ইরাক: শিয়া নেতা আবদুল আজিজ আল হাকিমের মৃত্যু

সাইয়েদ আব্দুল আজিজ আল হাকিম ইরাকের সুপ্রীম কাউন্সিলের সর্বোচ্চ নেতা (ইরাকী সংসদের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল)। তিনি গত ২৬শে আগস্ট ইরানের তেহরানে ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে ইরাকের রাজনীতিতে তার মৃত্যু এক উত্তেজনা ছড়াবে। এই অঞ্চলের ব্লগাররা তার মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বাহরাইনের বাতুল ইব্রাহিম আহমেদ বিপর্যস্ত:

صدمة اليوم ..
وفـاتـه ..
يا رب ..
خفف ألمَ هذا المصاب ..
আজকে এক আঘাত তৈরি হল
তার মৃত্যু
হে ঈশ্বর
এই দুর্ভাগা ব্যক্তিটির আত্মা যেন শান্তি পায়…..

বাগদাদে ফারিস আল আজরিশি লিখেছেন:

بمزيد من الأسى والحزن تلقينا نبأ رحيل بطل من أبطال العراق والأمة الإسلامية، حجة الإسلام والمسلمين سماحة السيد عبد العزيز الحكيم طيب الله ثراه، رجل كرس حياته للعلم والجهاد فأصابهما معاً
ইরাক ও মুসলিম জাতির এক অন্যতম নেতার মৃত্যুর খবর পাওয়ার মাধ্যমে আমরা আরো ব্যথা ও দু:খ লাভ করলাম, ইসলাম ও মুসলিম জাতির প্রমাণ [গৌরব জনক পদ], সম্মানিত সাইয়েদ আব্দুল আজিজ আল হাকিম, ঈশ্বর তার পরকালের উপর শান্তি বর্ষিত করুক। তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি তার জীবন জ্ঞান ও জিহাদের প্রতি উৎসর্গ করেছিলেন এবং উভয় কাজে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।

ইরাক এবং গাল্ফ এনালাইসিস ব্লগে রেইডার ভিসের লিখেছেন:

অন্য যে কোন কিছুর চেয়ে তার রাজনৈতিক জীবনে হাকিম বিশৃঙ্খলা, বৈপরীত্য এবং সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তির এক প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। তার এই চরিত্র তৈরি হয় ২০০৩ সালের পরবর্তী সময়ের পর। জীবনের শুরুতেই তিনি ধর্মীয় পড়াশুনা বাদ দেন। ১৯৮০ এর দশকে হাকিম এক সামরিক-রাজনৈতিক দল পরিচালনা কারীতে পরিণত হন, যেই দলের নাম সুপ্রীম কাউন্সিল অফ দা ইসলামিক রেভুল্যশন ইন ইরাক (এসসিআইআরসি), এই দলটি তৈরি করেছিলেন ইরানের ধর্মীয় নেতা খোমেনী। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইরাকের বিরোধী দলের ক্ষমতায় আগমন। এই সময় ইরান -ইরাক যুদ্ধ চলছিল। ২০০৩ সালে ইরাকে যুদ্ধ শুরু হলে, তিনি ইরান থেকে ইরাকে ফিরে আসেন। ২০০৩ সালে ইরাকের নাজাফে এক সন্ত্রাসী আক্রমণে তার ভাই বাকির আল হাকিম মারা যায়। এরপর তিনি এসসিআইআরসি দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং দলটির হাল ধরেন […] হাকিম ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার জন্য ইরানকে বেছে নেন এবং যুক্তরাষ্ট্র তার গতিবিধি ও সত্যিকারের বিশ্বস্ততা কার প্রতি তা বের করতে ব্যর্থ হয়। ২০০৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত, হাকিম ও এসসিআইআরসি ও বদর বিগ্রেডের সদস্যরা কোন বাধা নিষেধ ছাড়াই ইরানে যাওয়া আসা করতে পেরেছে। ইরানের ভূখণ্ডে নতুন ইরাকী আইএনএর [ইরাকী ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স বা ইরাকী জাতীয় জোট] গঠন করা হয়েছে। এটা বিশ্বাস করা কঠিন তেহরানের প্রশাসকরা নিজেদের জন্য ঠিক মনে না হলে এইসব কর্মকাণ্ড তাদের সীমান্তের মধ্যে করতে দিত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হাকিম এমন এক নীতি বজায় রেখেছেন যা ইরানের পক্ষে বলে মনে হয়েছে। তবে লম্বা সময় ধরে ওয়াশিংটন এক আশানুরূপ আকাঙ্খায় বিশ্বাসী ছিল, যার মধ্যে দিয়ে তাদের মনে হয়েছে আইএসসিআই দিয়ে তাদের সম্ভাব্য লক্ষ্য পুরণ করা যাবে। এটা নীতির ক্ষেত্রে এক বিপরীতমুখী ভাবনা, যা আব্দুল-আজিজ আল-হাকিমের জন্য এক অদ্ভুত রাজনৈতিক দর্শন তৈরির সুযোগ করে দেয়।

মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের রাষ্ট্রপতি জর্জ ডাব্লিউ বুশ, সাইয়্যেদ আবদুল অজিজ আল হাকিমকে ২০০৬ সালের ৪ ডিসেম্বর, সোমবার স্বাগতম জানান। (ছবি হোয়াইট হাউসের, উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে)।

মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের রাষ্ট্রপতি জর্জ ডাব্লিউ বুশ, সাইয়্যেদ আব্দুল অজিজ আল হাকিমকে ২০০৬ সালের ৪ ডিসেম্বর, সোমবার স্বাগতম জানান। (ছবি হোয়াইট হাউসের, উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে)।

প্যালেস্টাইনী পণ্ডিত এর টনি সায়েগহ যে ভাবে সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ নিজে আল হাকিমের প্রশংসা করেছেন তাতে অসন্তুষ্ট।

কি ভাবে নিজেকে নিচে নামালেন! এই প্রথম আমি খোলাখুলি ভাবে বলছি, আমি হাসান নাসরুল্লাহর কাজে হতাশ। তিনি তার মুখ বন্ধ রাখতে পারতেন অথবা এই বার্তাটি ব্যক্তিগত ভাবে রাখতে পারতেন। ইরান/আমেরিকার হাতের পুতুলকে ( এবং তার আগে তার ভাই) একজন ইরাকী “বীর” হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া অনেক বাড়াবাড়ি বলে মনে হয়।

তার উপর এক ও স্বাধীন ইরাকের জন্য তার সংগ্রামের কথা বলা! যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারদের বুটের নিচে, তাই কি সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ? আক্ষরিক অর্থে আমেরিকান ট্যাংকে চড়ে বাগদাদে প্রবেশ করা সে এক ভাঁড়!

আপনার লজ্জা পাওয়া উচিত সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ। কিন্তু তারপরেও, এ সব তেহরানের আদেশ; ব্যাপারটা আমি বোঝার চেষ্টা করছি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .