পুলসো সোশাল [2]-এর বেনজামিন বিউইক [3] আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে লিখেছেন ইন্ডিগোগো [4] নামের এক ওয়েবসাইট সম্পর্কে, যেখানে স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা তাদের ছবির জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে ও প্রচারণা চালাতে পারে। তার এই পোস্টে [2] তিনি আমাদের তিনটি ল্যাটিন আমেরিকার চলচ্চিত্রের উদাহরণ তুলে ধরেন, যারা এই সাইটের মাধ্যমে সুবিধা লাভ করেছে।
ডোমিনিকান রিপাবলিক থেকে “পেলোটেরো [5]”, মেক্সিকোর “চেঞ্জেস লাইভস [6]” এবং বলিভিয়ার “ডিজিটাল আইমারা [7]” সেই সমস্ত চলচ্চিত্র, যেগুলো এই স্বাধীন চলচ্চিত্রকারদের জন্য তৈরি করা ওয়েবসাইট থেকে সুবিধা লাভ করেছে। ইন্ডিগোগো [4] আমেরিকার চলচ্চিত্র বিনিয়োগকারী ও সমর্থকদের আকর্ষণ করার জন্য বানানো হয়েছে। যখন চলচ্চিত্র প্রি- প্রোডাকশন বা কাগজে কলমে, ভাবনায় তৈরি হতে থাকে তখন এই সাইট সাহায্যের হাত বাড়ায়।
কি ভাবে এই সমস্ত স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতারা ইন্ডিগোগোকে ঠিকভাবে ব্যবহার করে? উদাহরণ হিসেবে বলা যায় পেলোটেরো [5]তাদের প্রোফাইল পাতায় তথ্যচিত্রের কিছু সংক্ষিপ্ত অংশ তুলে দেয়। তাদের কাছে অনেকগুলো ঠিকানা রয়েছে, যেখানে ছবির প্রচারণা চালানো সম্ভব, বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে, যেমন ফেসবুক অথবা নিছক ছবির অংশ বিশেষ কোন বন্ধুর কাছে ইমেইল করা, অথবা নিজের ওয়েব পাতায় এ রকম কোন ঠিকানা যোগ করা। একরকম একটি দল রয়েছে, যারা বলে দেবে এই ছবির জন্য কি করা প্রয়োজন: পেলোটেরোর ক্ষেত্রে বলা যায়, তারা ইতোমধ্যে ২০০০ ডলার পর্যন্ত তহবিল সংগ্রহ করতে পেরেছে এবং পোস্ট প্রোডাকশন, এডিটিং বা সম্পাদনা, সঙ্গীত পরিচালনা ইত্যাদির জন্য ১০০০০ ডলার প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে। তাদের পাতায় একটা বিশেষ ট্যাব বা চাবি রয়েছে, যেখানে তাদের এই ছবির নির্মাণের ব্যাপারে সব সময় ঘোষণা আসছে এবং তাদের নিজস্ব সাইটে [8] ও ফেসবুকের [9]পাতায় প্রবেশের বিশেষ লিঙ্ক রয়েছে।
এখানে তাদের ছবির কিছু সারাংশ:
ভিমেও [10] থেকে রোজ ফিনকেলের [11] ছবি দি মেক্কা অফ বেসবল [12]
ইন্ডিগোগোতে আপনি দেশ, শহর, তারিখ, রেটিং (মান) কত টাকা দরকার বা ফান্ডিং এর লক্ষ্য ধরে প্রকল্প খুঁজতে পারেন এবং তার সাথে কাজের ক্ষেত্রে কত শতাংশ তহবিল সংগ্রহ হল তাও জানতে পারবেন। এছাড়া সারা পৃথিবীতে আর কি এমন উদ্যোগ হচ্ছে?
ইন্দোনেশিয়া [13]থেকে তুলে ধরছি জালানান [13] নামে একটি তথ্যচিত্রকে। এটি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো তিনজন সঙ্গীতশিল্পীর জীবন নিয়ে তৈরি। এই তথ্যচিত্রের শিল্পীরা জাকার্তার বাসে বাসে গান গেয়ে বেড়ায়। ছবিটি ইতোমধ্যে আইটিভিএস থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের বিশেষ অনুদান পেয়েছে [14]। তাদের এই ছবি শেষ করার জন্য এখন নগদ টাকা দরকার।
জালনান (রাস্তার পার্শ্বে) বনি, হো এবং তিতির আকর্ষণীয় গল্প – বাসে বাসে গান গাওয়া এই ত্রয়ী খুবই গুণী এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন – এবং তাদের সাথে একটা ব্যাপক অজানা সমসাময়িক ইন্দোনেশিয়ার গল্প উঠে এসেছে। জালানান ঘনিষ্ঠভাবে এই তরুণ গায়কদের জীবন ছবি তুলে ধরেছে এবং কৌশলী বা জটিল উপ- সংস্কৃতির কথা, একই সাথে তা ইন্দোনেশিয়ার উন্মত্ত রাজধানী শহরকে নিয়ে এসেছে, একই সারিতে, রসিকতাপূর্ণ এবং নিষ্ঠুর রকমের সৎ। জালানান তিনজন গায়ককে এক সাথে তুলে আনে, যারা সামাজিক উৎকণ্ঠা নিয়ে শহর পরিভ্রমণ করা বাসে গান গেয়ে বেড়ায়, রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক করে, তারা তাদের গর্তের মতো ঘর ছেড়ে পালিয়ে আসে, যখন এক মৌসুমী বন্যায় ঘর ডুবে যায় এবং অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এটি তাদের বাড়ি পূর্ব জাভার গ্রাম পর্যন্ত অনুসরণ করে এবং এই নতুন শহরে তাদের বৈধতা, পরিচয় ও ভালবাসার এক দারুন পরিপ্রেক্ষিত সৃষ্টি করে।
এছাড়াও রয়েছে ফ্রন্টরানার [15], একটি তথ্যচিত্র, একজন মহিলা সমন্ধে যিনি আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হতে চান।
ফ্রন্টরানার এক উত্তেজনাপূর্ণ যাত্রা ইতিহাসের এক মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে। এটি এক মহিলার ইচ্ছা প্রকাশ, আফগানিস্তানের মতো দেশে প্রথম গণতান্ত্রিক ভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার ইচ্ছা। সংঘাত পূর্ণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ গতিতে সব চিনে নিতে হয়, সেখানে চলচ্চিত্রকার ভার্জিনিয়া উইলিয়ামস একটি পরিষ্কার ছবি আঁকাতে চান ডা: মাসোদা জালালের। ডা: জালাল একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ও তিন সন্তানের জননী, যিনি পাহাড় সমান সমস্যাকে মোকাবিলা করেন, স্থির হয়ে থাকা মুসলিম সমাজকে নেতৃত্ব দিতে চান।
নীচে, এই ছবির আট মিনিটের একটা সার সংক্ষেপ রয়েছে, যা চেষ্টা করছে ৫০০০ ডলারের এক তহবিল সংগ্রহের। এই পরিমাণ টাকা এই চলচ্চিত্রের বিতরণ ও প্রচারণার জন্য ব্যয় করা হবে। একই সাথে এই চলচ্চিত্রের সাবটাইটেল বা কথাকে স্থানীয় ভাষায় রূপান্তরিত করা হবে এবং তা ভ্রাম্যমাণ সিনেমার মাধ্যমে আফগানিস্তান ও অন্য উন্নয়নশীল বিশ্বে দেখানোর জন্য দেওয়া হবে।
ইন্ডিগোগোর [4] কাজ কি ও কি ভাবে এখানে [16] অংশ নিতে হবে জানতে চাইলে এ সম্বন্ধে আরো পড়ুন। যার চলচ্চিত্র বানায় তাদের জন্য অনেক সম্পদ জোগাড় করে দেয়, তাদের ব্লগে, যখন তারা তাদের চলচ্চিত্রে নির্মাণাধীন অংশের কাজ করে, উপাদান এবং কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এবং এমনকি একটি মাসিক সংস্করণ [17]রয়েছে, যার প্রতিষ্ঠাতা রবার্টা মারিয়ে মুনরো [18], এতে জানা যায় যে কি ভাবে শর্ট ফ্লিম তাজা রাখা যায়। যার মধ্যে এক আনন্দচ্ছোল [19]উদাহরণ রয়েছে, যে বেশীর ভাগ দৃশ্য যদি জরাজীর্ণ [20] হয়ে যায় তা হলে আপনি তা আপনার ছবিতে যুক্ত করতে চাইবেন না, যদি আপনি তার থেকে বেরিয়ে আসতে চান (এক ভালো উপায়ে)।