হাঙ্গেরী: ইরান ও কখনো কোন কিছুর না-এর জন্য শোভাযাত্রা

যারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হাঙ্গেরীতে রয়েছে তারা বিভ্রান্ত হতে পারেন কারন হাঙ্গেরীর নাগরিক বিভিন্ন উপায়ে প্রতিবাদ শোভাযাত্রা বের করেছে যা গণতন্ত্রের এক হাতিয়ার।

জুনের ১৯ তারিখে প্রায় একশত ইরানি ছাত্র যারা হাঙ্গেরীতে পড়াশুনা করছে তারা হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের হিরো স্কোয়ারে এক আনুষ্ঠানিক নিরবতা পালন করে। এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে ফেসবুকের মাধ্যমে। দ্বিতীয় প্রতিবাদটি, হাঙ্গেরীর সমর্থকদের অংশগ্রহণে ইরানি দুতাবাসের সামনে অনুষ্ঠিত হয় জুনের ২১ তারিখে। এর নাম দেওয়া হয়েছিল গ্রীন ফ্লাশমব।

তৃতীয় শোভাযাত্রাটি ইরানের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবাদে বের হয় যা অনুষ্ঠিত হয় জুনের ২৬ তারিখে। এটিও ইরানি দুতাবাসের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। কমিউনিটি ব্লগ সাইট লেহাত মাস এ ভিলাজ (পৃথিবী আলাদা হতে পারে) এ রেডজেড ২১শে জুনের এবং ২৬শে জুন প্রতিবাদের তথ্য এবং ছবি প্রকাশ করেছে এবং এ সমন্ধে লিখছে:

[…] এটা ছিল পুর্বের প্রতিবাদের থেকে একেবারে আলাদা। গত রোববার সেখানে কোন পুলিশ উপস্থিত ছিল না। একেবারেই না। এবার কেবল সেখানে একটা বেড়াই ছিল না (সংসদ থেকে নিয়ে আসা), তার সাথে ছিল ডজন খানেক পুলিশ। এদের সাথে যুক্ত ছিল চারটি পুলিশ ভ্যান এবং ছয়টি গাড়ী। কিন্তু পুরো শোভাযাত্রা বন্ধুত্বপুর্ন পরিবেশে এবং শান্তিপুর্নভাবে অনুষ্ঠিত হয়। তবে আমি বিস্মিত হতাম না যদি ইরানি ছাত্ররা পুলিশের শান্তভাবে উপস্থিতিকেও অপমানজনক মনে করতো […]।

হাঙ্গেরিয়ান প্রচার মাধ্যম জানাচ্ছে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাবর ইকলোডি এবং ইরানি রাষ্ট্রদুত আলি রেজা ইরাভাস এর মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা নিয়ে এক রিপোর্ট করেছে। এর পর হাঙ্গেরীর সরকারি কর্মকর্তারা ঘোষণা করে যে ইরানের প্রতিবাদকারীদের এই দেশে শান্তিপুর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে এবং হাঙ্গেরী ইরানে সাংবাদিকদের নিষিদ্ধ করার খবরে উদ্বিগ্ন।

এ ছাড়াও জুনের ২১ তারিখে হাঙ্গেরীর রাজধানি বুদাপেস্টে আলাদা ধরনের এক শোভাযাত্রা বের হয়। এটি বের করে টু -টেইলড ডগ পার্টি বা দুই লেজওয়ালা কুকুরের দল (হাঙ্গেরিয়ান ভাষায়)। তারা একটি তথাকথিত এমন সব জিনিষে সাধারণ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে যার কোন অর্থ নেই। টু টেইলড ডগ পার্টি একটা ছদ্ম রাজনৈতিক দল যাদের সবাই চেনে হাঙ্গেরীর বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাবলির উপর করা তীব্র সমালোচোনার কারনে। প্রায় ২০০- ৩০০ ব্যাক্তি হাঙ্গেরীর কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর সামনে জমা হয় : প্রতিবাদ প্রদর্শনকারী ব্লগ(হাঙ্গেরীয় ভাষায়) অনুসারে, এই প্রতিবাদের কারন ছিল হাঙ্গেরীতে এই অফিসটি থাকার কোন মানে হয় না।

শিল্পকলা ছবির ব্লগ কেপগিয়ারের (চরিত্র নির্মাণ কারখানা) সাংবাদিক আন্দ্রাস ফোল্ডেড (হাঙ্গেরিয় ভাষায়) টু-টেলইড ডগ পার্টির এর প্রতিবাদ সমন্ধে রিপোর্ট করেছে:

[…] আমরা আসলে কি চাই? কিছুই না। কখন? কখনই না! হাঙ্গেরীর পরিসংখ্যান অফিসের সামনে (কেএসএইচ) তাদের দাবী আদায়ের জন্য কয়েক মিনিট ধরে প্রতিবাদকারীর স্লোগান দিচ্ছে। কিন্তু তাদের শ্লোগান কারো কানে পৌঁছায়নি। এই আওয়াজ শুনে দরখাস্ত গ্রহণ করার জন্য কেউ বের হয়ে আসেনি এবং তাদের সাথে আলোচনা করার জন্য কেউ আসেনি।

যদিও অনেক দাবী ছিল আগামীকাল কে গতকাল বানাও! আমাদের বাতিল কর! প্রধান এলাকায় সকলকে একসাথে আনো একটি স্থানে। […]

কেপগিয়ার এর কিছু পাঠক উল্লেখ করেছে মন্তব্য বিভাগে যে একজন প্রতিবাদকারী ‘আমাদের বরখাস্ত কর’ স্লোগান নিয়ে হাজির হয় যা আসলে একটা গোপন রাজনৈতিক বার্তা যা প্রায়শ:ই প্রদর্শীত হয় বতমান হাঙ্গেরীর সরকারের বিপক্ষে এবই এটি ২০০৬ সাল থেকে চলে আসছে। অন্যেরা লিখেছে যে এই ধরনের অর্থহীন শোভাযাত্রার ইতিমধ্যে ইউরোপের সংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে যা তার র‌্য্যডিকাল মুল লক্ষ্যর সাথে সংঘর্ষ বা বৈপরিত্ব তৈরী করে অর্থহীন কারনে শোভাযাত্রা বের করার মাধ্যমে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .