সোয়াইন ফ্লু অথবা এইচওয়ানএনওয়ান এখনো সারা আরব বিশ্বে সংবাদ শিরোনাম হয়ে আছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন এখানে এই রোগে আক্রান্ত নতুন রোগী আবিস্কার করছেন এবং সংবাদপত্র তা ঘোষনা দিচ্ছে।
বহারাইনের সিলি বাহরাইনি র্গাল (যা আমি) বাসায় ফিরে এসেছে এবং তার দেশের বিমান বন্দরে যা সে দেখেছে, তাতে সে বিস্মিত।
বাস্তবতা হচ্ছে এই এলাকায় উন্মাদনা তৈরী হয়ে আছে যা আপনাকে আঘাত করবে এবং দ্বিতীয়বার একই ঘটনা ঘটবে যখন আপনি বাহরাইনের মাটিতে অবতরন করবেন এবং আবিস্কার করবেন বিমান বন্দরে যত কর্মী রয়েছে তাদের সবার মুখ চিৎকিসা কাজে ব্যবহারের জন্য যে মুখোশ থাকে তা দিয়ে ঢাকা রয়েছে। বিমান বন্দরে যারা তদারক করে তারা, অভিবাসী সংক্রান্ত কর্মকর্তা থেকে শুল্ক বিভাগের কর্মচারী পর্যন্ত সবার মুখ এই মুখোশ বা মাস্ক। আমি তাদের বললাম,“তোমাদের সমস্যা কোথায়? বাহারাইনে কি প্লেগ ছড়িয়ে পড়েছে?” আমি প্রশ্ন চালিয়ে গেলাম[…]। পরিস্থিতি উত্তপ্ত মনে হচ্ছে এবং সোয়াইন ফ্লু নিয়ে পাগলামী চুড়ান্ত পর্যায়ে উঠেছে। আমি সব জায়গা পার হয়ে এসেছি। আমি যে সমস্ত এলাকায় শুকর নিয়ে উন্মাদনা ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর সেই সব প্রান্ত ভ্রমণ করে এসেছি। সানফ্রান্সিসকো, শিকাগো, টরেন্টো এবং হিথ্রো বিমান বন্দরের কোথাও কাউকেও আমি মুখোশ বা মাস্ক পড়তে দেখিনি, যেখান দিয়ে আমি এসেছি গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে?
সোহাইল আলি গোসাইবি এখনো বাহারাইনের বাতাসে এক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। তিনি ধারনা করছেন সোয়াইন ফ্লু নিয়ে বাড়াবাড়ি করার ফলে প্রচারমাধ্যম, বিজ্ঞাপন বিভাগ এবং ওষুধ কোম্পানীগুলোর সুবিধা হবে। সৌদি এই ব্লগার লেখেন:
প্রচারণা মাধ্যম এই বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। মনে রাখবেন তারা ভয় বিক্রি করছে। সংবাদপত্র এবং সংবাদ প্রদানকারী টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনের জন্য জায়গা ও প্রচার সময় বা এয়ার টাইম তৈরী করতে হবে, যাতে তারা আরো বেশী টাকা আয় করা যায়। আরো ধাক্কা খাওয়ার মতো ও ভয় পাওয়ার মতো গল্প তৈরি করতে হবে। এইসব ভয়ের যতই পাঠক এবং দর্শক তৈরী হবে, ততই তাদের বিজ্ঞাপন বাড়বে, ততই এদের লাভ বেশী হবে।
আল গোসাইবি তার পড়া এক প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছেন এবং উপসংহার টানছেন:
প্রবন্ধ অনুসারে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সরকার টামিফ্লুইফ্লু (জ্বর, বিশেষ করে সোয়াইন ফ্লুর প্রতিষেধক)স্টক তৈরী করার জন্য বিলিয়ন ডলার খরচ করছে যা তারা সামনের কয়েক মাসে ব্যবহার করবে অথবা সেগুলোর ব্যবহারের তারিখ পার হয়ে যাবে। বিষয়টি কৌতুহলজনক নয় কি?
যদি তত্ত্বের কথা বলা হয়, তাহলে জর্ডান রিফরমার ওয়াচ তার হাতায় কিছু রেখেছেন এবং লিখেছেন:
অহাহা..। সোয়াইন ফ্লু সকল ষড়যন্ত্রের ত্বত্ত নিয়ে এসেছে.. জর্দানের এক বিজ্ঞানী যিনি জীবাণু বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, তিনি দাবী করেছেন মক্কা এবং মদিনা, যে কোন ভাবেই হোক এই রোগের প্রার্দুভাব থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে হজের সময় এই রোগের প্রদুর্ভাব নিয়ে কথা বলার কোন প্রয়োজন নেই। হজের সময় লক্ষ লক্ষ লোক খুবই কাছাকাছি থাকে, যার ফলে দ্রুত এ রোগ ছাড়ানোর একটা ভয় থাকে।
শুকরদের হত্যা কর.। হজে যাও। কোন রোগ হবে না।
মিশরেরর ব্লগার জিনোবিয়া । তিনি ইজিপশিয়ান ক্রনিকলে ব্লগ লেখেন। হজের [হজ, মুসলিমদের জন্য একবার পালনিয় কর্তব্য যা মক্কায় গিয়ে পালন করতে হয়] সময় এই রোগ ছাড়ানো নিয়ে তিনি সচেতন। হজের সময় সারা বিশ্ব থেকে লক্ষ লক্ষ হজযাত্রী হজ পালন করার জন্য মক্কায় এসে জমায়েত হয়। তিনি লিখেছেন:
হজ এবং ওমরার মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ভবিষ্যত এখনও বির্তকের মধ্যে রয়েছে। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান বাতিল করতে চায়। অন্যদিকে পর্যটন মন্ত্রণালয় এ বছরের হজ্জ চালু রাখতে চায়। ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিয়ে আমার বলার কিছু নেই।
ইমাম এবং ধর্মীয় ব্যাক্তিদের মধ্যে এই নিয়ে বির্তক চরম আকার ধারন করেছে। ইতিমধ্যে সৌদি আরব যে এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে তা সে উপলদ্ধি করতে পারছে এবং তারা এই পরিস্থিত মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা প্রস্তাব করছে গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক ব্যাক্তি এবং শিশুদের এ বছর হজযাত্রা না করার জন্য। আমি তাদের এই অনুরোধের প্রতি সত্যিই শ্রদ্ধা জানাই।
আমার একটা ভালো প্রস্তাব রয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে হজ এবং ওমরা কেবল প্রথম বার পালন করতে আসা ব্যাক্তিদের জন্য পালনীয় হোক।
আমাদের সবশেষ গন্তব্য সিরিযা, যেখানে ব্লগার ইয়াসের আরওয়ানি [আরবি ভাষায়] একটা নতুন গল্পের সাথে একটা লিংক করে দিয়েছেন। এই লিংকে সিরিয়ার প্রথম সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত ব্যাক্তির কাহিনী রয়েছে। জানা গেছে, এক সিরিয়ান ডাক্তার যিনি অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করেন সম্প্রতি তিনি স্বদেশে বেড়াতে আসেন। এই মহিলা ডাক্তার সিরিয়ায় পর্দাপণ করেন দুবাই আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর দিয়ে। সেখানে তার এই রোগ শানক্ত হয়নি, হয়েছিল কয়েকদিন পরে।