن نساهم فى عودة الأمن للشارع المصرى من جديد.
ইতোমধ্যে এই প্রচারণা মিশরীয় ব্লগস্ফেয়ারে শুরু হয়েছে এবং নিম্নের সকল ব্লগে এই নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে: সায়মা এল গামাল, মাহদি মুবারাক, মেশহমেশহিইয়া, ইগো, মাহা, ওমেন, কাসমা আবদেল আলাল এবং রেডিও হোরিতানা।
ব্লগার আহমেদ এল সাব্বাহ যে মিশরকে জানেন তার জন্য বেদনা প্রকাশ করেছেন, তিনি বলেছেন:
رياضة التحرش فى مصر.. جزأ لا يتجزأ من الواقع الماسخ المُمسّخ الباهت الضائع التائه العجيب المؤسف الذى تحياه مصر فى تلك الفترة السوداء من عمر الزمان. أصدقائى الأعزاء.. أعلم أن المتحرشين لا يقرأوون غالباً ما أكتب، وربما لا يدخلون على الإنترنت أساساً إلا للتحرش الإلكترونى، ولهذا حديث أخر، وأظن – وليس كل الظن إثم – أن قراء هذه السطور لا يتحرشون، لهذا – ولهذا فقط – لن ألبس ثوب الحكمة وأدلوا بالنصائح، لكننى سأتمنى لكم:
عيد بدون تحرش
মিশরীয়রা এখনো মিশরের যৌন হয়রানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করছে, যখন রয়টার্স এখানকার যৌন হয়রানি উপর এক তথ্য প্রকাশ করেছে, এতে জানা যাচ্ছে যে, মিশরীয় পুরুষদের দুই-তৃতীয়াংশ মেয়েদের হয়রানি করে। এ ছাড়া হয়রানির শিকার মিশরীয় ব্লগার এসার ইয়াসের এপ্রিলের ১৮ তারিখকে হয়রানি প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন।