আলজেরিয়া: চীনের সাথে ঝগড়ার পরে আগের মতোই ব্যবসা

আলজেরিয়াতে চীনা অভিবাসীদের আগমন ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে অভিবাসী আর স্থানীয়দের মধ্যে আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে এক বিবাদ হয়েছিল। প্রায় ১০০ জন অভিবাসী আর স্থানীয়রা সংঘর্ষে লিপ্ত হন লাঠি আর ছুরি নিয়ে, আর এর ফলে বিতর্ক শুরু হয় যে এই ঘটনা উত্তর আফ্রিকার এই দেশে চীনা বিনিয়োগের উপরে প্রভাব ফেলবে কিনা। ব্লগাররা এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছেন।

টকিং আন্ডার দ্যা র‌্যান্ডম ড্রিবেল লিখেছে “আলজেরিয়া বাসী চীনের কাছ থেকে চাহিদার থেকে বেশী পান” শিরোনামে:

আলজেরিয়াতে স্থানীয় আর চীনাদের মধ্যে মারামারি লেগে গেছে…আলজেরিয়া বাসী অভিযোগ করেছেন যে এই নতুন লোকেরা মদ্য পান করে আর ইসলামকে সম্মান করে না (“তাই তাদের চলে যেতে হবে“)।…

দ্যা মুর নেক্সট ডোর ব্লগের আলজেরিয়ান আমেরিকান কাল এটাকে চায়নাটাউনের শো ডাউন বলেছেন। ব্লগার এই দুই দেশের ইতিহাস আর তাদের ভালো সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেছেন:

আলজেরিয়া আর চীনের সম্পর্ক বেশ ভালো। এটা বলা যে ‘আলজেরিয়া আর চীন’ তার মানে হল গণতান্ত্রিক আর জনপ্রিয় প্রজাতন্ত্র আলজেরিয়া আর গণ প্রজাতন্ত্র চীন দীর্ঘমেয়াদী আর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখেন। চীন প্রথম দেশ ছিল যে স্বাধীন আলজেরিয়া কে স্বীকৃতি দিয়েছিল। আলজেরিয়ার বেশ কয়েকজন সামরিক অফিসার, ইঞ্জিনিয়ার আর অন্যান্যরা চীনদেশে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। চীনের টেলিভিশন এক সময়ে আলজেরিয়ার ‘জনগণের সংগ্রাম’ নিয়ে অনুষ্ঠান প্রচার করত। ১৯৬০ আর ১৯৭০ এর দশকে আলজেরিয়ার কমিউনিস্টরা অনেক মাওবাদীদের তাদের র‌্যাঙ্কের মধ্যে গণ্য করতেন, আর আলজিয়ার্সে চীনা দূতাবাস ঐতিহাসিক ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন আলজেরিয়া বাসী যে তার জাতীয় সার্ভিস (বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ) করেছেন সে একটা চীনা রাইফেল হাতে ধরেছে এবং একটা সেনাবাহিনীতে কাজ করেছে যেটা পিপলস লিবারেশন আর্মির আদলে তৈরি।

কাল এর পরে দ্রুত সমসাময়িক সময় নিয়ে আলোকপাত করেছেন আর সম্পর্কের নতুন এক যুগের ব্যাখ্যা দিয়েছেন:

আলজেরিয়া বাসী খুব ভালোভাবে নিতে পারে নি যে বিশাল সংখ্যক চীনা নাগরিক গত দশকে সেখানে এসেছে, বেশীরভাগ বাড়ি নির্মাণ আর পরিকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে যার প্রতিশ্রুতি প্রেসিডেন্ট বুতেফ্লিকা দিয়েছিলেন আলজেরিয়বাসীকে ১৯৯৯, ২০০৪ আর ২০০৯ সালে। আলজেরিয়া বাসীরা এইসব কাজ নিজেরা চায়। কিন্তু এগুলো চীনা ফার্মের কাছে চীনাদের নিজস্ব শর্তেই গিয়েছে।

তিনি আরো বলেছেন:

তাহলে চীন- আলজেরিয়ার সম্পর্কের বর্তমান এই ব্যাপারটা গ্রহ রাজনীতির ফল; অন্য কথায়, যেসব বিষয় এই দুই সরকার খেয়াল করেন নি একে অপরের সাথে সম্পর্ক রক্ষায়। কিন্তু এখন আলজেরিয়ার বিদ্রোহীরা চীনের পছন্দের জায়গায় হাত দিচ্ছে একটা চীনা বিদ্রোহের উপরে ভিত্তি করে; আর সাধারণ আলজেরিয়া বাসীরা চীনাদেরকে মারছে, যা এই দুই দেশের সম্প্রীতি আর দীর্ঘ সম্পর্কে ছেদ এনেছে।

আর এই ‘ঝগড়া ‘ কিভাবে চীন-আলজেরিয়ার সম্পর্কের উপরে প্রভাব ফেলবে? দ্যা মুর নেক্সট ডোর আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে আলজেরিয়ায় সব কিছু আগের মতই আছে:

উত্তর আফ্রিকায় ‘আলজেরিয়াতে দাঙ্গা ছড়াচ্ছে’ এরকম একটি একটা শিরোনাম মানে হচ্ছে ‘কুকুর মানুষকে কামড়িয়েছে’ এর সমতুল্য। এটা মনে রাখা উচিত যে বাব এজ্জাউরের সেই সংঘর্ষের আগের দিন তিউনিশিয়ার বর্ডারে এল তার্ফে তরুণদের মধ্যে রায়ট হয়েছিল, আর ঘারদাই এর ঠিক উত্তরে এক বছরের কিছু বেশি সময়ের লাগাতার এই ধরনের সংঘর্ষ চলেছিল ইবাদাইত বার্বার্স আর আরবী ভাষী বেররিয়ানদের মধ্যে। এটার মধ্যে তো বলাই হচ্ছে না আলজেরিয়ার ভিতরে অন্যান্য স্থানে গাড়ি আর টায়ার নিয়ে কত ঝগড়া হয়। এটাই বুতেফ্লিকার আলজেরিয়ার গঠন, আর এটা তার প্রতিষ্ঠিত সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ব্যর্থতা, যেটা আলজেরিয়ার সমাজের মূল সমস্যা ঠিক করতে ব্যর্থ কার্যকর ভাবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .